ছেলে নেই, তবু বিছানা গুছিয়ে রাখছেন মা – ইউ এস বাংলা নিউজ




ছেলে নেই, তবু বিছানা গুছিয়ে রাখছেন মা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৫ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:১৭ 115 ভিউ
সাব্বির হোসেন ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ হন। তিনি ছিলেন তার নিম্নবিত্ত পরিবারের একমাত্র রোজগার করা ব্যক্তি। ছেলেকে হারিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মা এখন অসহায় এবং দিশাহারা। ছেলে নেই, তবু বিছানা গুছিয়ে রাখছেন মা। সাব্বির হোসেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা। এটি একটি ছায়া সুনিবিড় গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আমোদ আলী। তার স্ত্রী রাশিদা খাতুন। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে বড় সাব্বির হোসেন (২৩)। দ্বিতীয় সন্তান সুমাইয়া খাতুন স্থানীয় ডিএম কলেজে লেখাপড়া করে। ছোট ছেলে সাদিক হোসেন স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ে। সাব্বিরের থাকার ঘরে গিয়ে দেখা গেল, আগের মতোই বিছানাটি পাতা আছে। আলনায় ঝুলছে তার ব্যবহার করা কাপড়চোপড়। মা রাশিদা খাতুন সারাক্ষণ

তার নিহত ছেলের ব্যবহৃত জিনিসপত্র নাড়াচাড়া আর স্মৃতি নিয়ে আহাজারি করেন। তিনি স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অশ্রুশিক্ত কণ্ঠে জানান, সাব্বিরের মোটরসাইকেল কেনার খুব আগ্রহ ছিল। প্রায়ই কিনে দিতে বলত। আমি তাকে বুঝিয়ে বলতাম, বোনটাকে আগে বিয়ে দাও। কয়টা গরু পুষেছি। ওগুলো বিক্রি করে মেয়ের বিয়ের খরচ মিটিয়ে তারপর তোমার মোটরসাইকেল কিনে দেব। ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যার পর সাব্বির মোবাইল করেছিল। পরিবারের সব ভালো-মন্দ খবর নিয়েছিল। বেতন হলে টাকা পাঠাবে বলেছিল। সাব্বিরের বাবার বয়স হয়ে গেছে। তিনি এখন কাজ করতে পারেন না। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সাব্বির সংসারের হাল ধরেছিলেন। সাব্বিরের মৃত্যুতে গোটা পরিবার এখন অসহায় ও দিশাহারা। পিতা আমোদ আলী বাংলাদেশ

সংবাদ সংস্থা বাসসকে জানান, সাব্বির লেখাপড়ায় খুব একটা এগুতে পারেনি। স্থানীয় আমেনা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কয়েক বছর পড়ালেখা করে। তারপর ভর্তি হয় স্থানীয় মাদ্রাসায়। সেখানে কোরআনে ১০ পারা হাফেজ হয় সে। পাড়াশোনা এখানেই ইতি। এরপর বাউন্ডুলে জীবন। তবে সাব্বির ছোট বেলা থেকেই পরোপকারী ছিল বলে জানান তিনি। সাব্বির ছয় কি সাত বছর আগে ঢাকায় গিয়ে টাইলস মিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। মাঝে মাস দুয়েক বড়ি এসে বসেছিলেন। এরপর আবার ঢাকায় গিয়ে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে অর্গান লিমিটেড কেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেন। সে দিন ছিল ১৮ জুলাই। উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার সঙ্গে স্বৈরাচারের পেটোয়া বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ, গোলাগুলি চলছিল। তিনিও এই আন্দোলনে

শরিক হন। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সাব্বির একটি ওষুধের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সহযোদ্ধারা তাকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ১৯ জুলাই ভোরে তার লাশ নিজ গ্রামে পৌঁছে। সাব্বিরের লাশ সকাল ১০টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহের সমন্বয়ক আনিচুর রহমান জানান, তাদের পক্ষ থেকে এ পরিবারটির নিয়মিত দেখভাল করা হচ্ছে। তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য ইতোমধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। মেয়ের বিয়ে দিতে হবে। কিন্তু অর্থের জোগান নেই। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা সাব্বিরের বাবা-মায়ের। এছাড়া ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচসহ পরিবারে আর্থিক চাহিদাও কিভাবে মেটাবেন

তা নিয়েও চিন্তিত তারা। তাই তারা সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। তারা তাদের জীবদ্দশায় সন্তান হত্যার বিচারও দেখে যেতে চান। আর সরকার যেন তাদের বাড়ির পাশে একটি মসজিদ করে দেয়। যেখানে বসে এলাকাবাসী তাদের ছেলের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারেন। এটুকুই চাওয়া সাব্বিরের বাবা-মায়ের।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ফোনে নারীকে উত্যক্তের জেরে বিএনপির দুই গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে নেতা গুলিবিদ্ধ, আহত ১৫ লোক সমাগমে ব্যর্থ হয়ে অর্থের বিনিময়ে বৃদ্ধা-শিশুদের এনে ঝিনাইদহে এনসিপির পদযাত্রা তালেবান নেতাদের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা: নারী-কিশোরী নিপীড়নের অভিযোগ ধান ভানতেও বিবিসির গীত: রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যর্থতা ঢাকার মিডিয়া কাব্য আওয়ামী লীগের বিবৃতি: বিচারব্যবস্থাকে ইউনূস সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের তীব্র নিন্দা দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা-অস্থিতিশীলতায় বিদেশি বিনিয়োগ কমছেই বগুড়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ শেষে স্ত্রী ও বাবাকে হাত-পা-মুখ বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা রাতের অন্ধকারে চবি ছাত্রলীগ নেতার উপর কিরিচ হামলা, রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার রেস্তোরাঁ থেকে ইসরায়েলিদের তাড়িয়ে দিলেন ম্যানেজার ভারত আসতে রাজি নয়, ২৪ জুলাই ঢাকায় এসিসি সভা হবে তো? টসে হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ পাকিস্তানে সেনাপ্রধানকে জড়িয়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের গুঞ্জন! আগামীকাল বৃষ্টি থাকবে কিনা, জানাল আবহাওয়া অফিস পাকিস্তানে সেনাপ্রধানকে জড়িয়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের গুঞ্জন! যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ শুধু অর্থনৈতিক নয়, রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক কৌশলও ভিন্ন চরিত্রে তানিয়া বৃষ্টি পূজায় চমক নিয়ে আসছেন কৌশানী সোশ্যাল মিডিয়া ‘টেস্ট’-এ পাস হলে তবেই মিলবে আমেরিকার ভিসা এসএসসি ও সমমান: কমেছে পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী রাজশাহী বোর্ডে কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫