
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

ধর্ষণ নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের মন্তব্যের নিন্দা সরকারের

বাংলাদেশিকে নির্যাতনের পর মৃত ভেবে সীমান্তে ফেলে গেল বিএসএফ

সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের বাসায় অভিযান

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক ৬২০২ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ

‘সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা মানে স্বাধীন গণমাধ্যমের পথকে রুদ্ধ করা’

স্ত্রীসহ সাবেক কর কমিশনার রঞ্জিতের ১২৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

প্রশান্ত কুমার হালদারের ৩ সহযোগীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
১২ কোটি টাকার ফ্ল্যাটে এনবিআর কর্মকর্তা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যুগ্ম কমিশনার শাহ মোহাম্মদ মারুফ। ২০১০ সালে ২৮তম বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। চাকরি জীবনে (বর্তমানে ৫ম গ্রেড) বেতন-ভাতা বাবদ সাকুল্যে তার আয় প্রায় ৮০ লাখ টাকা। অথচ তার আয়কর নথিতে মোট সম্পদের পরিমাণ চার কোটি টাকার বেশি। পরিবার নিয়ে বসবাস দেশের অভিজাত এলাকা বারিধারা কূটনৈতিক জোনের ১২ কোটি টাকা দামের ফ্ল্যাটে। স্ত্রীর নামে তিনি ফ্ল্যাটটি কিনলেও এখনো নিবন্ধন করেননি। নিজ ও স্ত্রীর ব্যবহারের জন্য আছে আলাদা বিলাসবহুল গাড়ি। নামে-বেনামে গড়েছেন অবৈধ সম্পদ। সম্প্রতি তার ও স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে আয়কর গোয়েন্দারা। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
কর গোয়েন্দা ইউনিটের কমিশনার
আব্দুর রকিবের কাছে জানতে চাইলে শাহ মোহাম্মদ মারুফের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এর বাইরে আর কিছু বলতে অপারগতা জানান। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ-গোপালগঞ্জ বাড়ি হওয়ার দাপটে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর পরিচয়ে মাত্র ৭-৮ বছরের ব্যবধানে অবৈধ পথে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি। অভিযোগের সত্যতার পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বর্তমানে বগুড়া কর অঞ্চলের সিরাজগঞ্জ সার্কেলে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন তিনি। এ নিয়ে খোদ এনবিআরের ভেতরে-বাইরে চলছে গুঞ্জন। একাধিক সূত্রে উল্লিখিত তথ্য পাওয়া গেছে। টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ কর কর্মকর্তারা বড় ব্যবসায়ীদের যেমন কর ফাঁকিতে সহায়তা
করেন, তেমন নিজেরা অবৈধ আয়কে বৈধ করতে আয়কর ফাইলে জালিয়াতি করেন। আয়কর গোয়েন্দারা তার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেলে তাকে অবশ্যই বিভাগীয় শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। একই সঙ্গে এটা যেহেতু দুর্নীতি, তাই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন. ‘যারা ন্যায় ও সততার সঙ্গে কর দিতে চান তাদের জন্য আয়কর অফিসের দরজা পার হওয়া কঠিন, আর যারা অসৎভাবে কর ফাঁকি দিতে চায় তাদের জন্য স্বর্গ। এটা তারই একটা বড় দৃষ্টান্ত।’ অনুসন্ধানে যুগ্ম কমিশনার শাহ মোহাম্মদ মারুফের নামে-বেনামে সম্পদ কেনার সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। ব্যাংকেও তার জমা আছে কোটি টাকা। ৮০ হাজার টাকা বেতনের
সরকারি কর্মচারীর রাজধানীর বারিধারার কূটনৈতিক জোনে ১২ কোটি টাকার ফ্ল্যাট কেনার খবর নিয়ে এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যেও চলছে নানা আলোচনা। এই কর্মকর্তা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্পদ কিনেছেন। তার সম্পদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে কর গোয়েন্দারা। এখন পর্যন্ত তারা শাহ মারুফের নামে-বেনামে (নিজ, স্ত্রী, ভাই-বোনের নামে) প্রায় ৩০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছেন। তবে মারুফের আয়কর নথিতে সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তার চাকরি ছাড়া আয়ের অন্য কোনো উৎস নেই। প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে সরেজমিন জানা গেছে, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় ১১ নম্বর সড়কে নজরকাড়া অভিজাত দশতলা একটি ভবনের নাম ‘বিটিআই উইন্ড ফ্লাওয়ার’। এই ভবনের সাততলায় পরিবার নিয়ে থাকেন
শাহ মারুফ। প্রায় সোয়া আট কাঠা জমিতে নির্মিত এই ভবনের প্রতিটি তলায় একটি করে ইউনিট। আয়তন ৩ হাজার দুইশ বর্গফুট। বিদেশি বাথরুম ফিটিংস ও দামি আসবাবপত্রে সাজানো অ্যাপার্টমেন্ট। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানিয়েছেন, ভেতরে ঢুকলে যে কারও চোখ আটকে যাবে। ফ্ল্যাটটির ইন্টেরিয়রেই ব্যয় করা হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। ভবনটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে-বাড়িটির প্রতি বর্গফুট জায়গার দাম ৪০ হাজার টাকা। সে হিসাবে মারুফের ফ্ল্যাটটির দাম হয় ১২ কোটি টাকার বেশি। আড়াই বছর আগে স্ত্রীর নামে ফ্ল্যাটটি কিনে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তবে এক সময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা (বর্তমানে গৃহিণী) স্ত্রীর আয়কর ফাইলসংক্রান্ত জটিলতার কারণে এখনো
ফ্ল্যাটটি নিবন্ধন হয়নি বলে তথ্য পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মারুফের স্ত্রী সাদিয়া আফরিন চাকরিজীবী হিসাবে আয়কর ফাইল খোলেন। আয়কর নথি বলছে, সাদিয়া ইউনিয়ন ডেভেলপমেন্ট নামে একটি বেসরকারি আবাসন কোম্পানিতে চাকরি করেন। রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত ওই আবাসন কোম্পানির অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় সাদিয়া এই কোম্পানিতে চাকরি করলেও এখন নেই। প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা জানান, বছরখানেক আগে চাকরি ছেড়েছেন সাদিয়া। সবশেষ তিনি বিক্রয় বিভাগের সহকারী ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে কর্মহীন সাদিয়ার আয়কর নথিতে সম্পদ এক কোটি ৭৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ তার বৈধ আয়ের সঙ্গে ব্যয় ও ১২ কোটি টাকায় ফ্ল্যাট কেনার তথ্য সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আবার পৈতৃক সূত্রে তার
এই ফ্ল্যাট প্রাপ্তির কোনো তথ্য-প্রমাণও নেই। কর গোয়েন্দারা জানান, তদন্তে পূর্বাচলের রূপগঞ্জ অংশের গোলাপ মৌজায় মারুফ ও তার দুই ভাইয়ের নামে ১৫ কাঠা জমির তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া উত্তরায় ১৫ নম্বর সেক্টরে ৩ নম্বর রোডের ১২ নম্বর প্লটটি মারুফের (তিন কাঠা)। আর নিকুঞ্জে ৫ নম্বর রোডের ৪৮ নম্বর প্লটটি (তিন কাঠা) বোনের নামে কিনেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনের নামে আছে দুটি গাড়ি। স্ত্রীর গাড়ির দাম ৮০ লাখ টাকা। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বিপুল সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে শাহ মারুফের বিরুদ্ধে। তদন্তে এসব সম্পদ অবৈধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ কর দিতে হবে। কর গোয়েন্দারা ইতোমধ্যে শাহ মোহাম্মদ মারুফকে শুনানিতে ডেকে সম্পদের তথ্য-উপাত্ত দাখিল করতে বলেছেন। তবে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসাবে পরিচিত একজন অসৎ কর্মকর্তাকে এখনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দায়িত্বে রাখা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সাবেক আয়কর কমিশনার ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তদন্তে যে কোনো সরকারি কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একজন সরকারি কর্মকর্তা চাকরি করে বৈধ পথে এত সম্পদের মালিক হওয়া সম্ভব নয়। এত সম্পদ করে থাকলে নিশ্চয়ই তিনি অবৈধ পথ অবলম্বন করেছেন। খোদ এনবিআর কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গোপালগঞ্জের পরিচিতিতে দাপটের সঙ্গে চাকরি করেন শাহ মারুফ। কর অঞ্চল-৪, কর অঞ্চল-৫, কর অঞ্চল-১২ ও নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের মতো লোভনীয় জায়গায় পোস্টিং নেন। করদাতাদের কর ফাঁকি দিতে সহযোগিতা করে তিনি অঢেল অবৈধ অর্থ আয় করেন। অবৈধ পথে উপার্জিত এই অর্থ বৈধ করতে তিনি নানা কায়দায় নামে-বেনামে সম্পদ কেনেন। এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানান, কর অঞ্চল-৫ এ দায়িত্ব পালনের সময় তিনি অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যুগ্ম কমিশনার শাহ মোহাম্মদ মারুফের মোবাইল ফোনে শনিবার একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ প্রতিবেদকের পরিচয় দিয়ে একই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়ে বক্তব্য চাইলেও তিনি জবাব দেন। বারিধারায় বাসায় গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
আব্দুর রকিবের কাছে জানতে চাইলে শাহ মোহাম্মদ মারুফের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এর বাইরে আর কিছু বলতে অপারগতা জানান। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ-গোপালগঞ্জ বাড়ি হওয়ার দাপটে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর পরিচয়ে মাত্র ৭-৮ বছরের ব্যবধানে অবৈধ পথে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি। অভিযোগের সত্যতার পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বর্তমানে বগুড়া কর অঞ্চলের সিরাজগঞ্জ সার্কেলে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন তিনি। এ নিয়ে খোদ এনবিআরের ভেতরে-বাইরে চলছে গুঞ্জন। একাধিক সূত্রে উল্লিখিত তথ্য পাওয়া গেছে। টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ কর কর্মকর্তারা বড় ব্যবসায়ীদের যেমন কর ফাঁকিতে সহায়তা
করেন, তেমন নিজেরা অবৈধ আয়কে বৈধ করতে আয়কর ফাইলে জালিয়াতি করেন। আয়কর গোয়েন্দারা তার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেলে তাকে অবশ্যই বিভাগীয় শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। একই সঙ্গে এটা যেহেতু দুর্নীতি, তাই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন. ‘যারা ন্যায় ও সততার সঙ্গে কর দিতে চান তাদের জন্য আয়কর অফিসের দরজা পার হওয়া কঠিন, আর যারা অসৎভাবে কর ফাঁকি দিতে চায় তাদের জন্য স্বর্গ। এটা তারই একটা বড় দৃষ্টান্ত।’ অনুসন্ধানে যুগ্ম কমিশনার শাহ মোহাম্মদ মারুফের নামে-বেনামে সম্পদ কেনার সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। ব্যাংকেও তার জমা আছে কোটি টাকা। ৮০ হাজার টাকা বেতনের
সরকারি কর্মচারীর রাজধানীর বারিধারার কূটনৈতিক জোনে ১২ কোটি টাকার ফ্ল্যাট কেনার খবর নিয়ে এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যেও চলছে নানা আলোচনা। এই কর্মকর্তা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্পদ কিনেছেন। তার সম্পদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে কর গোয়েন্দারা। এখন পর্যন্ত তারা শাহ মারুফের নামে-বেনামে (নিজ, স্ত্রী, ভাই-বোনের নামে) প্রায় ৩০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছেন। তবে মারুফের আয়কর নথিতে সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তার চাকরি ছাড়া আয়ের অন্য কোনো উৎস নেই। প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে সরেজমিন জানা গেছে, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় ১১ নম্বর সড়কে নজরকাড়া অভিজাত দশতলা একটি ভবনের নাম ‘বিটিআই উইন্ড ফ্লাওয়ার’। এই ভবনের সাততলায় পরিবার নিয়ে থাকেন
শাহ মারুফ। প্রায় সোয়া আট কাঠা জমিতে নির্মিত এই ভবনের প্রতিটি তলায় একটি করে ইউনিট। আয়তন ৩ হাজার দুইশ বর্গফুট। বিদেশি বাথরুম ফিটিংস ও দামি আসবাবপত্রে সাজানো অ্যাপার্টমেন্ট। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানিয়েছেন, ভেতরে ঢুকলে যে কারও চোখ আটকে যাবে। ফ্ল্যাটটির ইন্টেরিয়রেই ব্যয় করা হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। ভবনটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে-বাড়িটির প্রতি বর্গফুট জায়গার দাম ৪০ হাজার টাকা। সে হিসাবে মারুফের ফ্ল্যাটটির দাম হয় ১২ কোটি টাকার বেশি। আড়াই বছর আগে স্ত্রীর নামে ফ্ল্যাটটি কিনে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তবে এক সময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা (বর্তমানে গৃহিণী) স্ত্রীর আয়কর ফাইলসংক্রান্ত জটিলতার কারণে এখনো
ফ্ল্যাটটি নিবন্ধন হয়নি বলে তথ্য পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মারুফের স্ত্রী সাদিয়া আফরিন চাকরিজীবী হিসাবে আয়কর ফাইল খোলেন। আয়কর নথি বলছে, সাদিয়া ইউনিয়ন ডেভেলপমেন্ট নামে একটি বেসরকারি আবাসন কোম্পানিতে চাকরি করেন। রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত ওই আবাসন কোম্পানির অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় সাদিয়া এই কোম্পানিতে চাকরি করলেও এখন নেই। প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা জানান, বছরখানেক আগে চাকরি ছেড়েছেন সাদিয়া। সবশেষ তিনি বিক্রয় বিভাগের সহকারী ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে কর্মহীন সাদিয়ার আয়কর নথিতে সম্পদ এক কোটি ৭৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ তার বৈধ আয়ের সঙ্গে ব্যয় ও ১২ কোটি টাকায় ফ্ল্যাট কেনার তথ্য সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আবার পৈতৃক সূত্রে তার
এই ফ্ল্যাট প্রাপ্তির কোনো তথ্য-প্রমাণও নেই। কর গোয়েন্দারা জানান, তদন্তে পূর্বাচলের রূপগঞ্জ অংশের গোলাপ মৌজায় মারুফ ও তার দুই ভাইয়ের নামে ১৫ কাঠা জমির তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া উত্তরায় ১৫ নম্বর সেক্টরে ৩ নম্বর রোডের ১২ নম্বর প্লটটি মারুফের (তিন কাঠা)। আর নিকুঞ্জে ৫ নম্বর রোডের ৪৮ নম্বর প্লটটি (তিন কাঠা) বোনের নামে কিনেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনের নামে আছে দুটি গাড়ি। স্ত্রীর গাড়ির দাম ৮০ লাখ টাকা। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বিপুল সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে শাহ মারুফের বিরুদ্ধে। তদন্তে এসব সম্পদ অবৈধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ কর দিতে হবে। কর গোয়েন্দারা ইতোমধ্যে শাহ মোহাম্মদ মারুফকে শুনানিতে ডেকে সম্পদের তথ্য-উপাত্ত দাখিল করতে বলেছেন। তবে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসাবে পরিচিত একজন অসৎ কর্মকর্তাকে এখনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দায়িত্বে রাখা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সাবেক আয়কর কমিশনার ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তদন্তে যে কোনো সরকারি কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একজন সরকারি কর্মকর্তা চাকরি করে বৈধ পথে এত সম্পদের মালিক হওয়া সম্ভব নয়। এত সম্পদ করে থাকলে নিশ্চয়ই তিনি অবৈধ পথ অবলম্বন করেছেন। খোদ এনবিআর কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গোপালগঞ্জের পরিচিতিতে দাপটের সঙ্গে চাকরি করেন শাহ মারুফ। কর অঞ্চল-৪, কর অঞ্চল-৫, কর অঞ্চল-১২ ও নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের মতো লোভনীয় জায়গায় পোস্টিং নেন। করদাতাদের কর ফাঁকি দিতে সহযোগিতা করে তিনি অঢেল অবৈধ অর্থ আয় করেন। অবৈধ পথে উপার্জিত এই অর্থ বৈধ করতে তিনি নানা কায়দায় নামে-বেনামে সম্পদ কেনেন। এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানান, কর অঞ্চল-৫ এ দায়িত্ব পালনের সময় তিনি অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যুগ্ম কমিশনার শাহ মোহাম্মদ মারুফের মোবাইল ফোনে শনিবার একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ প্রতিবেদকের পরিচয় দিয়ে একই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়ে বক্তব্য চাইলেও তিনি জবাব দেন। বারিধারায় বাসায় গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।