ভারত গিয়ে প্রেম ও বিয়ে, নাগরিকত্ব চাইলেন বাংলাদেশি নারী – ইউ এস বাংলা নিউজ




ভারত গিয়ে প্রেম ও বিয়ে, নাগরিকত্ব চাইলেন বাংলাদেশি নারী

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮:০৪ 28 ভিউ
মায়ের চিকিৎসার জন্য ২০০৭ সালে ভারতের আসামে গিয়েছিল সিলেটের একটি পরিবার। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালে ওই পরিবারের মেয়ে স্থানীয় এক যুবকের প্রেমে পড়ে যান। শেষমেষ তাকে বিয়ে করে তিনি থেকে যান সেখানেই। তবে বিয়ে সংসার করলেও তার ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ কখনোই প্রশস্ত ছিল না। ২০১৯ সালে বিজেপি সরকার হিন্দু-সহ ছয়টি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে একটি আইন পাশ করে। সেই আইনের মাধ্যমে এবার এদেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন বাংলাদেশের ওই নারী। ওই নারীর তখন বয়স অনেকটাই কম। হাসপাতালেই তার সঙ্গে দেখা হয় আসামের বদরপুর শহরের এক যুবকের। তিনিও তার বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন শিলচরে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার

প্রক্রিয়া অনেকটাই জটিল এবং এই সময় তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন যুবকটি। এখান থেকেই তাদের বন্ধুত্ব এবং প্রেম। এদিকে মায়ের চিকিৎসার সময় ফুরিয়ে এলে যখন বাড়ি ফেরার সময় আসে, ওই নারী প্রেমের কথা জানান পরিবারকে। দুজনেই হিন্দু পরিবারের, তাই হিন্দু রীতি মেনে তাদের বিয়ে হয় এবং বাংলাদেশের নারী থেকে যান ভারতেই। পরবর্তীতে তাদের এক সন্তানও হয়। করিমগঞ্জ জেলার বদরপুর শহরে স্বামীর সঙ্গে সুখে সংসার করছেন ওই নারী। কিন্তু ভারতের নাগরিক কখনোই হননি তিনি। এরই মধ্যে নতুন করে এনআরসির প্রক্রিয়া শুরু হয় আসামে। বহু মানুষের কাছে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল থেকে নোটিস আসে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় আসামে। সমস্যায় পড়েন ওই

নারী। ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ পেশ করে বর্তমান সরকার। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ এবং পার্সি সম্প্রদায়ের মানুষেরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আইন পাশ হলেও বহুদিন এর প্রণয়নবিধি প্রকাশ করেনি সরকার। এবছর মার্চ মাসে শেষমেষ সেই প্রণয়ন বিধি প্রকাশ হয়। তারপরেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন ওই নারী। এপ্রিল মাসে আসামের বরাক উপত্যকার বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি শরণার্থী এই আইনের মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। এর মধ্যেই ছিলেন বদরপুরের ওই নারী। কিন্তু কিছুদিনের মধ্য়েই তিনি তার আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। স্থানীয় আইনজীবীদের মতে, সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব দাবি করতে

গেলে আবেদনকারীকে প্রথমে প্রমাণ করতে হয়, তিনি ধর্মীয় নির্যাতনের ফলে তার দেশ ছেড়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাত বারোটা পর্যন্ত যারা ভারতে প্রবেশ করেছেন, শুধু তারাই আবেদন করতে পারেন। ভারতে প্রবেশ করার পর এই দেশে থাকার প্রমাণও দিতে হয় এই আইনে নাগরিকত্ব চাইলে। আইনজীবী তথা ফরেনার্স ট্রাইবুনালের বিচারক ধর্মানন্দ দেব ডয়চে ভেলে’কে জানান, গতবছর ভারতের নির্বাচন কমিশন আসামের বদরপুরের একটি অংশকে করিমগঞ্জ জেলা থেকে বাদ দিয়ে কাছাড়ের সঙ্গে জুড়ে দেয়। তার কথায়, বদরপুরের ওই নারী প্রথমে করিমগঞ্জের বাসিন্দা হিসেবে আবেদন করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে দেখা যায় তার বাড়ি কাছাড় জেলার আওতায়। ফলে তিনি তার আবেদন প্রত্যাহার করে নেন এবং

পরে ফের আবেদন করেন। তিনি বাংলাদেশে পড়াশোনা করেছেন এবং তার পরিবারের লোকেরা সেখানেই থাকেন। ২০০৭ সাল থেকে এদেশেই রয়েছেন তিনি। ফলে সিএএ-তে আবেদনে প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে অসুবিধে হয়নি তার। এবার বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াটি এগিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা আশাবাদী শীঘ্রই তিনি ভারতের নাগরিক হবেন। ধর্মানন্দের মতে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রণয়নের বিধি কিছুটা অসম্পূর্ণ এবং জটিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে যারা ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তারা সবাই সেই দেশের নথি সঙ্গে করে আনতে পারেননি। অথচ সিএএ-র বিধিতে বলা হয়েছে আবেদনকারীকে অন্তত এমন একটি নথি দেখাতেই হবে। হয়তো এই কারণেই অনেকে আবেদন করছেন না। আবার প্রক্রিয়াটি এতটাই জটিল, অনেকে

তা সামাল দিতে পারেন না। আমরা স্বেচ্ছায় তাদের সাহায্য করছি এবং আমার হাত ধরে এখন পর্যন্ত নয়জন আবেদন করেছেন। এর মধ্যে একজন নাগরিকত্ব পেয়েছেন। চলতি বছরের ১৪ আগস্ট শিলচর শহরের বাসিন্দা, ৫০ বছরের দোলন দাস প্রথম বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থী হিসেবে সিএএ-র মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্ব পান। তাকে পরবর্তীতে নিয়ে যাওয়া হয় গুয়াহাটি এবং সেখানে সরকারি আধিকারিকেরা তার হাতে নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট তুলে দেন। তার পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যও আবেদন করেছেন, তবে তাদের নথি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। দোলন দাসের নাগরিকত্ব পাওয়ার পর আরো কয়েকজন সাহস করে আবেদন করেছেন। ডয়চে ভেল’র সঙ্গে বাংলাদেশের ওই নারীর পরিবার কথা বললেও তারা পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি।

তাদের আইনজীবী এখনই ওই নারীর নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ, নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়া এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
তাড়াতাড়ি বুড়ো হতে না চাইলে, নিয়মিত যে ৮ টি খাবার খাবেন ১৮ কোটি মানুষের সাহস আছে সীমান্তে, ভয় পাওয়ার প্রশ্নই আসে না এআই সহায়তা দিয়ে গাজা যুদ্ধে ইসরাইলি বাহিনীর পাশে গুগল জাহাঙ্গীর গেট থেকে বিজয় সরণি হয়ে ডানে যাওয়া বন্ধ আলেমদের তত্ত্বাবধানে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমা ইলন মাস্ক আমাদের আইনস্টাইন ফোনালাপে কি কথা হলো ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজের? ব্যাংক অব আমেরিকার সিইও-কে নিয়ে সমালোচনা ট্রাম্পের ফেডারেল সহায়তার পরিবর্তে রাজ্যগুলোকেই সমস্যার সমাধান করতে বললেন ট্রাম্প চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি: কবে আসছে পাকিস্তানের চূড়ান্ত স্কোয়াড? দাভোসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভাষণ দিতে পারেন ট্রাম্প লাভের আশায় অ্যাপসে ১৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ, অতঃপর… হুথিকে ট্রাম্পের ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা, কটাক্ষ করে যা বলল ইয়েমেন মাস্কের ‘নাৎসি’ অঙ্গভঙ্গির পক্ষে সমর্থন জানালেন নেতানিয়াহু বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন যারা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে ভার্চুয়ালি বক্তৃতা করবেন ট্রাম্প সরকারি দলের সঙ্গে পিটিআই’র আলোচনা বন্ধের ঘোষণা ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না করলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নেবেন ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে গুলিতে বন্দুকধারীসহ নিহত ২ বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কী কথা হলো, মুখে কুলুপ জয়শঙ্করের