ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
মোহাম্মদপুরে সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজটে ভোগান্তি চরমে
রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবারো সড়ক অবরোধ
রোববার ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
দুর্ঘটনার শিকার পূজা চেরি!
রাজধানী ফার্মগেটে একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুন
কুষ্টিয়ায় চাচাতো ভাইয়ের লাঠির আঘাতে মাছ ব্যবসায়ীর মৃত্যু, আটক ১
আকাশে মেঘ দেখলেই ভয় পান ভবদহ পাড়ের বাসিন্দারা
আকাশে মেঘ দেখলেই ভয় পান ভবদহ পাড়ের বাসিন্দারা। চারদিকে পানি আর পানি। খাদ্য, চলাচল সবই যেন বন্ধ হয়ে পড়েছে। ঘরের বাইরে যেতে পারেন না লোকজন। ডিঙ্গি নৌকা, বাশোর সাঁকোই তাদের ভরসা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষ এবং বাড়িতে পালিত পশুর বসবাস একসঙ্গেই চলছে।
দীর্ঘ তিন দশকের বেশি ভবদহ পাড়ের বাসিন্দাদের অবস্থা এমনটাই যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুম এলেই বাড়ে তাদের এই দুর্দশা। শারদীয় দুর্গা উৎসবের আনন্দও ছুঁয়ে যায়নি তাদের। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা তো রয়েছেই। এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এক প্রকার বন্ধ অবস্থায় রয়েছে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল হাসান সরেজমিনে পরিদর্শন করে ভবদহ এলাকার ভুক্তভোগী মানুষের মুখে তাদের কষ্টের কথা
শুনেছেন। যশোর জেলার মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর, যশোর সদর, বাঘারপাড়া এবং খুলনা জেলার ফুলতলা, ডুমুরিয়া থানার ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র প্রবাহ পথ ভবদহ স্লুইচ গেট। কিন্তু ভবদহ স্লুইচগেটের বিল সংলগ্ন অংশ নিচু এবং ভবদহ স্লুইচগেট সংলগ্ন শ্রী-হরি নদী অংশ উচুঁ হওয়ায় পানি প্রবাহের স্বাভাবিক গতি থমকে গেছে। বিল সংলগ্ন ভবদহ স্লুইচগেটের বিপরীত পাশের শ্রী-হরি নদীসহ খালগুলো পলিতে ভরাট হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র জানায়, তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের আমলে ‘সবুজ বিপ্লব’ বাস্তবায়নে ১৯৬২-৬৩ সালে ভবদহ এলাকায় তিনটি পোল্ডার, ১০ হাজার ৫৬৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ২৮২টি স্লুইচ গেট নির্মাণ হয়। গৃহীত এ প্রকল্পে অসংখ্য নদ-নদীর সংযোগস্থলে বাধা পড়ে এবং বৃহৎ নদীশাসন করে স্লুইচ গেট
নির্মাণ করায় জোয়ারের পানিবাহিত পলি নিম্নভূমির বিলগুলোতে পড়তে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় স্বাভাবিক ভূমি গঠন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। নদীর তলদেশে পলি অবক্ষেপণ হতে হতে জোয়ার-ভাটা ও সমভূমির অবনমনের মধ্যে ব্যাপক অসামানঞ্জস্যতা তৈরি হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ৮০’র দশকে এটি ভবদহ বিলপাড়ের মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। এ অঞ্চলের পানিবন্দি মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের একপর্যায়ে ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৯৬ সালে ২২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কেজেডিআরপি (খুলনা-যশোর ড্রেনেজ রিহেবিলেশন) প্রকল্প, ২০০২ সালে ২৫২ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে খুলনা-যশোর পানি নিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় ভবদহ স্লুইচ গেট থেকে সতিঘাটা কামালপুর পর্যন্ত ২৮২ কিলোমিটার টেকা ও মুক্তেশ্বরী নদীর দুই তীরে বেড়িবাঁধ, কপাটসহ অসংখ্য ছোট ছোট স্লুইচ গেট নির্মাণ হলেও
উঁচু বিলে প্রকল্প নেওয়ায় তা ফলপ্রসূ হয়নি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। ১৯৯৭ সালে পানি সংগ্রাম কমিটি আড়িয়াল খাঁ ঘের কেটে শ্রী নদীর সঙ্গে বিল ভায়নায় জোয়ারাধার সৃষ্টি করা হলে পলি সরে যায়। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে বৈঠকে সংগ্রাম কমিটির জোয়ারধারের এ ধারণা উত্থাপন করা হলে তা টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০১১ সালে বিল কপালিয়ায় একই সমস্যা হলে টিআরএম চালুর কারণে ৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও পাউবোর আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কৃষকদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে টালবাহানা করা হলে সে বরাদ্দের টাকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত যায়। দীর্ঘদিন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভবদহ সংলগ্ন শ্রী হরি, টেকা ও আমডাঙ্গা খালসহ অসংখ্য নদী
ও খাল পলি জমে বিল থেকে উঁচু হয়ে যায়। এতে ভবদহ অঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মনিরামপুর উপজেলার কপালিয়া বিলপাড়ের মানুষ চাঁদা তুলে সেচ পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে। পরে স্থানীয়দের এই ধারণা নিয়ে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) ও বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন)-এর যৌথ উদ্যোগে সেচপাম্প চালু করতে ৩১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি পাউবো বৈদ্যুতিক অবকাঠামো ও ট্রান্সফরমার নির্মাণসহ নানা কাজ করে। তিন কোটি টাকা ব্যয়ে আর নদী থেকে পলি অপসারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়। পরিতোষ বিশ্বাস, কার্ত্তিক মণ্ডল, চৈতন্য মল্লিক, আরাধনসহ একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, সংকট উত্তোরণের কার্যকরী ব্যবস্থা না নিয়ে সেচ
পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের অকার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজন্য পাউবোর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে দুষছেন তারা। কিন্তু ওই সময় ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি একাধিকবার সেচ পাম্পের বিরোধিতা করে স্থায়ী সমাধানে টিআরএম-টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (জোয়ারাধার), আমডাঙ্গা খাল খননসহ নদী থেকে পলি অপসারণের দাবি করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি পাউবো। পাউবো এটিকে আপৎকালীন উল্লেখ করে ভবিষ্যতে স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এখনো সেই সেচ পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যর্থ ও অকার্যকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাউবো। সরেজমিন (বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার) মনিরামপুর উপজেলার লখাইডাঙ্গা, সুজাতপুর, বাজেকুলটিয়া, মশিয়াহাটি, হাটগাছাসহ একাধিক গ্রামে গেলে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের চিত্র চোখে পড়ে। গৃহবধূ সুচিত্রা মণ্ডল বলেন, নৌকা আর
সাঁকো দিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে স্যানিটেশনের চরম সংকট। আকাশে মেঘ দেখলেই ভয় লাগে, বৃষ্টি হলেই আরও পানি বাড়বে। বৃদ্ধা মান্দারী মণ্ডল বলেন, ‘বাবা ফটোক তুলে কি অ্যারবা, তোমরা পানি সরাইয়ে আমাগের বাঁচাও। সেই সহালে দুটো পান্তা ভাত খাইছি আর এহন দুটো চাল নিয়ে আইসে ভাত বসাইছি’। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল হাসান সরেজমিন ভবদহ অঞ্চল পরিদর্শন করে সন্ধ্যায় যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতা এবং ভবদহ সংস্কারের বিভিন্ন কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের ক্ষেত্রে ভবদহ সংলগ্ন আমডাঙ্গা খাল খননপূর্বক স্রোতধারা ঠিক করা এবং টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়নে মতামত প্রধান্য পেয়েছে। জানতে চাইলে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতা শিবপদ বিশ্বাস বলেন, ভবদহ বিলপাড়ের কমপক্ষে ৩শ গ্রামের তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দ্রুত পানি সরাতে আমডাঙ্গা খাল খনন, টিআরএম চালু ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাউবোর যশোর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, দ্রুত পানি নিষ্কাশনে ভবদহের দক্ষিণে পলি অপসারণসহ আমডাঙ্গা খাল থেকে পলি অপসারণের কাজ চলছে।
শুনেছেন। যশোর জেলার মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর, যশোর সদর, বাঘারপাড়া এবং খুলনা জেলার ফুলতলা, ডুমুরিয়া থানার ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র প্রবাহ পথ ভবদহ স্লুইচ গেট। কিন্তু ভবদহ স্লুইচগেটের বিল সংলগ্ন অংশ নিচু এবং ভবদহ স্লুইচগেট সংলগ্ন শ্রী-হরি নদী অংশ উচুঁ হওয়ায় পানি প্রবাহের স্বাভাবিক গতি থমকে গেছে। বিল সংলগ্ন ভবদহ স্লুইচগেটের বিপরীত পাশের শ্রী-হরি নদীসহ খালগুলো পলিতে ভরাট হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র জানায়, তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের আমলে ‘সবুজ বিপ্লব’ বাস্তবায়নে ১৯৬২-৬৩ সালে ভবদহ এলাকায় তিনটি পোল্ডার, ১০ হাজার ৫৬৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ২৮২টি স্লুইচ গেট নির্মাণ হয়। গৃহীত এ প্রকল্পে অসংখ্য নদ-নদীর সংযোগস্থলে বাধা পড়ে এবং বৃহৎ নদীশাসন করে স্লুইচ গেট
নির্মাণ করায় জোয়ারের পানিবাহিত পলি নিম্নভূমির বিলগুলোতে পড়তে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় স্বাভাবিক ভূমি গঠন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। নদীর তলদেশে পলি অবক্ষেপণ হতে হতে জোয়ার-ভাটা ও সমভূমির অবনমনের মধ্যে ব্যাপক অসামানঞ্জস্যতা তৈরি হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ৮০’র দশকে এটি ভবদহ বিলপাড়ের মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। এ অঞ্চলের পানিবন্দি মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের একপর্যায়ে ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৯৬ সালে ২২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কেজেডিআরপি (খুলনা-যশোর ড্রেনেজ রিহেবিলেশন) প্রকল্প, ২০০২ সালে ২৫২ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে খুলনা-যশোর পানি নিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় ভবদহ স্লুইচ গেট থেকে সতিঘাটা কামালপুর পর্যন্ত ২৮২ কিলোমিটার টেকা ও মুক্তেশ্বরী নদীর দুই তীরে বেড়িবাঁধ, কপাটসহ অসংখ্য ছোট ছোট স্লুইচ গেট নির্মাণ হলেও
উঁচু বিলে প্রকল্প নেওয়ায় তা ফলপ্রসূ হয়নি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। ১৯৯৭ সালে পানি সংগ্রাম কমিটি আড়িয়াল খাঁ ঘের কেটে শ্রী নদীর সঙ্গে বিল ভায়নায় জোয়ারাধার সৃষ্টি করা হলে পলি সরে যায়। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে বৈঠকে সংগ্রাম কমিটির জোয়ারধারের এ ধারণা উত্থাপন করা হলে তা টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০১১ সালে বিল কপালিয়ায় একই সমস্যা হলে টিআরএম চালুর কারণে ৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও পাউবোর আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কৃষকদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে টালবাহানা করা হলে সে বরাদ্দের টাকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত যায়। দীর্ঘদিন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভবদহ সংলগ্ন শ্রী হরি, টেকা ও আমডাঙ্গা খালসহ অসংখ্য নদী
ও খাল পলি জমে বিল থেকে উঁচু হয়ে যায়। এতে ভবদহ অঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মনিরামপুর উপজেলার কপালিয়া বিলপাড়ের মানুষ চাঁদা তুলে সেচ পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে। পরে স্থানীয়দের এই ধারণা নিয়ে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) ও বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন)-এর যৌথ উদ্যোগে সেচপাম্প চালু করতে ৩১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি পাউবো বৈদ্যুতিক অবকাঠামো ও ট্রান্সফরমার নির্মাণসহ নানা কাজ করে। তিন কোটি টাকা ব্যয়ে আর নদী থেকে পলি অপসারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়। পরিতোষ বিশ্বাস, কার্ত্তিক মণ্ডল, চৈতন্য মল্লিক, আরাধনসহ একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, সংকট উত্তোরণের কার্যকরী ব্যবস্থা না নিয়ে সেচ
পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের অকার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজন্য পাউবোর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে দুষছেন তারা। কিন্তু ওই সময় ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি একাধিকবার সেচ পাম্পের বিরোধিতা করে স্থায়ী সমাধানে টিআরএম-টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (জোয়ারাধার), আমডাঙ্গা খাল খননসহ নদী থেকে পলি অপসারণের দাবি করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি পাউবো। পাউবো এটিকে আপৎকালীন উল্লেখ করে ভবিষ্যতে স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এখনো সেই সেচ পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যর্থ ও অকার্যকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাউবো। সরেজমিন (বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার) মনিরামপুর উপজেলার লখাইডাঙ্গা, সুজাতপুর, বাজেকুলটিয়া, মশিয়াহাটি, হাটগাছাসহ একাধিক গ্রামে গেলে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের চিত্র চোখে পড়ে। গৃহবধূ সুচিত্রা মণ্ডল বলেন, নৌকা আর
সাঁকো দিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে স্যানিটেশনের চরম সংকট। আকাশে মেঘ দেখলেই ভয় লাগে, বৃষ্টি হলেই আরও পানি বাড়বে। বৃদ্ধা মান্দারী মণ্ডল বলেন, ‘বাবা ফটোক তুলে কি অ্যারবা, তোমরা পানি সরাইয়ে আমাগের বাঁচাও। সেই সহালে দুটো পান্তা ভাত খাইছি আর এহন দুটো চাল নিয়ে আইসে ভাত বসাইছি’। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল হাসান সরেজমিন ভবদহ অঞ্চল পরিদর্শন করে সন্ধ্যায় যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতা এবং ভবদহ সংস্কারের বিভিন্ন কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের ক্ষেত্রে ভবদহ সংলগ্ন আমডাঙ্গা খাল খননপূর্বক স্রোতধারা ঠিক করা এবং টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়নে মতামত প্রধান্য পেয়েছে। জানতে চাইলে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতা শিবপদ বিশ্বাস বলেন, ভবদহ বিলপাড়ের কমপক্ষে ৩শ গ্রামের তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দ্রুত পানি সরাতে আমডাঙ্গা খাল খনন, টিআরএম চালু ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাউবোর যশোর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, দ্রুত পানি নিষ্কাশনে ভবদহের দক্ষিণে পলি অপসারণসহ আমডাঙ্গা খাল থেকে পলি অপসারণের কাজ চলছে।