বেহাল অবস্থা যুবলীগের: শেখ পরশের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন নেতাকর্মীরা – ইউ এস বাংলা নিউজ




বেহাল অবস্থা যুবলীগের: শেখ পরশের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন নেতাকর্মীরা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১২ জুন, ২০২৫ | ১১:১২ 26 ভিউ
সহিংসতার মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুতির দশ মাস পরেও আওয়ামী লীগের সবচেয়ে শক্তিশালী অঙ্গ সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ চরম নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে। সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের গভীর অসন্তোষ ও ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। মাঠপর্যায়ের দাবি উঠেছে, সংগঠনটিতে জরুরি ভিত্তিতে নতুন, পরীক্ষিত এবং গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব না আসলে, অতীতে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকার সময় যেভাবে রাজনীতির মাঠ গরম রাখতো যুবলীগ, সেটা সম্ভব হবে না। বিডি ডাইজেস্ট-এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, যুবলীগের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রায় কারো সঙ্গেই কোনো ধরনের যোগাযোগ রাখছেন না। ২৩টি মহানগর ও জেলা ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীর্ষ নেতারা কারো সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেন না, দিচ্ছেন না কোনো দিকনির্দেশনা। “গত

১০ মাস ধরে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে কোনও দিকনির্দেশনা পাইনি। নিজেদের মতো করেই চালাতে হচ্ছে ইউনিট,”— বলছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার সাধারণ সম্পাদক। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে তৃণমূলের নিয়োগ, ভেঙে পড়েছে কাঠামো বিডিডাইজেস্ট-এর অনুসন্ধানের সূত্রে জানা যায়, অল্প কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া, জেলা, মহানগর, থানা পর্যায়ের কমিটি গঠনের ক্ষমতা কখনোই স্থানীয় ইউনিটের হাতে ছিল না। সব সিদ্ধান্তই আসতো কেন্দ্র থেকে। এতে যেমন স্থানীয় নেতৃত্ব পরীক্ষিত, সাহসী এবং স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে ব্যার্থ হয়েছে, তেমনি গঠিত কমিটি বিরূপ সময়ে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েছে। ফলশ্রুতিতে, বর্তমান পরিস্থিতে আস্তে আস্তে সংগঠন হয়ে পড়ছে নিষ্ক্রিয় ও নেতৃত্বহীন। যশোরের জেলা যুবলীগের কর্মী আবুল কালাম, যিনি আগে

সংগঠনের একটি ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন, তিনি বলেন, ৫ই আগস্ট আমার বাড়ি ভাঙচুর করে, পরে আগুন দিলে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে আগুন নেভায়। এই দশ মাস কীভাবে কেটেছে কোন নেতা খোঁজ নেয়নি। সংগঠনের কোন অস্তিত্ব আজ আর নেই। চেয়ারম্যানের ‘মাইম্যান’ নির্ভর রাজনীতি: মাঠে অসন্তোষ চরমে নেতাকর্মীদের অভিযোগ, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের চারপাশ ঘিরে আছেন কিছু প্রভাবশালী ‘কেন্দ্রীয় নেতা’। জয়দেব নন্দী, দেলোয়ার শাহাজাদা ও সাদ্দাম হোসেন পাভেল—এই তিনজনের মাধ্যমেই মূলত সকল কার্যক্রম চালানো হয় বলে দাবি করেন একাধিক ইউনিট নেতা। “চেয়ারম্যানকে পেতে হলে প্রথমে এই দালালদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করতে হয়। সরাসরি কথা বলা বা সমস্যার কথা জানানোর কোনো সুযোগ নেই আমাদের জন্য,”—

আক্ষেপ নিয়ে বললেন একটি জেলার সভাপতি। সংগঠনের অনেক নেতারই অভিযোগ, বর্তমান চেয়ারম্যান ক্ষমতাসীন থাকার সময়ও তৃণমূলে দল সংগঠিত করেননি, নেতৃত্ব গড়ে তোলেননি। তার না আছে রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, না আছে সাংগঠনিক দক্ষতা। বিশেষ করে, প্রভাবশালী কোন সিদ্ধান্তে তার সৃজনশীল ভূমিকা নেই বললেই চলে। “যুবলীগ এখন আর রাজনৈতিক সংগঠন না, এটা একটা মুখচেনা ‘নিয়ন্ত্রিত’ সংগঠন হয়ে গেছে।” এমন মন্তব্য করেছেন এক উপজেলা ইউনিটের যুগ্ম-আহ্বায়ক। তার উপজেলায় গত ২৫ বছরে কোন সম্মেলন হয়নি, ফলে কোন নির্বাচিত বা পূর্ণাঙ্গ কমিটিও গঠিত হয়নি, জানালেন তিনি। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৫ই আগস্টের পর নির্যাতিত যুবলীগ কর্মীদের সহায়তায় একটি ফান্ড গঠন করা হয়েছিল। তবে, এই ফান্ড তৃণমূলের নির্যাতিত কর্মীদের কাছে পৌঁছায়নি। বিভিন্ন

সময়ে সহকর্মী ও নেতাকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হলেও চেয়ারম্যান কিংবা সাধারণ সম্পাদক তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেননি, কথা বলেননি, এমনকি আইনি সহায়তার ব্যবস্থাও করেননি। একাধিক নেতার অভিযোগ, চেয়ারম্যানকে ফোন কিংবা ম্যাসেজ করলেও কোনো উত্তর মেলে না। বরং মেসেজ ‘সিন করে ফেলে রাখা হয়। এমন অবস্থা থেকে সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন, ‘আদর্শগত নয়, প্রতিক্রিয়াশীল দৃষ্টিভঙ্গিই নেতৃত্বের বর্তমান চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ ভয়ের সংস্কৃতি ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা যুবলীগের অবস্থা নিয়ে কথা বললেও অধিকাংশ নেতাকর্মীই নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চাননি। তাদের ভাষ্যে, “নাম জানাজানি হলে কেন্দ্রের ‘কুদৃষ্টি’ পড়বে, রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে যাবে।” পরবর্তীতে দলের সুসময়ে তাদের রাজনীতি থেকে বিদায় করে দেওয়া হবে- এমনটাই জানান তারা। সংগঠনের জন্য করণীয়

কী? জেলা মহানগর এবং তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের মতে, নেতৃত্বের সংকট ও গণতান্ত্রিক চর্চার অভাব—এই দুই সংকট এখন যুবলীগের সামনে অস্তিত্বের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনের ভেতরে জবাবদিহিতা নেই, তৃণমূলে বিচ্ছিন্নতা বাড়ছে এবং নেতৃত্বে আস্থার অভাব স্পষ্ট। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের স্পষ্ট দাবি, নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, সাংগঠনিক সংস্কার ও মাঠপর্যায়ে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন—এই তিনটিই এখন যুবলীগের টিকে থাকার প্রধান শর্ত। তা না হলে অতীতে ‘অগ্রণী যুবশক্তি’ হিসেবে পরিচিত সংগঠনটি ভবিষ্যতে নিছক অতীতের গৌরব নিয়েই থাকবে। প্রতিবেদনটি তৈরির সময় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের মন্তব্য জানতে চেয়ে একাধিকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দুদিনেও তার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইরানের হামলার ভয়ে দেশ ছেড়েছেন নেতানিয়াহু নুরের দাবির বিষয়ে যা বলছেন বিএনপি নেতারা ইরানে ইসরাইলের হামলা, ট্রাম্প বললেন ‘চমৎকার’ ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে চিঠি দিল ইরান কবে থেকে ভারি বৃষ্টি, জানাল আবহাওয়া অফিস ইরান ও ইসরাইল: কার শক্তি কতটুকু এই প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব: নুর পদক জয়ের আশায় সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন ১১ আরচার ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ২ জনের মৃত্যু পালটা হামলার শঙ্কায় খাবার ও পানি মজুত করছে ইসরাইলিরা আইআরজিসি প্রধানের নাম ঘোষণা করল ইরান ইরানের কোনো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রভাব পড়েনি: আইএইএ এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে এবার বোমাতঙ্ক, থাইল্যান্ডে জরুরি অবতরণ গলাচিপায় ১৪৪ ধারা, সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন নূর বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের উত্তেজনায় ২ উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি মাশরাফি-সাকিবদের দেখানো পথেই হাঁটতে চান মিরাজ পালটা হামলার শঙ্কায় খাবার ও পানি মজুত করছে ইসরাইলিরা ইসরাইলি হামলায় নিহত ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান কে এই মোহাম্মদ বাঘেরি? শান্তর সঙ্গে অধিনায়কত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব হবে না, আশা মিরাজের যানজটে আটকে প্রাণে বেঁচেছেন যে যাত্রী