ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
ক্যানসার আক্রান্তদের দুর্ভোগ চরমে, কেমোর সিরিয়াল পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা
রাজধানীর মহাখালী (টিবি গেট) জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ‘সি’ ও ‘ডি’ ব্লকের ঠিক মাঝখান দিয়ে জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তা। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা। ক্যানসার হাসপাতালের ‘ডি’ ব্লকের গেটের সামনে মাদুর পেতে গায়ে পাতলা কম্বল বা চাদর জড়িয়ে তীব্র শীতের মধ্যে বেশকিছু মানুষকে জবুথবু হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকটা খোলা আকাশের নিচে পাতা অন্তত ৫০টি বিছানায় শুয়ে থাকা মানুষগুলোর অর্ধেকই ভুগছেন প্রাণঘাতী ক্যানসারে।
রোগীদের বিছানার কয়েক গজ দূর দিয়ে হর্ন বাজিয়ে, ধুলাধূসরিত করে ছুটে চলছে অ্যাম্বুলেন্স ও ছোট-বড় যানবাহন। পৌষের ঠান্ডা বাতাস, শব্দদূষণ, মশার উৎপাতসহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শুয়ে থাকা একটি বিছানার পাশে দাঁড়াতেই চাদরে ঢাকা মুখ বেড় করে
কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন রোগী। ততক্ষণে আশপাশের বিছানার কয়েকজন রোগী ও স্বজন উঠে বসেছেন। অভয় পেয়ে নোয়াখালী থেকে আসা এক রোগী বলেন, তার নাম বাকের উদ্দিন (৫০)। পাকস্থলীর ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ২১ দিন পর পর কেমো থেরাপি নিতে হয়। ইতোমধ্যে ৯টা সম্পন্ন করেছেন। কয়েকদিন আগে দশ নম্বর কেমোর তারিখ ছিল। ওইদিনই ফাইল জমা দিয়েছেন। কিন্তু শয্যা না পাওয়ায় অপেক্ষা করছেন। সারাদিন এদিক-ওদিক থাকলেও রাতে এখানে বিছানা পাতেন। আশপাশের রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে খান। শয্যা না পাওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, হাসপাতালে বিছানার তুলনায় রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। সব রোগীর ভর্তি থেকে কেমো নিতে হয়। আমার একটা কেমো দিতে
টানা ৪৬ ঘণ্টা লাগে। সহজে শয্যা ফাঁকা পাওয়া যায় না। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেতে, কখনো খরচ জোগাতে না পেরে সময়মতো হাসপাতালে আসা সম্ভব হয় না। তখন সিরিয়াল বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরেক নারী রোগী জানান, শুরুতে কিছু ওষুধ ফ্রি পেলেও এখন পান না। একটা থেরাপি দিতে সব মিলে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। মাসে ২০ হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়। চিকিৎসার জন্য ৫টা গরু ও মেয়ের গহনা পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে। ৩৩৩ টাকা দিলে পেয়িং বেড মেলে কিন্তু সে টাকাও এখন নেই। বাধ্য হয়ে এখানেই ঘুমাই। ক্যানসারের চিকিৎসা নিতে গত এক বছর যত কষ্ট করছি তার চেয়ে মরে
যাওয়া ভালো। পাশেই আনিসুর রহমান নামে আরেকজন বলেন, স্ত্রী জেসমিন আক্তারের (৩৪) কোমরে ব্যথার কারণে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান কোমরের ভেতর দিকে টিউমার থেকে ক্যানসার হয়েছে। কেমো থেরাপি প্রয়োজন হওয়ায় এখানে পাঠিয়েছে। কিন্তু শয্যা খালি না থাকায় স্ত্রীকে ভর্তি করতে পারিনি। টানা চার দিন হাসপাতালের গেটের সামনে বিছানা পেতে অপেক্ষা করছি। শুক্রবার রাতে পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে অনুনয়-বিনয় করার পর নার্সরা এক রাত ইমার্জেন্সিতে ভর্তি রাখেন। আজ সকালে বেড় করে দিয়েছে। পরদিন শনিবার রাত ১০টায় এই প্রতিবেদক দ্বিতীয়বারের মতো পরিস্থিতি দেখতে যান। সে সময় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের পদুয়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক আব্দুর রশীদ (৪০) বলেন, সাত মাস আগে পাকস্থলীতে
ক্যানসার ধরা পড়ে। তারপর থেকে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার জন্য ২ শতাংশ জমি ও হালের গরু বিক্রি করতে হয়েছে। একটা কেমোর জন্য পাঁচ দিন ভর্তি থাকতে হয়। গত ১৩ ডিসেম্বর থেরাপি নেওয়ার তারিখ ছিল। খরচ জোগাতে না পেরে আসতে পারিনি। পরে ধারদেনা করে সপ্তাহখানেক আগে এসেছি। আজ ৪ জানুয়ারি চলে গেলেও তারিখ পাচ্ছি না। কুমিল্লা থেকে আসা আরেক রোগী একরামুল হক (৫৩) বলেন, প্রথমে পায়ে ও হাতে বোন টিউমার হয়। সেখান থেকে ক্যানসারে পরিণত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য এক বছরে দুটি গরু, আমার ৪ শতাংশ ও স্ত্রীর ১১ শতাংশ জমি বিক্রি করেছি। এখন আর কুলিয়ে উঠতে পারছি না। ঢাকায় বাসা ভাড়া করে
চিকিৎসা করাব সেই অর্থ নেই। নিরুপায় হয়ে রাতে এখানে থাকি। ভোর পাঁচটার দিকে উঠিয়ে দেয়। তিনি বলেন, হাসপাতালের কয়েকটি ফ্লোর ফাঁকা আছে। কিছুদিন সেখানে থাকতাম। কিন্তু নভেম্বরের পর থাকতে দেয় না। আবার রুম ভাড়া দেওয়া দালালদের কাছ থেকে কমিশন খেয়ে হাসপাতালের আনসার ও আয়ারা এই জায়গায় পানি ঢেলে ভিজিয়ে রাখে। যাতে রোগীরা থাকতে বা ঘুমাতে না পারে। এ সময় হেলাল, আনিস মিয়া ও চার-পাঁচজন নারীকে রুম ভাড়া দেওয়ার জন্য রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে দরকষাকষি করতে দেখা যায়। জানতে চাইলে আনিস মিয়া বলেন, তিনি বিদেশ থাকতেন। দেশে এসে কয়েকজন বাড়ির মালিক থেকে ৬টা রুম ভাড়া নিয়েছেন। হাসপাতালে আসা রোগীদের কাছে সেগুলো দিনচুক্তিতে ভাড়া
দেন। এ সময় পাশের এক নারীকে দেখিয়ে বলেন, উনি নিজে পাঁচতলা ভবন ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করেন। এই এলাকায় তার মতো আরও ১৫-২০ জন এটিকে পেশা হিসাবে নিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের দুই চিকিৎসক বলেন, শুধু কেমো থেরাপি বিড়ম্বনাই নয়। রেডিও থেরাপি দেওয়ার ৬টি মেশিনের সবগুলোই অকেজো পড়ে আছে। দুপুরের পর জরুরি বিভাগে কোনো রোগী ভর্তি নেওয়া হয় না। জুলাই-আগস্টের পর সরকারিভাবে টেন্ডার না হওয়ায় ওষুধ কেনা যাচ্ছে না। হাসপাতাল পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ৫০০ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার রোগী চিকিৎসা নেন। সকাল আটটা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আউটডোরে সাড়ে তিনশর মতো রোগীর কেমো থেরাপি দেওয়া হয়। যারা কেমো নিয়ে চলে যান। এর বাইরে ভর্তি রোগীদের কেমো থেরাপি দিতে হয়। তিনি আরও বলেন, জরুরি বিভাগে মাত্র ১২টি শয্যা রয়েছে। চাইলেও সবাইকে ভর্তি রাখা সম্ভব হয় না। কিন্তু কিছু ইমার্জেন্সি এবং আউটডোর রোগী কেমো থেরাপি নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য বাইরে থেকে যান। যেটা খুবই অমানবিক। কারণ হাসপাতালের বাইরে টয়লেট, গোসলখানা, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। পুরো হাসপাতালে মাত্র ১১ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছে। তিনি বলেন, এজন্য দিগন্ত ক্যানসার ফাউন্ডেশন এবং আলোক নিবাস নামে দুটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে আলাপ করেছি। দিগন্ত ক্যানসার ফাউন্ডেশন মাত্র তিনশ টাকায় থাকা, তিনবেলা খাবার এবং অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আনার ব্যবস্থা করেছে। আলোক নিবাস রোগীদের যাতায়াত ফ্রি করে দিয়েছে। তারপরও রোগী যায় না। রেডিও থেরাপি মেশিন নষ্ট বিষয়ে তিনি বলেন, আমি গত ১৭ নভেম্বর পরিচালক হিসাবে যোগদান করেছি। দুটি রেডিও থেরাপি মেশিন দিয়ে কাজ চালানো হতো। গত ২১ ও ২২ ডিসেম্বর থেকে সেগুলোও কাজ করছে না। মেরামতের জন্য সিমেন্স কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তি আছে। তারা চেষ্টা চালাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, সচিব সবার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ভিসা জটিলতায় ভারত থেকে প্রকৌশলী আসতে দেরি হচ্ছে।
কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন রোগী। ততক্ষণে আশপাশের বিছানার কয়েকজন রোগী ও স্বজন উঠে বসেছেন। অভয় পেয়ে নোয়াখালী থেকে আসা এক রোগী বলেন, তার নাম বাকের উদ্দিন (৫০)। পাকস্থলীর ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ২১ দিন পর পর কেমো থেরাপি নিতে হয়। ইতোমধ্যে ৯টা সম্পন্ন করেছেন। কয়েকদিন আগে দশ নম্বর কেমোর তারিখ ছিল। ওইদিনই ফাইল জমা দিয়েছেন। কিন্তু শয্যা না পাওয়ায় অপেক্ষা করছেন। সারাদিন এদিক-ওদিক থাকলেও রাতে এখানে বিছানা পাতেন। আশপাশের রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে খান। শয্যা না পাওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, হাসপাতালে বিছানার তুলনায় রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। সব রোগীর ভর্তি থেকে কেমো নিতে হয়। আমার একটা কেমো দিতে
টানা ৪৬ ঘণ্টা লাগে। সহজে শয্যা ফাঁকা পাওয়া যায় না। কখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেতে, কখনো খরচ জোগাতে না পেরে সময়মতো হাসপাতালে আসা সম্ভব হয় না। তখন সিরিয়াল বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরেক নারী রোগী জানান, শুরুতে কিছু ওষুধ ফ্রি পেলেও এখন পান না। একটা থেরাপি দিতে সব মিলে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। মাসে ২০ হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়। চিকিৎসার জন্য ৫টা গরু ও মেয়ের গহনা পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে। ৩৩৩ টাকা দিলে পেয়িং বেড মেলে কিন্তু সে টাকাও এখন নেই। বাধ্য হয়ে এখানেই ঘুমাই। ক্যানসারের চিকিৎসা নিতে গত এক বছর যত কষ্ট করছি তার চেয়ে মরে
যাওয়া ভালো। পাশেই আনিসুর রহমান নামে আরেকজন বলেন, স্ত্রী জেসমিন আক্তারের (৩৪) কোমরে ব্যথার কারণে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান কোমরের ভেতর দিকে টিউমার থেকে ক্যানসার হয়েছে। কেমো থেরাপি প্রয়োজন হওয়ায় এখানে পাঠিয়েছে। কিন্তু শয্যা খালি না থাকায় স্ত্রীকে ভর্তি করতে পারিনি। টানা চার দিন হাসপাতালের গেটের সামনে বিছানা পেতে অপেক্ষা করছি। শুক্রবার রাতে পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে অনুনয়-বিনয় করার পর নার্সরা এক রাত ইমার্জেন্সিতে ভর্তি রাখেন। আজ সকালে বেড় করে দিয়েছে। পরদিন শনিবার রাত ১০টায় এই প্রতিবেদক দ্বিতীয়বারের মতো পরিস্থিতি দেখতে যান। সে সময় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের পদুয়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক আব্দুর রশীদ (৪০) বলেন, সাত মাস আগে পাকস্থলীতে
ক্যানসার ধরা পড়ে। তারপর থেকে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার জন্য ২ শতাংশ জমি ও হালের গরু বিক্রি করতে হয়েছে। একটা কেমোর জন্য পাঁচ দিন ভর্তি থাকতে হয়। গত ১৩ ডিসেম্বর থেরাপি নেওয়ার তারিখ ছিল। খরচ জোগাতে না পেরে আসতে পারিনি। পরে ধারদেনা করে সপ্তাহখানেক আগে এসেছি। আজ ৪ জানুয়ারি চলে গেলেও তারিখ পাচ্ছি না। কুমিল্লা থেকে আসা আরেক রোগী একরামুল হক (৫৩) বলেন, প্রথমে পায়ে ও হাতে বোন টিউমার হয়। সেখান থেকে ক্যানসারে পরিণত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য এক বছরে দুটি গরু, আমার ৪ শতাংশ ও স্ত্রীর ১১ শতাংশ জমি বিক্রি করেছি। এখন আর কুলিয়ে উঠতে পারছি না। ঢাকায় বাসা ভাড়া করে
চিকিৎসা করাব সেই অর্থ নেই। নিরুপায় হয়ে রাতে এখানে থাকি। ভোর পাঁচটার দিকে উঠিয়ে দেয়। তিনি বলেন, হাসপাতালের কয়েকটি ফ্লোর ফাঁকা আছে। কিছুদিন সেখানে থাকতাম। কিন্তু নভেম্বরের পর থাকতে দেয় না। আবার রুম ভাড়া দেওয়া দালালদের কাছ থেকে কমিশন খেয়ে হাসপাতালের আনসার ও আয়ারা এই জায়গায় পানি ঢেলে ভিজিয়ে রাখে। যাতে রোগীরা থাকতে বা ঘুমাতে না পারে। এ সময় হেলাল, আনিস মিয়া ও চার-পাঁচজন নারীকে রুম ভাড়া দেওয়ার জন্য রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে দরকষাকষি করতে দেখা যায়। জানতে চাইলে আনিস মিয়া বলেন, তিনি বিদেশ থাকতেন। দেশে এসে কয়েকজন বাড়ির মালিক থেকে ৬টা রুম ভাড়া নিয়েছেন। হাসপাতালে আসা রোগীদের কাছে সেগুলো দিনচুক্তিতে ভাড়া
দেন। এ সময় পাশের এক নারীকে দেখিয়ে বলেন, উনি নিজে পাঁচতলা ভবন ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করেন। এই এলাকায় তার মতো আরও ১৫-২০ জন এটিকে পেশা হিসাবে নিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের দুই চিকিৎসক বলেন, শুধু কেমো থেরাপি বিড়ম্বনাই নয়। রেডিও থেরাপি দেওয়ার ৬টি মেশিনের সবগুলোই অকেজো পড়ে আছে। দুপুরের পর জরুরি বিভাগে কোনো রোগী ভর্তি নেওয়া হয় না। জুলাই-আগস্টের পর সরকারিভাবে টেন্ডার না হওয়ায় ওষুধ কেনা যাচ্ছে না। হাসপাতাল পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ৫০০ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার রোগী চিকিৎসা নেন। সকাল আটটা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আউটডোরে সাড়ে তিনশর মতো রোগীর কেমো থেরাপি দেওয়া হয়। যারা কেমো নিয়ে চলে যান। এর বাইরে ভর্তি রোগীদের কেমো থেরাপি দিতে হয়। তিনি আরও বলেন, জরুরি বিভাগে মাত্র ১২টি শয্যা রয়েছে। চাইলেও সবাইকে ভর্তি রাখা সম্ভব হয় না। কিন্তু কিছু ইমার্জেন্সি এবং আউটডোর রোগী কেমো থেরাপি নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য বাইরে থেকে যান। যেটা খুবই অমানবিক। কারণ হাসপাতালের বাইরে টয়লেট, গোসলখানা, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। পুরো হাসপাতালে মাত্র ১১ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছে। তিনি বলেন, এজন্য দিগন্ত ক্যানসার ফাউন্ডেশন এবং আলোক নিবাস নামে দুটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে আলাপ করেছি। দিগন্ত ক্যানসার ফাউন্ডেশন মাত্র তিনশ টাকায় থাকা, তিনবেলা খাবার এবং অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আনার ব্যবস্থা করেছে। আলোক নিবাস রোগীদের যাতায়াত ফ্রি করে দিয়েছে। তারপরও রোগী যায় না। রেডিও থেরাপি মেশিন নষ্ট বিষয়ে তিনি বলেন, আমি গত ১৭ নভেম্বর পরিচালক হিসাবে যোগদান করেছি। দুটি রেডিও থেরাপি মেশিন দিয়ে কাজ চালানো হতো। গত ২১ ও ২২ ডিসেম্বর থেকে সেগুলোও কাজ করছে না। মেরামতের জন্য সিমেন্স কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তি আছে। তারা চেষ্টা চালাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, সচিব সবার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ভিসা জটিলতায় ভারত থেকে প্রকৌশলী আসতে দেরি হচ্ছে।