
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে পালটা জবাব তেহরানের

তেহরানে নতুন করে বিস্ফোরণ

জরুরি বৈঠকের ডাক আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার

ইরান-ইসরাইল সংঘাতের সম্ভাব্য পরিণতি কী হবে পারে?

নেপাল থেকে আসছে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

ইরান-ইসরাইল সংঘাতের সম্ভাব্য পরিণতি কী হবে পারে?

ইরান-ইসরাইলের সংঘাতে আদানির মাথায় হাত, ঝুঁকিতে পাহাড়সম বিনিয়োগ
ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাত নিয়ে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ইসরায়েলের হামলা এবং ইরানের পাল্টা হামলায় মধ্যপ্রাচ্য বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এই সংঘাত শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা সংকট নয়, বরং বৈশ্বিক তেলের বাজার এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। চলমান এই সংঘাতের দশটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখানে বিশদভাবে তুলে ধরা হলো-
১. ইরানে ইসরায়েলি হামলায় উচ্চপদস্থ সামরিক ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের মৃত্যু
ইসরায়েলের সশস্ত্র হামলায় ইরানে অন্তত ২০ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং ৬ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরি এবং ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-এর কমান্ডার হোসেইন সালামি। এই হামলা ইরানের নেতৃত্ব ও আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে স্পষ্ট দুর্বলতা প্রকাশ করেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন
ধরনের অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে। ২. ইরানের পাল্টা আক্রমণ ইরান দ্রুত পাল্টা হামলা চালিয়ে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ১০০টিরও বেশি ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এই হামলায় ইসরায়েলে অন্তত তিনজন নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়েছে। সংঘাতের এই পরিধি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনত করেছে। পাশাপাশি, ইরান আরও হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে, যা আঞ্চলিক অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে। ৩. বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য বৃদ্ধি ইরান-ইসরায়েলের তীব্র সংঘাতের কারণে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যদি মধ্যপ্রাচ্যে এই উত্তেজনা অব্যাহত থাকে, তবে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারেরও বেশি ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সংকট তৈরি হতে পারে, কারণ
তেলের দাম বৃদ্ধি বিভিন্ন দেশের উৎপাদন খরচ ও মূল্যস্তর বাড়িয়ে দেয় এবং বিশ্ববাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে দেয়। ৪. ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ইরান চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ রয়েছে, নতুবা আরও ভয়ঙ্কর ও ধ্বংসাত্মক হামলা শুরু হতে পারে। তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণের দাবি জানিয়েছেন, যা অনেক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের মতে বাস্তবে অসম্ভব এবং অগ্রহণযোগ্য। কারণ ইরানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব পারমাণবিক ক্ষমতা তাদের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির মূল ভিত্তি হিসেবে দেখে, তাই তারা সহজে এই দাবি মানবে না। ট্রাম্পের এই কঠোর অবস্থান সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে। ৫. যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সমর্থন প্রকাশ্যে ওয়াশিংটন
বারবার জোর দিয়ে বলেছে যে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চায় এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষায় সম্পূর্ণ সমর্থন দিতে প্রস্তুত। তবে বাস্তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এবং সেনাবাহিনী গোপনভাবেও ইসরায়েলকে অত্যাধুনিক তথ্য ও অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে। এই গোপনীয় সহযোগিতা সংঘাতকে আরও জটিল ও বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, কারণ এটি ইরানের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং প্রতিহিংসামূলক হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে। এর ফলে সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী ও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ৬. ইরানে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলমান এই সংঘাতে ইরানে রক্ষণশীল ও উদারপন্থিদের মধ্যে গভীর রাজনৈতিক ও আদর্শগত বিভাজন দেখা দিয়েছে। উদারপন্থিরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসার পক্ষে, যাতে দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা কমানো যায় এবং অর্থনৈতিক
সংকট মোকাবিলা করা যায়। তবে কট্টরপন্থিরা মনে করেন আত্মসমর্পণ মানে দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আপস এবং দুর্বলতা প্রদর্শন, যা তাদের কাছে অসম্ভব। এই দ্বন্দ্ব ইরানের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলেছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ নীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি প্রভাবিত করছে। ৭. মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা ও হিজিবল্লাহর দুর্বলতা এদিকে ইসরায়েল হামাস ও হিজবুল্লাহকে কঠোর প্রতিহত করে তাদের অনেকটাই কোণঠাসা করে রেখেছে। পূর্বে সিরিয়ায় ইরানের শক্তিশালী উপস্থিতি ছিল, যা আজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার খবর মিত্র শক্তিগুলোর মনোবলকে প্রভাবিত করেছে। সিরিয়া ও ইরানের অন্য মিত্ররা এখন অনেকটাই দুর্বল ও অসহায় অবস্থায় রয়েছে, যা ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব কমিয়ে দিয়েছে
এবং মধ্যপ্রাচ্যে তার কৌশলগত অবস্থান ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ৮. সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে পারমাণবিক কর্মসূচিতে অগ্রগতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংঘাতের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির দ্রুত অগ্রগতি। ইসরায়েল কোনো পরিস্থিতিতেই চায় না ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হয়ে উঠুক, কারণ তা মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্য পুরোপুরি পরিবর্তন করে দেবে। এই কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একদিকে ইরানের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের দাবি জানাচ্ছে, অন্যদিকে ইসরায়েলকে সহযোগিতা দিয়ে ইরানের ওপর কঠোর হামলা চালাচ্ছে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের এই যৌথ কৌশল ইরানের প্রধান শক্তি হিসেবে বিবেচিত ‘প্রতিরোধ অক্ষ’ বা সহায়ক গোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হিজবুল্লাহ, সিরিয়া ও অন্যান্য সমর্থক সংগঠনগুলো, যাদের ওপর ইসরায়েলের হামলা ও মার্কিন সমর্থন সরাসরি
প্রভাব ফেলেছে। এভাবেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সামরিক ও কূটনৈতিক সক্ষমতা হ্রাস করে তাকে সীমিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৯. সংঘাতের বিস্তার ও নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান হামলা ও পাল্টা হামলা খুব দ্রুত পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে হিজবুল্লাহ, হুতি বিদ্রোহী এবং সিরিয়া যদি সরাসরি সংঘাতে জড়ায়, তাহলে এটি আঞ্চলিক ও বহুসীমান্ত যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। এতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো অস্থির ও অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে, মানবিক সংকট বাড়বে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি ও নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তৎপরতা জরুরি। ১০. সংলাপের সম্ভাবনা ও গাদ্দাফির উদাহরণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে সংলাপের সম্ভাবনা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। যদিও ওয়াশিংটন আবার আলোচনার জন্য আগ্রহী, ইরান আত্মসমর্পণের বিনিময়ে আলোচনা করতে চায় না। অনেক ইরানি নেতাই লিবিয়ার সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির উদাহরণ টেনে আনছেন, যিনি ২০০৩ সালে পারমাণবিক কর্মসূচি ত্যাগ করার পরও ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধে পতিত ও নিহত হন। এ ঘটনাটি ইরানকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, আত্মসমর্পণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নয় বরং দুর্বলতা দেখালে আরও বড় হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। তাই ইরান নিজের শক্তি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কড়া অবস্থান নিয়েছে। সবশেষে ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাত কেবল দুই দেশের মধ্যকার বিবাদ নয়; এটি পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক শান্তির জন্য একটি গভীর সংকটের প্রতীক। বর্তমান উত্তেজনা দ্রুত শীতল করে কূটনৈতিক পথই একমাত্র বিকল্প, যা স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।
ধরনের অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে। ২. ইরানের পাল্টা আক্রমণ ইরান দ্রুত পাল্টা হামলা চালিয়ে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ১০০টিরও বেশি ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এই হামলায় ইসরায়েলে অন্তত তিনজন নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়েছে। সংঘাতের এই পরিধি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনত করেছে। পাশাপাশি, ইরান আরও হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে, যা আঞ্চলিক অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে। ৩. বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য বৃদ্ধি ইরান-ইসরায়েলের তীব্র সংঘাতের কারণে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যদি মধ্যপ্রাচ্যে এই উত্তেজনা অব্যাহত থাকে, তবে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারেরও বেশি ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সংকট তৈরি হতে পারে, কারণ
তেলের দাম বৃদ্ধি বিভিন্ন দেশের উৎপাদন খরচ ও মূল্যস্তর বাড়িয়ে দেয় এবং বিশ্ববাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে দেয়। ৪. ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ইরান চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ রয়েছে, নতুবা আরও ভয়ঙ্কর ও ধ্বংসাত্মক হামলা শুরু হতে পারে। তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণের দাবি জানিয়েছেন, যা অনেক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের মতে বাস্তবে অসম্ভব এবং অগ্রহণযোগ্য। কারণ ইরানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব পারমাণবিক ক্ষমতা তাদের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির মূল ভিত্তি হিসেবে দেখে, তাই তারা সহজে এই দাবি মানবে না। ট্রাম্পের এই কঠোর অবস্থান সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে। ৫. যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সমর্থন প্রকাশ্যে ওয়াশিংটন
বারবার জোর দিয়ে বলেছে যে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চায় এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষায় সম্পূর্ণ সমর্থন দিতে প্রস্তুত। তবে বাস্তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এবং সেনাবাহিনী গোপনভাবেও ইসরায়েলকে অত্যাধুনিক তথ্য ও অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে। এই গোপনীয় সহযোগিতা সংঘাতকে আরও জটিল ও বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, কারণ এটি ইরানের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং প্রতিহিংসামূলক হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে। এর ফলে সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী ও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ৬. ইরানে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলমান এই সংঘাতে ইরানে রক্ষণশীল ও উদারপন্থিদের মধ্যে গভীর রাজনৈতিক ও আদর্শগত বিভাজন দেখা দিয়েছে। উদারপন্থিরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসার পক্ষে, যাতে দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা কমানো যায় এবং অর্থনৈতিক
সংকট মোকাবিলা করা যায়। তবে কট্টরপন্থিরা মনে করেন আত্মসমর্পণ মানে দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আপস এবং দুর্বলতা প্রদর্শন, যা তাদের কাছে অসম্ভব। এই দ্বন্দ্ব ইরানের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলেছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ নীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি প্রভাবিত করছে। ৭. মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা ও হিজিবল্লাহর দুর্বলতা এদিকে ইসরায়েল হামাস ও হিজবুল্লাহকে কঠোর প্রতিহত করে তাদের অনেকটাই কোণঠাসা করে রেখেছে। পূর্বে সিরিয়ায় ইরানের শক্তিশালী উপস্থিতি ছিল, যা আজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার খবর মিত্র শক্তিগুলোর মনোবলকে প্রভাবিত করেছে। সিরিয়া ও ইরানের অন্য মিত্ররা এখন অনেকটাই দুর্বল ও অসহায় অবস্থায় রয়েছে, যা ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব কমিয়ে দিয়েছে
এবং মধ্যপ্রাচ্যে তার কৌশলগত অবস্থান ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ৮. সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে পারমাণবিক কর্মসূচিতে অগ্রগতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংঘাতের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির দ্রুত অগ্রগতি। ইসরায়েল কোনো পরিস্থিতিতেই চায় না ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হয়ে উঠুক, কারণ তা মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্য পুরোপুরি পরিবর্তন করে দেবে। এই কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একদিকে ইরানের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের দাবি জানাচ্ছে, অন্যদিকে ইসরায়েলকে সহযোগিতা দিয়ে ইরানের ওপর কঠোর হামলা চালাচ্ছে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের এই যৌথ কৌশল ইরানের প্রধান শক্তি হিসেবে বিবেচিত ‘প্রতিরোধ অক্ষ’ বা সহায়ক গোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হিজবুল্লাহ, সিরিয়া ও অন্যান্য সমর্থক সংগঠনগুলো, যাদের ওপর ইসরায়েলের হামলা ও মার্কিন সমর্থন সরাসরি
প্রভাব ফেলেছে। এভাবেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সামরিক ও কূটনৈতিক সক্ষমতা হ্রাস করে তাকে সীমিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৯. সংঘাতের বিস্তার ও নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান হামলা ও পাল্টা হামলা খুব দ্রুত পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে হিজবুল্লাহ, হুতি বিদ্রোহী এবং সিরিয়া যদি সরাসরি সংঘাতে জড়ায়, তাহলে এটি আঞ্চলিক ও বহুসীমান্ত যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। এতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো অস্থির ও অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে, মানবিক সংকট বাড়বে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি ও নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তৎপরতা জরুরি। ১০. সংলাপের সম্ভাবনা ও গাদ্দাফির উদাহরণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে সংলাপের সম্ভাবনা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। যদিও ওয়াশিংটন আবার আলোচনার জন্য আগ্রহী, ইরান আত্মসমর্পণের বিনিময়ে আলোচনা করতে চায় না। অনেক ইরানি নেতাই লিবিয়ার সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির উদাহরণ টেনে আনছেন, যিনি ২০০৩ সালে পারমাণবিক কর্মসূচি ত্যাগ করার পরও ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধে পতিত ও নিহত হন। এ ঘটনাটি ইরানকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, আত্মসমর্পণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নয় বরং দুর্বলতা দেখালে আরও বড় হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। তাই ইরান নিজের শক্তি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কড়া অবস্থান নিয়েছে। সবশেষে ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাত কেবল দুই দেশের মধ্যকার বিবাদ নয়; এটি পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক শান্তির জন্য একটি গভীর সংকটের প্রতীক। বর্তমান উত্তেজনা দ্রুত শীতল করে কূটনৈতিক পথই একমাত্র বিকল্প, যা স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।