নমনীয় পদক্ষেপে বাংলাদেশ পাচ্ছে আইএমএফের ঋণ – ইউ এস বাংলা নিউজ




নমনীয় পদক্ষেপে বাংলাদেশ পাচ্ছে আইএমএফের ঋণ

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৪ মে, ২০২৫ | ৮:২৯ 8 ভিউ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি—মোট ১.৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়ের বিষয়ে সংস্থাটির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ। আইএমএফের বেশ কয়েকটি শর্ত মেনে নিতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক নমনীয় অবস্থান নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুদ্রা বিনিময় হারে নমনীয়তা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠন এবং বাজার ব্যবস্থায় প্রভাব না ফেলে ভর্তুকি পর্যালোচনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, জুনের মধ্যেই এ দুটি কিস্তির অর্থছাড় হওয়া প্রায় নিশ্চিত। এ বিষয়ে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সূত্র জানায়, আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী বিনিময় হারে আরও নমনীয়তা আনতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয়

ব্যাংক। বর্তমানে প্রচলিত ‘ক্রলিং পেগ’ ব্যবস্থায় মধ্যবর্তী দর ১১৯ টাকা এবং করিডোর আড়াই শতাংশ—এটি বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করার চিন্তা রয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলো মধ্যবর্তী দরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি বা কম দরে ডলার লেনদেন করতে পারবে, অর্থাৎ বিনিময় হার আরও বেশি বাজারনির্ভর হবে। আজকের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা আসতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘আইএমএফের সঙ্গে চূড়ান্ত সমঝোতা হয়েছে। ওদের মূল দাবিই ছিল বিনিময় হারকে আরও বাজারভিত্তিক করতে হবে। আগে কিছু শর্ত ছিল আমাদের জন্য কঠিন। এখন একটা সমঝোতায় আসা সম্ভব হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে ঝুঁকি যেমন রয়েছে তেমনি সম্ভাবনাও আছে। কিছু পক্ষ সুযোগ নিতে পারে। তাই আমাদের

সতর্ক থাকতে হবে।’ আইএমএফের নির্ধারিত অর্থনৈতিক সূচক পূরণের ওপর নির্ভর করছে ঋণ ছাড়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘প্রতিটি কিস্তির আগে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পর্যালোচনা করে আইএমএফ। ধারণা করা হচ্ছে, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির জন্য সংস্থাটি সন্তুষ্ট হয়েছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।’ তবে আইএমএফের এক শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ এখনো রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে পিছিয়ে। আগামী জুনের মধ্যে নিট রিজার্ভ (এনআর) ১৭ বিলিয়নের কিছুটা বেশি থাকতে হবে, যেখানে বর্তমানে রয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশাবাদী, জুনের মধ্যে শর্ত পূরণ সম্ভব হবে। রিজার্ভ ছাড়াও শর্তের মধ্যে রয়েছে রাজস্ব ঘাটতি হ্রাস, সরকারি ভর্তুকি পুনর্মূল্যায়ন এবং ডলার বাজারকে বাজার ব্যবস্থার ওপর

ছেড়ে দেওয়া। রাজস্ব ঘাটতি কমাতে আইএমএফ সুপারিশ করেছিল এনবিআরের নীতি ও বাস্তবায়ন বিভাগকে পৃথক করতে। বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে এনবিআর বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠন করেছে। গত সোমবার রাতে একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানায়, করনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন পৃথক করার মূল উদ্দেশ্য দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বার্থের সংঘাত হ্রাস ও কর-ভিত্তি সম্প্রসারণ। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ৫০ বছরে এনবিআর কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আহরণে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত মাত্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যা এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। বিশ্বব্যাপী গড় কর-জিডিপি অনুপাত ১৬ দশমিক

৬ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ায় তা ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণে অন্তত ১০ শতাংশ কর-জিডিপি অনুপাত অর্জন জরুরি। রাজস্ব ঘাটতির চিত্রও উদ্বেগজনক। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ঘাটতি ছাড়িয়েছে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থনীতির গতিশীলতা ফেরাতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এনবিআর ঘাটতিতে লাগাম টানতে পারেনি। এদিকে, ২ জুন ঘোষিতব্য আগামী বাজেট হবে সংকোচনমূলক। ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং রাজস্ব আয় কমে যাওয়ার কারণে বাজেটের আকার ছোট হচ্ছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবিত হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। শুধু জ্বালানি খাতেই চলতি অর্থবছরে প্রয়োজন হবে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি ভর্তুকি; কৃষি ও অন্যান্য খাতসহ ভর্তুকির

মোট পরিমাণ আরও বাড়বে। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী ভর্তুকি হ্রাস করতে হবে। তবে বাংলাদেশ এখনই সম্পূর্ণভাবে ভর্তুকি প্রত্যাহারে আগ্রহী নয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ‘যেসব পণ্যে ভর্তুকি কমালে বাজার ব্যবস্থায় বড় প্রভাব পড়বে না, সেসব পণ্যে ভর্তুকি হ্রাসে সরকার সম্মত হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় ভর্তুকি কমিয়ে আনা হবে।’ আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। এরইমধ্যে তিন কিস্তিতে ২ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়নের মধ্যে চতুর্থ কিস্তির ছাড় আটকে ছিল দীর্ঘদিন। তখন বলা হচ্ছিল, জুনে একত্রে দুই কিস্তি পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু পরে তাতেও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। বিনিময়

হার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএমএফের মধ্যে এক মাস ধরে আলোচনা চলে। এপ্রিলের ৬ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত আইএমএফের একটি মিশন ঢাকা সফর করে, এরপর যুক্তরাষ্ট্রে ২১-২৬ এপ্রিল বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে আলোচনার কোনো অগ্রগতি হয়নি। শেষে ৫ ও ৬ মে ভার্চুয়াল বৈঠকেও সমঝোতা হয়নি। অবশেষে গত সোমবার গভর্নরের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে সমঝোতায় পৌঁছায় দুপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
গাজায় অনাহারে অপুষ্টিতে ৫৭ শিশুর মৃত্যু, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় নিহত আরও ৮১ ফিলিস্তিনি সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা ট্রাম্পের নয়া মেরুকরণের পথে রাজনীতি বিদেশে পাচারের টাকা দেশে আনতে ১১ চ্যালেঞ্জ ফররুখ আহমদের স্মৃতিধন্য বসতভিটা ধ্বংসের পথে এসএ গেমসের বাকি সাত মাস, প্রস্তুতি শুরু কবে? যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করল সৌদি আরব ছাত্রাবাসে ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে রমরমা মামলা বাণিজ্য নতুন নিষেধাজ্ঞা কি থামাতে পারবে ইরানের পরমাণু অভিযাত্রা? ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা বেতন-পদোন্নতি নিয়ে চিকিৎসকদের সুখবর দিল সরকার গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত আরও ৪২ খুলনাসহ যেসব অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ গাজা নিয়ে নেতানিয়াহুর ভয়ংকর হুমকি প্রথা ভেঙে ট্রাম্পকে সম্মান জানালেন সৌদি যুবরাজ নমনীয় পদক্ষেপে বাংলাদেশ পাচ্ছে আইএমএফের ঋণ ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রকে ৬০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার হুমকি দিল ইরান প্রথমে ধোলাই, তারপর সেই নেতাকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা