ঠিকাদারদের অর্থে টয়লেট প্রশিক্ষণে সরকারি কর্মকর্তাদের চীন ভ্রমণ, চলছে ভ্রমণ বিভিন্ন দেশে – ইউ এস বাংলা নিউজ




ঠিকাদারদের অর্থে টয়লেট প্রশিক্ষণে সরকারি কর্মকর্তাদের চীন ভ্রমণ, চলছে ভ্রমণ বিভিন্ন দেশে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৫:৪৫ 19 ভিউ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে ঘোষণা দিয়েছিলেন কোনও ঠিকাদার/সাপ্লায়ারের অর্থে মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার কর্মীরা বিদেশ যেতে পারবেন না। কিন্তু ইউনূস সরকারের দায়িত্বশীলরা নিয়মিতই বিদেশ যাচ্ছেন ঠিকাদার, সাপ্লায়ার ও প্রাইভেট কোম্পানির অর্থে। পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে ইউনূস সরকারের দুর্নীতিবাজ প্রশাসন এই ঘটনার জন্ম দিয়েছে বলে অভিযোগ। এ ধরনের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ছিল। রাষ্ট্রীয় কৃচ্ছ্রসাধনের নীতিমালা প্রণয়নও করেন তিনি। তাঁর মতে, এসব ভ্রমণ কার্যত অনিয়ম ও স্বার্থগত বিষয়ের জন্য হয়ে থাকে। কিন্তু সেই নীতিমালা অগ্রাহ্য করে দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারদের অর্থে বিদেশ সফরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ইউনূস সরকারের কর্মকর্তারা। গত ১৪ই সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মাহবুবা

আইরিন স্বাক্ষরিত এক জিওতে তিন সরকারি কর্মকর্তাকে চীন সফরের অনুমতি দেওয়া হয়। সফরের কারণ— ‘ভিআইপি মোবাইল টয়লেট’ রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ। অথচ ভ্রমণের সব খরচ বহন করছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান শ্যাংডং কিউয়ানবাই ইন্টেলিজেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড। সরকারি কর্মকর্তাদের মোবাইল টয়লেট, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, চেইন ডোজার, স্ক্র্যাপার ব্রিজ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র— সব পণ্য ‘পরিদর্শন’ ও ‘টেস্টিং’ করার নামে একের পর এক বিদেশ সফরের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে, যার খরচ দিচ্ছে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৫ সরকারি কর্মকর্তা সরবরাহকারীদের টাকায় চীন, জার্মানি, জাপান, ফ্রান্স, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে সফর করেছেন। এদের অনেকে কোনো প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নন, তবুও বিদেশ সফরের সুযোগ পেয়েছেন। ডিএসসিসির

কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান, জাকির হোসেন ও এলজিইডির প্রকৌশলীরা চীনে মোবাইল টয়লেট সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে গেছেন। ডিএসসিসির প্রকৌশলী শাহ আলম ভূঁইয়া এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তা কামরুজ্জামান থাইল্যান্ডে লো-বেড ট্রেইলার ট্রেনিংয়ে। পাঁচ কর্মকর্তাকে জাপান পাঠানো হয়েছে ট্রেনিংয়ের নামে, কিন্তু কী বিষয়ের ওপর সেই ট্রেনিং তা জিওতে উল্লেখই নেই। আর এসব ভ্রমণের ব্যয় বহন করেছে সংশ্লিষ্ট পণ্যের ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের সফর কেবল নির্দেশনা লঙ্ঘন নয়, বরং ভবিষ্যতে কোম্পানিগুলোর প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে সরকারি কর্মকর্তাদের বাধ্য করে। ফলে নিম্নমানের সরঞ্জাম সরবরাহ, অনিয়ম ও দুর্নীতির ঝুঁকি বাড়ে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘সরবরাহকারীর টাকায় ভ্রমণ কোনো দান নয় এটা

সরাসরি পণ্যের দামে যুক্ত থাকে। ফলে এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয় এবং কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।’ সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া বলেন, এসব ভ্রমণ যে উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে, তা অজুহাত মাত্র; উদ্দেশ্য হলো সুযোগ নেওয়া। অন্যদিকে, এমন নজিরও পাওয়া গেছে যে, যেখানে প্রশিক্ষণের অনুমোদন ইন্দোনেশিয়ার, অথচ ভ্রমণ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। এনবিআরের আলোচিত সদস্য বেলাল হোসেন চৌধুরী এমনই এক ‘প্রশিক্ষণ ভ্রমণ’-এর অজুহাতে সিডনিতে চলে গেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। বিভিন্ন জিও বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রেই যেসব কর্মকর্তাকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে, তারা প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। আবার প্রকল্প সংশ্লিষ্ট খুঁটিনাটি জ্ঞান বা দক্ষতা ছাড়াই ‘ট্রেনিং’, ‘ফ্যাক্টরি টেস্ট’ বা ‘অপারেশনাল পরিদর্শনের’

নামেই বিদেশ সফর হয়েছে। সুশাসনের প্রশ্নে এটি কেবল নৈতিকতা লঙ্ঘনের নয়, আইনি লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে বলে মত দেন সংশ্লিষ্টরা। সরকার একদিকে ডলার সংকট ও বাজেট ঘাটতির কারণে ব্যয় সংকোচনের কথা বলছে, অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তাদের এভাবে একের পর এক ‘বিনামূল্যে বিদেশ সফর’ সত্যিকারের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন তোলে। সরবরাহকারীর খরচে বিদেশ সফরের এই চর্চা যদি বন্ধ না হয়, তাহলে দুর্নীতি, নিম্নমানের কাজ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়—এই তিন বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র, সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা রাজশাহীতে খাদ্যগুদামে নিম্নমানের চাল মজুদ, কোটি টাকার ধান্দায় যুক্ত সরকারি কর্মকর্তারা উদ্ভট সব মন্তব্যের পর ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন জামায়াতি বক্তা আমির হামজা ভয় দেখিয়ে বারবার ধর্ষণে অপ্রাপ্তবয়স্ক মাদ্রাসাছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা, জামায়াত কর্মী গ্রেপ্তার পুঁজিবাজারে সাপ্তাহিক লেনদেনে ধস, গড় লেনদেন কমেছে ৩৯% আওয়ামী লীগ নেতা বলে মামলা ছাড়াই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার জামিনেও মেলেনি মুক্তি: পুনঃগ্রেপ্তারের পর কারাগারে মৃত্যু আওয়ামী লীগ নেতার, পরিবারের দাবি- নির্যাতনে হত্যা ঠিকাদারদের অর্থে টয়লেট প্রশিক্ষণে সরকারি কর্মকর্তাদের চীন ভ্রমণ, চলছে ভ্রমণ বিভিন্ন দেশে আফগানিস্তানে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর বই নিষিদ্ধ করলো তালেবান সরকার সংস্কৃতি চর্চায় উগ্রবাদের বিরোধ নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত ঘেঁষে আরসা-আরাকান আর্মির তীব্র সংঘর্ষ, গোলাগুলি বাংলাদেশ ব্যাংকের হ্যাক করা ৮১ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার: ইতিহাসের বৃহত্তম ব্যাংক-হ্যাকের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় দুই মাসেই ৬,৫৭৭ কোটি টাকা ঘাটতি: এনবিআরের রাজস্ব আদায়ে ধস ট্রাম্পের হুমকি পাত্তাই দিল না আফগানরা অবশেষে হাত মেলাল ভারত, তবে… রাত ১০টার পরও চলবে মেট্রোরেল ময়লার ভাগাড় থেকে ৫ বস্তা এনআইডি কার্ড উদ্ধার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে জাতিসংঘের সম্মেলন কি ভূরাজনীতিকে প্রভাবিত করবে? বঙ্গোপসাগরে ২ লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস, ৫ দিনের পূর্বাভাসে যা জানা গেল পাকিস্তানের বিপক্ষে আবারও সহজ জয় ভারতের