খেলাপি ঋণ পৌনে ৩ লাখ কোটি টাকা – ইউ এস বাংলা নিউজ




খেলাপি ঋণ পৌনে ৩ লাখ কোটি টাকা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮:২৫ 67 ভিউ
দেশের ব্যাংকগুলোতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। ৩ মাসেই ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে যে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে, তা এখন খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। ফলে ব্যাংক থেকে বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশই বর্তমানে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। তবে ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণের অঙ্ক আরও বেশি। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হিসাবে অবলোপন করা ও আদালতের আদেশে স্থগিত থাকা ঋণ বিবেচনায় নেওয়া

হয়নি। এছাড়া বিপুল অঙ্কের ঋণ পুনঃতফশিল করা আছে। সেগুলোও এই হিসাবে নেই। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র আগামী দিনে আরও বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম বলেন, খেলাপি ঋণের এই তথ্য ভুয়া। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর নিজেই বলেছেন খেলাপি ঋণ ৬ লাখ কোটি টাকা। এছাড়া একটা গণমাধ্যমেও বলা হয়েছে প্রকৃত খেলাপি প্রায় ৭ লাখ কোটি টাকা। মূলত কৌশলগত কারণে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৭ লাখ কোটি টাকার কম

হবে না। কারণ এখানে ঋণ অবলোপন, অর্থঋণ আদালতে মামলা, আদালতে স্থগিতাদেশ ও ঋণ পুনঃতফসিল করা বিপুল অঙ্কের টাকার হিসাব নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। তখন দেশের ব্যাংকগুলো থেকে বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল খেলাপি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এরপর থেকে খেলাপি ঋণের অঙ্ক বেড়েই চলছে। অর্থনীতিবিদরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছেন, তৎকালীন সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ লুটপাট হয়েছে, যার একটা বড় অংশই পাচার হয়েছে বিদেশি। এ প্রসঙ্গে এনসিসি ও মেঘনা ব্যাংকের

সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, বর্তমানে খেলাপি ঋণের যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে এটা এখন পর্যন্ত প্রকৃত তথ্য। আগের মতো তথ্য গোপন, লুকোচুরি, কারচুপির সুযোগ নেই। আশঙ্কা হচ্ছে, ধীরে ধীরে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যাবে। যা আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ যে কয়েকটি ব্যাংকে লুটপাট হয়েছে এবং যারা লুটপাট করেছে তারা এখন নানাভাবে পলাতক বা গা-ঢাকা দিয়েছে। তাদের ব্যবসা আর ভালোভাবে চলবে না। ফলে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। এটা হলো দুশ্চিন্তার বিষয়। যা ব্যাংক খাতের জন্য অশনি সংকেত। জানা গেছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এই দ্বিতীয়বার খেলাপি ঋণের তথ্য পাওয়া গেছে, ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র বের

হতে শুরু করেছে। সাবেক সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীদের বড় অঙ্কের ঋণ দিতে নানা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ কাগজে-কলমে কম দেখাতে নেওয়া হয়েছিল একের পর এক নীতি। সরকার পরিবর্তনের পর সেই নীতি থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই ৩ মাসে খেলাপি ঋণ বাড়াতে সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। এই সময়ে সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৩ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৪৯ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত ব্যাংকগুলো ঋণের প্রকৃত চিত্র দেখাতে শুরু করেছে। এদের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকে

খেলাপি ঋণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। একইভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, থার্মেক্সসহ আরও কিছু বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এতেও বেড়েছে খেলাপি ঋণ। এদিকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অঙ্ক ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো ভুয়া দলিল ও অনিয়মের মাধ্যমে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। সরকার পতনের পর এই ঋণের একটি অংশ এখন খেলাপিতে পরিণত হবে। তারা বলেন, শুধু এস আলম ও তার সহযোগীরা একাই ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব মন্দ ঋণে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে কারণ হিসাবে দেখিয়ে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে চান না। তাদের এই প্রবণতা মন্দ ঋণের বোঝা আরও বাড়াতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব ঋণ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে যে শর্ত দিল পাকিস্তান ভারতে ৬ ‘চ্যানেল’ বন্ধ, ব্যাখ্যা না পেলে পাল্টা পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ পাকিস্তানের হামলা, ভারতের ৩২ বিমানবন্দর ১৫ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা চার সপ্তাহের পাক-ভারত যুদ্ধের ব্যয় ছাড়াল ৫০০ বিলিয়ন ডলার তীব্র তাপপ্রবাহ ও বজ্রবৃষ্টি নিয়ে নতুন বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস পরিচালনায় আসছেন যিশু, কোন ছবিতে হাতেখড়ি ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ৫.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল পাকিস্তান করাচির দিকে ভারতের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন, আরব সাগরে উত্তেজনা ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্রকে হত্যা, অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন ভারত ও পাকিস্তানকে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জি-৭ দেশগুলোর রাফাল-সুখোই বনাম এফ১৬-জে১০, কার সক্ষমতা কেমন? রাফাল যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ সরিয়েছে ভারত, প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি মাছের চড়া দামে নাকাল ক্রেতা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হলো আইভীকে ঈদে সংবাদপত্রে ৪ দিন ছুটি ও অনলাইনকর্মীদের আর্থিক প্রণোদনা দাবি ‘ভারতের হামলায় পাকিস্তানে নিহত শতাধিক’ ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাবর্ষণ চলছে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪জন নিহত, পরিবারে শোকের মাতম করিডর ইস্যুতে চীন যুক্ত নয় : রাষ্ট্রদূত