একদিকে তীব্র আমদানি সংকট, অন্যদিকে অলস পড়ে রয়েছে ডলার – ইউ এস বাংলা নিউজ




একদিকে তীব্র আমদানি সংকট, অন্যদিকে অলস পড়ে রয়েছে ডলার

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৩ অক্টোবর, ২০২৫ | ৫:১৯ 10 ভিউ
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে দেশের পণ্য আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, আগস্টে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা ৫২২ কোটি ২৭ লাখ (৫.২৭ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য আমদানি করেছেন। এটি জুলাইয়ের তুলনায় ১০৪ কোটি ৭৮ লাখ (১.০৫ বিলিয়ন) ডলার কম, যা শতকরা হিসাবে ১৬.৭১ শতাংশ হ্রাস। গত বছরের আগস্টের তুলনায় কমেছে মাত্র ১ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগস্ট মাসে দেশ আমদানি করেছিল ৫২৭ কোটি ১৫ লাখ (৫.২৭ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের (জুলাই-আগস্ট) হিসাব বলছে, সামগ্রিকভাবে আমদানি ৯.২৬ শতাংশ বেড়েছে। এই দুই মাসে মোট ১ হাজার ১৪৯ কোটি ৩২ লাখ (১১.৪৯ বিলিয়ন)

ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের ১০.৫২ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় বেশি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই সামগ্রিক বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট খাতের আমদানি বৃদ্ধি, যেমন খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেল। তবে মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি) এবং শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের আমদানি কমেছে। শিল্প স্থাপনের নতুন উদ্যোগ এবং ব্যবসা সম্প্রসারণ মন্থর হওয়ার কারণেই নতুন বিনিয়োগ ও উৎপাদন সম্প্রসারণে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জুলাই-আগস্ট সময়ে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা মোট ১১.৪৮ বিলিয়ন ডলারের এলসি (ঋণপত্র) খোলেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮.২৮ শতাংশ বেশি। এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১১.১২ বিলিয়ন ডলারে, বেড়েছে ৪.২৩ শতাংশ। তবে শিল্প স্থাপনের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতির এলসি খোলা মাত্র ০.৭২ শতাংশ

বেড়েছে, আর নিষ্পত্তি প্রায় ১২ শতাংশ কমেছে। মধ্যবর্তী পণ্যের এলসিও কমেছে; খোলা কমেছে ১১.৬২ শতাংশ, নিষ্পত্তি কমেছে ৯.৭২ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সামান্য হলেও দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও জ্বালানি সরবরাহে অবদান রাখছে। তবে শিল্প খাতে আমদানি সংকটের ফলে নতুন কারখানা স্থাপন ও শিল্প সম্প্রসারণ স্থবির হয়ে আছে। এই পরিস্থিতি ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, চলতি অর্থবছরে মাসভিত্তিক আমদানি অঙ্ক ছিল যথাক্রমে—জানুয়ারি ৬.৩৮ বিলিয়ন ডলার (৮.৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি), ফেব্রুয়ারি ৫.৯৪ বিলিয়ন ডলার (১৩.২২ শতাংশ বৃদ্ধি), মার্চ ৫.৮৯ বিলিয়ন ডলার (১৫.৩০ শতাংশ বৃদ্ধি), এপ্রিল ৫.৮২ বিলিয়ন ডলার (২.৯২ শতাংশ হ্রাস), মে ৫.৭৮

বিলিয়ন ডলার (৪.৭৬ শতাংশ বৃদ্ধি), জুন ৪.৩৯ বিলিয়ন ডলার। বিশেষভাবে গত বছরের শেষ মাস জুনে ৪.৩৯ বিলিয়ন ডলারের আমদানি হয়, যা ছিল পুরো বছরজুড়ে সর্বনিম্ন। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, “আমদানি বাড়ছে না, যা নেতিবাচক সংকেত। জুন মাসে আমদানি একেবারেই কমে গিয়েছিল, জুলাইয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছিল, আগস্টে আবার হ্রাস। মূল কারণ বিনিয়োগ কমে যাওয়া। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ বাড়াতে পারেন, তখন আমদানি বৃদ্ধি পাবে।” বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, “এক বছরের বেশি সময় ধরে পোশাক শিল্পের অস্থিরতা চলছেই। দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরাতে হলে আমদানি বাড়াতে হবে এবং বিনিয়োগের ধারাকে ত্বরান্বিত করতে হবে।” অন্যদিকে

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে সামান্য আশার আলো দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২.১১ বিলিয়ন ডলারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভ ২৭.৩৫ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরে নিলাম পদ্ধতিতে ২১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার ডলার কেনা হয়েছে। প্রবাসী আয়ও গত অর্থবছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। জুলাই থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে এসেছে ৯১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩.৬ শতাংশ বেশি। মাসভিত্তিক প্রবাহ ছিল—জুলাই ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্ট ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বর ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। তবু, রিজার্ভের বৃদ্ধি সত্ত্বেও, আমদানি সংকটের কারণে ডলার

কার্যত অলস। নতুন বিনিয়োগ ও শিল্প সম্প্রসারণ স্থবির হয়ে থাকায় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা উদ্বিগ্ন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিনিয়োগ ও আমদানি পুনরায় বেড়ে না গেলে অর্থনীতির অগ্রগতি স্থবির থাকবে এবং শিল্প খাতে চাপ বৃদ্ধি পাবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইউনূস আমলে দেশে হত্যা-মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি: এক দশকে সর্বোচ্চ গত ৯ মাসে ক্রাইমজোন মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে তরুণ নিহত নিজস্ব উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থতায় এবার দুবাই ও মিয়ানমার থেকে চাল আমদানি আপনার টুথব্রাশে লুকিয়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া: পরিবর্তনের সময় কি এসে গেছে? একের পর এক নারীসঙ্গ ও ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল, এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় কারাবন্দি সাবেক সাংসদ ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের স্ত্রী নওজাত বেগম আর নেই একদিকে তীব্র আমদানি সংকট, অন্যদিকে অলস পড়ে রয়েছে ডলার ইউনূস আমলে দেশে হত্যা-মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি: এক দশকে সর্বোচ্চ গত ৯ মাসে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হবে হোয়াইট হাউজের ইস্ট উইং বেলিংহামের গোলে জুভেন্টাসকে হারাল রিয়াল মাদ্রিদ সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমছে জানুয়ারি থেকে, উদ্বেগ মধ্যবিত্ত ও অবসরপ্রাপ্তদের ড. ইউনূসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজার হুমকির মুখে জনপ্রিয় সাংবাদিক আনিস আলমগীর বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার ঘোষণা সাবেক মন্ত্রী পুত্র মুবিন-এর ইউনূস আমলে খুন-রাহাজানিতে আতঙ্কিত দেশবাসী: মাসে গড়ে ২৫০টির বেশি খুন ঐতিহাসিক সোশ্যাল মিডিয়া মামলায় সাক্ষ্য দেবেন মার্ক জাকারবার্গ কী ঘটছে সেন্ট মার্টিন্সে? পরিবেশ রক্ষার নামে ধ্বংসলীলা আর বিশেষ উদ্দেশ্যে জনমানবহীন করাই লক্ষ্য? শুভ জন্মদিন, কিংবদন্তি নেতা তোফায়েল আহমেদ গভীর সংকটে পুঁজিবাজার: বাজার ছেড়েছেন ৮২ হাজার বিনিয়োগকারী, বাড়ছে আস্থাহীনতা ও হতাশা চট্টগ্রামে বিএনপি-জামায়াতের মব হামলায় ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যু: পুলিশি অবহেলার অভিযোগ পরিবারের অবিচলতার সঙ্গে নেতাকর্মীদের আপসহীন সংগ্রামের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের বিবৃতি