
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

জনগণের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র চলছে: রাশেদ খান

সেনাবাহিনী পাশে না দাঁড়ালে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি হতো: নুরুল হক

আ.লীগের নিবন্ধন বাতিল ও রাজনীতি নিষিদ্ধ চায় এনসিপি

বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

আ.লীগের নিবন্ধন বাতিল ও রাজনীতি নিষিদ্ধ চায় এনসিপি

১/১১-এর কুশীলবরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে: দুলু

আ.লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য আপনাদের বসানো হয়েছে: রাফি
এমপি হয়েই নেমে পড়েন লুটপাটে

রাতের ভোটে এমপি হয়েই আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন অধ্যাপক এমএ মতিন। স্ত্রীর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ২০১৮ সালে কুড়িগ্রাম-৩ আসনের এমপি হয়েই পাঁচ বছরে আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। টিআর-কাবিখা-কাবিটায় লুটপাট ছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্য করে বহু অর্থের মালিক বনে যান। তার কথাই ছিল শেষ কথা। অবৈধভাবে জমি দখল, নারী কেলেঙ্কারি এমনকি রাতারাতি মুক্তিযোদ্ধা বনে গিয়ে এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। ৫ বছরে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন সুচতুর এই মতিন। এলাকাবাসী বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে তার কাছে ছুটে গেলে তিনি বলতেন, ‘তোমাদের ভোটে আমি নির্বাচিত হয়নি, আমাকে নির্বাচিত করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।’ তার অপকর্মের কারণে শেষ
দফায় তাকে আর মনোনয়ন দেয়নি দল। উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি হায়দার আলী মিঞা বলেন, এমএ মতিন এমপি হওয়ার পর বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে রাস্তায় দাঁড়াতেই দেয়নি। উন্নয়নের নামে টিআর, কাবিখা, কাবিটার নামে কাগজে-কলমে প্রকল্প দেখিয়ে তা লুট করা হয়েছে। এলাকায় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। এছাড়া দেশে করোনা চলাকালীন সরকারি বরাদ্দ ও এমপির বার্ষিক ঐচ্ছিক তহবিলের টাকা নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে তুলে ভাগাভাগি করে নেন। তিনি বলেন, তার সময় ডিও লেটারের রমরমা বাণিজ্য ছিল। টাকার বিনিময়ে তার অনুসারীদের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বানিয়ে নিয়োগের টাকা লুটপাট করে খেয়েছেন। সাবেক এমপির বড় ভাই আব্দুল করিম রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। এলাকাবাসী বলছে,
এমএ মতিন এমপি হওয়ার আগে জেলা ও উপজেলা তার কোনো পদ-পদবি ছিল না। তিনি সারাজীবন শিক্ষকতা করেছেন। তার স্ত্রী অধ্যক্ষ নাসিমা বানু এলাকায় আওয়ামী লীগের নেত্রী হিসাবে জনপ্রিয় ছিলেন। ২০১৫ সালের ৮ মার্চ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ মে মারা যান। স্ত্রীর ইমেজকে পুঁজি করে এমপির মনোনয়ন বাগিয়ে নেন তিনি। ২০১৮ সালের রাতের ভোটে এমপি হন। এমপি হয়েই তার আসল রূপ বেরিয়ে আসে। বিভিন্ন রকম সরকারি অনুদান ছাড়াও টিআর-কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পে প্রতিবছরে প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ আসত এমপির অনুকূলে। বরাদ্দের পুরো টাকাই তিনি নানা কায়দায় আত্মসাৎ করেন। বিভিন্ন কাজে তার কমিশন ছিল ৫০%। ৩-৪ লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
সভাপতি করতেন টাউটদের। এছাড়া প্রতিটি নিয়োগের বিপরীতে এমপিকে দিতে হতো ৫-১০ লাখ টাকা। তবে বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে বসতেন তিনি নিজেই। এলাকাবাসী জানান, স্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রকাশ্যে ও গোপনে একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার। তার উলিপুরের বাসভবনে গভীর রাত পর্যন্ত অপরিচিত নারীদের আনাগোনা লেগেই ছিল পাঁচ বছর। এলাকা শাসন করার জন্য তার ছেলে সালমান হাসান ডেভিড মারজানের নেতৃত্বে একটি বাহিনী গড়ে তুলে উপজেলার সর্বত্র ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। পিতা ও পুত্রের ভয়ে স্থানীয়ভাবে বিরোধী দল প্রকাশ্যে কোনো মিছিল মিটিং করতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের কিশোরপুর বাড়াইপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে আ. নাছিরের (৪৬) সঙ্গে পৌরসভার রামদাস ধনিরাম
নূরপুর এলাকার জহুর উদ্দিনের ছেলে ফুলবাবু (৪৮) গংয়ের ৩১ শতক বসতভিটা নিয়ে বিরোধ ছিল দীর্ঘদিন ধরে। মামলা চলার সময়ই মতিনের হুকুমে তার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই জমিতে থাকা সাতটি বসতঘর ভাঙচুর করে জায়গাটি দখলে নিয়ে নেন। এছাড়া কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়ক ঘেঁষা ঐতিহ্যবাহী গুনাইগাছ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৪০ শতক জায়গা দখল করে নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত এমএ মতিন কারিগরি ও কৃষি কলেজের বহুতল ভবন নির্মাণ করেন। এ রকম আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সাবেক এমপি অধ্যাপক এমএ মতিন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোনে (০১৭১৫১৫৭৫৩২) যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধে
অংশ না নিয়েও ২০২৩ সালে স্বাধীনতার ৫২ বছর পর নামের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা তকমা লাগান কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সাবেক এমপি মতিন। ওই সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে এমপির মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের দাবি তোলেন। যুদ্ধকালীন এমপির বড় ভাই আব্দুল করিম রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তার অধীনে উলিপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান মাতৃমঙ্গল দখল করে রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ায় উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি হস্তক্ষেপ করেন। নিয়োগ, ভবন নির্মাণ ও সংস্কার তার অনুমতি ছাড়া হতো না। উলিপুর হাতিয়া ইউনিয়নের আদর্শ
এতিমখানা দ্বিমুখী আলিম মাদ্রাসা আরবি প্রভাষক মুহাম্মদ আলতাফ হোসাইন বলেন, দাপট দেখিয়ে এমপি সাহেব প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হন। এরপর ৬টি নিয়োগে তিনি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। জানতে পেরে প্রতিষ্ঠানের জরাজীর্ণ আধাপাকা ভবন মেরামতের দাবি জানালে আমার পদোন্নতি আটকে দেওয়াসহ প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা সাময়িক বন্ধ করে দেন। এক পর্যায়ে আমরা এমপির বাড়িতে গেলে তিনি আমাদের বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন। আসনটি ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। অধ্যাপক মতিন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে অর্থ বাগিয়ে নেন। বিরোধী দলকে কোনো নির্বাচনেই দাঁড়াতে দেয়নি। নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ও মিথ্যা মামলা তো ছিলই। প্রতিটি ইউপি নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। বিনিময়ে ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের বাদ দিয়েছেন। প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল মারা ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ছিল প্রকাশ্য। তবকপুর ইউপি নির্বাচনের তৎকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেজাউল করিম মন্ডল রাজা জানান, নির্বাচনের শুরু থেকেই ভয়ভীতি প্রদর্শন, প্রচারে বাধা ও হামলা-মামলা করা হয়। এরপরও জনগণ আমাকে ভোট দিলে নৌকা মার্কার প্রার্থী মোখলেছুর রহমান তার পরাজয় বুঝতে পেরে এমপির সন্ত্রাসী বাহিনীর সহায়তায় সরদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যান। এই কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার চারশ ছিল। পরে নির্বাচন কর্মকর্তা ভোট বন্ধ ঘোষণা করেন। বাক্স ছিনতাই হওয়া কেন্দ্র বাদেই ১ হাজার ৪৯৫ ভোটে এগিয়ে ছিলাম আমি। পরে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উপনির্বাচন হলে আমার বিজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে এমপির ছেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভোট বন্ধ করে দিয়ে মন গড়া ফলাফল ঘোষণা করে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি।
দফায় তাকে আর মনোনয়ন দেয়নি দল। উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি হায়দার আলী মিঞা বলেন, এমএ মতিন এমপি হওয়ার পর বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে রাস্তায় দাঁড়াতেই দেয়নি। উন্নয়নের নামে টিআর, কাবিখা, কাবিটার নামে কাগজে-কলমে প্রকল্প দেখিয়ে তা লুট করা হয়েছে। এলাকায় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। এছাড়া দেশে করোনা চলাকালীন সরকারি বরাদ্দ ও এমপির বার্ষিক ঐচ্ছিক তহবিলের টাকা নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে তুলে ভাগাভাগি করে নেন। তিনি বলেন, তার সময় ডিও লেটারের রমরমা বাণিজ্য ছিল। টাকার বিনিময়ে তার অনুসারীদের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বানিয়ে নিয়োগের টাকা লুটপাট করে খেয়েছেন। সাবেক এমপির বড় ভাই আব্দুল করিম রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। এলাকাবাসী বলছে,
এমএ মতিন এমপি হওয়ার আগে জেলা ও উপজেলা তার কোনো পদ-পদবি ছিল না। তিনি সারাজীবন শিক্ষকতা করেছেন। তার স্ত্রী অধ্যক্ষ নাসিমা বানু এলাকায় আওয়ামী লীগের নেত্রী হিসাবে জনপ্রিয় ছিলেন। ২০১৫ সালের ৮ মার্চ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ মে মারা যান। স্ত্রীর ইমেজকে পুঁজি করে এমপির মনোনয়ন বাগিয়ে নেন তিনি। ২০১৮ সালের রাতের ভোটে এমপি হন। এমপি হয়েই তার আসল রূপ বেরিয়ে আসে। বিভিন্ন রকম সরকারি অনুদান ছাড়াও টিআর-কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পে প্রতিবছরে প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ আসত এমপির অনুকূলে। বরাদ্দের পুরো টাকাই তিনি নানা কায়দায় আত্মসাৎ করেন। বিভিন্ন কাজে তার কমিশন ছিল ৫০%। ৩-৪ লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
সভাপতি করতেন টাউটদের। এছাড়া প্রতিটি নিয়োগের বিপরীতে এমপিকে দিতে হতো ৫-১০ লাখ টাকা। তবে বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে বসতেন তিনি নিজেই। এলাকাবাসী জানান, স্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রকাশ্যে ও গোপনে একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার। তার উলিপুরের বাসভবনে গভীর রাত পর্যন্ত অপরিচিত নারীদের আনাগোনা লেগেই ছিল পাঁচ বছর। এলাকা শাসন করার জন্য তার ছেলে সালমান হাসান ডেভিড মারজানের নেতৃত্বে একটি বাহিনী গড়ে তুলে উপজেলার সর্বত্র ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। পিতা ও পুত্রের ভয়ে স্থানীয়ভাবে বিরোধী দল প্রকাশ্যে কোনো মিছিল মিটিং করতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের কিশোরপুর বাড়াইপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে আ. নাছিরের (৪৬) সঙ্গে পৌরসভার রামদাস ধনিরাম
নূরপুর এলাকার জহুর উদ্দিনের ছেলে ফুলবাবু (৪৮) গংয়ের ৩১ শতক বসতভিটা নিয়ে বিরোধ ছিল দীর্ঘদিন ধরে। মামলা চলার সময়ই মতিনের হুকুমে তার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই জমিতে থাকা সাতটি বসতঘর ভাঙচুর করে জায়গাটি দখলে নিয়ে নেন। এছাড়া কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়ক ঘেঁষা ঐতিহ্যবাহী গুনাইগাছ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৪০ শতক জায়গা দখল করে নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত এমএ মতিন কারিগরি ও কৃষি কলেজের বহুতল ভবন নির্মাণ করেন। এ রকম আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সাবেক এমপি অধ্যাপক এমএ মতিন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোনে (০১৭১৫১৫৭৫৩২) যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধে
অংশ না নিয়েও ২০২৩ সালে স্বাধীনতার ৫২ বছর পর নামের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা তকমা লাগান কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সাবেক এমপি মতিন। ওই সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে এমপির মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের দাবি তোলেন। যুদ্ধকালীন এমপির বড় ভাই আব্দুল করিম রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তার অধীনে উলিপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান মাতৃমঙ্গল দখল করে রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ায় উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি হস্তক্ষেপ করেন। নিয়োগ, ভবন নির্মাণ ও সংস্কার তার অনুমতি ছাড়া হতো না। উলিপুর হাতিয়া ইউনিয়নের আদর্শ
এতিমখানা দ্বিমুখী আলিম মাদ্রাসা আরবি প্রভাষক মুহাম্মদ আলতাফ হোসাইন বলেন, দাপট দেখিয়ে এমপি সাহেব প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হন। এরপর ৬টি নিয়োগে তিনি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। জানতে পেরে প্রতিষ্ঠানের জরাজীর্ণ আধাপাকা ভবন মেরামতের দাবি জানালে আমার পদোন্নতি আটকে দেওয়াসহ প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা সাময়িক বন্ধ করে দেন। এক পর্যায়ে আমরা এমপির বাড়িতে গেলে তিনি আমাদের বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন। আসনটি ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। অধ্যাপক মতিন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে অর্থ বাগিয়ে নেন। বিরোধী দলকে কোনো নির্বাচনেই দাঁড়াতে দেয়নি। নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ও মিথ্যা মামলা তো ছিলই। প্রতিটি ইউপি নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। বিনিময়ে ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের বাদ দিয়েছেন। প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল মারা ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ছিল প্রকাশ্য। তবকপুর ইউপি নির্বাচনের তৎকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেজাউল করিম মন্ডল রাজা জানান, নির্বাচনের শুরু থেকেই ভয়ভীতি প্রদর্শন, প্রচারে বাধা ও হামলা-মামলা করা হয়। এরপরও জনগণ আমাকে ভোট দিলে নৌকা মার্কার প্রার্থী মোখলেছুর রহমান তার পরাজয় বুঝতে পেরে এমপির সন্ত্রাসী বাহিনীর সহায়তায় সরদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যান। এই কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার চারশ ছিল। পরে নির্বাচন কর্মকর্তা ভোট বন্ধ ঘোষণা করেন। বাক্স ছিনতাই হওয়া কেন্দ্র বাদেই ১ হাজার ৪৯৫ ভোটে এগিয়ে ছিলাম আমি। পরে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উপনির্বাচন হলে আমার বিজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে এমপির ছেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভোট বন্ধ করে দিয়ে মন গড়া ফলাফল ঘোষণা করে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি।