
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

ঝিনাইদহে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে চরমপন্থিরা

তালবাহানা বন্ধ করে দ্রুত সংসদ নির্বাচন দিতে হবে: জয়নুল আবেদীন

উত্তরায় কুপিয়ে জখমের ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও ২

পরকীয়া সম্পর্ক জেনে যাওয়ায় কলেজ ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা

এমপিদের ২৪ গাড়ি নিলামে উঠলেও ৯ টির দর দেয়নি কেউই

হেঁটেই ৬৪ জেলা ভ্রমণ, দুই হাফেজ এখন নাটোরে

বাঘায় সাবেক মেয়রসহ আ.লীগের ২ নেতা গ্রেফতার
জামায়াত নেতার বাধার মুখে আটকে গেল উন্নয়ন কাজ

সিলেটে জামায়াত নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আফিয়ান চৌধুরীর বাধার মুখে আটকে গেছে সরকারি গেজেটভুক্ত রাস্তা পাকাকরণের কাজ। ৩৭৫ মিটার রাস্তায় সরকার ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও ৩৪০ মিটার কাজ শেষ করার পর এখন জামায়াত নেতার মামলায় আটকে গেছে ৩৫ মিটার কাজ। অথচ কয়েক যুগ ধরে রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছেন কয়েক গ্রামের শত শত মানুষ। বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসায় যাতায়াতের রাস্তাও এটি। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের খাজাখালু গ্রামে।
এদিকে রাস্তার সরকারি কাজ বন্ধ করতে আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেও লাভ হয়নি। আদালত আবেদন খারিজ করে দেন। তবে এর বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করা হয়েছে।
এখন আপিল শুনানিতে অংশ নেবে সরকারের পক্ষে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী। ভুক্তভোগী স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, রাস্তার কাজ বন্ধ করতে আফিয়ান চৌধুরী প্রথমে বাঁশ দিয়ে রাস্তায় খুঁটি দেন। তবে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গেড়ে দেন একেবারে পাকা খুঁটি। স্থানীয়দের অভিযোগ, যে রাস্তার কাজে তিনি বাধা দিচ্ছেন সেই রাস্তার উন্নয়নের জন্য তিনি ইউপি চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় সরকারি বরাদ্দ দিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করেন। বাধাদানকারী আফিয়ান চৌধুরী লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলা জামায়াতের নায়বে আমির। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আফিয়ান চৌধুরী শনিবার বলেন, সরকারি যে গেজেটভুক্ত রাস্তা রয়েছে সেই রাস্তা এটা হওয়ার কথা নয়। যে জমিকে রাস্তা দেখিয়ে গেজেটভুক্ত করা হয়েছে সেখানে
তার ব্যক্তিগত ২.৬৫ শতাংশ রয়েছে। এটা কীভাবে করেছে তা তিনি জানেন না। সে সময় কাগজপত্রও তিনি দেখেননি। বিষয়টি সুরাহার জন্য তিনি আদালতে গিয়েছেন। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন তিনি তা মেনে নেবেন। চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় এই রাস্তায় সরকারি বরাদ্দ দিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করেছিলেন কিনা জানতে তিনি চাইলে বলেন, বরাদ্দ দিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু এলাকার লোকজন কৌশলে করে এ রাস্তায় কালভার্ট নির্মাণ করেন। বাস্তবে এ রাস্তায় তিনি কালভার্ট করার জন্য বরাদ্দ দেননি। এলজিইডি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আজিম-উর-রশীদ জানান, রাস্তাটি অনেক আগেই সরকারি গেজেটভুক্ত এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের মূল সড়কে যাওয়ার প্রধান রাস্তা এটি। এজন্য রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। টেন্ডার
প্রক্রিয়া শেষে ঠিকাদার বেশির ভাগ কাজও শেষ করেন। কিন্তু মাত্র ৩৫ মিটার রাস্তা নিয়ে এক পক্ষ আদালতে যান। আবেদনও খারিজ হয়। কিন্তু আবেদনকারী ঊর্ধ্বতন আদালতে আপিল করেছেন। এখন আমরা সরকারের পক্ষে সেখানে শুনানিতে অংশ নেব। তিনি জানান, আইনি জটিলতা শেষ হলেই বাকি কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। শনিবার সরেজমিন গিয়ে নথিপত্র দেখে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে যে রাস্তাটি খাজাখালু আর বাহাপুর গ্রামের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে-সেটি ১৯৮০ সালে শাহ সিকান্দর খাজাখালু রাস্তা নামে গেজেটভুক্ত হয়েছে। যার আইডি নং সড়ক নং- ৬৯১৯৫৫২০৫। এর পাকাকরণ নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে। সরকারিভাবে সড়কের ৩৭৫ মিটার নির্মাণকাজ অনুমোদন করা হয় এবং এজন্য ৮২
লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সড়ক নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল ফারুক এন্টারপ্রাইজ। তারা ইতোমধ্যে ৩৭৫ মিটারের মধ্যে ৩৪০ মিটার সড়ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। বাকি ৩৫ মিটার সড়ক নির্মাণকাজ করতে গেলেই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আফিয়ান চৌধুরী রাস্তাটিতে তার ব্যক্তিগত জমি রয়েছে বলে বাধা দেন এবং কাজে স্থিতাবস্থা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। জমির কাগজপত্র ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসএ ৩৪২-বিএস ৩৪৫ নং দাগের ১৪ শতাংশ জায়গার ওপর রাস্তার উত্তর পাশে যে কবরস্থানের দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে তা ডিসির খতিয়ানে সরকারি জমি। ওপরে উল্লেখিত দাগের মূল মালিক হচ্ছেন
মবশ্বির আহমদ ও শহিদুল ইসলাম জিতু মিয়া গংয়ের পূর্বপুরুষ মরহুম ইস্কনদর আলী গং ও হাজি আবদুল্লাহ গং। ১৯৫৪ সালের সেটেলমেন্ট জরিপে মাঠ পর্চায় এই জমিটি বরুন্ডী শ্রেণি হিসাবে ওই মালিকদের নামে রেকর্ড হয়েছে। তবে এসএ প্রিন্ট রেকর্ডে এই জমিটি ভুলবশত শ্রেণি কবরস্থান হিসাবে ডিসির খাস খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হয়, তবে আদৌ এখানে কোনো কবরস্থান ছিল না বা এখনো নেই। এটি বিগত কয়েক যুগ ধরে রাস্তা হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। পরে ২০০৪ সালের বিএস জরিপেও জমিটি অনুরূপভাবে ডিসির খাস খতিয়ান হিসাবেই বহাল থাকে। এই এসএ ৩৪২ ও বিএস ৩৪৫ দাগের সড়কটি যেহেতু জনস্বার্থে ব্যবহার হয়ে আসছিল, বিধায় এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ
করা হয়নি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা মুবাশ্বির আহমদ ও জিতু মিয়া। তিনি বলেন, যখন ৩০ বছর আগে এখানে দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল তখন এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বিদের উপস্থিতিতেই সেটি করা হয়। তারা বলেন, যেহেতু এটা আমাদের পূর্বপুরুষের জায়গা, এখানে আফিয়ান চৌধুরী গংয়ের কোনো অংশীদারত্ব নেই। সুতরাং আমাদের জায়গার ওপর তাদের অভিযোগ বেমানান ও হাস্যকর। তিনি জানান, আফিয়ান চৌধুরী লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় এই রাস্তার ওপর সরকারি বরাদ্দ এনে ব্রিজ তৈরি করে দিয়েছেন। টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের বরাদ্দ এনে এই রাস্তা সংস্কার করে দিয়েছেন দুইবার। বর্তমান দৃশ্যমান রাস্তার ওপর ভিত্তি করে এবং ১৯৮০ সালে রাস্তাটি গেজেটভুক্ত হয়েছে। বিধায় সরকার ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য। তাদের দাবি এই রাস্তার ওয়ার্ক অর্ডার হওয়ার পর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি একত্রিত হয়ে রাস্তার জন্য ১২ ফুট জায়গা নির্ধারণ করেছেন। সে সময় আফিয়ান চৌধুরী ও আরিফ চৌধুরী সশরীরে উপস্থিত থেকে জায়গা নির্ধারণে সহযোগিতা করেন। পরে পুকুরের উত্তর পাড়ে রাস্তার জায়গা ছেড়ে তাদের বাড়ির সীমানা রক্ষায় সাত ফুট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গত বছরের ৪ জুন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা করা হয়। মামলা নং ৩৫/২০২৪। পরে এই মামলার দুদফা শুনানি শেষে আদালত রাস্তার পক্ষে রায় দিয়ে মামলাটি নথিজাত করেন। আদালতের রায়ে বলা হয়, রাস্তাটি সরকারিভাবে গেজেটেডভুক্ত ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের অংশ। ফলে এখানে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে উভয়পক্ষকে বিরত থাকার জন্য বলা হলো। পরে তারা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে আরেকটি মামলা করে রাস্তার কাজের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চান। যার মামলা নং ২৭৯/২০২৪। এই মামলার দুদফা শুনানি শেষে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনা নামঞ্জুর করেন। এই নামঞ্জুরের আদেশ বাতিল চেয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন আফিয়ান চৌধুরীর আইনজীবী। এদিকে রাস্তার কাজ বন্ধ থাকা এবং রাস্তায় পাকা পিলার স্থাপন করায় গ্রামগুলোতে গাড়ি ছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত ঢুকতে পারছে না। জরুরি চিকিৎসার ক্ষেত্রেও নানা অসুবিধায় পড়েছেন দুই গ্রামের মানুষ।
এখন আপিল শুনানিতে অংশ নেবে সরকারের পক্ষে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী। ভুক্তভোগী স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, রাস্তার কাজ বন্ধ করতে আফিয়ান চৌধুরী প্রথমে বাঁশ দিয়ে রাস্তায় খুঁটি দেন। তবে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গেড়ে দেন একেবারে পাকা খুঁটি। স্থানীয়দের অভিযোগ, যে রাস্তার কাজে তিনি বাধা দিচ্ছেন সেই রাস্তার উন্নয়নের জন্য তিনি ইউপি চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় সরকারি বরাদ্দ দিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করেন। বাধাদানকারী আফিয়ান চৌধুরী লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলা জামায়াতের নায়বে আমির। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আফিয়ান চৌধুরী শনিবার বলেন, সরকারি যে গেজেটভুক্ত রাস্তা রয়েছে সেই রাস্তা এটা হওয়ার কথা নয়। যে জমিকে রাস্তা দেখিয়ে গেজেটভুক্ত করা হয়েছে সেখানে
তার ব্যক্তিগত ২.৬৫ শতাংশ রয়েছে। এটা কীভাবে করেছে তা তিনি জানেন না। সে সময় কাগজপত্রও তিনি দেখেননি। বিষয়টি সুরাহার জন্য তিনি আদালতে গিয়েছেন। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন তিনি তা মেনে নেবেন। চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় এই রাস্তায় সরকারি বরাদ্দ দিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করেছিলেন কিনা জানতে তিনি চাইলে বলেন, বরাদ্দ দিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু এলাকার লোকজন কৌশলে করে এ রাস্তায় কালভার্ট নির্মাণ করেন। বাস্তবে এ রাস্তায় তিনি কালভার্ট করার জন্য বরাদ্দ দেননি। এলজিইডি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আজিম-উর-রশীদ জানান, রাস্তাটি অনেক আগেই সরকারি গেজেটভুক্ত এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের মূল সড়কে যাওয়ার প্রধান রাস্তা এটি। এজন্য রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। টেন্ডার
প্রক্রিয়া শেষে ঠিকাদার বেশির ভাগ কাজও শেষ করেন। কিন্তু মাত্র ৩৫ মিটার রাস্তা নিয়ে এক পক্ষ আদালতে যান। আবেদনও খারিজ হয়। কিন্তু আবেদনকারী ঊর্ধ্বতন আদালতে আপিল করেছেন। এখন আমরা সরকারের পক্ষে সেখানে শুনানিতে অংশ নেব। তিনি জানান, আইনি জটিলতা শেষ হলেই বাকি কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। শনিবার সরেজমিন গিয়ে নথিপত্র দেখে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে যে রাস্তাটি খাজাখালু আর বাহাপুর গ্রামের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে-সেটি ১৯৮০ সালে শাহ সিকান্দর খাজাখালু রাস্তা নামে গেজেটভুক্ত হয়েছে। যার আইডি নং সড়ক নং- ৬৯১৯৫৫২০৫। এর পাকাকরণ নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে। সরকারিভাবে সড়কের ৩৭৫ মিটার নির্মাণকাজ অনুমোদন করা হয় এবং এজন্য ৮২
লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সড়ক নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল ফারুক এন্টারপ্রাইজ। তারা ইতোমধ্যে ৩৭৫ মিটারের মধ্যে ৩৪০ মিটার সড়ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। বাকি ৩৫ মিটার সড়ক নির্মাণকাজ করতে গেলেই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আফিয়ান চৌধুরী রাস্তাটিতে তার ব্যক্তিগত জমি রয়েছে বলে বাধা দেন এবং কাজে স্থিতাবস্থা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। জমির কাগজপত্র ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসএ ৩৪২-বিএস ৩৪৫ নং দাগের ১৪ শতাংশ জায়গার ওপর রাস্তার উত্তর পাশে যে কবরস্থানের দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে তা ডিসির খতিয়ানে সরকারি জমি। ওপরে উল্লেখিত দাগের মূল মালিক হচ্ছেন
মবশ্বির আহমদ ও শহিদুল ইসলাম জিতু মিয়া গংয়ের পূর্বপুরুষ মরহুম ইস্কনদর আলী গং ও হাজি আবদুল্লাহ গং। ১৯৫৪ সালের সেটেলমেন্ট জরিপে মাঠ পর্চায় এই জমিটি বরুন্ডী শ্রেণি হিসাবে ওই মালিকদের নামে রেকর্ড হয়েছে। তবে এসএ প্রিন্ট রেকর্ডে এই জমিটি ভুলবশত শ্রেণি কবরস্থান হিসাবে ডিসির খাস খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হয়, তবে আদৌ এখানে কোনো কবরস্থান ছিল না বা এখনো নেই। এটি বিগত কয়েক যুগ ধরে রাস্তা হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। পরে ২০০৪ সালের বিএস জরিপেও জমিটি অনুরূপভাবে ডিসির খাস খতিয়ান হিসাবেই বহাল থাকে। এই এসএ ৩৪২ ও বিএস ৩৪৫ দাগের সড়কটি যেহেতু জনস্বার্থে ব্যবহার হয়ে আসছিল, বিধায় এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ
করা হয়নি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা মুবাশ্বির আহমদ ও জিতু মিয়া। তিনি বলেন, যখন ৩০ বছর আগে এখানে দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল তখন এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বিদের উপস্থিতিতেই সেটি করা হয়। তারা বলেন, যেহেতু এটা আমাদের পূর্বপুরুষের জায়গা, এখানে আফিয়ান চৌধুরী গংয়ের কোনো অংশীদারত্ব নেই। সুতরাং আমাদের জায়গার ওপর তাদের অভিযোগ বেমানান ও হাস্যকর। তিনি জানান, আফিয়ান চৌধুরী লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় এই রাস্তার ওপর সরকারি বরাদ্দ এনে ব্রিজ তৈরি করে দিয়েছেন। টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের বরাদ্দ এনে এই রাস্তা সংস্কার করে দিয়েছেন দুইবার। বর্তমান দৃশ্যমান রাস্তার ওপর ভিত্তি করে এবং ১৯৮০ সালে রাস্তাটি গেজেটভুক্ত হয়েছে। বিধায় সরকার ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য। তাদের দাবি এই রাস্তার ওয়ার্ক অর্ডার হওয়ার পর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি একত্রিত হয়ে রাস্তার জন্য ১২ ফুট জায়গা নির্ধারণ করেছেন। সে সময় আফিয়ান চৌধুরী ও আরিফ চৌধুরী সশরীরে উপস্থিত থেকে জায়গা নির্ধারণে সহযোগিতা করেন। পরে পুকুরের উত্তর পাড়ে রাস্তার জায়গা ছেড়ে তাদের বাড়ির সীমানা রক্ষায় সাত ফুট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গত বছরের ৪ জুন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা করা হয়। মামলা নং ৩৫/২০২৪। পরে এই মামলার দুদফা শুনানি শেষে আদালত রাস্তার পক্ষে রায় দিয়ে মামলাটি নথিজাত করেন। আদালতের রায়ে বলা হয়, রাস্তাটি সরকারিভাবে গেজেটেডভুক্ত ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের অংশ। ফলে এখানে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে উভয়পক্ষকে বিরত থাকার জন্য বলা হলো। পরে তারা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে আরেকটি মামলা করে রাস্তার কাজের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চান। যার মামলা নং ২৭৯/২০২৪। এই মামলার দুদফা শুনানি শেষে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনা নামঞ্জুর করেন। এই নামঞ্জুরের আদেশ বাতিল চেয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন আফিয়ান চৌধুরীর আইনজীবী। এদিকে রাস্তার কাজ বন্ধ থাকা এবং রাস্তায় পাকা পিলার স্থাপন করায় গ্রামগুলোতে গাড়ি ছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত ঢুকতে পারছে না। জরুরি চিকিৎসার ক্ষেত্রেও নানা অসুবিধায় পড়েছেন দুই গ্রামের মানুষ।