আড়াই কোটির দরপত্র ৮০ লাখের বাজারে – ইউ এস বাংলা নিউজ




আড়াই কোটির দরপত্র ৮০ লাখের বাজারে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১০ মার্চ, ২০২৫ | ৪:৫৪ 81 ভিউ
হাটবাজার ইজারায় প্রায় আড়াই কোটি টাকার দরপত্র জমা পড়েছে বরিশাল নগর ভবনে। অথচ এসব হাটবাজার থেকে কখনোই ৭০-৮০ লাখের বেশি আয় হতো না সিটি করপোরেশনের (বিসিসি)। নিজস্ব লোকজনের হাতে হাটবাজার তুলে দিতে বছরের পর বছর টেন্ডারের নাটক করতেন ফ্যাসিস্ট অনুসারী আওয়ামী লীগের মেয়ররা। এবার মুক্ত পরিবেশে ইজারা টেন্ডারে অংশ নিয়েছেন কয়েক শ ঠিাকাদার। ফলে রেকর্ড সংখ্যক শিডিউল বিক্রির পাশাপাশি ইজারামূল্যও বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। অবশ্য এতেও সন্তুষ্ট নন নগর ভবনের কর্মকর্তারা। নগরীর দুটি বাস টার্মিনালসহ ১২-১৩টি স্থাপনার টেন্ডারে অনৈতিক কর্মকাণ্ড ঘটার সন্দেহ তাদের। যে কারণে এগুলো ইজারা দেওয়া প্রশ্নে পুনঃদরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্বিতীয় দফা দরপত্রে আয়ের এ পরিমাণ আরও

বাড়বে বলে আশা নগর প্রশাসক বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কায়সারের। বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট আমলে ৪ জন মেয়র পেয়েছে বরিশাল নগর ভবন। এর মধ্যে ৩ জন আওয়ামী লীগ এবং একজন বিএনপির। ওয়ান-ইলেভেনকালে অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে মেয়র হন প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণ। পরের নির্বাচনে অবশ্য বিএনপির মরহুম আহসান হাবিব কামালের কাছে হেরে যান এই মেয়র। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটে মেয়র পাওয়ার ইতিহাস বলতে এ দুজনকেই বোঝে বরিশালের মানুষ। এরপর শেখ পরিবারের কোঠায় দলীয় মনোনয়ন পেয়ে মেয়র হন ভারতে পলাতক শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই হাসানাত আব্দুল্লাহর ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ। সর্বশেষ ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত ৭ মাসের মেয়র ছিলেন শেখ হাসিনার আরেক ভাই

খোকন আব্দুল্লাহ। শেষোক্ত এ দুজনের বিরুদ্ধেই রয়েছে ডাকাতির ভোটে মেয়র হওয়ার অভিযোগ। এ ৪ জনের মধ্যে সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত হয়েও শান্তিতে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি বিএনপির কামাল। মেয়র থাকাকালে পুরো সময় নগর ভবনে অশান্তি সৃষ্টি করে রাখেন সাদিক আব্দুল্লাহ। শেষের দিকে আটকে দেওয়া হয় কামালের আর্থিক ক্ষমতা। তখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন সাদিকের বাবা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ। তিনিই মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে আটকে দেন মেয়র কামালের অর্থ লেনদেনের অধিকার। পরিচয় না প্রকাশের শর্তে নগর ভবনের একাধিক সূত্র জানায়, সাদিক ও খোকন মেয়র থাকাবস্থায় স্বচ্ছতা বলতে কিছুই ছিল না সিটি করপোরেশনে। যে কোনো ঠিকাদারি কাজের টেন্ডার কিংবা হাটবাজার ইজারা

প্রশ্নে তাদের সিদ্ধান্তই ছিল চূড়ান্ত। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের ডেকে কে কোন কাজ পাবেন, তাও বলে দিতেন তারা। বাসটার্মিনাল আর হাটবাজার ইজারা প্রশ্নেও ছিল একই পদ্ধতি। মেয়রের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ঠিকাদারি কাজ আর ইজারা পেত তাদের পছন্দের লোকজন। বিনিময়ে দুজনের পকেটে ঢুকত মোটা অঙ্কের টাকা। এবার অবশ্য পালটে গেছে ১৬ বছরের সেই চিত্র। মুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিসিসির আওতাধীন ১৫টি হাটবাজার, ২টি বাসটার্মিনাল, ৩টি পাবলিক টয়লেট, ৫টি পুকুর ও ১টি কশাইখানা ইজারা দেওয়ার টেন্ডার। নগর ভবন সূত্রে জানা যায়, এবারের টেন্ডারে ৭শর বেশি শিডিউল বিক্রিতে ১০ লাখ টাকার মতো আয় করেছে বিসিসি। অথচ এ খাতে আগে লাখ টাকা আয় করাই কঠিন হয়ে

পড়ত। জমা পড়া দর অনুযায়ী এসব স্থাপনার বিপরীতে আড়াই কোটি টাকারও বেশি নগর ভবনকে দেওয়ার ইচ্ছা জানিয়েছে ইজারা পেতে আগ্রহীরা। নাম-পরিচয় না প্রকাশের শর্তে হাটবাজার শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সর্বশেষ খোকন সেরনিয়াবাতের সময় নগরীর পোর্ট রোড বাজারের ইজারা বাবদ মাত্র ১০ লাখ টাকা পেয়েছিলাম আমরা। এবার মুক্ত পরিবেশে সেই বাজারের ইজারা দর উঠেছে ৬৯ লাখ টাকা। এভাবে সব স্থাপনারই দুই-গুণ/তিনগুণ দর দিয়েছে ইজারাদাররা। অবশ্য এরপরও কয়েকটি স্থাপনার ইজারা প্রশ্নে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে আমাদের। নগরীর দুই বাসটার্মিনালের বিপরীতে মাত্র ১টি করে শিডিউল জমা পড়েছে বিসিসিতে। অথচ বিক্রি হওয়া শিডিউলের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। এই দুটি স্থাপনার যে দর দেওয়া হয়েছে, তাও

আমাদের কাঙ্ক্ষিত দরের সামান্য বেশি। ধারণা করছি, টার্মিনাল দুটির ইজারা পেতে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় অন্যদের হটিয়ে পরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়েছে। কেবল দুটি বাস টার্মিনালই নয়, ২৬টি স্থাপনার মধ্যে অন্তত ১২টির ক্ষেত্রে এরকম ঘটনার সন্দেহ করছেন নগর ভবনের কর্মকর্তারা। এসব স্থাপনার ইজারা প্রশ্নে একদিকে যেমন জমা পড়েছে হাতে গোনা শিডিউল, তেমনই প্রাক্কলিত দরের তুলনায় খুব বেশি দর দেওয়া হয়নি ওইসব শিডিউলে। নগর ভবনের এক কর্মকর্তা বলেন, হয়তো কেউ প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ ইজারাদারদের শিডিউল জমা দিতে বাধা দিয়েছে। অথবা গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় কাজ বাগানোর জন্যও এমনটা করা হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে এসব হাটবাজার-টার্মিনালের বিপরীতে পুনরায় টেন্ডার আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে। আজ-কালের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে।

সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় দফা দরপত্রে আয়ের পরিমাণ ৩ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি। বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওসার বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েছে। সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে। এটা ঠিক যে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত দর পাইনি আমরা। আমাদের দেওয়া সর্বনিু দরের খুব কাছাকাছি দেওয়ার ঘটনাও আছে। সেই সঙ্গে আছে বেশিসংখ্যক বিক্রি হয়েও কম শিডিউল জমা পড়ার ঘটনা। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। আশা করি, যে দর জমা পড়েছে, এর চেয়ে আরও বেশি আয় করতে পারবে নগর ভবন। সেভাবেই কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
মোহাম্মদপুরে বুনিয়া সোহেলের আস্তানায় অভিযান ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা পাইলটদের পুরস্কৃত করল পাকিস্তান বিএনপি চাঁদাবাজের দল: ফয়জুল করীম ওয়েস্টিন: সকালের নাস্তা ৪ হাজার টাকা, রাতের খাবার ৮ হাজার ৪৫০ টাকা খাবারের অভাবে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা নদীর পানিতে বন্দি ১৩ পরিবার ‘ভিউ বাণিজ্যের জন্য আর কত নিচে নামবেন’— প্রশ্ন হৃদয়ের রাজধানীতে মুলার কেজি ৮০ টাকা পাইপলাইনে তেল সরবরাহে নতুন যুগে ঢুকছে বাংলাদেশ একাত্তর-পচাত্তর-চব্বিশ একই সুতোয় গাঁথা বাংলাদেশ জাসদ: শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ন্যায্যতা পায় না ডেঙ্গু জ্বর যা জানা দরকার ভোরে নীলা মার্কেটে হাঁসের মাংস খেতে যান আসিফ মাহমুদ, বন্ধ থাকলে যান ওয়েস্টিনে উজানে অতিবৃষ্টি, উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা প্লাবিত পূজার ছুটির কারণে পেছাল টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি বিপিএল থেকে চিটাগং কিংস বাদ, পাওনার হিসাব দিল বিসিবি ৫ আগস্টের পরে অপুর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি: আসিফ মাহমুদ বিয়ের আগেই শর্ত, বিচ্ছেদ হলে জর্জিনাকে মাসে কোটি টাকা দেবেন রোনালদো শচীনের ঘরে বিয়ের শানাই, ছেলে অর্জুনের আংটি বদল সুদানে কলেরার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, প্রাণহানি অন্তত ৪০