সাধারণ সভায় প্রশ্নের মুখে এনসিপির কয়েক জ্যেষ্ঠ নেতা – ইউ এস বাংলা নিউজ




সাধারণ সভায় প্রশ্নের মুখে এনসিপির কয়েক জ্যেষ্ঠ নেতা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২০ এপ্রিল, ২০২৫ | ৫:০৯ 33 ভিউ
দলের সাধারণ সভায় নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনেক নেতা। সভায় নবগঠিত দলটির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে বিতর্কিত কাজে জড়ানো, অজানা উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়া, দলের চেয়ে ব্যক্তির ভাবমূর্তিকে বড় করে তুলে ধরার অভিযোগ ওঠে। মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাহউদ্দিন তানভীর তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন। দলীয় কার্যক্রমের চেয়ে নিজের নির্বাচনী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ায় আরেক মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহকেও জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। রাজধানীর বাংলামটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে টানা ১১ ঘণ্টা চলা এনসিপির তৃতীয় সাধারণ সভায় এসব ঘটনা ঘটে। এনসিপি সূত্র জানিয়েছে, ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির ২০৩

জন সভায় অংশ দেন। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১০ থেকে ১২ সদস্যের উচ্চক্ষমতার ‘শৃঙ্খলা ও তদন্ত কমিটি’ গঠন হবে। কোনো নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা ওই কমিটি তদন্ত করবে। প্রয়োজনে দলীয় আহ্বায়কের পদও স্থগিত করতে পারবে কমিটি। আগামী তিন মাস এনসিপি নেতারা নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে দূরে থাকবেন। এ সময়ের মধ্যে কেউ নির্বাচনী এলাকায় প্রচার কিংবা শোডাউন করলে শাস্তি পেতে হবে। আগামী তিন মাস দলের সাংগঠনিক বিস্তারে সবাইকে করতে হবে আত্মনিয়োগ। এ সময়ের মধ্যে জেলা-উপজেলা কমিটি গঠনে সক্রিয় হতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আহ্বায়ক পদ পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হবে ৪০ বছর।

সাংগঠনিক কাজের স্বার্থে ৬৪ জেলাকে ১৯টি জোনে ভাগ করা হয়। জেলা কমিটি হবে ৩১ থেকে ৫১ সদস্যের, উপজেলা কমিটির আকার হবে ২১ থেকে ৪১ সদস্যের। কমিটিগুলো অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও সদস্য সচিবের সইয়ে অনুমোদিত হবে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদের নিয়ে আপাতত জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন করা হবে। আওয়ামী লীগ আমলে নির্যাতিত অন্য দলের নেতাকর্মী আসতে চাইলে নেওয়া হবে। তবে আওয়ামী লীগের হয়ে যারা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ছিলেন, খারাপ হিসেবে পরিচিত– এমন কাউকে নেওয়া হবে না। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের বয়স ৩০ বছরের কম। জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের বয়স কেন কমপক্ষে ৪০ হতে হবে– এমন প্রশ্নে দলটির জ্যেষ্ঠ

যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, সবাই মনে করছে, এনসিপি ৩০ বছরের কম বয়সীদের দল। সব বয়সের মানুষকে যুক্ত করতে বা অভিজ্ঞদের উৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাত ২টার দিকে সভা শেষে যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংস্কারবিষয়ক প্রস্তাব প্রণয়ন, গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগের বিচার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচি নির্ধারণ, সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর নীতি গ্রহণে সরকারকে দাবি জানানোর বিষয়গুলো সভায় গুরুত্ব পেয়েছে। গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যা, ভারতে ওয়াক্‌ফ আইনের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করে জনমনে স্বস্তি আনতে সরকারকে জোর দাবি জানানোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। জুলাই গণহত্যার

বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে চলতি সপ্তাহে ঢাকা মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সমালোচনার মুখে পড়েন ছাত্রলীগ ছেড়ে শেখ হাসিনার পতন ঘটানো ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যোগ দিয়ে আলোচিত হওয়া সারজিস আলম। তিনি ঈদের আগে নিজ এলাকা পঞ্চগড়ে ৪০০ গাড়ির বহর নিয়ে শোডাউন করে সমালোচিত হন। সভা সূত্র জানিয়েছে, এনসিপি নেতারা প্রশ্ন তোলেন, সারজিস কীভাবে লাখ লাখ টাকা খরচ করে শোডাউন করছেন। আত্মপক্ষ সমর্থন করে সারজিস বলেন, ‘আমি নিজেই শোডাউনের বিপক্ষে। তবে পঞ্চগড়ের মতো প্রত্যন্ত এলাকার রাজনৈতিক বাস্তবতায় শোডাউন করতে হয়েছে। মামাতো, ফুফাতো ভাই ও একজন ফুফার আর্থিক সহযোগিতায় গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন করেছি। ৪০টি গাড়ি নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অনেকে গাড়ি

নিয়ে আসায় সংখ্যা বেড়েছে।’ সভায় আরেক নেতা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে। এগুলো ‘ডিফেন্ড’ করতে গিয়ে সবাইকে দুর্নামের ভাগীদার হতে হচ্ছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দীন তানভীরের বিরুদ্ধে আত্মপ্রচার ও সরকারি কাজ থেকে কমিশন আদায়ের অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি নাগরিক কমিটিতেও ছিলেন না, অভ্যুত্থানেও সমন্বয়ক পর্যায়ের কেউ ছিলেন না। তবু এনসিপিতে কীভাবে বড় পদ পেলেন? এর জবাবে সভায় তানভীর বলেন, ‘আমি সরাসরি না থাকলেও আন্দোলনে সহায়তা করেছি।’ সভা সূত্র জানিয়েছে, সারজিসের জবাবে অন্য নেতারা সন্তুষ্ট হলেও তানভীরের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়নি। সভায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রেস সচিব মাহফুজুল আলমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়েও

কথা হয়। আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘সভায় ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি নয়, দলের রাজনীতির কথা বলেছি। সবাইকেই জবাবদিহির আওতায় থাকতে হবে– এ কথা সবাই বলেছি।’ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কথা হয়নি। তবে আমরা এনসিপিও নির্বাচনের পক্ষে। আগে গণহত্যার বিচার ও সংস্কার করতে হবে।’ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় দলের সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রস্তাব করেন সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
জন্মদিনে ‘ধুরন্ধর’ রূপে দেখা দিলেন রণবীর গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৮২ ফিলিস্তিনির টেক্সাসে বন্যায় মৃত বেড়ে ৭৮, নিখোঁজ ৪১ আজ ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না ঢাকার যেসব এলাকায় লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা ইলন মাস্ককে রাজনীতির বিষয়ে যে পরামর্শ দিলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী হামাস ক্ষমতায় থাকলে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হবেন না ইসরাইল: নেতানিয়াহু ইসরাইলকে গণহত্যাকারী আখ্যা দিয়ে ব্রিকস সম্মেলন শুরু করলেন লুলা গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত ৫ বিভাগে ভারি বৃষ্টির আভাস রিটার্ন জমা দিলে পাবেন যেসব ছাড় নেতানিয়াহুর ওপর খেপলেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী ৩২ নম্বর ভাঙার ঘটনাকে বীভৎস মববাজি বললেন রুমিন ফারহানা খোঁজ মিলল সেই ডিজিএমের, কোথায় ছিলেন তিনি সুখবর পাচ্ছেন প্রাথমিকের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক সাইফ পাওয়ার টেকের অধ্যায় শেষ, চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে নৌবাহিনী গাজীপুর মহানগর বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার ‘পাগল তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প রকেট চালিত গ্রেনেড দিয়ে লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ইনিংসেই ডাবল সেঞ্চুরি? এমন কীর্তি ক্রিকেট ইতিহাসে হয়েছে মাত্র তিনবার। আর এখন সে তালিকার শীর্ষে উইয়ান মুল্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকার এই অলরাউন্ডার বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়কত্বের অভিষেকে অপরাজিত ২৬৪ রানে দিন শেষ করেছেন—যা এ ধরনের ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে ১৯৬৮ সালে ভারতের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে ২৩৯ রান করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্রাহাম ডাউলিং। সেটাই এতদিন ছিল অধিনায়কত্বে অভিষেক টেস্টে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড। আরও আগে ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দরপল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেছিলেন ২০৩*। ২৭ বছর বয়সী মুল্ডারের এই অধিনায়কত্ব আসলে অনেকটাই আকস্মিক। নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা হ্যামস্ট্রিং চোটে জিম্বাবুয়ে সফরে যাননি। সহ-অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ও অভিজ্ঞ পেসার কাগিসো রাবাদাকেও বিশ্রামে রাখা হয়। এর ফলে প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব পান স্পিনার কেশব মহারাজ। কিন্তু ব্যাটিংয়ের সময় কুঁচকিতে চোট পেয়ে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে যান তিনিও। তখনই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় মুল্ডারের কাঁধে। আর সেই সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহারই করেছেন তিনি। ৩৪টি চার ও ৩টি ছক্কার মাধ্যমে দুর্দান্ত ইনিংস গড়ে প্রথম দিন শেষ করেছেন ২৬৪* রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর দাঁড়ায় ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৬৫। এটাই প্রথম নয়। সিরিজের প্রথম টেস্টেও দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন মুল্ডার, করেছিলেন ১৪৭ রান। ফলে তার ফর্ম বলছে, তিনি শুধু স্ট্যান্ড-ইন অধিনায়ক নন, দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ভবিষ্যতের অন্যতম বড় ভরসাও বটে। রেকর্ড বইয়ে নাম উঠলো যাদের অধিনায়কত্বের অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি: উইয়ান মুল্ডার (দ.আফ্রিকা) – ২৬৪* বনাম জিম্বাবুয়ে, বুলাওয়ে ২০২৫ গ্রাহাম ডাউলিং (নিউজিল্যান্ড) – ২৩৯ বনাম ভারত, ১৯৬৮ শিবনারায়ণ চন্দরপল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) – ২০৩* বনাম দ.আফ্রিকা, ২০০৫ এছাড়া, মুল্ডার হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে অধিনায়কত্বের অভিষেকে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় ক্রিকেটার—১৯৫৫ সালে জ্যাকি ম্যাকগ্লু প্রথম এই কীর্তি করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বিভিন্ন নিয়মিত তারকার অনুপস্থিতিতে হঠাৎ নেতৃত্ব পাওয়া মুল্ডার ব্যাট হাতে যা করে দেখিয়েছেন, তা শুধু রেকর্ড নয়—একটি বার্তাও। হয়তো ভবিষ্যতের নিয়মিত অধিনায়ক হওয়ার দিকেও তাকিয়ে আছেন তিনি। আর এমন অভিষেকের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বিশ্বও নিশ্চয় তার নামটি একটু আলাদা করে মনে রাখবে।