অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৪ দফা প্রস্তাব ১২ দলীয় জোটের – ইউ এস বাংলা নিউজ




অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৪ দফা প্রস্তাব ১২ দলীয় জোটের

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ | ৮:৫৫ 35 ভিউ
অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করার দাবি জানানোর পাশাপাশি ১৪ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছে ১২ দলীয় জোট। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি ও জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। ১২ দলীয় জোটের প্রধান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে বলেন, অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে; সংহত করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করে দেশকে সম্প্রীতির মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হবে। এমন বিজয়কালে স্বৈরাচারের বিপক্ষে লড়াই করা দুটি বৃহৎ শক্তির নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব সৃষ্টিকে

জনগণ অনাকাঙ্ক্ষিত মনে করে। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ১২ দলীয় জোটে মুখপাত্র এবং বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন। ১২ দলীয় জোটের প্রস্তাবনা ১. প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের যে সমস্ত দোসর কর্মরত আছেন তাদের অপসারণ, জেলা প্রশাসক নিয়োগে নতুন ফিট লিস্ট এবং যেসব জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের নিযোগ বাতিল, ফ্যাসিবাদের সময়ের চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিল করতে হবে। ২. অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে দু-একজন আছেন যারা বিপ্লব-গণঅভ্যুত্থানের যে মূল স্পিরিট তাকে ব্যাহত করছে, তাদের সরাতে হবে। গত ১৫ বছর ধরে সরকারি কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চিতদের

ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। ৩. পিলখানা ও শাপলা চত্বরের গণহত্যার পৃথক বিচার কমিশন গঠন করতে হবে। বিডিআর বিদ্রোহের প্রকৃত তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ এবং নির্দোষ জওয়ানদের মুক্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. ছাত্র-জনতার অপরিসীম ত্যাগ, রক্তদান ও জীবনের বিনিময়ে যে স্বপ্ন ও অর্জন তাকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সে অনুভূতি ও চ্যালেঞ্জ মনে রেখে কাজ করতে হবে। জনগণের কাছে দায়বদ্ধতার জন্য নিজ নিজ সম্পদের হিসাব দেওয়ার যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে প্রতি মাসে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কাজের অগ্রগতি জাতির সম্মুখে তুলে ধরতে হবে। ৫. নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে রাজনৈতিক দলের

ঐকমত্যের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এনআইডি কার্ড স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করার আইন অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে বাতিল করতে হবে। বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি যাতে নির্বাচন সংস্কার কমিশনে না যায়। ফ্যাসিস্ট সরকারের ভুয়া ভোটে নির্বাচিত সব ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করতে হবে। নির্বাচন সংস্কার কমিশনে জেসমিন তুলিসহ দুই-একজন বিতর্কিত বা ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কালো আইন বাতিল করতে হবে। ৬. ২০০৭ সালে থেকে শেখ হাসিনার শাসনামলে রাজনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সকল মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা ও প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৭. পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিরতার সৃষ্টি পেছনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং

গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। ৮. জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, আইন ও স্বাস্থ্যসহ যেসব মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সন্তোষজনক নয়, সেখানে দায়িত্ব রদবদল বা নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের মাধ্যমে কার্যকর গতিশীলতা আনয়ন করা। প্রয়োজনে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে সহকারী উপদেষ্টা নিয়োগ করা। ৯. অবিলম্বে গণতদন্ত কমিশন গঠন করে জুলাই-আগস্টে সংগঠিত সব নৃশংসতার ঘটনা জাতির সামনে তুলে ধরার ব্যবস্থা করা। প্রতিটি শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনে স্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ। আহত ও পঙ্গু ছাত্র-জনতার চিকিৎসা কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। সিভিল প্রশাসন ও সশস্ত্রবাহিনীর কর্মকর্তা ও সিপাহিদের মধ্যে যাদের অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের বিষয়ে একটি পৃথক কমিশন গঠন করে, যারা নিগ্রহ ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তাদের চাকরিতে

ফিরিয়ে আনা বা সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। ১০. ফ্যাসিবাদের দোসর, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগী ব্যক্তি, সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের বিচারের জন্য ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’-এর পাশাপাশি ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ গঠন করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করা, বিলম্বের কারণে বহু আসামি পালিয়ে যাচ্ছে, বহু আলামত নষ্ট হচ্ছে। বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করার জন্য আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা একান্ত আবশ্যক। ১১. যে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে সেগুলো যাতে নির্ধারিত সময়ে তাদের কার্যক্রম শেষ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে তার জন্য সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা প্রদান করা, ৬টি কমিশনের

পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাত নিয়েও একটি জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করার প্রস্তাব করছি। সেনাবাহিনী, বিমান ও নৌবাহিনীর সংস্কার প্রক্রিয়ার জন্যও পৃথক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। ১২. দ্রব্যমূল্য সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসার জন্য নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু রাখা। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, দুর্নীতি বন্ধ করা, ফুটপাত জনগণের চলাচলের জন্য হকারমুক্ত করা, অসহনীয় যানজট নিরসনসহ প্রাত্যহিক জনভোগান্তি দূর করার জন্য প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও পরিবর্তন-প্রত্যাশী ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক কমিউনিটি মনিটরিং টিম গঠনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ১৩. ফ্যাসিবাদী সরকার বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে যে সকল দেশবিরোধী চুক্তি করেছে তা পর্যালোচনা করা দরকার এবং অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করে যারা অবৈধ টাকার পাহাড় গড়েছে এবং বিদেশে টাকা পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশে ও বিদেশে তাদের সম্পদ জব্দ করার পদক্ষেপ নিতে হবে। ১৪. রাজনৈতিক দল ও সব সামাজিক পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় এবং যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে কার্যকর সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যমত গড়ে তোলার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিএনপির) চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন ও নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
বীর প্রতীকের গলায় জুতার মালা দিয়েছে জামায়াতের কর্মীরা ভুল সিদ্ধান্তের জন্য রিগ্রেট করি-আরাফাত গুলি করে হত্যা: স্বজনদের দাবি ছাত্রদল কর্মী, পুলিশ বলছে মাদক ব্যবসায়ী তীব্র শীতে জয়ায় খোলা পোশাকে উত্তাপ রাজশাহীতে তেলের আগুনে পুড়ল ৮ দোকান তালাক নিয়ে যুক্তরাজ্যে যেতে চান বাশার আল-আসাদের স্ত্রী গাজীপুরে চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবকের মৃত্যু ৯ গোলের ম্যাচে টটেনহ্যামকে হারাল লিভারপুল সোমবার বিপিএলের উদ্বোধনী কনসার্ট, এড়িয়ে চলবেন যেসব এলাকা ৪ বিভাগে শীত-বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়ার নতুন বার্তা বিমানে ‘ঘুমিয়ে’ ছিলেন বাইডেন : সেনাদের লাশ পেতে অপেক্ষায় স্বজনরা আল্লুর কোলে উঠে নাচ, নীরবতা ভাঙালেন রাশমিকা গভীর রাতে মেসে ছাত্রীদের বিক্ষোভ, মালিকের দুই ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ তেলের ডিপোতে আগুন, পুড়ল ৪শ ব্যারেল মানুষ সংস্কার বোঝে না, তারা বোঝে ভোট: মির্জা ফখরুল বোর্নামাউথে বিধ্বস্ত আমোরিমের ম্যানইউ জবিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে নিজস্ব পদ্ধতিতে ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে এতো ব্যস্ত কেন’, প্রশ্ন সালাউদ্দিনের ব্যাংকের সম্পদ মূল্যায়নে বিদেশি পরামর্শক নিয়োগে নীতিমালা ২১ দিনে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স