তেল নিয়ে তুঘলকি আর কত! – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
     ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ

তেল নিয়ে তুঘলকি আর কত!

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১০:০৪ 212 ভিউ
দিন তিনেক আগের কথা। কিছু সদাই কিনতে বাসার কাছেই রাস্তার মোড়ের মুদির দোকানে যেতে হয়েছিল। বাসা থেকে বলে দেওয়া হয়েছিল, অন্যান্য সদাইয়ের সঙ্গে সয়াবিন তেলের কথাও। কিন্তু দোকানিকে সেই বস্তুটির বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই মিলল সাফ জবাব। কানে ঢুকল—‘সয়াবিন তেলের স’ও নাই’! দেশের বাজারে সয়াবিন তেল নিয়ে তুঘলকি কারবার বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। মাঝে একটা বিরতি পড়েছিল। তবে এবার একেবারে প্রচণ্ড ধারাবাহিক। দোকানে তেলের খোঁজে যাওয়ার আগে এক প্রতিবেশী জানিয়েছিলেন, তিনি নাকি পুরো এলাকা ঘুরেও সয়াবিন তেলের ১ লিটারের কোনো বোতলের দেখা পাননি। শেষে প্রায় ৫০ টাকা রিকশাভাড়া দিয়ে এলাকার বাইরের এক বাজার থেকে দুটো বোতল পেয়েছেন। তবে সেই দুটো বোতল আবার

আলাদা আলাদা দোকান থেকে কিনতে হয়েছে এবং তাতে পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে ঘুরতেও হয়েছে ঢের। এমন অভিজ্ঞতা শোনার পরও নিজের খোঁজ করতে যাওয়া। কারণ রান্নায় সয়াবিন তেল লাগে। এ দেশের একেবারে সাধারণ পরিবারেও পেটে খাবার দিতে হলে এই বস্তুটি কিনতে হয়। একেবারেই রোজকার দ্রব্য এই সয়াবিন তেল। কিন্তু সেটি কিনতে গিয়েই এবার একেবারে নাকানিচুবানি খেতে হচ্ছে দেশের মানুষকে। অন্যদের অভিজ্ঞতা শুনে সত্য-মিথ্যা যাচাই করতে গিয়ে এলাকার তিনটি দোকান ঘুরেও একটি সোনালি রঙের বোতলও যখন মিলল না, তখন মনে হতে থাকল–তবে কি এ দেশে সয়াবিন তেল সোনার হরিণ হয়ে যাচ্ছে? সংবাদমাধ্যমের সাম্প্রতিক খবরে আজ শুক্রবার জানা গেছে, রাজধানীর বাজারগুলোয় সয়াবিন তেলের সংকট কাটেনি। রাজধানীর

বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট এখনও না কাটায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। ময়দা-আটাসহ পণ্য না কিনলে সয়াবিন তেল দিচ্ছে না কোম্পানির প্রতিনিধিরা, এমন অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বাইরে বরিশাল, খুলনা, সিলেট, যশোর, চাঁদপুর, হিলি প্রভৃতি এলাকাতেও একই চিত্র দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃত্রিম সংকটের কারণে চাইলেই দোকানে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। লিটার প্রতি ১৭৫ টাকা হলেও অনেক জায়গায় খোলা সয়াবিন তেলই বিক্রি হচ্ছে এর চেয়ে বেশি দামে। যেমন, খুলনার বাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটারে বিক্রি হচ্ছে দুই শ টাকায়। আর কয়েক দোকান ঘুরলেও মিলছে না বোতালজাত তেল। আর যেসব দোকানে মিলছে সেখানেও কিনতে হচ্ছে

অন্য কোম্পানির পণ্য। দোকানিদের অভিযোগ, বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তেলের সঙ্গে একই কোম্পানির চাল-আটা-ডাল ও মসলা না নিলে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। এই অবস্থা চলতে থাকলে রমজানে সংকট আরও বাড়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, সয়াবিন তেল নিয়ে এ দেশের বাজারে আসলে যাচ্ছেতাই হচ্ছে। ক্রেতা ও ভোক্তাদের যেমন অনেক ক্ষেত্রে বেশি টাকা অন্যায্যভাবে খরচ করতে হচ্ছে, তেমনি খুঁজতে গিয়ে ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের খবরেই জানা যাচ্ছে যে, অনেক জায়গায় সয়াবিন তেল কিনতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে অন্য পণ্য কেনার শর্ত মেনে নিতে হচ্ছে। ফলে ভোক্তাদের গলায় একপ্রকারের ছুরি ঠেকিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে বললে অত্যুক্তি হয় না। অথচ এমন কোনো নিয়ম কিন্তু কোনো

বাজারব্যবস্থায় থাকতে পারে না। এর আগেও সয়াবিন তেল এমন নাকানিচুবানি এ দেশের মানুষ খেয়েছে। আগের সরকারের আমলেই একবার ঈদের সময় একেবারে ভোজবাজির মতো বাজার থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল সয়াবিন তেল। তখন আবার এই পণ্য ফিরে এসেছিল সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কিছু দাবি মেনে নেওয়ার পর। অর্থাৎ, সয়াবিন তেল নিয়ে শুধু দেশের মানুষ নয়, বরং দেশের সরকারকেও নাকানিচুবানি খাওয়ানো হয়েছে আগেও। তার অর্থ হলো, এই পণ্যটি নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের একটি চক্র বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এটি আগেও যেমন সক্রিয় ছিল, সরকারের পরিবর্তনের পরও তেমনি আছে। অথচ একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হওয়ার পরও সরকারি নীতিনির্ধারণী প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কিছু দেখেও দেখছে না, শুনেও শুনছে না।

সরকারেরই কর্তব্য, যে কোনো অসাধু চক্রকে পরাভূত করা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করে জনগণকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়া। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জাতীয় সকল ব্যক্তিরাই কেন জানি কেবলই ‘নীতিবাক্য’ শুনিয়েই দায় সারছেন! তারা বলছেন যে, এমনটা হওয়া উচিত নয়। কিন্তু পরিস্থিতির সুনিয়ন্ত্রণ আর মিলছে না। তাহলে আর লাভটা কী! বিপদে আছে কেবল সাধারণ জনতা। তারা কেবলই এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছে এক বোতল সয়াবিন তেলের জন্য। জনতার সময় ও অর্থক্ষয় হচ্ছে, হচ্ছে ভোগান্তিও। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়টি হলো, মাথা পেতে নিতে হচ্ছে এক ধরনের অপমান। যখন আপনাকে এক বোতল সয়াবিন তেল পেতে বাধ্য হয়ে অন্যান্য পণ্যও কিনতে হবে, তখন আপনি এক ধরনের

অসহায় আত্মসমর্পণের অনুভূতি পাবেন। এটি আদতে রাহাজানির মতো একটি অপরাধের সামনে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে তা মেনে নেওয়ার মতো বিষয়। সাধারণ মানুষের টাকা আসলে সুপরিকল্পিতভাবে ছিনতাই করছে একটি চক্র। অথচ, তার বিচারের বদলে মিলছে না ন্যূনতম প্রতিরোধ বা প্রতিকারও। সবশেষে তাই নীতিনির্ধারকদের কাছে প্রশ্ন একটাই। দেশের বাজারে সয়াবিন তেল নিয়ে তুঘলকি চলবে আর কত দিন? সঠিক উত্তরটি পেলে সাধারণ জনতার অংশ হিসেবে অপমান ও ভোগান্তি সহ্য করার সময়সীমা সম্পর্কে অবগত থাকা যেত আর কি! মানসিক প্রস্তুতিরও তো একটা ব্যাপার আছে! লেখক: অর্ণব সান্যাল, উপবার্তা সম্পাদক, ডিজিটাল বিভাগ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সাংবাদিক ও প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার ঘটনায় ১০ দেশের তীব্র নিন্দা অবৈধ ইউনুস সরকারের ব্যর্থতায় গণমাধ্যম ধ্বংস প্রেস সচিব শফিকের উস্কানিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম সংকটে “আমি বিএনপি চাই না জামায়াতও চাই না, আওয়ামী লীগ না থাকলে আমি ভোট দিবো না” – জনতার কথা ‘দায়মুক্তি’ শীর্ষক লাইভ প্রোগ্রামের বিশেষ পর্ব আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার মত কেউ বাংলাদেশে পয়দা হয়নাই, আওয়ামী লীগ বীরের বেশে দেশে ফিরে আসবে” –জনতার কন্ঠ অবৈধ দখলদার সরকারের শাসনে জনরোষ, ঘরে ঘরে অসন্তোষ সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত হওয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ সদস্যের কফিনে বাংলাদেশের পতাকা নেই না ফেরার দেশে বাংলাদেশের জন্মের অন্যতম সাক্ষী ও বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান এ কে খন্দকার, বীর উত্তম কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিসে দুর্বৃত্তদের আগুন, পুড়ল গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নিউইয়র্কে ফোবানার কিকঅফ : মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে শুরু হবে নতুন পথচলা ফুলকপির পরোটা রেসিপি কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফিরলেন ওসমান হাদি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ, পুলিশসহ টেঁটাবিদ্ধ ৬ সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে: ভলকার তুর্ক উদীচী কার্যালয়ে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৪ ইউনিট ভালুকায় যুবককে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা নূরুল কবীরের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ সিলেট সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত বিশ্ব গণমাধ্যমে ওসমান হাদির মৃত্যু পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ