
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

গাজায় একদিনে ইসরাইলি হামলায় নিহত ৮০, অনাহারে ১৪

শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে ১২০ দেশকে পাশে পেয়েছিল ইরান

খামেনিকে হত্যার হুমকি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে রাজধানীর গুলশানে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ দলের বিরুদ্ধে। গুলশানে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় মামলায় পাঁচজনকে আদালতে পাঠিয়ে পুলিশ প্রতিবেদনে এ কথা বলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক সদস্য (বহিষ্কৃত) আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান (রিয়াদ) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাড্ডা থানা শাখার সদস্য (বহিষ্কৃত) ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে আদালতে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে প্রথম চারজনের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অপরজনকে আটক রাখার আবেদন করা হয় পৃথক আবেদনে। দুটি আবেদনেই তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, উল্লেখিত আসামিসহ তাঁদের একটি সংঘবদ্ধ দল দীর্ঘদিন ধরে গুলশান এলাকায় বিভিন্ন বাসায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্ত কর্মকর্তা আবেদনে আরও উল্লেখ করেন, এই সংঘবদ্ধ দলের সদস্যরা দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে। তারা আরও কিছু মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করতে এবং এই সংঘবদ্ধ দলের সঙ্গে আর কারা জড়িত তা জানার জন্য চারজনকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি আবেদনে লেখেন, মামলার এজাহারে দেখা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা ইতিমধ্যে মামলার বাদীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন। ওই টাকা উদ্ধারের জন্যও রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান চারজনকে ৭ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

ভারতের সবচেয়ে বড় আইটি কোম্পানির কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা

হামাসকে নির্মূল করে পূর্ণ বিজয় অর্জনে ইসরায়েল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: নেতানিয়াহু
ওপারে ইয়াবার কমিশন পাচ্ছে আরাকান আর্মি

পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সব সংস্থা মিলে এ বছরের প্রথম চার মাসে জব্দ করে ১ কোটি ৩৮ লাখ পিস ইয়াবা। বরাবরের মতো অধিকাংশ ইয়াবার উৎসস্থল মিয়ানমার। সীমান্ত হয়ে তা বাংলাদেশে ঢোকে। কয়েক বছর ধরে ছোট্ট ইয়াবা বড়ি মাদক বাজারের বড় জায়গা দখল করে আছে।
তুমুল সংঘাতের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে। বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের ওপার তাদের নিয়ন্ত্রণে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মিকে কমিশন দিয়েই দেশটিতে ইয়াবার কারবার চলছে। এমনকি সান ও রাখাইন প্রদেশে ইয়াবার যেসব কারখানা আছে, একসময় জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তার ‘বিনিয়োগ’ ছিল। এখন এই কারবারের হাতবদল হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো
পুরোপুরি এসব দখলে নিয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখে এমন একাধিক সূত্র থেকে এসব তথ্য মিলেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রামু সেক্টর কর্নেল কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ওপারে মাদকের সঙ্গে আরাকান আর্মি, জান্তা সরকার বা সাধারণ যে নাগরিক জড়িত হোক না কেন, এ ঘটনায় আমাদের নীতি জিরো টলারেন্স। মাদক এলেই আমরা জব্দ করব। আরাকান আর্মি ওপারে ধীরে ধীরে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে– এমন তথ্য পাচ্ছি।’ এ পটভূমিতে আজ বৃহস্পতিবার মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এবারের প্রতিপাদ্য– ‘প্রমাণ
স্পষ্ট, প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন, চক্রটি ভেঙে ফেলুন; সংঘবদ্ধ অপরাধ বন্ধ করা হোক’। দিবস উপলক্ষে বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের যুবসমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আজ মাদকের কবলে পড়ে মেধা ও সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলছে। মাদকের অপব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতিসহ জীবনঘনিষ্ঠ বিভিন্ন উপাদান ও সূচকের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনোভাবেই মাদকের চক্র নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। হাত বাড়ালেই মিলছে নানা মাদক। মাদক-সংশ্লিষ্টতার কারণে বাড়ছে নানা অপরাধ। নতুন নতুন মাদক ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকাসহ সারাদেশে। ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিলের সঙ্গে
নতুন যুক্ত হয়েছে সিনথেটিক ড্রাগস। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মিলছে এসব মাদক। আবার বেশির ভাগ মাদক মামলার আসামিরা খালাস পেয়ে ফের নেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। সীমান্ত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখেন এমন একাধিক কর্মকর্তা জানান, ইয়াবার পাশাপাশি আইসও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। তবে সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে আইস আসা অনেক কমেছে। ছোট ছোট ইয়াবার চালান নানা কৌশলে ঢুকছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের জেলেদের জন্য নাফ নদ মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এর সুযোগ নিয়ে অনেক জেলে ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়েছেন। মিয়ানমার থেকে সমুদ্রপথে বড় কিছু চালান কুয়াকাটাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যাচ্ছে। আরেকটি সূত্র বলছে, ইয়াবা কারবারে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের যারা জড়িত, তারা নানা কায়দায় মাদকের অর্থ
লেনদেন করে। মিয়ানমার থেকে আসা কাঠসহ নানা ধরনের পণ্যের অর্থ লেনদেনের আড়ালে মাদকের টাকা পরিশোধ হয়ে থাকে। আরেক কর্মকর্তা বলেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বড় বড় মাদক কারবারির অনেকে গা-ঢাকা দেয়। পালিয়ে থেকে অনেকে তাদের পুরোনো মাদক নেটওয়ার্ক চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া আরাকান আর্মির সদস্যরা মিয়ানমারে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাদক মোকাবিলায় শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থাই যথেষ্ট নয়। সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে মাদক নির্মূলে এগিয়ে আসতে হবে। জোরদার করতে হবে সচেতনমূলক কার্যক্রম। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস) বশির আহমেদ বলেন, সমাজ, দেশ এবং জাতি সম্পূর্ণভাবে মাদকমুক্ত হয় আমাদের সেই প্রচেষ্টা রয়েছে। সব
আসামি খালাস মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের করা মামলা পাঁচ বছর পাঁচ মাসে আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার একটি পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। মামলায় নানা ত্রুটি এবং ত্রুটিমুক্ত তদন্তের কারণে অভিযুক্তরা খালাস পেয়ে যাচ্ছেন। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, পাঁচ বছর পাঁচ মাসে ডিএনসির ১৩ হাজার ৬৪১টি মাদক মামলা আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৬৬৫টি মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছেন। মোট আসামি ছিল ১৪ হাজার ৬২০ জন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি ৫৫.৬১ শতাংশ এবং খালাস পেয়েছেন ৪৪.৩৮ শতাংশ। উদ্ধার চিত্র ২০০৯ সাল থেকে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ, র্যাব, ডিএনসি, বিজিবি এবং কোস্টগার্ড মাদকবিরোধী আলাদা অভিযানে ১৪ লাখ ৯২ হাজার ৬৯৯ মাদক কারবারি, বহনকারী ও সেবনকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। মামলা
সংখ্যা ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১২৮টি। এ সময়ে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ৪০ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৪ পিস। হেরোইন উদ্ধার হয়েছে ৪ হাজার ৫৯১ কেজি এবং কোকেন ২০৫ কেজি। এ ছাড়া ৩৬৯ কেজি আফিম, ১০ লাখ ১০ হাজার ৫৮৮ কেজি গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক উদ্ধার হয়েছে। দুই বছরের মাদক উদ্ধারের সংখ্যা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ২০২৩ সালে ইয়াবা জব্দ করা হয় ৪ কোটি ২৯ লাখ ৭৭ হাজার ২১৯ পিস। পরের বছরে উদ্ধার হয় ২ কোটি ২৮ লাখস ৫৭ হাজার ৭৫১ পিস। অর্থাৎ, ৪৭ শতাংশ ইয়াবা কম জব্দ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পরিস্থিত নাজুক থাকায় সেদিকে বেশি মনোযোগ ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিত অনুকূলে না থাকায় ডিএনসিও সেভাবে অভিযান চালাতে পারেনি। যে কারণে ওই বছরটিতে মাদকবিরোধী অভিযান, গ্রেপ্তার ও উদ্ধার মাদকের পরিমাণ কমেছে। তবে এ বছর অভিযান জোরদার করা হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
পুরোপুরি এসব দখলে নিয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখে এমন একাধিক সূত্র থেকে এসব তথ্য মিলেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রামু সেক্টর কর্নেল কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ওপারে মাদকের সঙ্গে আরাকান আর্মি, জান্তা সরকার বা সাধারণ যে নাগরিক জড়িত হোক না কেন, এ ঘটনায় আমাদের নীতি জিরো টলারেন্স। মাদক এলেই আমরা জব্দ করব। আরাকান আর্মি ওপারে ধীরে ধীরে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে– এমন তথ্য পাচ্ছি।’ এ পটভূমিতে আজ বৃহস্পতিবার মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এবারের প্রতিপাদ্য– ‘প্রমাণ
স্পষ্ট, প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন, চক্রটি ভেঙে ফেলুন; সংঘবদ্ধ অপরাধ বন্ধ করা হোক’। দিবস উপলক্ষে বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের যুবসমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আজ মাদকের কবলে পড়ে মেধা ও সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলছে। মাদকের অপব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতিসহ জীবনঘনিষ্ঠ বিভিন্ন উপাদান ও সূচকের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনোভাবেই মাদকের চক্র নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। হাত বাড়ালেই মিলছে নানা মাদক। মাদক-সংশ্লিষ্টতার কারণে বাড়ছে নানা অপরাধ। নতুন নতুন মাদক ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকাসহ সারাদেশে। ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিলের সঙ্গে
নতুন যুক্ত হয়েছে সিনথেটিক ড্রাগস। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মিলছে এসব মাদক। আবার বেশির ভাগ মাদক মামলার আসামিরা খালাস পেয়ে ফের নেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। সীমান্ত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখেন এমন একাধিক কর্মকর্তা জানান, ইয়াবার পাশাপাশি আইসও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। তবে সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে আইস আসা অনেক কমেছে। ছোট ছোট ইয়াবার চালান নানা কৌশলে ঢুকছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের জেলেদের জন্য নাফ নদ মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এর সুযোগ নিয়ে অনেক জেলে ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়েছেন। মিয়ানমার থেকে সমুদ্রপথে বড় কিছু চালান কুয়াকাটাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যাচ্ছে। আরেকটি সূত্র বলছে, ইয়াবা কারবারে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের যারা জড়িত, তারা নানা কায়দায় মাদকের অর্থ
লেনদেন করে। মিয়ানমার থেকে আসা কাঠসহ নানা ধরনের পণ্যের অর্থ লেনদেনের আড়ালে মাদকের টাকা পরিশোধ হয়ে থাকে। আরেক কর্মকর্তা বলেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বড় বড় মাদক কারবারির অনেকে গা-ঢাকা দেয়। পালিয়ে থেকে অনেকে তাদের পুরোনো মাদক নেটওয়ার্ক চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া আরাকান আর্মির সদস্যরা মিয়ানমারে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাদক মোকাবিলায় শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থাই যথেষ্ট নয়। সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে মাদক নির্মূলে এগিয়ে আসতে হবে। জোরদার করতে হবে সচেতনমূলক কার্যক্রম। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস) বশির আহমেদ বলেন, সমাজ, দেশ এবং জাতি সম্পূর্ণভাবে মাদকমুক্ত হয় আমাদের সেই প্রচেষ্টা রয়েছে। সব
আসামি খালাস মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের করা মামলা পাঁচ বছর পাঁচ মাসে আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার একটি পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। মামলায় নানা ত্রুটি এবং ত্রুটিমুক্ত তদন্তের কারণে অভিযুক্তরা খালাস পেয়ে যাচ্ছেন। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, পাঁচ বছর পাঁচ মাসে ডিএনসির ১৩ হাজার ৬৪১টি মাদক মামলা আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৬৬৫টি মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছেন। মোট আসামি ছিল ১৪ হাজার ৬২০ জন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি ৫৫.৬১ শতাংশ এবং খালাস পেয়েছেন ৪৪.৩৮ শতাংশ। উদ্ধার চিত্র ২০০৯ সাল থেকে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ, র্যাব, ডিএনসি, বিজিবি এবং কোস্টগার্ড মাদকবিরোধী আলাদা অভিযানে ১৪ লাখ ৯২ হাজার ৬৯৯ মাদক কারবারি, বহনকারী ও সেবনকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। মামলা
সংখ্যা ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১২৮টি। এ সময়ে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ৪০ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৪ পিস। হেরোইন উদ্ধার হয়েছে ৪ হাজার ৫৯১ কেজি এবং কোকেন ২০৫ কেজি। এ ছাড়া ৩৬৯ কেজি আফিম, ১০ লাখ ১০ হাজার ৫৮৮ কেজি গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক উদ্ধার হয়েছে। দুই বছরের মাদক উদ্ধারের সংখ্যা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ২০২৩ সালে ইয়াবা জব্দ করা হয় ৪ কোটি ২৯ লাখ ৭৭ হাজার ২১৯ পিস। পরের বছরে উদ্ধার হয় ২ কোটি ২৮ লাখস ৫৭ হাজার ৭৫১ পিস। অর্থাৎ, ৪৭ শতাংশ ইয়াবা কম জব্দ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পরিস্থিত নাজুক থাকায় সেদিকে বেশি মনোযোগ ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিত অনুকূলে না থাকায় ডিএনসিও সেভাবে অভিযান চালাতে পারেনি। যে কারণে ওই বছরটিতে মাদকবিরোধী অভিযান, গ্রেপ্তার ও উদ্ধার মাদকের পরিমাণ কমেছে। তবে এ বছর অভিযান জোরদার করা হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।