ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত: রাজধানীতে চলবে ব্যাটারিচালিত রিকশা
অটোরিকশা বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার
হাইকোর্টের অভিমত : কুরআন অবমাননা ও মহানবীকে কট‚ক্তির শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান করতে পারে সংসদ
কুইক রেন্টাল দায়মুক্তি অবৈধ
মারা গেছেন মা, কারাগারে বাবা: শিশুদের দেখভাল করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
নিহত জোবায়েদের পরিবার জানে না মামলার বাদী কে
জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব
বিচার বিভাগ সংস্কার নিয়ে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবায়নের একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। সোমবার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসৃত হয় তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ওই খসড়ায় উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। মোট ৫২টি মতামত যাচাই-বাছাই করে শিগগিরই ওই নীতিমালা চূড়ান্ত করে আইন
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্টে উভয় বিভাগের বিচারপতি ও জেলা জজদের উপস্থিতিতে অভিভাষণ বক্তব্যে বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ তুলে ধরেন। সেখানে তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক পৃথককরণ বিষয়ে আলোকপাত করেন। গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নেন ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। প্রধান বিচারপতি তার ঘোষিত বিচার বিভাগীয় রোডম্যাপের বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন : গত ২৭ অক্টোবর পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব সুপ্রিমকোর্ট থেকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৯
অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণে হাইকোর্ট বিভাগের মাধ্যমে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ যথাযথভাবে করতে একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অধ্যাদেশের খসড়া, প্রস্তাবিত সচিবালয়ের অর্গানোগ্রাম এবং Rules of Business ও Allocation of Business এর সম্ভাব্য সংস্কার সম্পর্কে পরিপূর্ণ প্রস্তাব পাঠানো হয়। সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথককরণকে রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সংবিধানের চতুর্থ তফশিলের অন্তর্গত ‘অন্তর্বর্তীকালীন ও সাময়িক বিধানাবলি’র দফা ৬ (৬) অনুযায়ী অধস্তন আদালত সম্পর্কিত সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের বিধানাবলি বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হলে অধস্তন আদালতের বিচারকগণের পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা, ছুটি
ইত্যাদি বিষয়ে প্রচলিত দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটবে এবং বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’ বদলি-পদায়নে বৈষম্য দূর করতে নীতিমালা : বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে বদলি ও পদায়ন নীতিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করতে সারা দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের মতামত চাওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেশের সব জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ সব ট্রাইব্যুনালে গত ৩ নভেম্বর পাঠানো হয়েছে। খসড়া নীতিমালা সম্পর্কে গত ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অধস্তন
আদালতের বিচারকদের মতামত গ্রহণ করা হয়। মোট ৫২টি মতামত যাচাই-বাছাই করে শিগগিরই ওই নীতিমালা চূড়ান্ত করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘোষিত রোডম্যাপের ধারাবাহিকতায় দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের কাজও চলছে। হাইকোর্টে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ : বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসৃত হয় তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ওই খসড়ায় উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেই খসড়ার ওপর সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগে বিচারপতিদের মতামত চাওয়া হয়েছিল।
গত ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮টি লিখিত মতামত পাওয়া গেছে। প্রধান বিচারপতির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মতামতগুলো নিরীক্ষা করে খসড়া অধ্যাদেশটি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা : সুপ্রিমকোর্টের বিচার সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতি গত ১৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। সুপ্রিমকোর্টের সেবা সহজীকরণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে ১২ দফা নির্দেশনা দেন তিনি। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক কর্মকর্তাকে নিজ নিজ দপ্তর মনিটরিং করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নিয়মিত রিপোর্ট দিতে হয় এবং সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধান বিচারপতিকে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত
করেন। প্রধান বিচারপতি নিজে উপস্থিত থেকে ১২ দফা নির্দেশনার বাস্তবায়ন সম্পর্কে অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেন এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা তৈরি করেন। সোমবার প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিতে সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের বিভিন্ন শাখার নেওয়া পদক্ষেপ সংক্রান্তে অগ্রগতি প্রতিবেদন ও মাসিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন মূল্যায়ন করার কথা রয়েছে। সেবা গ্রহীতার জন্য সহায়তা : কোনো বিচারপ্রার্থী বা সেবাগ্রহীতা সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কোনো শাখায় সেবা পেতে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলে বা সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো অসুবিধার মুখোমুখি হলে তাদের সহায়তা করার জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর (+৮৮ ০১৩১৬১৫৪২১৬) চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রির সহকারী রেজিস্ট্রার হিসাবে কর্মরত একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ওই হেল্পলাইন পরিচালনা করেন এবং সেবাগ্রহীতাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেন। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত এই হেল্পলাইন চালু থাকে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত রোববার পর্যন্ত এই হেল্পলাইন নম্বরে আইনি পরামর্শ, মামলা সম্পর্কিত তথ্য ও অভিযোগ দাখিল সংক্রান্ত মোট ৭২৩টি ফোন কল গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪২৬টি কলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কলদাতা আইনি পরামর্শ নিয়েছেন। এছাড়া ২৪৩টি কলের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতারা মামলা সংক্রান্ত তথ্য জেনেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন অনিয়ম, কাজে অবহেলা, সেবা প্রাপ্তিতে বিলম্ব ও দুর্নীতি সংক্রান্ত ৪২টি কল গ্রহণ করা হয়েছে এবং অভিযোগসমূহ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর কারণে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পরিবর্তে সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছিল। পরে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করলেও রিভিউ অনিষ্পন্ন ছিল। গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগে ওই রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি করে দিলে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। সেখানে বলা হয়, ‘তারই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতি রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করে নিজ স্বাক্ষরযুক্ত পত্রের মাধ্যমে স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ করার ইচ্ছা পোষণ করলে গত ১৯ নভেম্বর তাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়।’
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্টে উভয় বিভাগের বিচারপতি ও জেলা জজদের উপস্থিতিতে অভিভাষণ বক্তব্যে বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ তুলে ধরেন। সেখানে তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক পৃথককরণ বিষয়ে আলোকপাত করেন। গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নেন ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। প্রধান বিচারপতি তার ঘোষিত বিচার বিভাগীয় রোডম্যাপের বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন : গত ২৭ অক্টোবর পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব সুপ্রিমকোর্ট থেকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৯
অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণে হাইকোর্ট বিভাগের মাধ্যমে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ যথাযথভাবে করতে একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অধ্যাদেশের খসড়া, প্রস্তাবিত সচিবালয়ের অর্গানোগ্রাম এবং Rules of Business ও Allocation of Business এর সম্ভাব্য সংস্কার সম্পর্কে পরিপূর্ণ প্রস্তাব পাঠানো হয়। সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথককরণকে রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সংবিধানের চতুর্থ তফশিলের অন্তর্গত ‘অন্তর্বর্তীকালীন ও সাময়িক বিধানাবলি’র দফা ৬ (৬) অনুযায়ী অধস্তন আদালত সম্পর্কিত সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের বিধানাবলি বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হলে অধস্তন আদালতের বিচারকগণের পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা, ছুটি
ইত্যাদি বিষয়ে প্রচলিত দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটবে এবং বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’ বদলি-পদায়নে বৈষম্য দূর করতে নীতিমালা : বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে বদলি ও পদায়ন নীতিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করতে সারা দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের মতামত চাওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেশের সব জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ সব ট্রাইব্যুনালে গত ৩ নভেম্বর পাঠানো হয়েছে। খসড়া নীতিমালা সম্পর্কে গত ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অধস্তন
আদালতের বিচারকদের মতামত গ্রহণ করা হয়। মোট ৫২টি মতামত যাচাই-বাছাই করে শিগগিরই ওই নীতিমালা চূড়ান্ত করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘোষিত রোডম্যাপের ধারাবাহিকতায় দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের কাজও চলছে। হাইকোর্টে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ : বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসৃত হয় তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ওই খসড়ায় উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেই খসড়ার ওপর সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগে বিচারপতিদের মতামত চাওয়া হয়েছিল।
গত ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮টি লিখিত মতামত পাওয়া গেছে। প্রধান বিচারপতির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মতামতগুলো নিরীক্ষা করে খসড়া অধ্যাদেশটি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা : সুপ্রিমকোর্টের বিচার সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতি গত ১৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। সুপ্রিমকোর্টের সেবা সহজীকরণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে ১২ দফা নির্দেশনা দেন তিনি। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক কর্মকর্তাকে নিজ নিজ দপ্তর মনিটরিং করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নিয়মিত রিপোর্ট দিতে হয় এবং সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধান বিচারপতিকে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত
করেন। প্রধান বিচারপতি নিজে উপস্থিত থেকে ১২ দফা নির্দেশনার বাস্তবায়ন সম্পর্কে অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেন এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা তৈরি করেন। সোমবার প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিতে সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের বিভিন্ন শাখার নেওয়া পদক্ষেপ সংক্রান্তে অগ্রগতি প্রতিবেদন ও মাসিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন মূল্যায়ন করার কথা রয়েছে। সেবা গ্রহীতার জন্য সহায়তা : কোনো বিচারপ্রার্থী বা সেবাগ্রহীতা সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কোনো শাখায় সেবা পেতে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলে বা সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো অসুবিধার মুখোমুখি হলে তাদের সহায়তা করার জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর (+৮৮ ০১৩১৬১৫৪২১৬) চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রির সহকারী রেজিস্ট্রার হিসাবে কর্মরত একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ওই হেল্পলাইন পরিচালনা করেন এবং সেবাগ্রহীতাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেন। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত এই হেল্পলাইন চালু থাকে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত রোববার পর্যন্ত এই হেল্পলাইন নম্বরে আইনি পরামর্শ, মামলা সম্পর্কিত তথ্য ও অভিযোগ দাখিল সংক্রান্ত মোট ৭২৩টি ফোন কল গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪২৬টি কলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কলদাতা আইনি পরামর্শ নিয়েছেন। এছাড়া ২৪৩টি কলের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতারা মামলা সংক্রান্ত তথ্য জেনেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন অনিয়ম, কাজে অবহেলা, সেবা প্রাপ্তিতে বিলম্ব ও দুর্নীতি সংক্রান্ত ৪২টি কল গ্রহণ করা হয়েছে এবং অভিযোগসমূহ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর কারণে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পরিবর্তে সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছিল। পরে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করলেও রিভিউ অনিষ্পন্ন ছিল। গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগে ওই রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি করে দিলে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। সেখানে বলা হয়, ‘তারই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতি রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করে নিজ স্বাক্ষরযুক্ত পত্রের মাধ্যমে স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ করার ইচ্ছা পোষণ করলে গত ১৯ নভেম্বর তাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়।’