উগ্রবাদীদের আল্টিমেটামের পর প্রশাসনই গুঁড়িয়ে দিল খিলক্ষেতের দুর্গা মন্দির, প্রতিমা সরানোরও সময় দেয়নি! – ইউ এস বাংলা নিউজ




উগ্রবাদীদের আল্টিমেটামের পর প্রশাসনই গুঁড়িয়ে দিল খিলক্ষেতের দুর্গা মন্দির, প্রতিমা সরানোরও সময় দেয়নি!

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৬ জুন, ২০২৫ | ৬:২১ 9 ভিউ
ঢাকার খিলক্ষেতের সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির—যা একাধারে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও আবেগের প্রতীক ছিল—অবশেষে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ ২৬শে জুন, বৃহস্পতিবার সকালে এই উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেয় রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রশাসন, সাথে ছিল পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং তৌহিদি জনতা। রেলওয়ের ডেপুটি কমিশনার ও বিভাগীয় এস্টেট অফিসার মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদের ২৪শে জুন জারি করা এক নির্দেশনার ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সনের ২৪ নং অধ্যাদেশের ৫(১) ও ৫(২) নং অনুচ্ছেদের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রেলওয়ে ভূমি হতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের জন্য কুড়িল বিশ্বরোড মোড় হতে খিলক্ষেত বাজার এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূমি থেকে অবৈধ স্থাপনা ও দখলদার উচ্ছেদ

কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মন্দির উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নেমে এসেছে তীব্র শোক, ক্ষোভ ও নিরাপত্তাহীনতা। সকালেই পূর্বাচল আর্মি ক্যাম্প থেকে আসা বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্যের সাথে পুলিশ বাহিনী মন্দির এলাকায় প্রবেশ করে। বুলডোজার নিয়ে তারা হাজির হন মন্দির প্রাঙ্গণে। প্রতিবাদ জানাতে হিন্দু নারী-পুরুষেরা মন্দিরের সামনে অবস্থান নেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনেকে অনুরোধ জানান মন্দিরটি না ভাঙার জন্য। কিন্তু কোনো অনুরোধে কর্ণপাত না করে পুলিশ তাদের জোরপূর্বক সরে যেতে বাধ্য করে। এসময় মন্দিরের প্রতিমাটিও সরাতে পারেননি হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায় দুর্গা প্রতিমাটি ভেঙে পড়ে আছে রাস্তার পাশে। ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন অনেক হিন্দু নারী-পুরুষ।

মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার অভিযোগও ওঠে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অ্যাকশনে আহত হন অনেকেই। সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা মন্দির ধ্বংসের দৃশ্য দেখে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। করোগেটেড টিনের তৈরি হলেও খিলক্ষেতের এই দুর্গা মন্দিরটি প্রায় অর্ধশত বছর ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য এক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। এখানে নিয়মিত পূজা-অর্চনা হতো, ছিল দেবী কালির একটি স্থায়ী প্রতিমাও। প্রতিবছর দুর্গাপূজায় উৎসবমুখর পরিবেশে ভরে উঠত মন্দির প্রাঙ্গণ। স্থানীয়দের মতে, এই মন্দির শুধু একটি ধর্মীয় স্থাপনা ছিল না, বরং হিন্দু সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক অস্তিত্বের প্রতীক হিসেবে টিকে ছিল দীর্ঘদিন ধরে। গত ২৪শে জুন রাতেই এই মন্দিরের ওপর প্রথম হামলা হয়। ইসলামিয়া সুইট অ্যান্ড লাইভ বেকারির মালিক মুফতি মাহমুদুল হাসান ও জামায়াতে

ইসলামীর নিয়ন্ত্রিত শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খিলক্ষেত শাখার সভাপতি আবদুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে তৌহিদি জনতা মন্দিরে হামলা চালায়। তারা মন্দির ভাঙচুরের চেষ্টা করে এবং উপস্থিত ভক্তদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একইসঙ্গে তারা জানিয়ে দেয়, আগামী দিন দুপুর ১২টার মধ্যে মন্দির সরে না গেলে তারা নিজেরাই তা গুঁড়িয়ে দেবে। মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস জানান, তারা কোনো আলোচনা ছাড়াই হামলা চালায় এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে এই মন্দির এখানে আর থাকতে পারবে না। এতে এলাকাবাসী চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে যায়। হামলার পরদিন হিন্দু মহাজোটসহ বিভিন্ন সনাতনী সংগঠন ও সাধারণ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন খিলক্ষেত দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে। তারা হামলার নিন্দা

জানিয়ে দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এবং উল্টো তাদের নির্দেশেই মন্দির ভেঙে দেওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতা ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে। একদিকে রেলওয়ে ‘উচ্ছেদ’ বললেও, অন্যদিকে উগ্র গোষ্ঠীর হুমকির পরপরই এই পদক্ষেপ নেওয়ায় অনেকেই ধারণা করছে, এটি ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর সাথে মিলে সংখ্যালঘুদের ওপর ইউনূস সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় নিপীড়নের একটি দৃষ্টান্ত। সংখ্যালঘু সংগঠনগুলো বলছে, এই ঘটনা বাংলাদেশের ধর্মীয় সহনশীলতা ও সংখ্যালঘু অধিকার প্রশ্নে একটি কালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নিয়মে শিক্ষার্থীদের মাথায় হাত যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা: ‘পাবলিক’ থাকতে হবে সামাজিক অ্যাকাউন্ট যুদ্ধের সময় সংহতি: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাল ইরান খামেনি ‘নিখোঁজ’: ইরানজুড়ে উদ্বেগ-অস্থিরতা রেললাইনের কর্মী থেকে মন্ত্রিত্ব—দক্ষিণ কোরিয়ায় নজিরবিহীন পদক্ষেপ নগর ভবন: ৪৩ দিন পর খুলল প্রশাসক কার্যালয়ের তালা এনবিআর চেয়ারম্যান বললেন, ‘খুবই ঝামেলার’ মধ্যে আছি বিয়ের আসর থেকে কোটি টাকার খাম চুরি সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়ালের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ‘চা খাওয়ার বিল ১ লাখ’, হাসনাতের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে অনুসন্ধানে দুদক ধর্ষিতার কোল আলো করে এলো পুত্র সন্তান, ধর্ষক কারাগারে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল কেনিয়া, নিহত ১৬ উগ্রবাদীদের আল্টিমেটামের পর প্রশাসনই গুঁড়িয়ে দিল খিলক্ষেতের দুর্গা মন্দির, প্রতিমা সরানোরও সময় দেয়নি! ৬ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টানলেন সংগীতশিল্পী কনা ওপারে ইয়াবার কমিশন পাচ্ছে আরাকান আর্মি এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় আজ বসছে সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী চার ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ শিক্ষকের ট্রাম্পের ‘চিরশান্তি’র প্রত্যাশা কি টিকবে ইরানে যে কারণে ব্যর্থ ইসরায়েল পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে আছে চিতা বাঘ