সিসা লাউঞ্জে অভিযান ঘিরে লঙ্কাকাণ্ড – ইউ এস বাংলা নিউজ




সিসা লাউঞ্জে অভিযান ঘিরে লঙ্কাকাণ্ড

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৭ মে, ২০২৫ | ৮:৩৭ 63 ভিউ
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (নারকোটিক্স) সিসাবিরোধী বিশেষ অভিযান ঘিরে রীতিমতো লঙ্কাকাণ্ড ঘটেছে। রাজধানীর বনানীতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শেষরাত পর্যন্ত এ অভিযান চলে। এতে খোদ নারকোটিক্স মহাপরিচালকসহ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ সময় বিপুল পরিমাণ সিসা, হুঁকা (সিসা সেবনের উপকরণ) এবং মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। সূত্র জানায়, বহৃস্পতিবার নারকোটিক্স মহাপরিচালক হাসান মারুফ সিসা লাউঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য একাধিক টিম গঠন করে দেন। একপর্যায়ে তিনি নিজেও মধ্যরাতে ঘটনাস্থলে হাজির হন। নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযানকারী দলের সদস্যরা বনানী ১১ নম্বর রোডে অবস্থিত হেইজ নামের একটি সিসা লাউঞ্জে অভিযান চালান। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাইরে থেকে প্রধান ফটক তালাবদ্ধ রেখে ভেতরে সিসা সেবনের আসর বসানো হয়েছিল। একপর্যায়ে তালা ভেঙে

ভেতরে ঢোকার পর সেখানে এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য দেখা যায়। চিত্রজগতের উঠতি মডেল, নায়িকাসহ শতাধিক তরুণ-তরুণীকে রীতিমতো বেসামাল অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের কেউ কেউ মদ্যপ ছিলেন। লাউঞ্জের একটি কক্ষে কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে সিসা সেবন করতে দেখা যায়। মধ্যরাতে সেখানে অভিযান দলের উপস্থিতি দেখে তারা রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তারা নিজেদের মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের ঢাকাস্থ দূতাবাসের কর্মকর্তা পরিচয়ে মারমুখী হয়ে ওঠেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষে কয়েকজন তরুণীকে নিয়ে তারা ৬ জন সিসা সেবন করছিলেন। আকস্মিক সেখানে নারকোটিক্সের উপস্থিতি দেখে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এমনকি অভিযান টিমের সদস্যদের তারা মারতে উদ্যত হন। পরে খবর পেয়ে নারকোটিক্সের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে

উপস্থিত হন। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের কয়েকজন কর্মকর্তাও দোভাসীদের সঙ্গে নিয়ে সেখানে আসেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষে রাতেই তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। নারকোটিক্স জানায়, হেইজ সিসা লাউঞ্জ রাজধানীর সব থেকে বড় এবং কুখ্যাত মাদক স্পট হিসাবে পরিচিত। সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এর সঙ্গে জড়িতরা ব্যাপক ক্ষমতাধর হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ফলে এতদিন তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি। তবে বৃহস্পতিবার অভিযান চালানোর পর প্রতিষ্ঠানটির ১২ জন মালিকের সবার নাম উল্লেখ করে বনানী থানায় মামলা করা হয়েছে। আসামিরা হলেন-কাজী মোহাম্মদ সামি, নাজমুল সাকিল, চৌধুরী গোলাম আনাস, মোহাম্মদ আম্মার, মুফরাত হাসান ওরফে বান্টি, আল রহমান, সাদমান হোসেন, সাকিব হোসেন, সৈয়দ মুহাম্মদ

তাহমিদ আহসান ও আহমেদ মোস্তফা ওরফে রাসেল। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম ওরফে জসিম এবং ইমরান হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাঁড়াশি অভিযানের পর সেখান থেকে ২৬টি হুঁকা, সাত কেজি আমদানি নিষিদ্ধ সিসা ও মাদক বিক্রির নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রাতে বনানী ১১ নম্বর রোডের ৫০ নম্বর বাড়ির ১৩ তলায় অবস্থিত সিগনেচার লাউঞ্জ নামের আরেকটি কুখ্যাত সিসা লাউঞ্জে অভিযান চালানো হয়। মাদক ব্যবসার অভিযোগে সেখান থেকে চারজনকে গ্রেফতার করে নারকোটিক্স। তারা হলেন-স্বপন মিয়া, শাকিল, সিয়াম ও আ. রায়হান। এছাড়া তারেক জামিল নামের এক আসামি পলাতক রয়েছেন। সিগনেচার লাউঞ্জ থেকে পাঁচ কেজি সিসা, সিসা সেবনের কাজে ব্যবহৃত ২০টি হুঁকা এবং কয়েক

বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। সূত্র জানায়, অভিযানে নারকোটিক্স মহাপরিচালক হাসান মারুফ ছাড়াও পরিচালক অপারেশন অতিরিক্ত ডিআইজি বশির আহমেদ, অতিরিক্ত পরিচালক গোয়েন্দা মোহাম্মদ বদরুদ্দীন, ঢাকা মেট্রো উত্তর এবং দক্ষিণের উপপরিচালক শামীম আহমেদ ও মানজুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান (উত্তর) এবং আব্দুল হামিদসহ (দক্ষিণ) অন্তত ৩৫ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। নারকোটিক্সের এমন শক্ত উপস্থিতি দেখে গুলশান ও বনানী এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা দিগ্বিদিগ ছোটাছুটি শুরু করেন। কেউ কেউ তড়িঘড়ি আস্তানা বন্ধ করে পালিয়ে যান। অভিযান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নারকোটিক্সের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম বলেন, প্রচলিত আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সীমার বাইরে নিকোটিন পাওয়া গেলে সিসা মাদক হিসাবে চিহ্নিত। সিসার

বিরুদ্ধে অভিযানের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এ কারণে আমরা সিসা লাউঞ্জগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর বিরুদ্ধে আমাদের টানা অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রসঙ্গত, রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীতে গজিয়ে ওঠা সিসা লাউঞ্জগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। অথচ নানা সীমাবদ্ধতার অজুহাতে এতদিন এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি নারকোটিক্স। বিভিন্ন সময় লোকদেখানো অভিযান চালানো হলেও গ্রেফতারের আগেই জড়িতরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে ফের তাদের অপতৎপরতা শুরু হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, সিসায় দুই শতাংশের বেশি নিকোটিন পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী তা মাদক হিসাবে চিহ্নিত হয়। কিন্তু লাউঞ্জগুলোতে অতি উচ্চমাত্রার নিকোটিনযুক্ত

সিসা পরিবেশন করা হয়। এতে তরুণ-তরুণীদের একটি অংশ বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ফেনীতে অস্ত্র হাতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার শিশু পুত্রের ছবি ভাইরাল বিমানবন্দরে আগুন: ২৫০ কারখানার পণ্য ধ্বংসের শঙ্কা, আতঙ্কে গার্মেন্টস খাত শান্তি মিশনের লোভে টুর্কের ফাঁদে পা দিয়ে ধোঁকা খেল সেনাবাহিনী: ফিরছেন ১৩১৩ সদস্য টানা তৃতীয় দিনে শিল্পাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ড: সোনারগাঁওয়ে মেঘনা গ্রুপের চিনি কারখানায় আগুন হামাসকে অস্ত্র ছাড়তে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: গাজায় শান্তি চুক্তির প্রথম পর্যায় সফল সংবিধান অনুযায়ী ‘জুলাই সনদ’ অবৈধ এবং সমর্থনকারীর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান ৫ ঘন্টাতেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন, উল্টো বেড়েছে তীব্রতা: ইউনূস সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন বাংলাদেশ পুলিশের পর এবার বাংলাদেশি সেনা সদস্যদের ফেরত পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ সীমাহীন চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ী সমাজ: রোববার অর্ধদিবস বন্ধ থাকবে দেশের সব গাড়ির শোরুম আবারও বাংলাদেশের বিপদে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিল ভারত ঢালাও দরপতনে পুঁজিবাজারে ধস, এক সপ্তাহে উধাও ১৮ হাজার কোটি টাকা সাংবাদিক তামিম হত্যা মামলার আসামি ‘পলাতক’ বিএনপি নেতা রবি টকশোতে আবারও সরব ফোনের ছবি নিরাপদ রাখবেন যেভাবে ‘সতর্ক’ সরকারের উচ্চ সুদে দেড় বিলিয়ন ডলারের ঋণ দাবি না মানলে বৃহৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ১৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে কারখানার আগুন কবিরহাটে বিএনপি জামায়াত সংঘর্ষে আহত ১০ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে হামলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টর্চ লাইট জ্বালিয়ে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষ পাকিস্তানের হামলায় ৩ ক্রিকেটার নিহত, সিরিজ খেলবে না আফগানিস্তান