‘চিরকুট লিখে না গেলে পুলিশ কাকে না কাকে ফাঁসিয়ে টাকা খাবে’ – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ১৫ আগস্ট, ২০২৫
     ৮:২৯ অপরাহ্ণ

‘চিরকুট লিখে না গেলে পুলিশ কাকে না কাকে ফাঁসিয়ে টাকা খাবে’

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৫ আগস্ট, ২০২৫ | ৮:২৯ 118 ভিউ
রাজশাহীর পবায় নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় মিনারুল, তার স্ত্রী মনিরা, দেড় বছরের শিশুকন্যা মিথিলা ও স্কুলপড়ুয়া ছেলে মাহিমের লাশ। ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিলেন মিনারুল, একই ঘরের বিছানায় ছিল ছেলে, অন্য ঘরের বিছানায় পাওয়া যায় স্ত্রী ও মেয়ের মরদেহ। মৃত্যু আগে মিনারুল চিরকুট লিখে গেছেন। তিনি লেখেন, ‘চিরকুট লিখে না গেলে বাংলার পুলিশ কাকে না কাকে ফাঁসিয়ে টাকা খাবে।’ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড় গ্রাম থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আলামত সংগ্রহ করে। পুলিশের ধারণা, বিপুল অংকের আর্থিক দেনার চাপ থেকে মুক্তির পথ না পেয়ে স্ত্রী, স্কুলপড়ুয়া ছেলে

ও শিশুকন্যাকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন মিনারুল। বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী-সন্তানদের শ্বাসরোধে হত্যার পর মিনারুল আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, একটি ঘরের বিছানায় ছিল মনিরা ও শিশুকন্যা মিথিলার লাশ। পাশের ঘরের বিছানায় ছিল মাহিমের লাশ। এ ঘরেই ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল মিনারুলের লাশ। এ ঘর থেকে দুটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। এটি মিনারুল লিখেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাতের লেখাটি মিনারুলেরই বলে পুলিশকে জানিয়েছেন স্বজনেরা। চিরকুটে লেখা আছে, ‘আমি মিনারুল নিচের যেসব লেখা লিখব, সব আমার নিজের কথা। লিখে যাচ্ছি এই কারণে আমরা চারজন আজ রাতে মারা যাব। এই মরার জন্য কারো কোনো দোষ নেই। কারণ, লিখে না গেলে বাংলার

পুলিশ কাকে না কাকে ফাঁসিয়ে টাকা খাবে। আমি মিনারুল প্রথমে আমার বউকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিনকে মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।’ আরেকটি চিরকুটে লেখা, ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এই কারণে যে, আমি একা যদি মরে যাই, তাহলে আমার বউ, ছেলে, মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম, সেই ভালো হলো।’ মিনারুলের চাচি জানেহার বেগম জানান, রাতে মিনারুলের স্ত্রী মনিরা তার মেয়েকে নিয়ে এক ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। আর অষ্টম শ্রেণি

পড়ুয়া ছেলে ঘুমিয়েছিল পাশের ঘরে। রাত ১১টার দিকে মিনারুল বাড়ি ফেরেন। ততক্ষণে একই বাড়িতে মিনারুলের বড় ভাই রুহুল তার স্ত্রী দিলরুবা এবং মেয়ে হিমুকে নিয়ে আলাদা ঘরে ঘুমিয়ে যান। আর বাড়ির উঠোনে ঘুমিয়ে পড়েন মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী এবং মা আনজুরা বেগম। রাতে বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটেছে তা কেউই টের পাননি। সকাল ৮টার দিকে আনজুরা মিনারুলের নাম ধরে ডেকেই যাচ্ছিলেন। সাড়া না পেয়ে রুস্তম আলী ঘরের টিনের ওপর উঠে ভেতরে তাকিয়ে দেখেন, ঘরে মিনারুলের লাশ ঝুলছে। পরে দুই ঘরের দরজা কেটে ভেতরে ঢুকলে চারজনেরই লাশ পাওয়া যায়। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ আসে। জানেহার বেগম বলেন, ‘মিনারুলের কয়েকটা কিস্তি ছিল। কিস্তির কারণে

বাড়িতে থাকতো না। মাঝে মাঝেই কিস্তির জন্য লোক আসত। আমরা বুঝিয়ে পাঠাতাম যে মিনারুল বাড়িতে নাই। মিনারুল কখনও কৃষি কাজ, কখনও ট্রাকের হেলপার আবার কখনও পুকুরের মাছ ধরার জাল টানা শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। তার রাগ ছিল বেশি। কেউ কটু কথা বললেই রাগ করে চলে আসত। তারপর আর কাজে যেত না। অভাব লেগে থাকত।’ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ আলী মুর্শেদ জানান, দুইদিন আগে মিনারুল তার কাছে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তার ঘরে চাল নেই। তিনি দুই হাজার টাকা বের করে দিয়েছিলেন চাল কেনার জন্য। চেয়ারম্যান জানান, মিনারুল আগে থেকেই ঋণগ্রস্ত। বছর তিনেক আগে তারা এটা নিয়ে বসেছিলেন। তার বাবাকে অনুরোধ করিয়ে পাঁচ

কাঠা জমি বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ করান। কিন্তু পরে আবার কিস্তি নিয়েছিলেন মিনারুল। এলাকার লোকজন জানেন, মিনারুল জুয়া খেলতেন। এ কারণে দেনায় ফেঁসে যেতেন। সকালে বাড়ির উঠোনে কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন স্বজনেরা। কাঁদতে কাঁদতে মিনারুলের মা বলছিলেন, ‘ও জান! এই কইরি গেলি ক্যানরে বাপ। আমি মাটি বেইচি আবার দিতুক রে জান। বাপের এক কাঠা পাইছি, ওডি বেইচি আবার দিতুক রে বাপ। আমার তো কিছুই থাইকল না।’ সকালে খবর পেয়ে যান রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্ত্রী এবং মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। ছেলেকেও শ্বাসরোধ করে হত্যার মতো মনে

হচ্ছে। মিনারুল আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে হচ্ছে। আরও তদন্তের পর আমরা প্রকৃত কারণটা জানতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হবে। কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে সেটা ময়নাতদন্তের পরই নিশ্চিত করে বলা যাবে। আর জুয়ার বিষয়গুলো এখনো আমরা নিশ্চিত না। মিনারুলের এ রকম অভ্যাস ছিল কি না সেটা আমরা জানি না। আত্মীয়-স্বজনেরা পুলিশকে বলেছেন, চিরকুটের লেখাটা মিনারুলেরই। সেখানে আর্থিক সমস্যার কথা উঠে এসেছে। আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করব।’

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সাইবার ফাঁদ ভিশিং গাজায় কমলেও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি নিপীড়ন বেড়েছে পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে চুক্তি বাস্তবায়নই একমাত্র পথ দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা শিক্ষকদের সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, বুধবার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা লটারির মাধ্যমে দেশের ৫২৭ থানার ওসি পদে রদবদল উত্তরের দুই জেলায় শীতের প্রকোপ ইংলিশ ব্যাটার রবিন স্মিথ মারা গেছেন বাংলা একাডেমির ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ দেশের বাজারে সোনার দাম কমলো ডায়াবেটিস ও চোখ জটিলতা ও প্রতিরোধ বৃহস্পতিবার আসছে নতুন ৫০০ টাকার নতুন নোট শীতে সর্দি-কাশি থেকে সুরক্ষা দেবে যেসব খাবার শৈত্যপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড় নিয়ে নতুন বার্তা এবার কাজের সময় নিয়ে মুখ খুললেন ‘ড্যান্সিং কুইন’ মাধুরী দেশে স্বর্ণের দাম কমলো সীমান্তে ২ বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, বিএসএফের অস্বীকার আবারও বঙ্গোপসাগরে ভূমিকম্প বিশ্বরেকর্ড গড়া তামিমের ব্যাটে বাংলাদেশের সিরিজ জয় ড্রয়ের আগে জেনে নিন ২০২৬ বিশ্বকাপের নতুন সব নিয়ম