বিমান দেখলে আঁতকে ওঠে শিক্ষার্থীরা – ইউ এস বাংলা নিউজ




বিমান দেখলে আঁতকে ওঠে শিক্ষার্থীরা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৬ জুলাই, ২০২৫ | ৬:৪৭ 13 ভিউ
উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় এক ধরনের ট্রমার মধ্যে আছে শিশুরা। স্বাভাবিক হতে পারছে না অনেকেই। তাদের কষ্ট অবর্ণনীয়। শুক্রবার অষ্টম শ্রেণির মোহাম্মদ শাফিন নামে এক শিক্ষার্থী তার বাবার সঙ্গে স্কুলে আসে। সে (শাফিন) বলে, আমি নিজের চোখের সামনে হতাহতের ঘটনা দেখেছি। যাদের সঙ্গে অনেক মজা করতাম। আড্ডা দিতাম। হুট করে সেই চোখের সামনে তারা মারা গেল। বলার ভাষা নেই। এটা সিমেনার দৃশ্যকে হার মানায়। এখন বিমান দেখলে ভয় কাজ করে। এই বুঝি পড়ে গেল। এছাড়া মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জানান, মর্মান্তিক

দৃশ্য দেখে শাহজাতী রিচি নামের এইচএসসি (চলমান) পরীক্ষার্থী এখনো ঘুমের মধ্যে আঁতকে ওঠে। সে কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর শুক্রবার বাসায় ফেরে। সামনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে একরকম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শুধু শাফিন ও রিচি নয়, তাদের মতো অনেক শিক্ষার্থী এই মুহূর্তে অনেকটা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উৎসুক জনতা স্কুল প্রাঙ্গণে ভিড় করেছেন। এদিন সকালে গণমাধ্যমকর্মীদের ভিড় দেখা গেলেও জুমার নামাজের পর উৎসুক হাজার হাজার লোকের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে স্কুলের গেট বন্ধ রাখা হয়। এ সময় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি টিম স্কুলে ঢুকতে দেখা গেছে। তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানসিক

স্বাস্থ্য কাউন্সিলিং করেন। দুপুর আড়াইটার দিকে স্কুলে গেট সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয় কর্তৃপক্ষ। দূরদূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ ভয়াবহ ঘটনা দেখতে স্কুলে ভিড় জমান। কেউ ছবি তুলছেন আবার কেউ ভিডিও করছেন। আবার কেউ হতাহতের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করছেন। অনেকেই ঘটনাস্থলের দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বৃহস্পতিবার বিমান দুর্ঘটনার স্থানটি টিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলে আসা রহিম নামে এক দর্শনার্থী বলেন, এই ধরনের ঘটনা ঘটবে, সেটি চিন্তার বাইরে ছিল। এদিকে শুক্রবার সকালে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে তাসমিন আফরোজ আয়মান (১০) নামে এক শিক্ষার্থী মারা গেছে। এদিন দুপুরে আব্দুল মুসাব্বির মাকিন (১৩) নামে আরেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। সে

স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মাকিনের শ্বাসনালিসহ শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। সংকটজনক অবস্থায় ছিল সে। এছাড়া আরও ৫ জন আইসিইউতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে বাংলা মাধ্যমের মাহফুজা খাতুন নামে এক শিক্ষিকাও রয়েছেন। এই বিষয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম বলেন, আমরা হতাহতদের ঘটনা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। যারা নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের কাছে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যারা আহত চিকিৎসাধীন তাদের ব্যাপারে আমাদের টিম কাজ করছে। সোমবার পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস বন্ধ থাকবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ক্লাস শুরু করার চিন্তাভাবনা করা হবে। তবে যেসব ক্লাসের বাচ্চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ক্লাস শুরু করার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যে

ভবনে ঘটনা ঘটেছে সেটি আপাতত পরিত্যক্ত থাকবে। সেখানে কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা হবে না। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মানসিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে প্রতিদিন কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশেষ করে মেয়েরা বেশি ভেঙে পড়েছে, তাদের বিষয়ও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। শুক্রবার মাইলস্টোন কলেজের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় আমাদের স্কুল শাখার ২৫ জন শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক, ৪ জন অভিভাবক মৃত্যুবরণ করেন। এ দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছেন ৫০ জন। এদের মধ্যে ৩৯ শিক্ষার্থী, ৭ জন শিক্ষক, ১ জন অভিভাবক, ২ জন আয়া ও ১ জন পিয়ন রয়েছেন। এ ঘটনায় ২২ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষ

থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ শুধু এ প্রতিষ্ঠানে নিহত, আহত ও নিখোঁজের তথ্য তুলে ধরছে। কর্তৃপক্ষের তথ্য হালনাগাদের কাজ চলমান। এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা তুলে ধরছে আইএসপিআর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। হৃদয়বিদারক এ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের শোকাহত সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আহতদের চিকিৎসাসহ সব প্রয়োজনে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ সর্বদা পাশে রয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের শিক্ষার্থী ও সন্তান হারানোর এই চরম শোকসন্তপ্ত অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, অভিভাবক ও এলাকাবাসীসহ পুরো জাতি আমাদের পাশে

এসে দাঁড়ায়। প্রত্যেকেই তাদের অবস্থান থেকে সহানুভূতি, সহমর্মিতা ও সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গুরুতর আহতদের উন্নত ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে। এ ব্যাপারে চিকিৎসা ও সেবা কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য একটি জরুরি সেল গঠন করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
মশা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ ইসির প্রস্তাবে একমত বিএনপি পরিবর্তন চায় টিআইবি বিমান দেখলে আঁতকে ওঠে শিক্ষার্থীরা থাইল্যান্ডের ৮ জেলায় মার্শাল ল’ জারি সকালের মধ্যে ১১ জেলায় ঝড়ের আভাস খুলনায় ইসলামী ব্যাংকের ভিতর গ্রাহক নির্যাতনে তোলপাড় জলবায়ুজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে ২.৩ ট্রিলিয়ন ডলার বাংলা বলায় আধার কার্ডধারী ভারতীয় যুবককে পাঠানো হলো বাংলাদেশে গাজায় মানবিক সহায়তা অবরোধে ক্ষুব্ধ কানাডা, ইসরাইলকে নিয়ন্ত্রণ ছাড়ার আহ্বান কার্নির ইস্তানবুলে ইরান-ইউরোপের দ্বিতীয় দফা পারমাণবিক আলোচনা সম্পন্ন চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন আমার বাবা থাইল্যান্ডের ৮ জেলায় মার্শাল ল’ জারি ট্রাম্পের প্রশংসার পর মিয়ানমারের জান্তা-ঘনিষ্ঠদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার গভীর রাতে ফেনী সংলগ্ন ভারতের সীমানায় বিএসএফের গুলিতে নিহত ২, আহত ১ দেশে বিনিয়োগে ধস: থমকে যাওয়া শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা হতাশ মিয়ানমারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র: জান্তা সরকারের ট্রাম্প বন্দনা, সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পথে জাগো বাহে, কুণ্ঠে সবায়? ২ সপ্তাহ ব্যবধানে বিমানবন্দর থেকে আরও ১২৩ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া ভারতের কাছে যুক্তরাজ্যে শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানির একচেটিয়া সুযোগ হারালো বাংলাদেশ যে শুদ্ধ রাজনীতির বয়ান দেয় জামায়াত-শিবির, তারা কি তা আদৌ ধারণ করে?