ঢেউয়ের আঘাতে বিপর্যস্ত সেন্টমার্টিন, তছনছ হয়ে গেছে ১১ হোটেল-রিসোর্ট – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ২৯ জুলাই, ২০২৫
     ৭:০৮ পূর্বাহ্ণ

ঢেউয়ের আঘাতে বিপর্যস্ত সেন্টমার্টিন, তছনছ হয়ে গেছে ১১ হোটেল-রিসোর্ট

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৯ জুলাই, ২০২৫ | ৭:০৮ 85 ভিউ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সেন্টমার্টিন দ্বীপ। উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে কক্সবাজারের টেকনাফ প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন অংশ। জোয়ারের আঘাতে সেখানকার সমুদ্র তীরবর্তী ১১টি হোটেল-রিসোর্ট ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত দুই দিনে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বড় বড় ঢেউ যেন তাণ্ডব চালিয়েছে। পাকা স্থাপনাসহ ১১টি হোটেল তছনছ হয়ে গেছে। উপড়ে পড়েছে বহু গাছপালা। ক্ষতির শিকার হোটেলগুলো হলো হোটেল অবকাশ, নোনাজল বিচ রিসোর্ট, আটলান্টিক রিসোর্ট, বিচ ক্যাম্প রিসোর্ট, নিল হাওয়া বিচ রিসোর্ট, শান্তি নিকেতন বিচ রিসোর্ট, মেরিন বিচ রিসোর্ট, পাখি বাবা রিসোর্ট, সি-ভিউ রিসোর্ট,

ড্রিমার্স প্যারাডাইস রিসোর্ট, সানডে বিচ রিসোর্ট। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ১-৩ ফুট বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় দ্বীপের বিভিন্ন অংশের গাছপালা ভেঙে পড়েছে। লোকালয়ে জোয়ারের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এমন ভয়াবহতা এর আগে দেখেনি দ্বীপবাসী। ঢেউয়ের আঘাতে ১১টির মতো হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ সেন্টমার্টিনের মাঝের পাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, ‘বিচ সংলগ্ন হোটেলেগুলো জোয়ারের পানির আঘাতে অধিকাংশ তলিয়ে গেছে। পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতি ভেসে উঠছে। এবারের মতো এত ভাঙন আগে দেখিনি।’ আরেক বাসিন্দা আলী আহমদ বলেন, ‘গত দুই দিনের জোয়ারের পানিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সেন্টমার্টিনের চারপাশ। সুতরাং সেন্টমার্টিনকে বাঁচাতে

হলে টেকসই বেড়িবাঁধের কোনো বিকল্প নেই।’ তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন ভিন্ন কথা। কক্সবাজার ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক বলেন, ‘জোয়ারের পানির আঘাতে যে হোটেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই হোটেলগুলো মূলত সরকারি অনুমোদন ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটা হোটেলের বিরুদ্ধে বালিয়াড়ি দখলেরও অভিযোগ উঠেছে।’ বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে জোয়ারের পানির আঘাতে বেশ কয়েকটি হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুনেছি। বিষয়টি আমরা দেখছি, আরও খোঁজখবর নিচ্ছি।’ অপরদিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ৭ নম্বর, ৮ নম্বর ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে একটি এলাকা। এ এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। চতুর্পাশে বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদী ঘেরা। তবে

সাগর তীরবর্তী শাহপরীর দ্বীপের গোলাপাড়া, পশ্চিম পাড়া, দক্ষিণপাড়া, ডাঙ্গর পাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, বাজারপাড়া ও জালিয়াপাড়া এলাকায় মানুষগুলো বেশি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। বাধ ভেঙে গেলে পুরো দ্বীপের মানুষ বসতি হারাবে। সাগর তীরবর্তী এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তত্ত্বাবধানে ২০২২ সালের জুন মাসে ১৫১ কোটি টাকার খরচ করে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশে প্রায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কিছু দিনের মধ্যেই বাধের সিসি ব্লকগুলো ধসে পড়ে। শাহপরীর দ্বীপ রক্ষা ও উন্নয়ন কমিটির সভাপতি প্রবীণ শিক্ষক জাহেদ হোসেন বলেন, ‘১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপে পশ্চিম পাশে ১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। সেই ১ কিলোমিটার ভাঙা বাঁধ নির্মাণে ১০ বছরে ৩০০ কোটি টাকা

খরচ করে পাউবো। দুর্নীতির কারণে বেড়িবাঁধ হয়ে ওঠেনি। ওই সময়ের জলোচ্ছ্বাসে শাহপরীর দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার একরের চিংড়ির ঘের ও ফসলি জমি সাগরগর্ভে তলিয়ে গেছে। বিলীন হয়েছে মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অন্তত চার হাজার ঘরবাড়ি। প্রায় তিন বছর আগে ১৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধটির সিসিব্লক ধসে পড়ার ঘটনায় দ্বীপের লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।’ বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজে তাড়াহুড়ো ছিল বলেও মন্তব্য করেন সাবরাং ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ টেকসই ছিল, কিন্তু দক্ষিণপাড়া অংশে যেখানে সাগরের আগ্রাসন বেশি, সেখানে এসে তাড়াহুড়া করে কাজ শেষ করায় বাঁধের কাঠামো দুর্বল হয়েছে। যে কারণে কিছু দিনের মাথায় ব্লকগুলো ধসে পড়ছে।

আর এখন বর্ষা মৌসুমে বাঁধের উপর দিয়ে জোযারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ার পাশাপাশি বাধটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পুরো এলাকার মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।’ টেকনাফ উপজেলা জ্যৈষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা ও সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশের বেড়িবাধের উপর দিয়ে শনিবার , রোববার ও সোমবার জোয়ারের পানি বেড়িবাধ টপকে লোকালয়ে প্রবেশ করায় এলাকার প্রায় চার হাজার পরিবারের ২০ হাজারের বেশি মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আজ রাতেও একই অবস্থা হলে বেড়িবাঁধটি বিলীন হয়ে যেতে পারে।’ পাউবো টেকনাফের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘জোয়ারের পানি বেড়ে গিয়ে বাঁধ টপকে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। বিষযটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
বাড়ি নির্মাণে বাধা দিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি যুবদল কর্মীদের, প্রতিবাদ করায় প্রবাসীকে পিটুনি মেট্রোরেলের রক্ষণাবেক্ষণে নেই বরাদ্দ, দুর্ঘটনার দায় ঠিকাদারদের ঘাড়ে চাপালেন এমডি নিরাপত্তাহীনতার কারণে একে একে বাতিল হচ্ছে ক্রয়াদেশ, আরও অসংখ্য কারখানা বন্ধের শঙ্কা ট্রাম্পের নির্দেশ: নাইজেরিয়ায় ইসলামপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সামরিক প্রস্তুতির আহ্বান রাজনৈতিক কৌশলে পরাজিত বিএনপি কি জামায়াতকে নিষিদ্ধের পথে হাঁটবে! প্রধান উপদেষ্টার তত্ত্বাবধানে পদোন্নতির নামে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কোরামপ্রীতি: বঞ্চিত ৮৭৯ চিকিৎসক দেশে হিন্দু ৩ কোটি হলেও বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মাত্র ২ জন, বাদ পড়লেন অনেক হিন্দু নেতা বিএনপির নয়নকে ‘বুড়িগঙ্গার পানি’ দিয়ে ধোয়ার মন্তব্যে ঝড়, এনসিপির পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা জামায়াত কি আদৌ মওদুদীর ‘বিকৃত আকিদা’ ঝেড়ে ফেলতে পেরেছে? নাকি আগের পথেই আছে? মহিলা পরিষদ: অক্টোবরে ২৩১ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন-সহিংসতার শিকার জেলহত্যা দিবস: শেখ হাসিনার বাণীতে কলঙ্কমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রতিজ্ঞা তুলসি গ্যাবার্ডের ঘোষনা ‘ওয়াশিংটনের পুরানো রেজিম চেঞ্জের যুগ শেষ’ অপসো স্যালাইনের প্রায় ৬শ শ্রমিক ছাঁটাই: পোশাক খাতের পর খড়গ এবার ওষুধ শিল্পের ওপর বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের বিবৃতি ১ কোটি টাকায় বিক্রি হতে পারে সরকারি চাকরি: নতুন প্রশ্ন ফাঁস সিন্ডিকেটের উত্থানে তীব্র উদ্বেগ, প্রতিবাদে নামার আহ্বান হাসান জাহিদের প্রশ্নফাঁস ইস্যুতে সরকারকে কড়া সমালোচনা, যোগ্য প্রার্থীদের জন্য ন্যায্যতার দাবি মালয়েশিয়ায় কর্মী রফতানিতে চরম ধস: শেখ হাসিনার আমলে ৩.৫ লাখের বিপরীতে ইউনুসের সময়ে গেলেন মাত্র ২,৬৭০ জন পর্দার আড়ালে দরকষাকষি: শর্ত নতুন সংবিধান প্রণয়ন জাতীয় চার নেতার অবদান ও জেলহত্যা দিবস নিয়ে স্মৃতিচারণ বিটিএমএ সভাপতি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল উন্মাদের মতো কথা বলেন