তিনগুণ আয়তন বাড়ল সাতছড়ি উদ্যানের, সংরক্ষিত হবে মহাবিপন্ন প্রাণী – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
     ৭:১৪ অপরাহ্ণ

তিনগুণ আয়তন বাড়ল সাতছড়ি উদ্যানের, সংরক্ষিত হবে মহাবিপন্ন প্রাণী

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৭:১৪ 87 ভিউ
মাত্র দেড় কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আছে ২শ প্রজাতির বেশি পাখি, মহাবিপন্ন ভাল্লুক ও বন্য কুকুর, বিপন্ন প্রজাতির মুখপোড়া ও চশমাপরা হনুমান, মহাবিপন্ন উল্লুক, গন্ধগোকুল, চিতা বিড়াল ও মেছোবিড়ালসহ অনেক প্রজাতি। কিন্তু আয়তনের হিসাবে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট বন। মাত্র ২৪৩ হেক্টর বা ৬শ একর; যা বন্যপ্রাণীর চলাফেরা ও রক্ষায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিবেচনায় নিয়ে সাতছড়ি সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি ও বন বিভাগের প্রস্তাবে বন পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জাতীয় উদ্যানের ৬শ হেক্টর আয়তন বাড়ানোর প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে। ফলে এখন থেকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের আয়তন হচ্ছে ৮৪৩ হেক্টর। পার্শ্ববর্তী জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে উদ্যানটির আয়তন তিনগুণ বাড়ানো হলো। প্রকৃতিবিদরা বলছেন, এই জাতীয়

উদ্যান সম্প্রসারণের ফলে বন্যপ্রাণীরা উপকৃত হবে। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের এতসব সমৃদ্ধ বন্যপ্রাণীকে সংরক্ষণ ও বাঁচিয়ে রাখতে সাতছড়ি সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি জাতীয় উদ্যানের আয়তন বাড়ানোর একটি প্রস্তাব পাঠায় বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সিলেটে। তৎকালীন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী প্রস্তাবটি বন অধিদপ্তরে পাঠালে অধিদপ্তর থেকে যাচাই বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। মন্ত্রণালয় সম্প্রতি উদ্যানের আয়তন বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করে। প্রকৃতির আপন মায়ায় সুনিপুণভাবে বেড়ে ওঠা এই বনটি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ত্রিপুরা সীমান্তের গাঁ ঘেঁষে অবস্থিত। মিশ্র চিরসবুজ এই বনটি আঁকাবাঁকা ৭টি পাহাড়ি ছড়া ও উঁচু-নিচু পাহাড়ি টিলায় পরিবেষ্টিত। বনাঞ্চলটি ঘিরে ৯টি চা বাগান রয়েছে। পশ্চিমে সাতছড়ি চা বাগান

ও পূর্বদিকে চাকলাপুঞ্জি চা বাগান অবস্থিত। এ কারণে এখনো বন্যপ্রাণী সমৃদ্ধ ছোট সাতছড়ি বন। বনবিভাগ সূত্রে জানায়, সাতছড়িতে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী রয়েছে। বড় আকারের স্তন্যপায়ীদের মধ্যে রয়েছে লেজবিহীন স্তন্যপায়ী উল্লুক। ইতোমধ্যেই পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে হারিয়ে যাওয়া এই মহাবিপন্ন উল্লুকের অন্যতম উপযুক্ত আশ্রয়স্থল সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। অন্যান্য স্তন্যপায়ীর মধ্যে রয়েছে- বিপন্ন প্রজাতির মায়া হরিণ, কালো কাঠবিড়ালি, খরগোশ, বন্যশুকর, শিয়াল, মেছোবিড়াল, চিতা বিড়াল, বনবিড়াল, গন্ধগোকুল, সজারু, হলদে-গলা মার্টিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও মাংসাশী প্রাণিবিষয়ক গবেষক মুনতাসির আকাশ জানান, এটি খুবই সমৃদ্ধ একটি বন। এখানে অনেক বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এই বনের আয়তন বাড়ানোর ফলে বন্যপ্রাণীদের থাকার জায়গা বাড়ল, সেই

সঙ্গে এদের সংরক্ষণে সহযোগী হিসেবে কাজ করবে এই উদ্যোগ। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের তথ্য অনুযায়ী, সাতছড়ি দেশের একমাত্র বন যেখানে এক কিলোমিটারের ভেতর প্রায় ২০০ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা পাখিবিদ ড. ইনাম আল হক বলেন, বনটি বড় করা অবশ্যই পাখিদের জন্য ভালো খবর। তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে বনটি আমার কাছে খুবই প্রিয়। কারণ এখানে এত বৈচিত্র্যপূর্ণ গাছ এবং লতাপাতা আছে সেই সঙ্গে আছে নানা প্রজাতির উদ্ভিদ; যা এই বনকে সমৃদ্ধ করেছে। ছোট বনটি বড় হওয়ায় ২০০ প্রজাতির পাখি তখনই থাকবে, তাদের জন্য আলাদা আলাদা খাবার পাওয়া যাবে। এটা একটা ভালো দিক। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সহ-সভাপতি তারেক অণু জানান, দেশের মধ্যে পাখিদের জন্য

এমন বৈচিত্র্যপূর্ণ উদ্ভিদ আর বৃক্ষে ভরা বন কোথাও নেই। সুন্দরবনের পর একসঙ্গে এত প্রজাতির পাখির দেখা আর কোথাও মেলে না। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্রায় ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ ও ১০ প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে। এদের মধ্যে সবুজ বোড়া বা পিট ভাইপার, কিং কোবরা, অজগর, মক ভাইপার, খয়ে গোখরা, শঙ্খিনী, লাউডগা, বাদামি গেছো সাপ, তক্ষক, গিরগিটি, চিতি বন আঁচিল, গুইসাপ, হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপসহ রয়েছে নানান সরীসৃপ। উভচরের মধ্যে চিত্রিত আঁচিল ব্যাঙ, ভেনপু ব্যাঙ, মুরগিডাকা ব্যাঙসহ রয়েছে ঝিঁঝিঁ ব্যাঙ, সোনা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, দুই দাগী বাঁশি ব্যাঙসহ নানা প্রজাতির ব্যাঙ। প্রায় ১৯০ প্রজাতির রং-বেরঙয়ের প্রজাপতির আবাসস্থল এই সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। বর্ণিল রঙিন ডানা, আকার-আকৃতি, বসার স্থান,

খাদ্যাভ্যাস ও উড়ার ধরনে একটি অন্যটির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বনাঞ্চলটিকে বর্ধিতকরণে যৌক্তিকতা হিসেবে বিভাগীয় বন-কর্মকর্তা ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বিচরণের জন্য আবাসস্থল সংরক্ষণের গুরুত্ব অনেক বেশি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ বনাঞ্চলের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্র যথেষ্ট নয় বিধায় বড় করার প্রস্তাব ছিল। বিভিন্ন ধরনের ফলদ ও বনজ বৃক্ষ অর্থাৎ বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ও খাদ্যপযোগী বনায়ন সৃষ্টি করে বন্যপ্রাণীর খাদ্য ও আবাসস্থল নিশ্চিতকরণ প্রয়োজন। সেজন্য বনাঞ্চলের আয়তন বর্ধিতকরণ করা হলো। সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উদ্যানের জায়গা বাড়ায় প্রাণীদের আবাসস্থল বাড়বে এবং এই জায়গাটা সংরক্ষিত হবে। এতে তাদের প্রজনন ও চলাচলের জন্য নিরাপদ জায়গা বৃদ্ধি পাবে। বনবিভাগ

সূত্রে জানা যায়, সাতছড়িতে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ছাড়াও বিরল প্রজাতির বেশ কিছু পাখির দেখা মিলে এ বনে। আছে প্রায় ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ ও ১০ প্রজাতির উভচর প্রাণী। প্রায় ১৯০ প্রজাতির রং-বেরঙের প্রজাপতির আবাসস্থল এই সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
উগ্রবাদী স্লোগানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দিল শিবির-ইনকিলাব মঞ্চ আওয়ামী লীগকে ফাঁসাতে মেট্রো রেলে সম্ভাব্য নাশকতার পরিকল্পনার গোপন তথ্য ফাঁস ঢাকা লকডাউন: গণপরিবহন সংকটে যাত্রীদের ভোগান্তি রামপুরা থানা যুবলীগের আহ্বায়ক রইজ উদ্দিন আটক – রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ যুবলীগের, ট্রাইব্যুনালকে ব্যবহার করে রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের প্রতিবাদে ইউনুসের শাসনামলে গণতন্ত্রের নামে সহিংসতা! আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন, রাষ্ট্রের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন আটক স্কুলছাত্রের বিজয় চিহ্ন: ‘দাবায়া রাখতে পারবা না’ রাজপথের আওয়ামী লীগ অধিক শক্তিশালী ও জনপ্রিয় : রিচি সোলায়মান ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিতে ভীত ইউনুস সরকার: রাজধানীতে ধরপাকড়, গ্রেফতার আতঙ্কে সাধারণ মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান শুনে আতঙ্কগ্রস্ত এনসিপির মিছিল লীগ আহূত লকডাউনে, পেছানো হলো জাপান অ্যাম্বাসির অনুষ্ঠান ইউনূসের ‘জঙ্গি শাসনের’ বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন: শেখ হাসিনা পিটিআইকে শেখ হাসিনা: ‘আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার চাই, কিন্তু ইউনূস সরকারের সৎ সাহস নেই, তারা ভয় পাচ্ছে’ বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান ব্রিটিশ এমপি বব ব্ল্যাকম্যানের লকডাউন শুরুর আগেই বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির ষড়যন্ত্রে অটো সফল হচ্ছে লকডাউন “ইউনূসের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে”: দেশব্যাপী কর্মসূচির ডাক দিলেন শেখ হাসিনা ‘সরকার আর বেশিদিন টিকবে না’, সবাইকে ঢাকা অবরোধ পালনের আহ্বান সজীব ওয়াজেদের আগুনের ঘটনায় স্থায়ী বহিষ্কার ছাত্রদল নেতা সেনাপ্রধানের রহস্যময় পদক্ষেপ: নেপথ্যে ভারতের হুঁশিয়ারি ও সেনা মোতায়েনে সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েন দিল্লির লাল কেল্লায় বিস্ফোরণ: তদন্ত চলছে, সীমান্তে সতর্ক ভারতীয় বাহিনী