
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

আউটসোর্সিং কর্মীদের সুখবর দিল সরকার

‘এ সিদ্ধান্ত সরকারের অপরিণামদর্শিতা’

র্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার জাবেদ ইকবাল বরখাস্ত

সাগরে ৫৮ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ

সংসদে আইন করে ইসরাইলিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করল মালদ্বীপ

সিটি কলেজ ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নিয়ে যা বলছে পুলিশ

‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে: টিউলিপ
বাংলা সনের আন্তর্জাতিক যাত্রা

১৯৯৬ সালে যখন অস্ট্রেলিয়ায় আসি তখন সিডনিতে বাঙালি জনসংখ্যা ছিল অপ্রতুল। বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর হাজার দশেক মানুষ থাকতেন বাণিজ্যিক রাজধানী সিডনিতে। এই স্বল্প জনগোষ্ঠীর কাজকর্মের ব্যস্ততা ছিল গুছিয়ে নেওয়ার তাগিদ। ফাস্ট জেনারেশন নামে পরিচিত মানুষগুলো তখন কাজ খুঁজতে ব্যস্ত। তাদের বিনোদন ছিল বাড়ি বাড়ি ঘুরে আড্ডা দেওয়া আর যার যার ধর্ম চর্চা করা। সে কারণে ঈদ, পূজা এবং এগুলোর কমিটিই তখন শাসন করছিল সমাজ। কিন্তু বাঙালি সামাজিক জীব। দেশ থেকে আসার সময় তারা সঙ্গে সংস্কৃতি নিয়ে আসতে ভুল করেনি। আমাদের সংস্কৃতি যে কতটা প্রবল আর প্রভাব বিস্তারকারী সেটা ইতিহাসেই লেখা আছে । বাঙালি তার মহান মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা আর একুশে নিয়ে গর্বিত।
দুনিয়ার সব দেশে তারা এই দিনগুলো পালন করে। মর্যাদার সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে লালন করে। কিন্তু রাজনীতি তার জটিল থাবা থেকে একটি দিনকেও মুক্তি দেয়নি। সে কারণে সর্বজনগ্রাহ্য ও স্বীকৃত হওয়ার পরও দিনগুলো রাজনৈতিক কারণে বহুধাবিভক্ত। কিন্তু একটিমাত্র জাতীয় দিন বা উৎসব আছে, যা নিয়ে কোনো বিতর্ক চলে না। সে দিনটি হলো বাংলা নববর্ষ। সিডনিতে সে সময়ে বৈশাখী মেলা হতো। সে মেলাটি প্রথমবার দেখতে গিয়ে কিছুটা হতাশই হয়েছিলাম। একটা গার্লস স্কুলের উঠান জুড়ে অল্প কিছু দোকানপাট। মানুষ দলে দলে সেখানে ভিড় করলেও মেলাটি ছিল ছোট পরিসরে। তবে মানতে হবে গুণগত মানে আর সাংস্কৃতিক আয়োজনে বারুড স্কুলের মেলাটিকে প্রাণবন্ত করে রেখেছিল একটি রাজনৈতিক
সংগঠন। ড. আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বাধীন এই পরিষদের মেলাটি মনে দাগ কাটতে শুরু করে তখন থেকেই। বলাবাহুল্য, বাঙালি সবকিছুতে বিভক্ত এবং তাদের কর্মপ্রবাহ বহুগামী। কালে কালে আরও পরে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের জন্ম হয়। তারাও সাড়ম্বরে পালন করে বৈশাখী মেলা। তাদের মেলাতেও ভিড় করে মানুষ। সময় যায় মেলার পরিধি আর জনসংখ্যা বাড়তে থাকে ক্রমাগত। এর ফাঁকেই গড়ে ওঠে আরেক ইতিহাস। ছোটখাটো পরিসর থেকে বৈশাখী মেলা সোজা পৌঁছে যায় অলিম্পিক ময়দানে। সেই অলিম্পিক ময়দান যেখানে ২০০০ সালে অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অভিবাসনের তিন বছর বয়সকালে এর কর্মপ্রবাহ দেখে বিস্ময়ে থ বনে গিয়েছিলাম। যে জায়গাগুলো ছিল বন বাদাড় আর দু-একটি কারখানা পরিবেষ্টিত, এক বছরের মাথায়
সেগুলো বদলে গেল। এমনই বদলানো, যার নাম ম্যাজিক। গড়ে উঠলো একাধিক ভবন ও খেলার মাঠ । বিশ্বনন্দিত সব খেলার মাঠ আর স্টেডিয়াম। সে ধরনের একটি স্টেডিয়ামে বৈশাখী মেলা পা বাড়ালো নতুন ইতিহাসের দিকে। এখনও যা শেখ শামীমের নেতৃত্বে চলমান। ভেন্যু পরিবর্তিত হলেও এরই ধারাবাহিকতা আর বহুজাতিক মনোভাব ও অংশগ্রহণে মেলাটি আজ নতুনভাবে নতুন আঙ্গিকে বিশ্বনন্দিত। এত জনসমাগম আর কোনো মেলায় হয় না। যা শুধু সিডনি নয়, বিশ্ব বাঙালির বেলায়ও চরম সত্য। গামা আবদুল কাদির, প্রয়াত নূরুল আজাদ পরবর্তীকালে শাহজাদাদের মতো তরুণরা যে মেলাটি করেন, তার গুরুত্বও অপরিসীম। এসব মেলায় বাংলাদেশের স্বনামধন্য মানুষ, শিল্পী, অভিনেতাসহ অনেকেই হাজির থাকেন। ওপার বাংলার বিশিষ্ট
শিল্পীরাও বাদ পড়েন না। সিডনিতেই শুধু নয়, মেলবোর্নেও হয় জমজমাট বৈশাখী আয়োজন। ২০২০ সালে তাদের মেলা নিয়ে কথা বলেন সংগঠক। মেলার আয়োজন নিয়ে ক্রিয়েটিভ এন্টারটেইনমেন্টের প্রেসিডেন্ট তৌহিদ পাটোয়ারী এসবিএস বাংলাকে জানান, ‘বাংলাদেশের বাইরেও বিশ্বজুড়ে বৈশাখী উৎসব একটি মেগা ইভেন্ট। ইউরোপে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয় বৈশাখী উৎসব। লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলাটি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম লোকোৎসব। প্রায় আশি হাজার লোক সমাগম হয় সেই মেলাটিতে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত মেলাগুলোর আকারও বেশ বড়। প্রায় ত্রিশ হাজার লোক সমাগম হয় সিডনির একটি মেলায়। বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকোৎসব হিসেবে বিবেচিত এই উৎসবটি বিশ্বজুড়ে সকলের জন্য একটি আনন্দ উৎসব হিসেবে পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মেলবোর্নের বৈশাখী আয়োজনে
সেক্ষেত্রে একটি শূন্যতা ও অপূর্ণতা রয়ে গেছে। কমিউনিটির সেই প্রত্যাশিত চাহিদা পূরণ করতেই এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়েরেবি রেসকোর্স গ্রান্ড স্ট্যান্ড ও সংলগ্ন মাঠে।’ বৈশাখী নিয়ে আমাদের লং টার্ম ভিশনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কিছু বিষয় রয়েছে। বৈশাখী মেলা আউটডোর ইভেন্ট। অডিটরিয়ামের মধ্যে বৈশাখী মেজাজ ও আমেজ আসে না। অন্যদিকে এপ্রিলের আবহাওয়া আউটডোর ইভেন্টের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সেদিক থেকে ওয়েরেবি রেসকোর্সের গ্রান্ড স্ট্যান্ড ও স্টল ফেসিলিটিজে ছাউনি থাকায় দুই দিক থেকেই ঝুঁকিমুক্ত। ধারণ ক্ষমতার দিক থেকেও অনন্য। অন্তত বিশ হাজার দর্শক ধারণ করতে সক্ষম ভেন্যুটি। ভবিষ্যতে আমাদের লক্ষ্য বিশ হাজার বা তারও বেশি অংশগ্রহনকারী। ধারণা করি, এখন এই বৈশাখী মেলা সেখানেও জমজমাট ভাবে অব্যাহত
আছে। আরেকটি বড় শহর এডেলেইড। যে বছর সেখানে প্রথম বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয় সে বার জানা গেলÑ এডেলেইডের বাসিন্দা এবং ঝঅইঈঅ সভাপতি মাহবুব সিরাজ তুহিন এসবিএসকে জানান, সংগঠনের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং বৈশাখী মেলা উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বাণী দিয়েছিলেন। যে বাণীতে তিনি অস্ট্রেলিয়াকে বহু ভাষা-সংস্কৃতি এবং ধর্ম বিশ্বাসের দেশ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশী কমিউনিটি স্পষ্টতই অস্ট্রেলিয়ার এই মূল্যবোধকে ধারণ করে এগিয়ে চলেছে এবং বিশ্বের কাছে অস্ট্রেলিয়াকে সুখী ও সৌহার্দ্যরে দেশ হিসেবে পরিচিতি দিতে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত সে সময়ের বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান, সাউথ অস্ট্রেলিয়ার গভর্নর হিউ ভ্যান লি, সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার ইস্টিভেন মার্শাল এমপি, সহকারী মন্ত্রী জিং লি এবং ওয়েস্ট টরেনস সিটির মেয়র মাইকেল কক্সন প্রবাসী বাংলাদেশীদের বৈশাখী উৎসবের সাফল্য কামনা করে বাণী দেন এবং কমিউনিটির প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মাহবুব সিরাজ তুহিন জানান, প্রবাসী বাংলাদেশী এবং কমিউনিটির নতুন প্রজন্মকে নিজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই প্রতিবার এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে প্রবাসীদের মধ্যে যে দারুণ উৎসাহ এবং সৌহার্দ্য দেখা যায়, তা আয়োজকদের ভীষণ অনুপ্রেরণা দেয়। যতদূর জানা যায়, পার্থসহ আরও বিভিন্ন শহরে এ ধরনের মেলা আয়োজিত হয়ে থাকে। যা এখন খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়। আগেই লিখেছি, আমাদের জাতি সংস্কৃতিনির্ভর। সংস্কৃতি ছাড়া আমাদের চলে না। আপদে বিপদে সংকটে আনন্দে সংস্কৃতিই আমাদের চালিকাশক্তি। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও এই শক্তি চলমান। যা সাম্প্রদায়িকতা ও কূপমণ্ডুকতা প্রতিরোধ করে। বাঙালিকে দেয় বেঁচে থাকার প্রেরণা। ইউরোপ-আমেরিকায় বাঙালি বা বংলাদেশীদের বসবাস অনেক পুরানো। সে কারণে তাদের সঙ্গে এখনো আমাদের তুলনা চলে না। কিন্তু এটাও সত্য যে, অস্ট্রেলিয়া তথা প্রশান্তপারের বাংলাদেশীরাও থেমে নেই। এই শুভযাত্রা আরও দীর্ঘ হোক। বাংলা বাঙালির জয়যাত্রায় আমাদের নাম ও ইতিহাস জায়গা করে নিক। এটি সময়েরও চাহিদা। জয়তু বাঙালির নববর্ষ।
দুনিয়ার সব দেশে তারা এই দিনগুলো পালন করে। মর্যাদার সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে লালন করে। কিন্তু রাজনীতি তার জটিল থাবা থেকে একটি দিনকেও মুক্তি দেয়নি। সে কারণে সর্বজনগ্রাহ্য ও স্বীকৃত হওয়ার পরও দিনগুলো রাজনৈতিক কারণে বহুধাবিভক্ত। কিন্তু একটিমাত্র জাতীয় দিন বা উৎসব আছে, যা নিয়ে কোনো বিতর্ক চলে না। সে দিনটি হলো বাংলা নববর্ষ। সিডনিতে সে সময়ে বৈশাখী মেলা হতো। সে মেলাটি প্রথমবার দেখতে গিয়ে কিছুটা হতাশই হয়েছিলাম। একটা গার্লস স্কুলের উঠান জুড়ে অল্প কিছু দোকানপাট। মানুষ দলে দলে সেখানে ভিড় করলেও মেলাটি ছিল ছোট পরিসরে। তবে মানতে হবে গুণগত মানে আর সাংস্কৃতিক আয়োজনে বারুড স্কুলের মেলাটিকে প্রাণবন্ত করে রেখেছিল একটি রাজনৈতিক
সংগঠন। ড. আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বাধীন এই পরিষদের মেলাটি মনে দাগ কাটতে শুরু করে তখন থেকেই। বলাবাহুল্য, বাঙালি সবকিছুতে বিভক্ত এবং তাদের কর্মপ্রবাহ বহুগামী। কালে কালে আরও পরে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের জন্ম হয়। তারাও সাড়ম্বরে পালন করে বৈশাখী মেলা। তাদের মেলাতেও ভিড় করে মানুষ। সময় যায় মেলার পরিধি আর জনসংখ্যা বাড়তে থাকে ক্রমাগত। এর ফাঁকেই গড়ে ওঠে আরেক ইতিহাস। ছোটখাটো পরিসর থেকে বৈশাখী মেলা সোজা পৌঁছে যায় অলিম্পিক ময়দানে। সেই অলিম্পিক ময়দান যেখানে ২০০০ সালে অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অভিবাসনের তিন বছর বয়সকালে এর কর্মপ্রবাহ দেখে বিস্ময়ে থ বনে গিয়েছিলাম। যে জায়গাগুলো ছিল বন বাদাড় আর দু-একটি কারখানা পরিবেষ্টিত, এক বছরের মাথায়
সেগুলো বদলে গেল। এমনই বদলানো, যার নাম ম্যাজিক। গড়ে উঠলো একাধিক ভবন ও খেলার মাঠ । বিশ্বনন্দিত সব খেলার মাঠ আর স্টেডিয়াম। সে ধরনের একটি স্টেডিয়ামে বৈশাখী মেলা পা বাড়ালো নতুন ইতিহাসের দিকে। এখনও যা শেখ শামীমের নেতৃত্বে চলমান। ভেন্যু পরিবর্তিত হলেও এরই ধারাবাহিকতা আর বহুজাতিক মনোভাব ও অংশগ্রহণে মেলাটি আজ নতুনভাবে নতুন আঙ্গিকে বিশ্বনন্দিত। এত জনসমাগম আর কোনো মেলায় হয় না। যা শুধু সিডনি নয়, বিশ্ব বাঙালির বেলায়ও চরম সত্য। গামা আবদুল কাদির, প্রয়াত নূরুল আজাদ পরবর্তীকালে শাহজাদাদের মতো তরুণরা যে মেলাটি করেন, তার গুরুত্বও অপরিসীম। এসব মেলায় বাংলাদেশের স্বনামধন্য মানুষ, শিল্পী, অভিনেতাসহ অনেকেই হাজির থাকেন। ওপার বাংলার বিশিষ্ট
শিল্পীরাও বাদ পড়েন না। সিডনিতেই শুধু নয়, মেলবোর্নেও হয় জমজমাট বৈশাখী আয়োজন। ২০২০ সালে তাদের মেলা নিয়ে কথা বলেন সংগঠক। মেলার আয়োজন নিয়ে ক্রিয়েটিভ এন্টারটেইনমেন্টের প্রেসিডেন্ট তৌহিদ পাটোয়ারী এসবিএস বাংলাকে জানান, ‘বাংলাদেশের বাইরেও বিশ্বজুড়ে বৈশাখী উৎসব একটি মেগা ইভেন্ট। ইউরোপে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয় বৈশাখী উৎসব। লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলাটি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম লোকোৎসব। প্রায় আশি হাজার লোক সমাগম হয় সেই মেলাটিতে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত মেলাগুলোর আকারও বেশ বড়। প্রায় ত্রিশ হাজার লোক সমাগম হয় সিডনির একটি মেলায়। বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকোৎসব হিসেবে বিবেচিত এই উৎসবটি বিশ্বজুড়ে সকলের জন্য একটি আনন্দ উৎসব হিসেবে পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মেলবোর্নের বৈশাখী আয়োজনে
সেক্ষেত্রে একটি শূন্যতা ও অপূর্ণতা রয়ে গেছে। কমিউনিটির সেই প্রত্যাশিত চাহিদা পূরণ করতেই এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়েরেবি রেসকোর্স গ্রান্ড স্ট্যান্ড ও সংলগ্ন মাঠে।’ বৈশাখী নিয়ে আমাদের লং টার্ম ভিশনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কিছু বিষয় রয়েছে। বৈশাখী মেলা আউটডোর ইভেন্ট। অডিটরিয়ামের মধ্যে বৈশাখী মেজাজ ও আমেজ আসে না। অন্যদিকে এপ্রিলের আবহাওয়া আউটডোর ইভেন্টের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সেদিক থেকে ওয়েরেবি রেসকোর্সের গ্রান্ড স্ট্যান্ড ও স্টল ফেসিলিটিজে ছাউনি থাকায় দুই দিক থেকেই ঝুঁকিমুক্ত। ধারণ ক্ষমতার দিক থেকেও অনন্য। অন্তত বিশ হাজার দর্শক ধারণ করতে সক্ষম ভেন্যুটি। ভবিষ্যতে আমাদের লক্ষ্য বিশ হাজার বা তারও বেশি অংশগ্রহনকারী। ধারণা করি, এখন এই বৈশাখী মেলা সেখানেও জমজমাট ভাবে অব্যাহত
আছে। আরেকটি বড় শহর এডেলেইড। যে বছর সেখানে প্রথম বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয় সে বার জানা গেলÑ এডেলেইডের বাসিন্দা এবং ঝঅইঈঅ সভাপতি মাহবুব সিরাজ তুহিন এসবিএসকে জানান, সংগঠনের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং বৈশাখী মেলা উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বাণী দিয়েছিলেন। যে বাণীতে তিনি অস্ট্রেলিয়াকে বহু ভাষা-সংস্কৃতি এবং ধর্ম বিশ্বাসের দেশ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশী কমিউনিটি স্পষ্টতই অস্ট্রেলিয়ার এই মূল্যবোধকে ধারণ করে এগিয়ে চলেছে এবং বিশ্বের কাছে অস্ট্রেলিয়াকে সুখী ও সৌহার্দ্যরে দেশ হিসেবে পরিচিতি দিতে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত সে সময়ের বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান, সাউথ অস্ট্রেলিয়ার গভর্নর হিউ ভ্যান লি, সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার ইস্টিভেন মার্শাল এমপি, সহকারী মন্ত্রী জিং লি এবং ওয়েস্ট টরেনস সিটির মেয়র মাইকেল কক্সন প্রবাসী বাংলাদেশীদের বৈশাখী উৎসবের সাফল্য কামনা করে বাণী দেন এবং কমিউনিটির প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মাহবুব সিরাজ তুহিন জানান, প্রবাসী বাংলাদেশী এবং কমিউনিটির নতুন প্রজন্মকে নিজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই প্রতিবার এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে প্রবাসীদের মধ্যে যে দারুণ উৎসাহ এবং সৌহার্দ্য দেখা যায়, তা আয়োজকদের ভীষণ অনুপ্রেরণা দেয়। যতদূর জানা যায়, পার্থসহ আরও বিভিন্ন শহরে এ ধরনের মেলা আয়োজিত হয়ে থাকে। যা এখন খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়। আগেই লিখেছি, আমাদের জাতি সংস্কৃতিনির্ভর। সংস্কৃতি ছাড়া আমাদের চলে না। আপদে বিপদে সংকটে আনন্দে সংস্কৃতিই আমাদের চালিকাশক্তি। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও এই শক্তি চলমান। যা সাম্প্রদায়িকতা ও কূপমণ্ডুকতা প্রতিরোধ করে। বাঙালিকে দেয় বেঁচে থাকার প্রেরণা। ইউরোপ-আমেরিকায় বাঙালি বা বংলাদেশীদের বসবাস অনেক পুরানো। সে কারণে তাদের সঙ্গে এখনো আমাদের তুলনা চলে না। কিন্তু এটাও সত্য যে, অস্ট্রেলিয়া তথা প্রশান্তপারের বাংলাদেশীরাও থেমে নেই। এই শুভযাত্রা আরও দীর্ঘ হোক। বাংলা বাঙালির জয়যাত্রায় আমাদের নাম ও ইতিহাস জায়গা করে নিক। এটি সময়েরও চাহিদা। জয়তু বাঙালির নববর্ষ।