আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাসের চারা ধ্বংস করছে কৃষি মন্ত্রণালয় – ইউ এস বাংলা নিউজ




আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাসের চারা ধ্বংস করছে কৃষি মন্ত্রণালয়

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১০ জুলাই, ২০২৫ | ৫:০৭ 15 ভিউ
সারাদেশে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংসে মাঠ পর্যায়ে অভিযান শুরু করেছে কৃষি বিভাগ। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর এ কার্যক্রম চলছে। পরিবেশ ও মাটির ক্ষতি করে এমন গাছ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় সরকারি উদ্যোগে এসব চারা উৎপাদন, রোপণ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ কারণে কৃষি বিভাগের অধীন মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা নার্সারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে গাছের ধ্বংস করছেন। সঙ্গে প্রতিটি গাছের জন্য দেওয়া হচ্ছে ৪ টাকা করে প্রণোদনা। পাশাপাশি নার্সারি মালিকরা আর এই চারা উৎপাদন করবেন না এমন অঙ্গীকারও করছেন। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আগ্রাসী এসব প্রজাতির বদলে নারিকেল, আম, কাঁঠাল, নিম, তালসহ নানা

দেশি গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের ১৫ মে সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা তৈরি ও রোপণ এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন দেয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, অতিরিক্ত পানি শোষণ, মাটি অনুর্বর করা, আশপাশের গাছের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়া, পাখির অনুপযোগী পরিবেশ তৈরি করে এসব গাছ। তাই দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আগ্রাসী প্রজাতির গাছের চারা রোপণের পরিবর্তে দেশি প্রজাতির ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করে বনায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপনের পর কৃষি মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ের সব উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের এসব গাছের চারা শনাক্ত করে ধ্বংসের নির্দেশ

দেয়। একই সঙ্গে স্থানীয় পরিবেশের উপযোগী গাছের চারা সরবরাহ এবং কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে কৃষি বিভাগের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নার্সারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে গিয়ে আকাশমণি এবং ইউক্যালিপটাস চারা ধ্বংস করছেন। নার্সারি মালিকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ‘আর এ গাছ উৎপাদন করা হবে না’—এই মর্মে অঙ্গীকারও। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং জানিয়েছে, সারাদেশে ২ কোটি ২০ লাখ ৬১ হাজার ৭৭টি আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে আকাশমণি ৭৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮৪টি এবং ইউক্যালিপটাস এক কোটি ৪১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৩টি। ৪৯টি জেলার ৪৩০টি উপজেলায় এই দুটি গাছের

চারা ধ্বংসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত ১৬১টি উপজেলায় ৬৯ লাখ ৪৫ হাজার ৫২০টি গাছের চারা ধ্বংস করা হয়েছে। ৪২টি উপজেলায় আংশিক ধ্বংস করা হয়েছে, এসব উপজেলায় চারার সংখ্যা ২৪ লাখ ১০ হাজার ৭৭০টি। বাকি ২২৭টি উপজেলায় এক কোটি ৯ লাখ ৪৮ হাজার ২৩১টি চারা ধ্বংস করা বাকি আছে। ধ্বংস করা প্রতিটি চারা বাবদ কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে চার টাকা করে প্রণোদনা। এরই মধ্যে প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকদের মধ্যে নারিকেল, আম, কাঁঠাল, নিম, তালসহ ৩৩ লাখ দেশি ফলদ ও বনজ গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মো.

ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ চিহ্নিত করে ধ্বংস করছি। একইসঙ্গে স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে মানানসই, মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখে এমন গাছের চারা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। যেখানেই ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি চারা উৎপাদন বা বিপণন হবে, সেখানেই সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ যাতে ভবিষ্যতে এই গাছের চারা উৎপাদন না করেন, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, পরিবেশবান্ধব বনজ গাছের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ক্ষতিকর গাছের রোপণ ও বাণিজ্য বন্ধে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এই ধ্বংস কার্যক্রম চলছে। ভবিষ্যতে যেন ইউক্যালিপটাস ও

আকাশমণি আর না বেড়ে ওঠে, সে জন্য একটি কর্মসূচি বা প্রকল্প নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানো যেমন জরুরি, তেমনি কী গাছ কোথায় লাগবে, সে সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে। তিনি বলেন, ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি কৃষি মন্ত্রণালয় পরিবেশ রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। এ কার্যক্রমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় আমাদের সহায়তা করছে। ভবিষ্যতে যেন এমন গাছ রোপণ না হয়, সে জন্য জনসচেতনতা বাড়ানো এবং বিকল্প গাছের বাজার সম্প্রসারণে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম মাহফুজুর রহমান বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণির চারা ধ্বংস অভিযান পরিবেশ রক্ষা এবং টেকসই বনায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ

পদক্ষেপ। কারণ কৃষি মন্ত্রণালয়ের একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়েও কর্মকর্তারা মাঠে আছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় থাকলে পরিবেশ বিধ্বংসী বৃক্ষ নির্মূল করা সহজ হবে। তিনি বলেন, এই দুটি গাছ অতিরিক্ত পানি শোষণ করে মাটিকে শুষ্ক করে তোলে, এই গাছ তার নিচের উদ্ভিদ আচ্ছাদন (আন্ডারগ্রোথ ভেজিটেশন) নষ্ট করে ফেলে এবং এটি থেকে রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয়। মাহফুজুর রহমান বলেন, বৃষ্টির সময় ইউক্যালিপটাসের পাতায় থাকা রাসায়নিক উপাদান মাটিতে পড়ে মাটিও দূষিত হয়। এতে উদ্ভিদ আচ্ছাদন নষ্ট হয়ে যায়। মাটির উর্বরতা ও গুণাগুণও নষ্ট হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সোশ্যাল মিডিয়া ‘টেস্ট’-এ পাস হলে তবেই মিলবে আমেরিকার ভিসা এসএসসি ও সমমান: কমেছে পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী রাজশাহী বোর্ডে কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫ এসএসসি ও সমমান: ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু শুক্রবার পাসের হারে এবারও এগিয়ে মেয়েরা জুনে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঢাকা বিভাগে শান্তিতে ট্রাম্পের নোবেল প্রাপ্তির সম্ভাবনা কতটা? পানি বাড়ছে তিস্তায়, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলবাসী মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৬৮.০৯ এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ কমল ৪৩ হাজার লাইভ ক্লাসে শিক্ষক-শিক্ষিকার চুম্বনের ভিডিও ভাইরাল পূজায় চমক নিয়ে আসছেন কৌশানী ডিগ্রী পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স ২য় বর্ষের বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা স্থগিত ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি একুশেই মিলবে স্টার্টআপ ঋণ, সুদ হার মাত্র ৪ শতাংশ আলিম ও কারিগরি এইচএসসির সারাদেশের পরীক্ষা স্থগিত কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের কালকের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তকারীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্পের সমালোচনার পর ইউক্রেনে রাশিয়ার রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন হামলা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ