ইউনূস জমানায় জঙ্গিবাদের অবাধ বিচরণ, বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানানোই লক্ষ্য? – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউনূস জমানায় জঙ্গিবাদের অবাধ বিচরণ, বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানানোই লক্ষ্য?

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৫ মে, ২০২৫ | ১০:৫৯ 15 ভিউ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাদের কার্যক্রম বেড়েছে তা নয় রীতমত প্রকাশে জঙ্গিরা তাদের কাজ করে যাচ্ছে। কোথা্ও কোন বাধা পাচ্ছে না। ঠিক যেমন ২০০১ থেকে ২০০৫ এ আমরা যেমনটা দেখেছি। তখনও রাষ্ট্রিয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে, এখনও পেয়ে যাচ্ছে। একটা রাষ্ট্রে জঙ্গিবাদের আবাদ তখনই বাড়ে যখন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, আইনগত ও সামাজিক উপাদানগুলো জঙ্গিদের পক্ষে থাকে। আশঙ্কাজনক হলেও এটা বাস্তব যে বর্তমান সরকারের আমলে ওই চারটি উপাদানের প্রথম তিনটিই বিদ্যমান। এবং সামাজিকভাবেও তাদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে। হিযবুত-তাহরির, আনসার-আল-ইসলাম (যা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম-এবিটি নামেও পরিচিত), হরকাতুল জিহাদ-আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি-বি), জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), জামাতুল আনসার

ফিল হিন্দাল শারকিয়া, আল্লাহর দল, ইমাম মাহমুদ কাফেলা গ্রুপ, হামজা ব্রিগেড ইত্যাদি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড ও তাদের প্রতি রাষ্ট্রের মনোভাব এটা নির্দেশ করে যে ইউনূস সরকার জঙ্গিবাদের ওপর ভর করে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়। জুলাই-আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা পালনকারী জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মতো প্রকাশ্য উগ্র ইসলামপন্থী দলগুলোর পাশাপাশি গোপনে তৎপরতা চালানো এই দলগুলোও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ব্যাপক প্রাধান্য পেয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবেলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুতির অভাব স্পষ্ট। যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট (ATU), কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (CTTC) এবং ডিজিএফআই, এনএসআই, র‍্যাব ও এসবি’র জঙ্গিদমন সেলগুলো

থেকে দক্ষ ও নিবেদিতপ্রাণ সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তাদের অপসারণের মাধ্যমে তা স্পস্ট হয়ে ওঠে। এই বিষয়ে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পরিকল্পিতভাবে চাকরিচ্যুতি, বরখাস্ত, মামলা, গ্রেফতার ইত্যাদির মাধ্যমে দেশের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমকে দুর্বল করা হয়েছে। শুধু তাই নয় জঙ্গি বিরোধী অভিযানগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আদালতে বিচার শুরু করে ভবিষ্যতে তাদের জঙ্গি বিরোধী কর্মকান্ডে নিরুৎসাহিত করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমকেও এসব বিষয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। জামিন মিলছে সহজেইঃ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং এক্ষেত্রে শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির সফলতা ছিল অসামান্য। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। সাম্প্রতিক ডাটা অনুযায়ী

বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার ও জামিন এবং বিভিন্ন মামলার আসামী হয়েছে এমন দুর্ধষ জঙ্গির সংখ্যা প্রায় ১৬৩৯ জন। বাস্তবে এই সংখ্যা অগণিত, কারণ কিছু নিষিদ্ধ সংগঠনের অসংখ্য কর্মী রয়েছে, যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালে পড়েনি, কিন্তু তারাও জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত। আইজি প্রিজনন্স গত ৪ ডিসেম্বর সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘৫ আগস্ট ৭০ জন জঙ্গি কারাগার ভেঙ্গে পালিয়েছে।‘ আর জামিন সম্পর্কে তখন তিনি বলেছিলেন, ‘জেএমবি সহ জঙ্গি সংগঠনের সাথে যুক্ত ১৭৪ জন জামিনে বেরিয়েছে।‘ এছাড়াও এক সূত্রে জানা গেছে, শাস্তিপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন হিসেবে ৪ আগস্ট পর্যন্ত কারাগারে বন্দি ছিলেন ৯১৬ জন জঙ্গি। আইজি প্রিজন্সের উল্লেখিত ৭০ জনের মধ্যে পরবর্তীতে মাত্র ১ জনকে গ্রেফতার

করেছে পুলিশ, বাকিরা লাপাত্তা। বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত হিসাবে বাংলাদেশে শীর্ষ জঙ্গির সংখ্যা ১১৭ জন। এরমধ্যে ৫ আগস্টের পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছে ৪৮ জন। এছাড়া আরও ২৬৪ জঙ্গি জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এভাবে মোট ৩১২ জন প্রমাণিত ও স্বীকৃত জঙ্গিকে সরকার জামিনে মুক্তি দিয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিও জামিন পেয়েছে, যা নজিরবিহীন। হলি আর্টিজানের হামলাকারী ও খুনী জঙ্গিও জামিনে মুক্তি পেয়েছে।এসব জামিন শুনানীর সময় রাস্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধীতা করেনি। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতা মুফতি জসিম উদ্দিন রাহমানী এবং তার সহযোগী মুফতি হারুন ইজহার, আবু হাসান ওসামা ও মাহমুদ হাসান গুনভি এবং জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার নেতা ডা. রাফাত চৌধুরী প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। জামিনে মুক্তির

পরে তাদেরকে সেলিব্রিটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অপরদিকে তারা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, নারীর স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মাজার, ধর্মীয় সংখ্যালঘু তথা অমুসলিম, ভাস্কর্য, আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘৃণা ছড়িয়ে ইসলামী বক্তৃতার নামে উগ্রবাদের প্রচার করছে। দোষী সাব্যস্ত এবং বিচারাধীন অন্যান্য সন্ত্রাসী সন্দেহভাজনদেরও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জঙ্গি ও জঙ্গিবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনঃ ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর শাহ আলী এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ দুইজন জঙ্গিকে গ্রেফতারের তথ্য জানায় পুলিমের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। এটি ছিল মূলত ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালিত একটি সফল অপারেশন।

যাইহোক, জঙ্গি গ্রেফতারের তথ্য হিসেবেই পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরেই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে পত্রিকার ভাষ্য বদলে যায়। জঙ্গি শব্দটি বাদ দিয়ে নাশকতাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এভাবেই জঙ্গি বিষয়টিকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশ্রয় দেয়া হয় এবং নরমালাইজেশনের উদ্যোগ নেয়া হয়। কেননা, এই জঙ্গিবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শক্তিগুলোই বিগত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার পতনে সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যার উপঢৌকন হিসেবে সংজ্ঞা বদল, জামিনে মুক্তি এবং শেখ হাসিনার জঙ্গি দমনকে নাটক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে উদ্যোগী হয়েছে খোদ সরকার। জামিন নিয়ে চার জঙ্গি ইউরোপে: সম্প্রতি প্রাপ্ত এক তথ্যে জানা গেছে নেছি, গত প্রায় মাস খানেক আগে বাংলাদেশের ৪ জন চিহ্নিত জঙ্গি শেনজেন ভিসায় ফ্রান্সে প্রবেশ করেছে। তারা নিয়মানুযায়ী ফ্রান্স দূতাবাসের মাধ্যমেই ভিসা নিয়েছে। ৪ জনই পাঁচ আগস্টের পরে জামিনে কারামুক্ত হয়েছে এবং নাম বদলে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরি করেছে এবং সর্বশেষ ভিসা নিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছে। বলাবাহুল্য, এটি সরকারের গোপন ইশারা ও নির্দেশনা ছাড়া ঘটেনি। তাছাড়া সরকার পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের নিয়ম বাতিল করে তাদের সুবিধা করে দিয়েছে। সহজেই অনুমেয় যে এই ৪ জনই এখন ফ্রান্সে আশ্রিত একজন নৈরাজ্যবাদী বাঙালি ব্লগার ও অ্যাকটিভিস্টের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আশঙ্কা হলো, এই জঙ্গিরা ইরানের আয়াতুল্লাহ খোমেনীর ফর্মুলা অনুযায়ী ইউরোপে অবস্থিত মুক্তমনা লেখক ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করতে পারে। জামিনপ্রাপ্তদের খতিয়ানঃ ৫ আগস্টের পরে জঙ্গিরা গণহারে জামিন পেয়েছে। উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালত উভয় আদালতই জামিন দেবার ক্ষেত্রে খুব উদার ভূমিকায় রয়েছে। এতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের স্পষ্ট ইঙ্গিতের নমুনাও পাওয়া যায়। পূর্বে উল্লেখ করেছি এখন পর্যন্ত সরকারের আদালতগুলো মোট ৩১২ জন জঙ্গিকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে। তাদের পরিসংখ্যান নিচে দেয়া হলো- জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামক সংগঠনের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১৯ জন সদস্য ইতোমধ্যে বেরিয়েছে। এরমধ্যে ৫ জন নিউ জেএমবি সদস্য এবং ৩ জন সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্য রয়েছে। জামিনের পরে ৭ জন লাপাত্তা হয়ে গেছে, যাদেরকে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর শনাক্ত করতে পারছে না। হরকাতুল জিহাদ-আল ইসলামী বাংলাদেশ(হুজি-বি) এর ১৭ জন সদস্য জামিনে মুক্তি পেয়েছে। আর জামিনের পরে ২ জন লাপাত্তা হয়ে গেছে, যাদেরকে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর শনাক্ত করতে পারছে না। এরমধ্যে বিভিন্ন মামলার রায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত রয়েছে ১০ জন। বাকীরা বিচারাধীন ছিলেন। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি), যা আনসার-আল-ইসলাম (এএআই) নামেও পরিচিত। এই সংগঠনের ৪৭ জন সদস্য জামিনে মুক্তি পেয়েছে। জামিনের পরে ১১ জন লাপাত্তা হয়ে গেছে, যাদেরকে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর শনাক্ত করতে পারছে না। এই সংগঠনের ৩ জন সদস্য ৫ আগস্ট কারাগার ভেঙ্গে পালিয়েছে এবং এখনও তারা পলাতক। এরমধ্যে বিভিন্ন মামলার রায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত রয়েছে ১০ জন, বাকীরা বিচারাধীন ছিলেন। জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামের সংগঠনের ৭১ জন সদস্য জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এই সংগঠনের উল্লেখযোগ্য নেতা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের পুত্র ডা. রাফাত চৌধুরী ওরফে রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহ গত বছরের সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখে সিলেট কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়েছে। হিজবুত তাহরীরের তাহরীরের ১১ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এরমধ্যে বিভিন্ন মামলার রায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত রয়েছে ৯ জন। তারা মাঝে মধেই প্রকাশে মিছিল করে। নিষিদ্ধ হলেও সংগঠনটি প্রকাশ্যে মিছিল সরকারের কোন ভ্রক্ষেপ নেই। আল্লাহর দল নামের সংগঠনের জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত মাত্র ২ জন। জামিনের পরেই তারা লাপাত্তা হয়ে গেছে, যাদেরকে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর শনাক্ত করতে পারছে না। হামজা ব্রিগেডের ৯ জন সদস্য জামিনে মুক্তি পেয়েছে। ইমাম মাহমুদ কাফেলা গ্রুপের ১৩ জন সদস্য জামিনে মুক্তি পেয়েছে। কেএনএফ (কুকি চিন) এর ২ জন সদস্য জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এছাড়া ২১ জন সন্দেহভাজন জঙ্গি জামিনে মুক্তি পেয়েছে। সরকারের প্রকাশ্যে পৃষ্ঠপোষকতা: ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে ২৭৯ জনের একটি সমন্বিত তালিকা তৈরি করেছিল বিভিন্ন সংস্থা মিলে। এই তালিকাটি সরকারের উচ্চ মহলে দেয়া হয়েছিল, যাতে এদেরকে জামিনের ক্ষেত্রে সরকারে পক্ষ থেকে আপত্তি করা হয়। কিন্তু সরকার এটি বিবেচনায় না নিয়ে এই বিশেষ তালিকার সবাইকে তো জামিন দিয়েছেই, সাথে আরও অনেককে জামিনে মুক্তি দিয়েছে। অথচ আইন উপদেষ্টা প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জামিন না দিতে বিচারকদের নির্দেশ দিয়েছেন। জামিনে মুক্ত ৩১২ জনের সাথে ৫ আগস্টে কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৬৯ জন যোগ করলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৩৮১ জন। আর এই ৩৮১ জন বাংলাদেশের জন্য আতঙ্কের হলেও ইউনূস সরকারের পরম আস্থাভাজন হিসেবে স্বীকৃত। উদার সমাজ গঠনে বাধাঃ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে, বাংলাদেশে ধর্মাশ্রয়ী উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি অভূতপূর্ব স্বাধীনতা উপভোগ করছে। এদের উত্থানে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সামাজিক সম্প্রীতি দীর্ঘমেয়াদে হুমকির মধ্যে পড়েছে। যা বাংলাদেশের চিরায়ত সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য নষ্ট এবং বিশ্বদরবারে পশ্চাৎপদ ও উগ্রবাদী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিত করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল এবং চরমপন্থী গোষ্ঠীর বিশ্বব্যাপী জিহাদি নেটওয়ার্কের সাথে সরাসরি সম্পর্কিতরা অন্তর্বর্তীকালীন শাসনামলে আরও সাহসী হয়েছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানকে শরিয়া-ভিত্তিক কাঠামো দিয়ে প্রতিস্থাপনের তাদের দাবি এখন মসজিদ, মাদ্রাসা এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অবাধে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে, প্রায়শই রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা বা নীরব অনুমোদনের মুখোমুখি হচ্ছে। এই গোষ্ঠীগুলি আর প্রান্তিক কণ্ঠস্বর নয়; তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণকে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রভাবিত করছে, জনসাধারণের আলোচনাকে পুনর্গঠন করছে এবং বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়কে দীর্ঘকাল ধরে সংজ্ঞায়িত করে আসা ধর্মনিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভিত্তিগুলিকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান শাস্তিহীনতার কারণে উৎসাহিত হয়ে, এই মৌলবাদী এবং চরমপন্থীরা ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা, বিনোদন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকি সরকারি ও বেসরকারি অফিসের উপর চাপ প্রয়োগ করছে – তাদের আদর্শিক এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়ার জন্য জনজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে অনুপ্রবেশ করছে। এরপর কীঃ বাংলাদেশের বর্তমান গতিপথ আফগানিস্তানের ধর্মীয় কর্তৃত্ববাদের দিকে ধাবিত হওয়ার সাথে উদ্বেগজনক মিল দেখা যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির পদ্ধতিগত ক্ষয়, একটি অনির্বাচিত শাসনব্যবস্থার দ্বারা ক্ষমতা একীভূতকরণ এবং ইসলামপন্থী শক্তির ক্রমবর্ধমান প্রভাব জাতির ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য উল্লেখযোগ্য উদ্বেগ তৈরি করে। ইসলামপন্থী এবং উগ্রপন্থী শক্তিগুলি রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, সামরিক বাহিনী, পুলিশ এবং বিচার বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলিতে তাদের প্রভাব বিস্তার করছে। জুলাইয়ের আন্দোলন থেকে উদ্ভূত এনসিপি, এই শক্তিগুলির জন্য একটি বেসামরিক মুখপত্র হিসাবে কাজ করে, তাদের রাজনৈতিক বৈধতা প্রদান করে। অন্তর্বর্তীকালীন শাসনব্যবস্থার দ্বারা ক্ষমতায়িত, ইসলামপন্থী দলগুলি অসামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে এবং সক্রিয়ভাবে এমন একটি এজেন্ডা এগিয়ে নিচ্ছে যা মৌলবাদ, চরমপন্থা, জিহাদি বাগাড়ম্বর এবং শরিয়া আইন আরোপের স্বাভাবিকীকরণ করে, একই সাথে পদ্ধতিগতভাবে ধর্মনিরপেক্ষ মানদণ্ডগুলিকে ধ্বংস করে। তাদের কৌশল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বাইরেও যায়, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষাগত ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশ করে ধীরে ধীরে সমাজের আদর্শিক ভিত্তি পুনর্গঠন করে। এই বহুমুখী পদ্ধতির মাধ্যমে, তারা জাতীয় কাঠামোতে শরিয়া-ভিত্তিক নিয়মকানুন এবং নীতিমালা স্থাপন করার চেষ্টা করে, যা বাংলাদেশী রাষ্ট্রকে একটি ধর্মতান্ত্রিক-কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থায় পূর্ণ রূপান্তরের জন্য ভিত্তি প্রস্তুত করে। এই আদর্শিক দখল দেশের ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক পরিচয়ের জন্য একটি গুরুতর এবং সম্ভাব্য অপরিবর্তনীয় হুমকি তৈরি করে। ইউনূসের জমানায় কোন আশা নেইঃ সরকারের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেস্টা ড. ইউনূস গোয়েন্দা প্রধানকে বলেছেন জঙ্গি নিয়ে এখন ঘাঁটাঘাঁটি করার দরকার নেই। তার এই নির্দেশনার ফলে আবারো আমাদের ২০০১ থেকে ২০০৫ এর বাংলা ভাইদের যুগে নিয়ে যায় যখন সরকার বলতো দেশে কোন জঙ্গি নেই। সারাদেশে একযোগে ৬৩ জেলায় ৫০০ বোমা ফাটিয়ে সরকারের বক্তব্যকে অসাড় প্রমাণ করেছিল জঙ্গিরা। ড. ইউনূসের জঙ্গিবান্ধব নীতি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করাবে?

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ঝোপঝাড়ে কঙ্কাল, পাশে থাকা টুপি-লুঙ্গিতে শনাক্ত নিখোঁজ বৃদ্ধ চট্টগ্রামে কারখানায় তৈরি হচ্ছিল কেএনএফের ২০ হাজার ইউনিফর্ম পাকিস্তান সফর করা হচ্ছে না মোস্তাফিজের, বদলির নাম জানাল বিসিবি পাকিস্তানে ভারত-সমর্থিত ৯ সন্ত্রাসী নিহত ড. ইউনূস ক্ষমতায় থাকার জন্য মৌলবাদীদের এক জায়গায় করেছেন: গয়েশ্বর চন্দ্র ইউনূস জমানায় জঙ্গিবাদের অবাধ বিচরণ, বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানানোই লক্ষ্য? ইউক্রেনে সর্ববৃহৎ ড্রোন হামলা রাশিয়ার পাকিস্তানকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ বলে ওয়াইসির পালটা হুঁশিয়ারি হত্যা মামলায় ২ দিনের রিমান্ডে আইভী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার পুনঃনির্ধারিত সময়সূচি প্রকাশ ‘যারা মসজিদে বোমা ফেলে মানুষ হত্যা করে, তারা ভারতের অনুসারী-সন্ত্রাসী’ দুদকের সাবেক ৩ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা, সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ ৮২ বছরে বিশ্বরেকর্ড বৃদ্ধার বড্ড তাড়াতাড়ি চলে গেলে: সালমান কাছ থেকে মৃত্যুকে দেখেছি: মুকুল বিয়ে ছাড়াই ১৩ বছর, আরও ১৩ কেটে যাবে: ঐন্দ্রিলা শুক্রাণু দাতার জিনগত ত্রুটিতে ক্যানসারের ঝুঁকিতে ৬৭ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে গাজার ৭১ হাজার শিশু ও ১৭ হাজার মা কুরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিল সরকার