
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

অন্যান্য দেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য না করতে ট্রাম্পের নির্দেশনা

ইরান পারমাণবিক চুক্তিতে না এগোলে ফের নিষেধাজ্ঞা : ফ্রান্স

নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে পশ্চিমবঙ্গে মোদি

আমিরাতের কাছে এনভিডিয়ার চিপ বিক্রিতে ভয় আমেরিকার

ইরানে ফের হামলার পরিকল্পনা

সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলা, এরদোয়ানের কঠোর বার্তা

ইরানের গুপ্তচর ছিলেন ইসরায়েলি সেনা, অতঃপর…
চীনের ঋণ বন্ধ, দিতে হতে পারে ভর্তুকি

পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের ঋণের টাকা ছাড় বন্ধ হয়ে আছে। দফায় দফায় চিঠি দিলেও ঋণের টাকা সমন্বয়ের ব্যাপারে চীন কোনো সাড়া দিচ্ছে না। একদিকে সরকার ব্যয় কমিয়েছে বলে ঋণের টাকা ফেরত দিচ্ছে। অথচ প্রকল্পের অন্য খাতে যে খরচ বেড়েছে, সেটি সমন্বয় করেনি। এমন পরিস্থিতিতে বাড়তি খরচের টাকা ঋণ থেকে চীন না দিলে সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে খরচ করতে হবে।
সর্বশেষ গত ২ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনের আওতাধীন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) রেল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ-সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে ভ্যারিয়েশনের (মূল পরিকল্পনার বাইরে বাড়তি কাজের ব্যয়) খরচের পুরো টাকা ঋণ বাবদ না পাওয়ার আশঙ্কা নিয়েও আলোচনা হয়। দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে
ঋণ সমন্বয়ের বিষয়ে সমঝোতা না হলে সরকারকে প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ঋণ চুক্তিতে ভ্যারিয়েশনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪২.৩৮ মিলিয়ন ডলার। চুক্তির সময় প্রতি ডলারের বিপরীতে ৭৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ওই হিসাবেই ভ্যারিয়েশনে খরচ বরাদ্দ ছিল ৩৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্পের এই খাতে খরচ হয়েছে হাজার ৮০ কোটি টাকা। এখন বাকি টাকা চীন যদি না-ও দেয়, তাহলেও আইন অনুযায়ী চুক্তির ব্যত্যয় হবে না। ভ্যারিয়েশনের কাজের মধ্যে কারিগরি জটিলতা ও নীতিগত সিদ্ধান্তের কারণে খরচ বেড়েছে। মূল পরিকল্পনার বাইরে আন্ডারপাস, লেভেল ক্রসিংগেট, রেলসেতু বানাতে এবং রেললাইন উঁচু করতে খরচ বেড়েছে। কমলাপুরের কাছে টিটিপাড়ায় প্রথমে আন্ডারপাস ছিল না। যান চলাচলের সুবিধা
ঠিক রাখতে পরবর্তী সময়ে এখানে আন্ডার পাস যুক্ত করা হয়। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ ধরে পদ্মা সেতুর ট্রেনগুলো চলাচল করে। ওই পথে পদ্মার ট্রেন চলাচলের গতি ঠিক রাখতে আরেকটি নতুন লাইন নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এতেও প্রকল্পে অতিরিক্ত খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে মূল পরিকল্পনার বাইরে বেশকিছু সংযোজন হয়েছে। এসব খরচের টাকা চীন দিতে চাচ্ছে না। এক প্রশ্নের জবাবে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক নাজনীন আরা কেয়া বলেন, ‘চীন বাড়তি টাকা না দিলেও কিছু করার নেই। আমরা বারবার বলছি, কিন্তু ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান কোনো জবাব দিচ্ছে না। আমরা চাচ্ছি, যেসব খাতে খরচ কম হয়েছে সেগুলোর সঙ্গে ঋণের টাকা সমন্বয় করতে।’ প্রকল্প
সূত্র বলছে, হাতে সময় খুবই কম। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঋণের টাকার নিষ্পত্তি হতে হবে। এরপর আর হয়তো ঋণ পাওয়া যাবে না। শেষ ধাপে ঋণ চুক্তির ২৬০ মিলিয়ন ডলার ছাড় হওয়া বাকি ছিল। সেখান থেকে প্রকল্পের ব্যয় কমায় ১৬০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০০ মিলিয়ন ডলার চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা এখানে রাজনৈতিক সমীকরণেরও গন্ধ পাচ্ছেন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের কূটনৈতিক সম্পর্ক কেমন, সেটিও তারা নজরে রাখতে চাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সম্পর্ক ঠিক থাকলে জিটুজি প্রকল্পের অনেক কিছুই সহজে পরিবর্তন করা যায়। আর কূটনৈতিক জটিলতায় সহজ হিসাবও কঠিন হয়ে যায়। ঋণ জটিলতায় বিল পাচ্ছে না ঠিকাদার: পদ্মা
সেতুকে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো পথে এখন নিয়মিত ট্রেন চলাচল করছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান অর্থছাড় না করায় ঠিকাদারের পাওনা আটকে আছে। প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ১০টি বিল বাবদ ঠিকাদারের প্রায় ১ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। অর্থছাড়ের জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করা হলেও ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সায় দিচ্ছে না। এ পর্যন্ত অন্তত চারবার এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়েছে। এক্সিম ব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেছে; কিন্তু ঋণ ছাড়ে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। ঋণের মেয়াদ যায়
যায়: প্রকল্পের আওতায় নির্মিত রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও এখনো কিছু কাজ বাকি আছে। ২০১৬ সালের ৮ আগস্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি হয়। তখন প্রায় ৩ হাজার ১৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছিল। তখনকার সময়ে ডলারের বিনিময় হারের বিপরীতে প্রায় ২৪ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার চুক্তি ছিল। যদিও ২০১৮ সালের ২৭ এপ্রিল এক্সিম ব্যাংক অব চায়নার সঙ্গে ঋণ চুক্তি হয়েছে। চুক্তির আওতায় প্রায় ২ হাজার ৬৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার কথা। ওই সময়ের ডলারের বিনিময় হারের হিসাবে প্রায় ২১ হাজার ৩৭ কোটি টাকার ঋণ চুক্তি হয়। এই ঋণের টাকার মেয়াদ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। চুক্তি
অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করে বিল পরিশোধ করতে হবে। না হলে জটিলতা দেখা দেবে। অর্থায়নকারী ঋণের টাকা ছাড় না করলে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দিতে পারে। এ ছাড়া শেষ সময়ে ব্যাংকটি টাকা না দিলে সরকারকে নিজেদের টাকায় বাকি কাজ করতে হবে। এতে প্রকল্পে আবার সংশোধনী আনতে হবে। যদিও এরই মধ্যে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে রাখা হয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটোই চীনের। আমাদের কাজ প্রায় শেষ। আশা করছি, শেষ মুহূর্তে হলেও ঋণের টাকা ছাড় করা হবে। তা না হলে ঠিকাদার বিপদে পড়ে যাবে।’ কাজ প্রায় শেষ, বিল বাকি: সর্বশেষ ৩০ জুনের প্রকল্পের অগ্রগতির প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর বিপরীতে বিল পরিশোধ (আর্থিক অগ্রগতি) হয়েছে ৮৯.০৪ শতাংশ। এখনও বেশ কিছু জায়গায় প্রকল্পের বড় কয়েকটি কাজ বাকি। অগ্রগতির নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাজধানীর কমলাপুরে টিটিপাড়ায় আন্ডারপাস নির্মাণকাজের প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি রয়েছে ভাঙা জংশনের নির্মাণকাজ। শেষ হয়নি লুপ লাইনের কাজগুলোও। এদিকে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে ৬২১ কোটি টাকা কমে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর চূড়ান্ত বিল অনুযায়ী আরও প্রায় ১ হাজার ২২৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও চীনের সরকারি (জি-টু-জি পদ্ধতি) পর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, ‘আমরা চুক্তি করার সময় দক্ষতার পরিচয় দিতে পারছি না। তাই এই ধরনের জটিলতার মুখে পড়তে হচ্ছে। চুক্তির ব্যত্যয় যদি না হয় তাহলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে কিছু বলার সুযোগ থাকে না। তবে জি-টু-জি প্রকল্পের ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। এসবের অনেক কিছু কূটনৈতিক সমীকরণের ওপরও নির্ভর করে।’
ঋণ সমন্বয়ের বিষয়ে সমঝোতা না হলে সরকারকে প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ঋণ চুক্তিতে ভ্যারিয়েশনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪২.৩৮ মিলিয়ন ডলার। চুক্তির সময় প্রতি ডলারের বিপরীতে ৭৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ওই হিসাবেই ভ্যারিয়েশনে খরচ বরাদ্দ ছিল ৩৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্পের এই খাতে খরচ হয়েছে হাজার ৮০ কোটি টাকা। এখন বাকি টাকা চীন যদি না-ও দেয়, তাহলেও আইন অনুযায়ী চুক্তির ব্যত্যয় হবে না। ভ্যারিয়েশনের কাজের মধ্যে কারিগরি জটিলতা ও নীতিগত সিদ্ধান্তের কারণে খরচ বেড়েছে। মূল পরিকল্পনার বাইরে আন্ডারপাস, লেভেল ক্রসিংগেট, রেলসেতু বানাতে এবং রেললাইন উঁচু করতে খরচ বেড়েছে। কমলাপুরের কাছে টিটিপাড়ায় প্রথমে আন্ডারপাস ছিল না। যান চলাচলের সুবিধা
ঠিক রাখতে পরবর্তী সময়ে এখানে আন্ডার পাস যুক্ত করা হয়। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ ধরে পদ্মা সেতুর ট্রেনগুলো চলাচল করে। ওই পথে পদ্মার ট্রেন চলাচলের গতি ঠিক রাখতে আরেকটি নতুন লাইন নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এতেও প্রকল্পে অতিরিক্ত খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে মূল পরিকল্পনার বাইরে বেশকিছু সংযোজন হয়েছে। এসব খরচের টাকা চীন দিতে চাচ্ছে না। এক প্রশ্নের জবাবে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক নাজনীন আরা কেয়া বলেন, ‘চীন বাড়তি টাকা না দিলেও কিছু করার নেই। আমরা বারবার বলছি, কিন্তু ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান কোনো জবাব দিচ্ছে না। আমরা চাচ্ছি, যেসব খাতে খরচ কম হয়েছে সেগুলোর সঙ্গে ঋণের টাকা সমন্বয় করতে।’ প্রকল্প
সূত্র বলছে, হাতে সময় খুবই কম। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঋণের টাকার নিষ্পত্তি হতে হবে। এরপর আর হয়তো ঋণ পাওয়া যাবে না। শেষ ধাপে ঋণ চুক্তির ২৬০ মিলিয়ন ডলার ছাড় হওয়া বাকি ছিল। সেখান থেকে প্রকল্পের ব্যয় কমায় ১৬০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০০ মিলিয়ন ডলার চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা এখানে রাজনৈতিক সমীকরণেরও গন্ধ পাচ্ছেন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের কূটনৈতিক সম্পর্ক কেমন, সেটিও তারা নজরে রাখতে চাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সম্পর্ক ঠিক থাকলে জিটুজি প্রকল্পের অনেক কিছুই সহজে পরিবর্তন করা যায়। আর কূটনৈতিক জটিলতায় সহজ হিসাবও কঠিন হয়ে যায়। ঋণ জটিলতায় বিল পাচ্ছে না ঠিকাদার: পদ্মা
সেতুকে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো পথে এখন নিয়মিত ট্রেন চলাচল করছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান অর্থছাড় না করায় ঠিকাদারের পাওনা আটকে আছে। প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ১০টি বিল বাবদ ঠিকাদারের প্রায় ১ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। অর্থছাড়ের জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করা হলেও ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সায় দিচ্ছে না। এ পর্যন্ত অন্তত চারবার এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়েছে। এক্সিম ব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেছে; কিন্তু ঋণ ছাড়ে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। ঋণের মেয়াদ যায়
যায়: প্রকল্পের আওতায় নির্মিত রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও এখনো কিছু কাজ বাকি আছে। ২০১৬ সালের ৮ আগস্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি হয়। তখন প্রায় ৩ হাজার ১৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছিল। তখনকার সময়ে ডলারের বিনিময় হারের বিপরীতে প্রায় ২৪ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার চুক্তি ছিল। যদিও ২০১৮ সালের ২৭ এপ্রিল এক্সিম ব্যাংক অব চায়নার সঙ্গে ঋণ চুক্তি হয়েছে। চুক্তির আওতায় প্রায় ২ হাজার ৬৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার কথা। ওই সময়ের ডলারের বিনিময় হারের হিসাবে প্রায় ২১ হাজার ৩৭ কোটি টাকার ঋণ চুক্তি হয়। এই ঋণের টাকার মেয়াদ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। চুক্তি
অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করে বিল পরিশোধ করতে হবে। না হলে জটিলতা দেখা দেবে। অর্থায়নকারী ঋণের টাকা ছাড় না করলে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দিতে পারে। এ ছাড়া শেষ সময়ে ব্যাংকটি টাকা না দিলে সরকারকে নিজেদের টাকায় বাকি কাজ করতে হবে। এতে প্রকল্পে আবার সংশোধনী আনতে হবে। যদিও এরই মধ্যে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে রাখা হয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটোই চীনের। আমাদের কাজ প্রায় শেষ। আশা করছি, শেষ মুহূর্তে হলেও ঋণের টাকা ছাড় করা হবে। তা না হলে ঠিকাদার বিপদে পড়ে যাবে।’ কাজ প্রায় শেষ, বিল বাকি: সর্বশেষ ৩০ জুনের প্রকল্পের অগ্রগতির প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর বিপরীতে বিল পরিশোধ (আর্থিক অগ্রগতি) হয়েছে ৮৯.০৪ শতাংশ। এখনও বেশ কিছু জায়গায় প্রকল্পের বড় কয়েকটি কাজ বাকি। অগ্রগতির নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাজধানীর কমলাপুরে টিটিপাড়ায় আন্ডারপাস নির্মাণকাজের প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি রয়েছে ভাঙা জংশনের নির্মাণকাজ। শেষ হয়নি লুপ লাইনের কাজগুলোও। এদিকে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে ৬২১ কোটি টাকা কমে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর চূড়ান্ত বিল অনুযায়ী আরও প্রায় ১ হাজার ২২৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও চীনের সরকারি (জি-টু-জি পদ্ধতি) পর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, ‘আমরা চুক্তি করার সময় দক্ষতার পরিচয় দিতে পারছি না। তাই এই ধরনের জটিলতার মুখে পড়তে হচ্ছে। চুক্তির ব্যত্যয় যদি না হয় তাহলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে কিছু বলার সুযোগ থাকে না। তবে জি-টু-জি প্রকল্পের ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। এসবের অনেক কিছু কূটনৈতিক সমীকরণের ওপরও নির্ভর করে।’