বিশ্ব রাজনীতির জাদুকরী চাল: এশিয়ার রাজনৈতিক দাবার বোর্ডে ভারতই যখন ‘কিংমেকার’ – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
     ১০:৩১ অপরাহ্ণ

আরও খবর

হিন্দু নেতা কৃষ্ণ নদীকে খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা

দিয়াবাড়িতে মিছিল শেষে নিখোঁজ: তুরাগ নদী থেকে ছাত্রলীগ কর্মীর লাশ উদ্ধার

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আলবদর ও রাজাকার হিসেবে পরিচিত ছিল

ব্রিটিশ কোম্পানি হাউজের নথিতে তারেক রহমানের নাগরিকত্ব ‘ব্রিটিশ’: দ্বৈত নাগরিকত্ব ও নির্বাচনে যোগ্যতা নিয়ে নতুন বিতর্ক

বিয়ের প্রলোভনে ব্র্যাক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ: এবি পার্টি নেতা ব্যারিস্টার ফুয়াদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশে জনমনে তীব্র ক্ষোভ

‘শীতের রাতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও নারীদের বিরক্ত না করলেও পারতেন’: জাকির

টেবিলের দাঁড়িয়ে মুফতি আমির হামজার বক্তব্য, তুমুল সমালোচনা

বিশ্ব রাজনীতির জাদুকরী চাল: এশিয়ার রাজনৈতিক দাবার বোর্ডে ভারতই যখন ‘কিংমেকার’

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ১০:৩১ 16 ভিউ
বর্তমান বিশ্ব রাজনীতি এক অভূতপূর্ব এবং জটিল সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। স্নায়ুযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যবস্থায় এমন তীব্র মেরুকরণ আর দেখা যায়নি। ইউক্রেন যুদ্ধ, তাইওয়ান প্রণালীর উত্তেজনা এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা—সব মিলিয়ে বিশ্ব যখন স্পষ্টত দুই ভাগে বিভক্ত, তখন এশিয়ার মানচিত্রে একটি দেশ তার নিজস্ব অভিকর্ষ বলয় তৈরি করে ‘সুইং স্টেট’ বা দোদুল্যমান শক্তির বদলে ‘কিংমেকার’-এর আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। সেই দেশটি হলো ভারত। একদিকে রাশিয়া ও চীনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ‘অক্ষশক্তি’ বা কাউন্টার-ব্লক, অন্যদিকে আমেরিকা ও পশ্চিমা মিত্রদের আধিপত্য ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে বিশ্ব দ্বিমেরুকরণের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু এই দুই মেরুর প্রচণ্ড টানাটানির মাঝেও ভারত তার ‘কৌশলগত স্বাতন্ত্র্য’ (Strategic

Autonomy) বজায় রেখে নিজস্ব কক্ষপথে অবিচল। শক্তির এই মহড়ায় শেষ পর্যন্ত সেই দেশই লাভবান হয়, যার আছে বিশাল বাজার, স্থিতিশীল নেতৃত্ব এবং কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার সক্ষমতা। ভারত ঠিক এই জায়গাটিতেই কিস্তিমাত করছে। কূটনৈতিক জাদুকরী: সাপে-নেউলে সহাবস্থান ভারতের পররাষ্ট্রনীতির সবচেয়ে বিস্ময়কর দিক হলো চরম বৈরী পক্ষগুলোর সঙ্গে সমান তালে সম্পর্ক বজায় রাখা। ভারত একই টেবিলে বসে আমেরিকার সঙ্গে ‘iCET’ (Initiative on Critical and Emerging Technology) চুক্তির মাধ্যমে জেট ইঞ্জিনের প্রযুক্তি হস্তান্তর নিশ্চিত করছে, আবার ব্রিকস (BRICS) সম্মেলনে রাশিয়ার পাশে বসে ডলার-মুক্ত বাণিজ্যের কথা বলছে। তথ্য বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধের পর যখন ইউরোপ ও আমেরিকা রাশিয়ার ওপর হাজারো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তখন ভারত রাশিয়ার কাছ

থেকে রেকর্ড পরিমাণ অপরিশোধিত তেল কিনেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি ৩৩ গুণ বাড়িয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব চাপ দিলেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, “ইউরোপের সমস্যাই বিশ্বের সমস্যা—এই মানসিকতা থেকে ইউরোপকে বেরিয়ে আসতে হবে।” এই একটি বাক্যেই ভারত বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তারা আর কোনো ব্লকের আজ্ঞাবহ নয় বরং নিজের শর্তে চলা এক উদীয়মান পরাশক্তি। রাশিয়া-চীন অক্ষ এবং ভারতের কৌশলগত সুযোগ রাশিয়া ও চীন যখন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছে, ভারত তখন বিচলিত না হয়ে একে সুযোগ হিসেবেই দেখছে। চীন ভারতের সীমান্তে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক এবং আবেগের। ভারত খুব ভালো করেই জানে, ক্রেমলিন পুরোপুরি বেইজিংয়ের ওপর

নির্ভরশীল হতে চায় না। পুতিনের জন্য ভারতের মতো একটি ‘নিরপেক্ষ’ বড় অর্থনীতির মিত্র প্রয়োজন, যাতে চীনের কাছে রাশিয়াকে ‘জুনিয়র পার্টনার’ হতে না হয়। এই ত্রিমুখী সমীকরণে ভারত তার নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে দুই মহাশক্তির প্রতিযোগিতা থেকে কৌশলগত সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। ওয়াশিংটনের ‘ইন্ডিয়া বেট’ এবং পাকিস্তানের পতন একসময় দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে আমেরিকা-পাকিস্তান জোট ছিল ওয়াশিংটনের তুরুপের তাস। কিন্তু সেই দিন এখন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে। পাকিস্তান তার ভঙ্গুর অর্থনীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সন্ত্রাসবাদের কারণে বৈশ্বিক মঞ্চে তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। পাকিস্তানের জিডিপি যেখানে ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ধুঁকছে, ভারত সেখানে ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি নিয়ে বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে এবং অচিরেই ৩য়

স্থানে যাওয়ার পথে। আমেরিকার জন্য চীনকে এশিয়ায় ‘চেকমেট’ দিতে হলে ভারতের কোনো বিকল্প নেই। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের একচ্ছত্র আধিপত্য রুখতে আমেরিকা এখন ভারতের ওপর বাজি ধরতে বাধ্য। কোয়াড (QUAD) জোটের সক্রিয়তা এবং ভারতে অ্যাপল, মাইক্রন বা জিই (GE)-এর মতো মার্কিন জায়ান্টদের বিনিয়োগ প্রমাণ করে যে, আমেরিকার ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ নীতির কেন্দ্রবিন্দু এখন ভারত। তাই পুরোনো পাকিস্তান-প্রীতির চেয়ে ভারতের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব আমেরিকার জন্য এখন ‘অপরিহার্য বাস্তবতা’। রাশিয়া-পাকিস্তান সমীকরণ: একটি মরীচিকা মাঝেমধ্যে রাশিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমিত সামরিক মহড়া বা সখ্যের খবর শোনা যায়, যা অনেক বিশ্লেষক ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ মনে করেন। কিন্তু গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায়, এটি ভারতের জন্য বড় কোনো হুমকি

নয়। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক দেশগুলোর একটি এবং রাশিয়ার দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ক্রেতা। মস্কো খুব ভালো করেই জানে, ইসলামাবাদের রুগ্ন অর্থনীতির চেয়ে দিল্লির বিশাল বাজারের সঙ্গে বন্ধুত্ব তাদের জন্য হাজার গুণ বেশি লাভজনক। ভারত তার বিশাল অর্থনীতি এবং সামরিক শক্তির ওজনে এই ছোটখাটো জোটগুলোকে সহজেই ‘ব্যালান্স’ করে ফেলে। গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর ও আগামীর পথ ভারত এখন কেবল আঞ্চলিক শক্তি নয়, বরং ‘গ্লোবাল সাউথ’ বা উন্নয়নশীল বিশ্বের কণ্ঠস্বর। জি-২০ সম্মেলনে আফ্রিকান ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং জাঁকজমকপূর্ণভাবে সম্মেলন আয়োজন করে ভারত বুঝিয়ে দিয়েছে যে, বৈশ্বিক এজেন্ডা নির্ধারণে পশ্চিমা বিশ্বের একচেটিয়া দিন শেষ। দিন শেষে দেখা যাচ্ছে, জোট ভাঙছে এবং গড়ছে, কিন্তু ভারত তার ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’

বা ‘জাতীয় স্বার্থ সবার আগে’ নীতিতে অটল। ভারত দক্ষিণ এশিয়ার নিঃসন্দেহে ‘পিভট স্টেট’ (Pivot State) বা কেন্দ্রবিন্দু, যার চারপাশে ঘুরে যাচ্ছে সমস্ত আঞ্চলিক জোট ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ভারত একই সঙ্গে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) এবং কোয়াড (QUAD)-এর সদস্য—যা কূটনৈতিক দড়াবাজির এক অনন্য নজির। সুতরাং, ইন্ডিয়া-রাশিয়া, ইন্ডিয়া-আমেরিকা, কিংবা রাশিয়া-চায়না—সমীকরণ যাই হোক না কেন, ভারত তার স্বার্থ ঠিকই টিকিয়ে রাখছে। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির দাবার বোর্ডে কেউ যদি প্রকৃত অর্থে ‘কিংমেকার’ হয়ে থাকে, তবে তা নিঃসন্দেহে ভারত। কারণ, ভারতকে বাদ দিয়ে এশিয়ায় কোনো শক্তির সমীকরণ মেলানো এখন গাণিতিকভাবেই অসম্ভব। লেখক: কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সভাপতি, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সঞ্চয় গেলো, স্বপ্ন গেলো, জীবন গেলো : ১৫ হাজার কোটি টাকার লুটপাট শেষে ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা ইউনুস কর্তৃক Election Without Choice? Bangladesh Faces a Growing Political Crackdown তাজউদ্দিনকে লেখা ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সেই ঐতিহাসিক চিঠির কপি ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি ভারতের, স্মরণে ও কৃতজ্ঞতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমের বিবৃতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার শোক বিজয় দিবসের আনন্দ ম্লান করতেই কি ‘মেটিকুলাস ডিজাইন’? বিশ্ব রাজনীতির জাদুকরী চাল: এশিয়ার রাজনৈতিক দাবার বোর্ডে ভারতই যখন ‘কিংমেকার’ বিশ্ব রাজনীতির জাদুকরী চাল: এশিয়ার রাজনৈতিক দাবার বোর্ডে ভারতই যখন ‘কিংমেকার’ ৬ ডিসেম্বর: কূটনৈতিক বিজয়ের মাহেন্দ্রক্ষণ—বিশ্ব মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামের প্রতিষ্ঠা বরিশালের মুলাদীতে আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মিত সেতুটির নাম ‘৩৬ জুলাই সেতু’ রাখাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের জেরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। “ড. ইউনূস উন্নয়ন করেনাই, ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হয় নাই; কামাইয়ের প্রচুর ক্ষতি হইছে, সংসার চলতেছে না” — জনতার ক্ষোভ গণহত্যা ১৯৭১: হরিণাগোপাল-বাগবাটী ইউনূসের অদক্ষতায় রূপপুরে ব্যয় বেড়েছে ২৬ হাজার কোটি, জনগণের ঘাড়ে বিশাল বোঝা রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল: ড. ইউনূসকে কঠোর বার্তা আন্তর্জাতিক সংগঠনের ক্ষমতার মোহ নয়, সাধারণ মানুষের হৃদয়েই থাকতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: ড. কামাল হোসেন ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯: ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নাম মুছে যেভাবে ‘বাংলাদেশ’ নাম দিলেন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইইউ পার্লামেন্ট সদস্যের সাথে ‘হ্যান্ড ইন হ্যান্ড ফাউন্ডেশন’-এর বৈঠক ‘বালের বিজয় দিবস’ মন্তব্যের জেরে ইলিয়াসকে ‘স্টুপিড’, ‘শুয়োরের বাচ্চা’, ‘বেজন্মা’ বললেন আম জনতা দলের তারেক ক্ষমতার মোহ নয়, সাধারণ মানুষের হৃদয়েই থাকতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: ড. কামাল হোসেন শাসক বঙ্গবন্ধু: ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে এক রাষ্ট্রনির্মাতার উপাখ্যান