একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস: আমাদের দায়বোধ ও প্রত্যাশা – ইউ এস বাংলা নিউজ




একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস: আমাদের দায়বোধ ও প্রত্যাশা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৬:৩৮ 70 ভিউ
“মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে বাংলার মানুষের ভূমিকাপত্র। মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের পথে হাজার বছরের যে দীর্ঘযাত্রা, এই ভূ-খণ্ডের মানুষের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস হচ্ছে তার সারাৎসার।” বন্ধুর এ উক্তিটি মুক্তিযুদ্ধের গভীরতা ও আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অনিবার্যতাকে তুলে ধরে। স্বাধীনতার ৫৫ বছরে এসে এই সত্য আরও জোরালোভাবে উপলব্ধি করার প্রয়োজন যে, মুক্তিযুদ্ধ কেবল এক ঐতিহাসিক অধ্যায় নয়, বরং আমাদের অস্তিত্ব, সংস্কৃতি, এবং সার্বভৌমত্বের ভিত্তি। ইতিহাসের প্রবাহ: সংস্কৃতি ও রাজনীতির মেলবন্ধন ষাটের দশকের রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, কীভাবে সংস্কৃতি আর রাজনীতি হাত ধরাধরি করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বুনেছিল। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলার মানুষ তাদের জাতিগত পরিচয়ের শেকড় খুঁজে পায়। এই আন্দোলন প্রমাণ করে, মানুষের প্রকৃত পরিচয়

তার ভাষা, সংস্কৃতি, ও নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসে নিহিত। ১৯৫২ সালের এক দশক পর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলার সাংস্কৃতিক চেতনাকে দমাতে চেয়েছিল। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রজন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের মাধ্যমে এই চেষ্টার বিরুদ্ধে বাঙালির শক্ত অবস্থান স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ছয়দফা এবং পরবর্তীতে ১৯৭০ সালের নির্বাচন বাংলার মুক্তির চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছায়। মুক্তিযুদ্ধকালীন সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুধুমাত্র সশস্ত্র সংগ্রাম নয়, এটি ছিল এক বহুমাত্রিক প্রতিরোধ—রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ, এবং মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থার ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি বিশ্বকে মুক্তিযুদ্ধের ন্যায্যতা সম্পর্কে সচেতন করেছিল। অন্যদিকে, জহির রায়হানের স্টপ জেনোসাইড এবং মুক্তিসংগ্রামী

শিল্পী সংস্থার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড শরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মানসিক শক্তি যুগিয়েছে। ইতিহাস চর্চার চ্যালেঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। তবে ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র এবং রাজনৈতিক বিভেদ আমাদের ইতিহাসচর্চার পরিসরকে সংকুচিত করেছে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের প্রচারিত বিকৃত ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্মে কুপ্রভাব ফেলেছে। আজও আমাদের দেখতে হয়, কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়, কীভাবে ইতিহাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। সাতই মার্চের ভাষণ, জাতীয় পতাকা, কিংবা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে অস্বীকার করার চেষ্টা আমাদের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করার শামিল। ইতিহাসের পাঠ জরুরি কেন? ইতিহাসকে উপেক্ষা করার অর্থ হলো ভবিষ্যতের জন্য অন্ধকার বেছে নেওয়া। তরুণ প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। এটি করতে হবে শুধু

বই পড়ে নয়, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং ইতিহাসের নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের জাতির পরিচয়ের ভিত্তি। এটি নিয়ে বিভ্রান্তি কিংবা অবহেলা আমাদের জাতীয় অস্তিত্বকেই দুর্বল করে। তাই, প্রয়োজন সত্যনিষ্ঠ ইতিহাসচর্চার, যা হবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আলোর পথপ্রদর্শক। আমরা যদি ইতিহাসের আলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তবেই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়িত হবে। সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মূল্যবোধ রক্ষায় আমাদের ভূমিকা কি হতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে আমাদের প্রতিদিনের কাজের মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের যে দায়িত্বের ভার দিয়েছে, সেটি পালন করার জন্য প্রয়োজন সততা, নিষ্ঠা, এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
‘ওরা বন্দুক দেখিয়ে আমাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে’ কালুরঘাট সেতুতে প্রাইভেটকার ও অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ৩ বাড়ল স্বর্ণের দাম শি জিনপিং ও ট্রাম্পের ফোনালাপ, যে কথা হলো ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস বকেয়া থাকা দুঃখজনক: গণসংহতি আন্দোলন কুরবানির খুশির ঈদে পরিমিত খাওয়ায় থাকুক প্রশান্তি আসামে ‘বিদেশি’ বলে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া অনেকে ফিরেছেন, ১৪৫ জন নিখোঁজ- সরেজমিন প্রতিবেদন নারীকে লাথি মারা বহিষ্কৃত জামায়াত নেতাকে ফুলেল শুভেচ্ছা কী বার্তা দেয় প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ, ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় ‘বিচারকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ছিল ষোড়শ সংশোধনী মামলার মূল উদ্দেশ্য’ প্রস্তুত ২০ হাজার কর্মী, কুরবানির বর্জ্য দিনেই সরাতে চায় ঢাকার দুই সিটি গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে এনসিপি ও চীনা রাষ্ট্রদূতের মধ্যে সংলাপ পবিত্র হজের খুতবা দিলেন ড. সালেহ আল হুমাইদ গাজার পথে গ্রেটা, যা বলল ইসরাইল কুরবানির পশু কেনার পর শরিকের সংখ্যা বাড়ানো যাবে কি? যে কারণে কুরবানি না করার আদেশ দিল মরক্কো সরকার শরিকি কুরবানিতে কেউ হারাম টাকায় অংশ নিলে কুরবানি হবে কি? ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’, হয় না সত্যি সবার দুই ভাতিজিকে কুপিয়ে হত্যা, ঘাতক চাচা গ্রেপ্তার খোলা ট্রাক-পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ