ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কী সচিবালয়ের প্রবেশপত্র, যা বললেন মারুফ কামাল খান
অভিনব কায়দায় ভুয়া বাদীর মামলা বাণিজ্য, ৫০ হাজারে রক্ষা
আনন্দবাজারে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ জানাল আইএসপিআর
হাসিনাকে সহজে ফেরত দেবে না ভারত
সচিবালয়ে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিবৃতি
সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না সাংবাদিকরা, বেসরকারি পাসও বাতিল
সাদপন্থি ও জুবায়েরপন্থি গ্রুপের দ্বন্দ্ব, সতর্ক অবস্থানে যৌথ বাহিনী
ঘুরেফিরে সেই আটজনই স্বাস্থ্যের কেনাকাটায়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেনাকাটা জিম্মি ছিল আটজনের হাতে। মন্ত্রী বদল হলেও বিগত সাড়ে ১৫ বছর তারাই রাজত্ব করেছেন। কমিশন খেয়ে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার কাজ দেওয়া হয়েছে। ধরা পড়ে কালো তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানির নাম বদলে আবারও একই অপকর্ম করেছে চক্রটি। বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েক গুণ দাম বেশি নিলেও সরবরাহ করেছে নিম্নমানের চিকিৎসাসামগ্রী। এর মাধ্যমে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছেলে রাহাত মালেক শুভ্রর নেতৃত্বে দুষ্টচক্র কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও প্রশাসন থেকেছে নির্বিকার।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ব্যক্তিরা বলছেন, স্বাস্থ্যের কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এখানে নেতা, আমলা ও ঠিকাদার মিলে ত্রিমুখী আঁতাতে অপকর্ম হয়। কিন্তু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় তারা থাকেন বেপরোয়া। রাজনৈতিক পট
পরিবর্তনে দুর্নীতির লাগাম টেনে স্বাস্থ্য খাতে সুশাসন ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন তারা। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাহাত মালেক শুভ্রর নেতৃত্বে স্বাস্থ্যের কেনাকাটায় দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিল দুষ্টচক্র। তাঁর সহযোগী ছিলেন অধিদপ্তরের সাবেক লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মাজহারুল হক তপন ও অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তাদের মধ্যে তপন প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে চক্র নিয়ন্ত্রণ করতেন। মন্ত্রী বদলের সঙ্গে তিনিও পাল্টে যেতেন। চক্রে আরও ছিলেন স্বাস্থ্য খাতের ডনখ্যাত টেকনোক্র্যাট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু, জেনেসিস ট্রেডিং কোম্পানির কর্ণধার জাহের উদ্দিন সরকার, ওএমসি হেলথ কেয়ারের সিইও মাজবাহুল কবির, জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইস লিমিটেডের এমডি আবদুর রাজ্জাক ও মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের
সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর চক্রটি চলতি অর্থবছরের কেনাকাটা ঘিরে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে তৎপর বলে জানা গেছে। জানতে চাইলে অধিদপ্তরের বর্তমান হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের (এইচএসএম) লাইন ডিরেক্টর ডা. জয়নাল আবেদীন টিটো বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরের দরপত্র নিয়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একটি দল গত সপ্তাহে অধিদপ্তর থেকে কেনাকাটা-সংক্রান্ত নথি নিয়ে গেছে। প্রমাণ হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির সব অভিযোগ আগের। চলতি অর্থবছরে এখনও কেনাকাটা শুরু হয়নি। তবে এবার সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।’ অনুসন্ধানে
উঠে এসেছে, সরকার কিংবা বিরোধীদলীয় যেই হোক না কেন, শুভ্র-তপন চক্রকে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ কমিশন না দিয়ে কাজ পাননি। শুধু তাই নয়, তারা দুর্নীতি, প্রতারণার অভিযোগে কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানকেও কাজ দিয়েছে দেদার। করোনাকালে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জালিয়াতির মাধ্যমে নাম বদলে এখনও ঠিকাদারিতে সক্রিয়। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা-গ্রেপ্তার হলেও দমেনি ব্যবসা। হাসপাতালের চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটা করত কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। তবে করোনাকালে অন্তত ৫১ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরকারি আইন ও বিধি না মেনে চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করে। ওই কেনাকাটায় গুরুতর অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় দায়িত্ব নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের কেনাকাটার নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২১ সাল থেকে গত তিন বছর
মোট ৭২টি দরপত্রে ৩১৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকার বেশি চিকিৎসা যন্ত্র কেনা হয়। ঘুরেফিরে ২৪টি প্রতিষ্ঠান এসব কাজ পেয়েছে। এর মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪২ কোটি ৮০ লাখ ৪৩ হাজার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১৯ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৬ কোটি ৯৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা যন্ত্র কেনা হয়। সব কেনাকাটা নিয়ন্ত্রণ করে শুভ্র-তপন চক্র। জানা যায়, স্বাস্থ্য খাতের ডনখ্যাত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর টেকনোক্র্যাট লিমিটেড কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে কালো তালিকাভুক্ত হয়। এর পর তিনি আত্মীয়স্বজনসহ নামে-বেনামে অন্তত ২০টি প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা করেন। গত তিন বছরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তাঁর ভাগনের প্রতিষ্ঠান ট্রেড হাউস ১১টি প্যাকেজে ৫১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার
সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। মিঠুকে নিয়ে হাজারো বিতর্ক থাকলেও শুভ্র-তপন চক্র কাজ দিতে তাঁকেই বেছে নিয়েছে। মিঠুর আরেক আত্মীয়ের প্রতিষ্ঠান ওয়ান ট্রেড তিন প্যাকেজে ৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭৮ হাজার টাকার কাজ পেয়েছে। এ ছাড়া তাঁর অধীনে থাকা এমএস মাইক্রো টেডার্স চার প্যাকেজে ১৭ কোটি ৬৪ লাখ, ছয় প্যাকেজে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস ১৭ কোটি ৭ লাখ ও ৯ প্যাকেজে টেকনোওয়ার্থ অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড ১১ কোটি ৮১ লাখ ২০ হাজার টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছে। করোনাকালে মিঠুর বিরুদ্ধে মামলা হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে থেকেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করায় বক্তব্য জানতে পারেনি। দেশে মিঠুর ব্যবসা দেখভাল করছেন বড় ভাই
মোকছেদুল ইসলাম। একাধিকবার কল দিলেও সাড়া দেননি। মিঠুর বন্ধু জাহের উদ্দিন সরকার বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানি নামে স্বাস্থ্য ব্যবসা করেন। করোনাকালে নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি কালো তালিকাভুক্ত করে অধিদপ্তর। কিন্তু ধূর্ত জাহের ব্যবসা ঠিক রাখতে জেনেসিস ট্রেডিং কোম্পানি, মার্কেন্টাইল ট্রেড, ইউনিভার্সেল ট্রেড ও এসপি ট্রেডিং হাউস নামে প্রতিষ্ঠান খোলেন। এর মধ্যে জেনেসিস একটি প্যাকেজে ২ কোটি ২১ লাখ টাকার যন্ত্র সরবরাহ করে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি বাজারদরের চেয়ে কয়েক গুণ দাম বেশি নিলেও সরবরাহ করেছে নিম্নমানের সরঞ্জাম। আর গত তিন বছরে এসপি ট্রেডিং হাউস ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার কাজ করেছে। সম্প্রতি দুদক ভুয়া বিলের মাধ্যমে প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিন চিকিৎসকসহ যে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে, সেখানে জাহেরও রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাঁকে বিভিন্ন উপদেষ্টা ও ছাত্র প্রতিনিধির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে তৎপর দেখা গেছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাহের উদ্দিনকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ হয়নি। নথিতে দেখা যায়, তিনটি প্যাকেজে ওএমসি হেলথ কেয়ার ৩০ কোটি ২৮ লাখ টাকার কাজ পেয়েছে। করোনার মধ্যে যন্ত্র সরবরাহে দুর্নীতি ও প্রতারণার মামলা হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। তার পরও আর্থিক সুবিধা নিয়ে ওএমসিকে কাজ দিয়েছে শুভ্র-তপন চক্র। জানতে চাইলে ওএমসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাজবাহুল কবির কোনো অভিযোগ থাকলে সরাসরি দেখা করতে বলেন। কিন্তু সাক্ষাতের সময় চাইলে কল কেটে দেন। এর পর কয়েক দিনেও ফোন ধরেননি। গত বছর জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইস লিমিটেড ২ কোটি ৫ লাখ টাকার যন্ত্র কেনাকাটার কাজ পায়। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রাজ্জাক করোনাকালে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। এর পরও আবদুর রাজ্জাকের প্রতিষ্ঠান কমিশন দিয়ে কাজ পেয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে আবদুর রাজ্জাক মন্তব্য করতে রাজি হননি। বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সাবেক কর্মকর্তা মুন্সী সাজ্জাদ হোসেন আত্মীয়স্বজনের নামে পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে অধিদপ্তরের প্রভাব খাটিয়ে কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। ঢাকা, ফরিদপুরসহ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে বাজারমূল্যের চেয়ে ১৫০ থেকে ২০০ গুণ বেশি দামে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় শতকোটি টাকা। জানতে চাইলে মুন্সী সাজ্জাদ বলেন, ‘আগে কিছু কাজ করেছি, এখন পাই না। চাকরিও ছেড়ে দিয়েছি।’ অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি। ২৫ শতাংশ কমিশন, সুবিধাভোগী শেখ হাসিনার স্বজনও সূত্র জানায়, গত তিন বছর চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহের কাজ পেতে প্রতিটি কোম্পানিকে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দিতে হয়েছে। কমিশনের অর্থের ১২-১৫ শতাংশ নিয়েছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছেলে শুভ্র। বাকি অর্থ পেয়েছেন সাবেক লাইন ডিরেক্টর মাজহারুল ও নাজমুল। শুভ্র আবার অর্থ দিয়ে দল ও সরকারের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেছেন। তাদের মধ্যে শেখ পরিবারের নামে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ স্বজনরা বেশি কমিশন নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। মেসার্স বেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক বেলাল হোসেন বলেন, ‘গত পাঁচ বছর অন্তত ২৫টি দরপত্রে আবেদন করেও কাজ পাইনি। এখানে টাকা ছাড়া কাজ মেলে না। যাদের কাজ দেওয়া হবে, চক্রের হোতারা তাদের আগেই দরপত্রের গোপনীয় বিষয় জানিয়ে দেন। ফলে অন্যদের পক্ষে কাজ পাওয়া সম্ভব ছিল না।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, কাজ কে পাবেন, তা ঠিক করতেন রাহাত মালেক। তাঁর পছন্দের কোম্পানির সক্ষমতা অনুযায়ী তৈরি হতো দরপত্রের শর্ত। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করতেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাজহারুল হক। আত্মগোপনে থাকায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তাঁর ছেলের বক্তব্য জানতে পারেনি। অভিযোগের বিষয়ে এইচএসএমের সাবেক লাইন ডিরেক্টর (বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের প্রধান) ডা. মাজহারুল হক বলেন, ‘দরপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়নের পর কাজ দেওয়া হয়েছে। কমিশন নিয়ে বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’ তবে অনিয়মের নথি দেখানোর পর তিনি মন্তব্য করতে চাননি। সাবেক আরেক লাইন ডিরেক্টর ডা. নাজমুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ হয়নি। বর্তমানে তিনি ওএসডি। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলের বিচার হবে দুদকের মাধ্যমে। ডা. মাজহারুল হকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হবে।’ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘শুধু ঠিকাদার নন, এখানে আমলা ও রাজনৈতিক নেতারা মিলে ত্রিমুখী আঁতাতের মাধ্যমে অপকর্ম হয়েছে। চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘করোনাকালে দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে পরে কেউ অপকর্মের সাহস দেখাতেন না। বর্তমানে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আশা করছি, শাস্তির মাধ্যমে সরকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’
পরিবর্তনে দুর্নীতির লাগাম টেনে স্বাস্থ্য খাতে সুশাসন ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন তারা। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাহাত মালেক শুভ্রর নেতৃত্বে স্বাস্থ্যের কেনাকাটায় দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিল দুষ্টচক্র। তাঁর সহযোগী ছিলেন অধিদপ্তরের সাবেক লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মাজহারুল হক তপন ও অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তাদের মধ্যে তপন প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে চক্র নিয়ন্ত্রণ করতেন। মন্ত্রী বদলের সঙ্গে তিনিও পাল্টে যেতেন। চক্রে আরও ছিলেন স্বাস্থ্য খাতের ডনখ্যাত টেকনোক্র্যাট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু, জেনেসিস ট্রেডিং কোম্পানির কর্ণধার জাহের উদ্দিন সরকার, ওএমসি হেলথ কেয়ারের সিইও মাজবাহুল কবির, জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইস লিমিটেডের এমডি আবদুর রাজ্জাক ও মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের
সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর চক্রটি চলতি অর্থবছরের কেনাকাটা ঘিরে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে তৎপর বলে জানা গেছে। জানতে চাইলে অধিদপ্তরের বর্তমান হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের (এইচএসএম) লাইন ডিরেক্টর ডা. জয়নাল আবেদীন টিটো বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরের দরপত্র নিয়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একটি দল গত সপ্তাহে অধিদপ্তর থেকে কেনাকাটা-সংক্রান্ত নথি নিয়ে গেছে। প্রমাণ হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির সব অভিযোগ আগের। চলতি অর্থবছরে এখনও কেনাকাটা শুরু হয়নি। তবে এবার সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।’ অনুসন্ধানে
উঠে এসেছে, সরকার কিংবা বিরোধীদলীয় যেই হোক না কেন, শুভ্র-তপন চক্রকে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ কমিশন না দিয়ে কাজ পাননি। শুধু তাই নয়, তারা দুর্নীতি, প্রতারণার অভিযোগে কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানকেও কাজ দিয়েছে দেদার। করোনাকালে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জালিয়াতির মাধ্যমে নাম বদলে এখনও ঠিকাদারিতে সক্রিয়। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা-গ্রেপ্তার হলেও দমেনি ব্যবসা। হাসপাতালের চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটা করত কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। তবে করোনাকালে অন্তত ৫১ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরকারি আইন ও বিধি না মেনে চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করে। ওই কেনাকাটায় গুরুতর অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় দায়িত্ব নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের কেনাকাটার নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২১ সাল থেকে গত তিন বছর
মোট ৭২টি দরপত্রে ৩১৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকার বেশি চিকিৎসা যন্ত্র কেনা হয়। ঘুরেফিরে ২৪টি প্রতিষ্ঠান এসব কাজ পেয়েছে। এর মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪২ কোটি ৮০ লাখ ৪৩ হাজার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১৯ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৬ কোটি ৯৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা যন্ত্র কেনা হয়। সব কেনাকাটা নিয়ন্ত্রণ করে শুভ্র-তপন চক্র। জানা যায়, স্বাস্থ্য খাতের ডনখ্যাত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর টেকনোক্র্যাট লিমিটেড কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে কালো তালিকাভুক্ত হয়। এর পর তিনি আত্মীয়স্বজনসহ নামে-বেনামে অন্তত ২০টি প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা করেন। গত তিন বছরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তাঁর ভাগনের প্রতিষ্ঠান ট্রেড হাউস ১১টি প্যাকেজে ৫১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার
সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। মিঠুকে নিয়ে হাজারো বিতর্ক থাকলেও শুভ্র-তপন চক্র কাজ দিতে তাঁকেই বেছে নিয়েছে। মিঠুর আরেক আত্মীয়ের প্রতিষ্ঠান ওয়ান ট্রেড তিন প্যাকেজে ৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭৮ হাজার টাকার কাজ পেয়েছে। এ ছাড়া তাঁর অধীনে থাকা এমএস মাইক্রো টেডার্স চার প্যাকেজে ১৭ কোটি ৬৪ লাখ, ছয় প্যাকেজে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস ১৭ কোটি ৭ লাখ ও ৯ প্যাকেজে টেকনোওয়ার্থ অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড ১১ কোটি ৮১ লাখ ২০ হাজার টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছে। করোনাকালে মিঠুর বিরুদ্ধে মামলা হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে থেকেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করায় বক্তব্য জানতে পারেনি। দেশে মিঠুর ব্যবসা দেখভাল করছেন বড় ভাই
মোকছেদুল ইসলাম। একাধিকবার কল দিলেও সাড়া দেননি। মিঠুর বন্ধু জাহের উদ্দিন সরকার বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানি নামে স্বাস্থ্য ব্যবসা করেন। করোনাকালে নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি কালো তালিকাভুক্ত করে অধিদপ্তর। কিন্তু ধূর্ত জাহের ব্যবসা ঠিক রাখতে জেনেসিস ট্রেডিং কোম্পানি, মার্কেন্টাইল ট্রেড, ইউনিভার্সেল ট্রেড ও এসপি ট্রেডিং হাউস নামে প্রতিষ্ঠান খোলেন। এর মধ্যে জেনেসিস একটি প্যাকেজে ২ কোটি ২১ লাখ টাকার যন্ত্র সরবরাহ করে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি বাজারদরের চেয়ে কয়েক গুণ দাম বেশি নিলেও সরবরাহ করেছে নিম্নমানের সরঞ্জাম। আর গত তিন বছরে এসপি ট্রেডিং হাউস ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার কাজ করেছে। সম্প্রতি দুদক ভুয়া বিলের মাধ্যমে প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিন চিকিৎসকসহ যে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে, সেখানে জাহেরও রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাঁকে বিভিন্ন উপদেষ্টা ও ছাত্র প্রতিনিধির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে তৎপর দেখা গেছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাহের উদ্দিনকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ হয়নি। নথিতে দেখা যায়, তিনটি প্যাকেজে ওএমসি হেলথ কেয়ার ৩০ কোটি ২৮ লাখ টাকার কাজ পেয়েছে। করোনার মধ্যে যন্ত্র সরবরাহে দুর্নীতি ও প্রতারণার মামলা হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। তার পরও আর্থিক সুবিধা নিয়ে ওএমসিকে কাজ দিয়েছে শুভ্র-তপন চক্র। জানতে চাইলে ওএমসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাজবাহুল কবির কোনো অভিযোগ থাকলে সরাসরি দেখা করতে বলেন। কিন্তু সাক্ষাতের সময় চাইলে কল কেটে দেন। এর পর কয়েক দিনেও ফোন ধরেননি। গত বছর জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইস লিমিটেড ২ কোটি ৫ লাখ টাকার যন্ত্র কেনাকাটার কাজ পায়। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রাজ্জাক করোনাকালে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। এর পরও আবদুর রাজ্জাকের প্রতিষ্ঠান কমিশন দিয়ে কাজ পেয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে আবদুর রাজ্জাক মন্তব্য করতে রাজি হননি। বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সাবেক কর্মকর্তা মুন্সী সাজ্জাদ হোসেন আত্মীয়স্বজনের নামে পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে অধিদপ্তরের প্রভাব খাটিয়ে কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। ঢাকা, ফরিদপুরসহ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে বাজারমূল্যের চেয়ে ১৫০ থেকে ২০০ গুণ বেশি দামে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় শতকোটি টাকা। জানতে চাইলে মুন্সী সাজ্জাদ বলেন, ‘আগে কিছু কাজ করেছি, এখন পাই না। চাকরিও ছেড়ে দিয়েছি।’ অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি। ২৫ শতাংশ কমিশন, সুবিধাভোগী শেখ হাসিনার স্বজনও সূত্র জানায়, গত তিন বছর চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহের কাজ পেতে প্রতিটি কোম্পানিকে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দিতে হয়েছে। কমিশনের অর্থের ১২-১৫ শতাংশ নিয়েছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছেলে শুভ্র। বাকি অর্থ পেয়েছেন সাবেক লাইন ডিরেক্টর মাজহারুল ও নাজমুল। শুভ্র আবার অর্থ দিয়ে দল ও সরকারের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেছেন। তাদের মধ্যে শেখ পরিবারের নামে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ স্বজনরা বেশি কমিশন নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। মেসার্স বেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক বেলাল হোসেন বলেন, ‘গত পাঁচ বছর অন্তত ২৫টি দরপত্রে আবেদন করেও কাজ পাইনি। এখানে টাকা ছাড়া কাজ মেলে না। যাদের কাজ দেওয়া হবে, চক্রের হোতারা তাদের আগেই দরপত্রের গোপনীয় বিষয় জানিয়ে দেন। ফলে অন্যদের পক্ষে কাজ পাওয়া সম্ভব ছিল না।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, কাজ কে পাবেন, তা ঠিক করতেন রাহাত মালেক। তাঁর পছন্দের কোম্পানির সক্ষমতা অনুযায়ী তৈরি হতো দরপত্রের শর্ত। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করতেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাজহারুল হক। আত্মগোপনে থাকায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তাঁর ছেলের বক্তব্য জানতে পারেনি। অভিযোগের বিষয়ে এইচএসএমের সাবেক লাইন ডিরেক্টর (বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের প্রধান) ডা. মাজহারুল হক বলেন, ‘দরপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়নের পর কাজ দেওয়া হয়েছে। কমিশন নিয়ে বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’ তবে অনিয়মের নথি দেখানোর পর তিনি মন্তব্য করতে চাননি। সাবেক আরেক লাইন ডিরেক্টর ডা. নাজমুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ হয়নি। বর্তমানে তিনি ওএসডি। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলের বিচার হবে দুদকের মাধ্যমে। ডা. মাজহারুল হকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হবে।’ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘শুধু ঠিকাদার নন, এখানে আমলা ও রাজনৈতিক নেতারা মিলে ত্রিমুখী আঁতাতের মাধ্যমে অপকর্ম হয়েছে। চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘করোনাকালে দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে পরে কেউ অপকর্মের সাহস দেখাতেন না। বর্তমানে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আশা করছি, শাস্তির মাধ্যমে সরকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’