যে কারণে বিপাকে পড়েছেন কানাডার অস্থায়ী অভিবাসীরা – ইউ এস বাংলা নিউজ




যে কারণে বিপাকে পড়েছেন কানাডার অস্থায়ী অভিবাসীরা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ | ১১:৫৮ 17 ভিউ
কানাডায় স্থায়ী হওয়ার একটি পথ ছিল শিক্ষার্থী হিসেবে এসে গ্র্যাজুয়েশনের পর কাজ খুঁজে নেওয়া। অন্য একটি পথ হলো চাকরি নিয়ে দেশটিতে আসা। এই দুই পথেই সবচেয়ে বেশি অভিবাসী কানাডায় এসেছেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তারা স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পেয়েছেন। আর সর্বশেষ পথটি হলো আশ্রয়প্রার্থী হয়ে দেশটিতে থাকা। করোনাভাইরাস মহামারির পর কানাডায় শ্রমিকসংকটের কারণে দেশটির কর্তৃপক্ষ অভিবাসীদের অস্থায়ীভাবে দেশটিতে থাকার অনুমতি দেয়। দেশটিতে যে ৩০ লাখ মানুষের কোনো না কোনো ধরনের অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি আছে, তাদের ২২ লাখই এসেছেন গত দুই বছরে। কানাডার জনসংখ্যা ৪ কোটি ১৩ লাখ। এর ৬ দশমিক ৮ শতাংশই অস্থায়ী বসবাসকারী, যে হার ২০২২ সালে ছিল ৩

দশমিক ৫ শতাংশ। কানাডায় এখনও যথেষ্ট কর্মসংস্থান হচ্ছে না। দেশটিতে বেকারত্বের হার ৬ শতাংশ। এ হার কমাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। আর অস্থায়ী ভিত্তিতে যারা বসবাস করছেন, তাদের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বেশি—১৪ শতাংশ। বেশির ভাগ শহরে আবাসনের সংকট রয়েছে। আর স্বাস্থ্যসুবিধাও অনেক প্রদেশে চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সমালোচকেরা বলছেন, অস্থায়ী ভিত্তিতে বসবাসকারীরা পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন করে তুলেছেন। অভিবাসনের প্রতি জনমতও দিনে দিনে তেতো হচ্ছে। এর ফলাফল হিসেবে অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার চলতি বছরের শুরুতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এর একটি হলো, শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা কমিয়ে আনা। আরেকটি পদক্ষেপ হলো, একটি কোম্পানি সর্বোচ্চ কতজন অস্থায়ী বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ করতে পারবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া। এসব

পদক্ষেপের মূল লক্ষ্যই হলো অভিবাসীর সংখ্যা কমিয়ে আনা। সরকারি এসব পদক্ষেপের ফলে যেসব অস্থায়ী শ্রমিকের কাজের অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়েছে বা শেষ হতে চলেছে, তাদের সেই অনুমতির নবায়ন না–ও হতে পারে। এরাই সবাই সাচিনদীপ সিংয়ের মতো অস্থায়ীভাবে কানাডায় বাস করছেন। অভিবাসনে বিধিনিষেধ আরোপ করে আগামী মাসে সরকার আরও কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করবে বলে কথা রয়েছে। কানাডার প্রতি ৫ জন বাসিন্দার ১ জন বিদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন। বেশ অনেক দিন ধরেই বিদেশি অভিবাসীদের জন্য কানাডার দরজা খোলা। শ্রমের সংকট কাটিয়ে ওঠা ও জনসংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে দেশটি অভিবাসনকে উৎসাহিত করেছে। তবে পরিস্থিতি এখন পাল্টাচ্ছে। জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কানাডিয়ান মনে করেন, সরকার খুব অল্পদিনের মধ্যে

খুব বেশিসংখ্যক অভিবাসীকে সে দেশে আসার অনুমতি দিয়েছে। আগস্টে পরিচালিত এক জরিপে বলা হয়েছে, দুই-তৃতীয়াংশ কানাডিয়ানই মনে করেন যে সরকার বর্তমান অভিবাসন নীতিমালার কারণেই বিপুলসংখ্যক মানুষ কানাডায় আসার সুযোগ পাচ্ছেন। অনেক অভিবাসী অবশ্য মনে করেন, তাদের অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, তাদের কানাডায় ডেকে আনা হয়েছে, কিন্তু কাজের অনুমতির নবায়ন না হলে তাদের চলে যেতে হবে—এমন পরিস্থিতির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। কানাডায় অভিবাসন নিয়ে এখন যা চলছে, তা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অভিবাসনের চিত্র তুলে ধরছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কমলা হ্যারিসও তার পার্টির আগের অবস্থানের চেয়ে কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন। ইউরোপের অনেক দেশে অভিবাসনবিরোধী কট্টর রাজনৈতিক

দল, এমনকি বর্ণবাদী দলের উত্থান হচ্ছে। কানাডায় অনেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য মনে করেন, দেশটিতে আবাসন ও স্বাস্থ্য সুবিধার যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তার জন্য অভিবাসীদের দায়ী না করে বরং এই দুই খাতে সরকারের স্বল্প বিনিয়োগের দিকে নজর ফেরানো দরকার। কানাডার কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা অভিবাসনের ক্ষেত্রে আরও বেশি নমনীয় নীতি নিতে চায়। এর মানে হলো, যখন শ্রমিক দরকার হবে, তখন অভিবাসী আসার সুযোগ দেওয়া হবে। দেশটির কর্মসংস্থানমন্ত্রী র‍্যান্ডি বয়সোনল্ট বলেন, ‘এটা অনেকটা অ্যাকর্ডিয়নের মতো কাজ করবে। যখন অনেক বেশি কর্ম খালি থাকবে, তখন আমরা বেশি করে মানুষ আনব। আর অর্থনীতির অবস্থা ভালো না থাকলে লোক আসা কঠিন হবে।’ কিন্তু সাচিনদীপ সিংয়ের মতো ভারতীয়রা কাজের অনুমতি

হারিয়ে এখন বেশ বিপদে রয়েছেন। তিনি ও তার পরিবার ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় করেছেন অফিস ব্যবস্থাপনা ও অতিথিসেবা বিষয়ে ডিগ্রি নেওয়ার জন্য। ভেবেছিলেন, এই ডিগ্রি তাকে কানাডায় একটি ভালো অবস্থান গড়তে সাহায্য করবে। কিন্তু এখন তাকে অন্য বিকল্পের কথা ভাবতে হচ্ছে। সাচিনদীপ আবার কলেজে ফিরে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাকে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হবে। কিছু মানুষ বেআইনিভাবে বাস করছেন, আর ক্লিনার বা রেস্তোরাঁয় কাজ করে খুব অল্প বেতন নিয়ে জীবন চালাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার অপরাধীদের খপ্পরে পড়েন। অনেকে যোগ্য না হলেও আশ্রয় প্রার্থনা করেন। সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে ১৩ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আশ্রয় প্রার্থনা

করেছেন। গত বছরের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল এর অর্ধেক। অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ঘটনা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে বলে দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
হলিউডের দুই ছবি বাংলাদেশের পর্দায় বাংলাদেশ সফরে আসার পরিকল্পনা ব্রিটিশ রাজার গ্যাসের জন্য ২০ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছি বিএনপি-ইউনূস যাই বলুক, আ.লীগের রাজনীতি করার সুযোগ নেই: পার্থ কর্মস্থলে পলাতক ১৮৭ পুলিশের বেতন বন্ধ, হচ্ছে মামলা গার্ডেন সিটিতে কুকুর-বিড়াল নিধন: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া শহীদ রনির মেয়ের ছবিসহ ফেসবুকে যা বললেন মীর স্নিগ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপি ও যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষে আহত অন্তত ২০ জন বিচ্ছেদ নিয়ে যা বললেন রাহমান পুত্র এবং মোহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত পাল্টালো যমুনা সাবেক মেয়র তাপসসহ ৩০ জনের নামে মামলা প্রেসক্লাবের সামনে অটোরিকশা চালকদের গণঅবস্থান আজ নিক্সনের সহযোগী যুবলীগ নেতা শামীম গ্রেফতার পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, মামলাও হচ্ছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ৩ শিক্ষার্থীর লাশ হস্তান্তর ভয়েস অফ আমেরিকার জরিপ: কী পদ্ধতিতে জরিপ করা হয়েছে ‘গ্যাসের জন্য জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে জ্বি স্যার, জ্বি স্যার বলতে হয়েছে’ ফের বাড়ল সোনার দাম শরীরে নতুন উল্কি অর্জুনের, কোন ইঙ্গিত দিলেন মালাইকা? স্বামীকে গোপন ভিডিও-ছবি পাঠাল সাবেক প্রেমিক, নববধূর আত্মহত্যা