ইসলামের দৃষ্টিতে বাজেট – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইসলামের দৃষ্টিতে বাজেট

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ মে, ২০২৫ | ৯:০৩ 39 ভিউ
আমাদের সমাজে বাজেট মানেই পরিসংখ্যানের মারপ্যাঁচ, সংখ্যার জটিল সমীকরণ আর রাজস্ব-ঘাটতির হিসাব। কিন্তু এর বাইরেও বাজেট একটি স্বপ্নের নাম যেখানে দেশ ও জনগণের কল্যাণ, মানবিক দায়িত্ব ও নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হওয়ার কথা। আর এ দৃষ্টিকোণ থেকেই ইসলামি ভাবনার আলোকে বাজেটের দিকে তাকানো একান্ত প্রয়োজন। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। মানবজীবনের প্রতিটি দিকের মতো রাষ্ট্র পরিচালনা, অর্থনীতি, আয়-ব্যয়, কল্যাণমূলক ব্যবস্থা সবকিছুর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে ইসলামি বিধানে। বাজেটকেও ইসলাম দেখে একটি জাতীয় আমানত হিসাবে। এটি কেবল অর্থের হিসাব নয়; বরং জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনের অন্যতম প্রধান উপায়। তাই বাজেট প্রণয়নের সময় চাই গভীর দায়িত্ববোধ, সততা ও কল্যাণকামী মনোভাব। ইসলামি অর্থনীতির মূলনীতি হলো, প্রথমে

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া। রাষ্ট্রের আয় সীমিত, কিন্তু মানুষের চাহিদা অসীম, এ বাস্তবতা মেনেই বাজেট করতে হয়। তাই অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতা পরিহার করে প্রথমে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করাই ইসলামি দৃষ্টিতে সঠিক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের বাস্তবতায় অনেক সময় এমনও দেখা যায়, কম গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যয় বাড়ে, আর প্রয়োজনীয় খাত পড়ে থাকে অবহেলায়। ফলে পুরো অর্থনীতির ভারসাম্যই নষ্ট হয়ে যায়। বাজেট প্রস্তুতের সময় সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষের মতামত নেওয়ার চল থাকলেও, আলেমসমাজ সেই পরামর্শপ্রাপ্তদের তালিকায় খুব কমই থাকেন। অথচ ইসলামি অর্থনীতির শিক্ষা দিয়ে গড়ে ওঠা এ শ্রেণিটির অভিজ্ঞতা অনেক ক্ষেত্রেই সময়োপযোগী ও কার্যকর হতে পারে। শুধু তাই নয়, ইসলামি অর্থনীতির মূল শিক্ষা হলো সুদের

অবসান, ন্যায্য বণ্টন এবং প্রয়োজনভিত্তিক ব্যয়ের নীতি। এসব বিষয়ে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা অনেকাংশেই সুদনির্ভর। তবে ইসলাম সুদকে ঘোষণা করে হারাম। তাই সুদমুক্ত অর্থনীতি গড়ার চেষ্টাই নয়, বরং এটি একজন মুসলমানের ইমানি দায়িত্বও বটে। বাস্তবতা জটিল, কিন্তু সদিচ্ছা থাকলে রাষ্ট্র নিজস্ব কাঠামোতে ধীরে ধীরে সুদমুক্ত অর্থব্যবস্থার পথে হাঁটতে পারে। ইসলাম কোনোদিনও এমন দায়িত্ব মানুষের ওপর চাপায় না, যা তাদের সাধ্যের বাইরে। তাই প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছা ও সৎ প্রচেষ্টা। স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশে হাজার হাজার মসজিদ-মাদ্রাসা মক্তব চলে আসছে সম্পূর্ণ জনগণের সহায়তায়। রাষ্ট্রীয় বাজেটে এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ খুবই সামান্য, বরং কোনো কোনো বছর তা প্রায় অদৃশ্য। অথচ এ ধর্মীয়

প্রতিষ্ঠানগুলো সমাজের নৈতিক ভিত গড়তে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এ খাতের উন্নয়নে সরকার চাইলেই করতে পারে কার্যকর উদ্যোগ। পাশাপাশি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও থাকা প্রয়োজন সৎ, অভিজ্ঞ ও ধর্মপ্রাণ মানুষ, যাতে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ যথাযথভাবে কাজে লাগে। বাজেট নিয়ে আরেকটি বিতর্কিত প্রথা হলো-কালো টাকা সাদা করার সুযোগ। ইসলাম এ নীতিকে একেবারেই সমর্থন করে না। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ কখনো বৈধ হয়ে যেতে পারে না। এগুলোর প্রকৃত মালিক হলো জনগণ এবং রাষ্ট্র। ইসলামি বিধান অনুযায়ী এসব টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে প্রকৃত মালিককে, না পেলে গরিব-দুঃখীর কল্যাণে ব্যয় করতে হবে, তাও সওয়াবের নিয়ত ছাড়া। সার্বিকভাবে বলতে হয়, বাজেট যেন কেবল কাগুজে হিসাব না হয়ে ওঠে এটি যেন

হয়ে ওঠে জনগণের স্বপ্ন, রাষ্ট্রের অঙ্গীকার এবং মানবিক দায়িত্ব পালনের একটি সুযোগ। ইসলাম আমাদের সে পথ দেখায়, যেখানে আয়-ব্যয়ের হিসাব শুধু টাকার খাতা নয়, বরং আমানতের খাতা। আর আমানতের সঙ্গে যেমন সততা, তেমনি জবাবদিহির শক্ত অনুভবও জড়িয়ে থাকে। আমরা যদি চাই একটি ভারসাম্যপূর্ণ, মানবিক ও কল্যাণমুখী বাজেট, তবে ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি উপেক্ষা করে তা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ ইসলাম কেবল একটি ধর্ম নয়, এটি এক পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা যা আমাদের পথ দেখায় ন্যায়, মিতব্যয়ী ও কল্যাণের দিকে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
‘ওরা বন্দুক দেখিয়ে আমাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে’ কালুরঘাট সেতুতে প্রাইভেটকার ও অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ৩ বাড়ল স্বর্ণের দাম শি জিনপিং ও ট্রাম্পের ফোনালাপ, যে কথা হলো ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস বকেয়া থাকা দুঃখজনক: গণসংহতি আন্দোলন কুরবানির খুশির ঈদে পরিমিত খাওয়ায় থাকুক প্রশান্তি আসামে ‘বিদেশি’ বলে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া অনেকে ফিরেছেন, ১৪৫ জন নিখোঁজ- সরেজমিন প্রতিবেদন নারীকে লাথি মারা বহিষ্কৃত জামায়াত নেতাকে ফুলেল শুভেচ্ছা কী বার্তা দেয় প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ, ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় ‘বিচারকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ছিল ষোড়শ সংশোধনী মামলার মূল উদ্দেশ্য’ প্রস্তুত ২০ হাজার কর্মী, কুরবানির বর্জ্য দিনেই সরাতে চায় ঢাকার দুই সিটি গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে এনসিপি ও চীনা রাষ্ট্রদূতের মধ্যে সংলাপ পবিত্র হজের খুতবা দিলেন ড. সালেহ আল হুমাইদ গাজার পথে গ্রেটা, যা বলল ইসরাইল কুরবানির পশু কেনার পর শরিকের সংখ্যা বাড়ানো যাবে কি? যে কারণে কুরবানি না করার আদেশ দিল মরক্কো সরকার শরিকি কুরবানিতে কেউ হারাম টাকায় অংশ নিলে কুরবানি হবে কি? ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’, হয় না সত্যি সবার দুই ভাতিজিকে কুপিয়ে হত্যা, ঘাতক চাচা গ্রেপ্তার খোলা ট্রাক-পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ