মব পেল বৈধতা, ইউনূসের নেতৃত্বে রক্তাক্ত বাংলাদেশ – ইউ এস বাংলা নিউজ




মব পেল বৈধতা, ইউনূসের নেতৃত্বে রক্তাক্ত বাংলাদেশ

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৯ জুন, ২০২৫ | ৬:০৫ 39 ভিউ
রাজনৈতিক সহিংসতা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গণমাধ্যম নিপীড়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে 'মব' বা সংঘবদ্ধ জনতার উত্থান এখন নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও জননির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে ‘মব’-কে ‘প্রেসার গ্রুপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে কার্যত তাদের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ২৬ জুন রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রেস সচিব বলেন, “বলা হচ্ছে মব তৈরি হচ্ছে, আমি এটাকে মব বলছি না, বলছি প্রেসার গ্রুপ। সেটা তৈরি হচ্ছে সাংবাদিকতার ব্যর্থতার কারণে।” তিনি অভিযোগ করেন, ১৫ বছরের সরকারে থাকা অবস্থায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ এবং রাষ্ট্রীয় হিংস্রতা জন্ম দিয়েছে বর্তমান

‘ভয়ের সংস্কৃতি’। এর মধ্যে এক ধরনের জনরোষ জমে উঠে মব হিসেবে প্রকাশ পাচ্ছে। মব সহিংসতা ও রক্তাক্ত পরিণতি : ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সৃষ্ট অন্তর্বর্তী সরকারে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দেশজুড়ে সহিংসতা ব্যাপক আকার ধারণ করে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, ২০২৪–২৫ সালে মব-সংশ্লিষ্ট সংঘাতে শতাধিক মানুষ নিহত হন। সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থানে হামলা, যেমন—বঙ্গবন্ধু ভবন (ধানমন্ডি ৩২), রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি, সুফি মাজার ইত্যাদিতে আঘাত আদর্শিক সন্ত্রাসের আলামত বহন করে। বিশেষত, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার বাসায় জনতার হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্ন তুলেছে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে। গণমাধ্যম ও দলীয় সূত্র অনুযায়ী, গত এক বছরে অন্তত ২৬

জন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী পুলিশি হেফাজতে, কারাগারে কিংবা অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন। এসব মামলার অধিকাংশই রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপ্রসূত বলে দাবি করেছে পরিবার ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়া মব তৈরি করে শত শত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। যেগুলোর অনেককিছুই গণমাধ্যমে আসছে না। গত সেপ্টেম্বরে শিশুর জন্য ওষুধ কিনতে বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন নগরীর বিনোদপুর এলাকায় গেলে হামলা হয় আব্দুল্লাহ আল মাসুদের ওপর। হামলায় তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর দেখে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। সম্প্রতি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে মাগুরায় জ্যান্ত কবর দেওয়া কমিরুল মোল্যা নামের এক ব্যক্তিকে। এ ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র

আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এর আগে শেরপুরে ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের ওপর ছাত্রদল ক্যাডারদের নির্মম হামলায় তার পা কেটে নেওয়া হয়। ২৮ জুন পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নে পারিবারিক বিরোধের জেরে ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার ও তার ভাবি মৌকলি বেগম (৪৮) কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় শহিদুল ইসলামের স্ত্রী রেহানা বেগমকেও (৪০) কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। গত মার্চে পাবনার সাঁথিয়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধে আমিরুল ইসলাম (৫০) নামের যুবলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে মাগুরায় সদর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে ধানক্ষেতে সার দিতে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষ দলের হামলায় জাহিদ জোয়ারদার (৫০)

নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী খুন হন। গত জানুয়ারিতে পুলিশ পরিচয়ে দিয়ে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের চানপাড়া গ্রামে কাওসার লষ্কর (৫৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সাম্প্রতিক এক সভায় সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সংঘবদ্ধ জনতার নামে সহিংসতা আর সহ্য করা হবে না।” তিনি সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থানের কথা জানান। অন্যদিকে, বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, “মব জাস্টিস এখন এক হিংস্র উন্মাদনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা মানবতা ধ্বংস করছে।” জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলীয় নেতা হাসনাত আবদুল্লাহও বলেন, “মব নয়, এটা জনরোষ। যারা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছে, তাদের বিচার না হওয়াতেই এই ক্ষোভ।” বিশ্লেষকরা বলছেন, “এই মব আন্দোলন আসলে রাষ্ট্রের প্রতি আস্থাহীনতা

ও ন্যায়বিচারের অভাবের ফল। সরকার মবকে বৈধতা দিচ্ছে—এটি ভয়ংকর ইঙ্গিত।” তারা সতর্ক করে দেন, যদি ন্যায়ের অভাব এবং বিচারহীনতা অব্যাহত থাকে, তাহলে ‘মব’ আরও রক্তাক্ত পরিণতির দিকে ঠেলে দেবে দেশকে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
কারা বেশি নারী বিদ্বেষী, ছবি বিকৃতির মাধ্যমে তা প্রমাণ হয়েছে ঢাকা–ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠতা: দক্ষিণ এশিয়ার নতুন সমীকরণ, উদ্বেগে নয়াদিল্লি কুশিয়ারার সাদা বালি হরিলুট যেভাবে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে কারাগারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদ বুয়েটের শিক্ষার্থীদের যমুনায় যেতে বাধা দেওয়ায় আট পুলিশ সদস্য আহত চীনা নাগরিকের ওয়ালেট চুরি, গ্রেপ্তার ২ আরও ভয়ংকর হচ্ছে উত্তর কোরিয়া গাজায় একদিনে নিহত আরও ৬৪, ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেল ১৩ জনের বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে পাকিস্তানি আলেম আলি মির্জা গ্রেফতার ভোটযুদ্ধে প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস ইসরাইলের সঙ্গে আব্রাহাম চুক্তির সম্ভাবনা নাকচ করল সিরিয়া উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ ১০ কারণে দারিদ্র্য বৃদ্ধি ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ সংকটাপন্ন ৫ ব্যাংকে ভুগছে তৈরি পোশাক খাত গাজায় একদিনে নিহত আরও ৬৪, ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেল ১৩ জনের আজারবাইজানের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে গ্যাস আনবে ইরান বিটিভির নাটকে গাইলেন পপি-রিফাত আরও ২৯২ যুদ্ধবন্দি বিনিময় করল রাশিয়া-ইউক্রেন