ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
এক সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
মুরগি-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, আলু এখনো চড়া
জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১০-১৫ টাকা কমানো সম্ভব
কেন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছে জানালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
সালমান এফ রহমানের কোম্পানিকে ৬০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে সরকার
কমেছে পেঁয়াজের দাম
ভারত থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি, তবুও কমেনি দাম
আওয়ামী লীগ আমলের সাড়ে ১৫ বছর জালিয়াতদের টার্গেট ছিল জনতা ব্যাংক
সরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে ছিল জনতা ব্যাংক। আমানতপ্রবাহ বেশি, খেলাপি ছিল কম। প্রভিশন ও মূলধন ঘটতি ছিল না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ব্যাংক জালিয়াতচক্র ও টাকা পাচারকারীদের নজর পড়ে এ ব্যাংকের প্রতি। রাজনৈতিক চাপ, দুর্নীতিবাজ পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কারণে ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে চক্রটি ঋণের নামে জনগণের আমানতের টাকা বের করে দিতে থাকে। এর একটি অংশ বিদেশেও পাচার করা হয়েছে। ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় বাড়তে থাকে খেলাপি ঋণ। এসব কারণে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়ে এখন ৪৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা মোট ঋণের প্রায় ৪৮ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাবে খেলাপি ঋণ
আরও বেড়েছে। ব্যাংকের বড় গ্রাহকদের ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়েছে। ফলে আগামী দিনে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি জনতা ব্যাংকের পর্ষদ সভায় উপস্থাপিত আর্থিক অবস্থার চিত্র এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, সরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতা ব্যাংকের অবস্থান ছিল শীর্ষে। সব সূচকেই ব্যাংকটির অবস্থা ছিল শক্তিশালী। ২০০৮ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির এ অবস্থা বজায় ছিল। ২০০৯ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এরপর থেকেই লুটপাটকারী এবং টাকা পাচারকারীদের নজর পড়ে ব্যাংকটির প্রতি। তারা লুটপাট করতে নানা ফাঁদ পাততে থাকে। কিন্তু তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নিয়মকানুনের প্রতি কঠোর থাকায়
প্রথমদিকে লুটপাটকারীরা সুবিধা করতে পারেনি। রাজনৈতিক প্রভাবে দুর্নীতিবাজদের এমডি নিয়োগ করা হলে তারা বিধিবিধানের কোনোরকম তোয়াক্কা না করেই বেপরোয়াভাবে ঋণ বিতরণ করতে থাকে। আর দুর্বল হতে থাকে ব্যাংকটি। আওয়ামী লীগ সরকার টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ওই সময়ে সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজন জনতা ব্যাংকে ব্যাপকভাবে লুটপাট করেছে। এসব টাকা বিদেশেও পাচার করেছে। পর্ষদ, এমডিসহ শীর্ষ নির্বাহীরা ছিল ‘জালিয়াতদের’ পক্ষে এবং আমানতকারীদের বিপক্ষে। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব জেনেও ছিল একেবারেই নির্বিকার। জনতা ব্যাংকের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো সুপারিশই আমলে নেয়নি সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত হলেও
এমডির মেয়াদ বেড়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে জনতা ব্যাংকও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানেনি। আওয়ামী লীগ সময়ে শুরুর বছর ব্যাংকটি ঠিকভাবেই চলছিল। কিন্তু এর পরের বছর থেকেই লুটপাট শুরু হয়। প্রথম জালিয়াতি শুরু হয় বিসমিল্লাহ গ্রুপের মাধ্যমে। গ্রুপটি জনতা ব্যাংকের তিনটি শাখা থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা সুদসহ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকায়। জনতা ব্যাংকসহ ৫টি ব্যাংক থেকে তারা ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে। এখন পর্যন্ত ব্যাংকটি থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। শুধু একটি শাখা অর্থাৎ দিলকুশা স্থানীয় কার্যালয় থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের নামে ঋণ দেওয়া হয়েছে ২৫
হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী জনতা ব্যাংক কোনো একক গ্রুপকে এত বেশি ঋণ দিতে পারে না। কিন্তু তারা কোনো আইনকানুন মানেনি। বেক্সিমকো গ্রুপ যখন যা চেয়েছে, সেই পরিমাণ ঋণই তারা দিয়েছে। স্থানীয় কার্যালয়ের এত বেশি ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু বেক্সিমকো ঋণ দেওয়ার জন্য ওই শাখার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রুপের নামে বিতরণ করা ঋণের সিংহভাগ ঋণই এখন খেলাপির পথে রয়েছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে কিছু ঋণ খেলাপি করা হয়েছে। ডিসেম্বর ও মার্চ প্রান্তিকের মধ্যে কোনো ছাড় না দিলে আরও খেলাপি হবে। শাখা থেকে রপ্তানির আড়ালে প্রায় ৪৫৫ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। ওইসব রপ্তানি আয় মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও
এখনো দেশে আসেনি। গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকটিতে গ্রুপের ঋণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। এক বছরে তারা আরও ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এদিকে জনতা ব্যাংকের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রণই ছিল না। জনতা ব্যাংকের কাছে বেক্সিমকো গ্রপের মোট ঋণের তথ্য কয়েক দফায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে চাওয়া হলেও তারা সেটি দেয়নি। এমডি পরিবর্তন হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই তথ্য পেয়েছে। ব্যাংকটিতে এস আলম গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। আরও ঋণ খেলাপি হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আমদানির নামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যাংকটিতে বড় ধরনের দুটি ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। একটি হচ্ছে অ্যানন টেক্স গ্রুপ ও অন্যটি ক্রিসেন্ট গ্রুপ। অ্যানন টেক্স গ্রুপ জালিয়াতি করে ঋণ নিয়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা, যা সুদ-আসলে বেড়ে এখন ৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর পুরোটাই এখন খেলাপি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে অ্যানন টেক্স গ্রুপের ঋণে জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনার তথ্য মিলেছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে ওই গ্রাহককে কোনো সুবিধা দেওয়ার নিয়ম নেই। তারপরও অ্যানন টেক্সের ঋণের ৩ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা বাতিল করে দিয়েছে। জনতা ব্যাংকে ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণের স্থিতি ছিল প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। কিছু ঋণ পরিশোধের পর এখন স্থিতি ৪ হাজার কোটি টাকায় নেমেছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। রপ্তানির নামে গ্রুপটি বিদেশে পাচার করেছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। জনতা ব্যাংক থেকে জালিয়াতরা শুধু ঋণ নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, অন্য ব্যাংকের খেলাপি ঋণও জনতা ব্যাংককে কিনতে বাধ্য করা হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে। এর মধ্যে নজরুল ইসলামের মালিকানাধীন নাসা গ্রুপের দুটি ঋণ বাবদ ১২০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছিল। পরে এ দুটি ঋণ জনতা ব্যাংক কিনে নেয় নিয়মিত অবস্থায়। তখন জনতা ব্যাংক থেকে তিনি আরও নতুন ঋণ নেন। এখন স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪১৭ কোটি টাকা। ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় খেলাপি হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া আরও ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ তারা কিনেছিল। পরে সেগুলো নিয়মিত করে নতুন ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলোও এখন খেলাপি। রানাকা গ্রুপের ঋণের স্থিতি প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬০০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। আরও ঋণ খেলাপির পথে রয়েছে। রতনপুর গ্রুপের ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এই ঋণের পুরোটাই খেলাপি হয়ে পড়েছে। সিকদার গ্রুপের ৮৩০ কোটি টাকা ঋণের পুরোটাই খেলাপি হওয়ার যোগ্য। কিন্তু আদালতের নির্দেশের কারণে এটি খেলাপি করা হয়নি। চৌধুরী গ্রুপের ৬৩০ কোটি টাকা ঋণের পুরোটাই খেলাপি। গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের ঋণ ছিল সোনালী ব্যাংকে। সেখানে এটি খেলাপি হলে ২০১২ সালে জনতা ব্যাংক ঋণটি কিনে নেয় নিয়মিত অবস্থায়। তখন থেকে আরও নতুন ঋণ দিতে থাকে। এখন বকেয়া স্থিতি প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেশকিছু ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। বাকিগুলোর কিস্তিও নিয়মিত শোধ করা হচ্ছে না। এগুলোও খেলাপির পথে রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০০৯ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের স্থিতি প্রতিবছর বাড়ছিল গড়ে ২ হাজার কোটি টাকা করে। কিন্তু ২০১০ সাল থেকে এ স্থিতি বাড়ার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। মূলত তখন থেকেই লুটপাট শুরুর কারণে ঋণের স্থিতিও বাড়তে থাকে। ২০০৭ সালে ঋণ স্থিতি ছিল ১২ হাজার ১২০ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা। এর পরের বছর থেকেই ঋণ স্থিতি মাত্রাতিরিক্তভাবে বাড়তে থাকে। ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকায়। আগে যেখানে বছরে ঋণ স্থিতি বাড়ত ২ হাজার কোটি টাকা করে, সেখানে এক বছরের ব্যবধানে ঋণ স্থিতি বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। এর বেশির ভাগ অর্থই লুটপাট হয়েছে। যে কারণে ২০১০ সাল পর্যন্ত খেলাপি ঋণ নিম্নমুখী ছিল। ২০১১ সালে থেকে তা বাড়তে থাকে। ২০০৮ সালে খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। ২০১০ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ১৮২ কোটি টাকায়। ২০১৫ সালে তা বেড়ে ১ হাজার ৫০৪ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১১ সালে ঋণ স্থিতি বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ হাজার ৭৮০ কোটি টাকায়। আগের বছরের চেয়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১২ সালে স্থিতি বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। ওই এক বছরে স্থিতি বেড়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা। আগের বিতরণ করা ঋণ আদায় না হওয়ায় ওই বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে ৫ হাজার ৩২০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে ছিল। ওই সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ঋণ বিতরণ কম হয়েছে। যে কারণে তখন ঋণ স্থিতির হ্রাস বা বৃদ্ধি স্বাভাবিক ছিল। একই সময়ে খেলাপি ঋণও কমছিল। কিন্তু ২০১৫ সালে ঋণ স্থিতি বাড়ার পাশাপাশি খেলাপি ঋণও বেড়ে যায়। ওই বছরে ঋণ স্থিতি আগের বছরের চেয়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। আগের বছরে ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা এবং খেলাপি ঋণ প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বেড়ে ৪ হাজার ৩১৮ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১৬ সালে ঋণ স্থিতি ৫ হাজার কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ হাজার ৩০৪ কোটি টাকায়। ওই সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা হয়। ২০১৭ সালে ঋণ স্থিতি ৬ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায় এবং খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বেড়ে ৫ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা হয়। ২০১৮ সালেও ঋণ স্থিতি ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩ হাজার ৩৭১ কোটি টাকায় এবং খেলাপি ঋণ এক বছরের ব্যবধানে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ওই বছরে অ্যানন টেক্স, ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ খেলাপি হয়ে যায়। যে কারণে খেলাপি ঋণে বড় ঝাঁপ দিয়েছে। ২০১৯ সালে ঋণ স্থিতি স্বাভাবিক থাকে। পাশাপাশি ২০২১ সাল পর্যন্ত খেলাপি ঋণ কমে ১২ হাজার ৩২০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০২০ সাল থেকে ঋণ বিতরণ অস্বাভাবিক গতিতে বাড়তে থাকে। ওই সময়ে বেক্সিমকো গ্রুপ বেশি ঋণ নিয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ঋণ স্থিতি বেড়ে দাঁড়ায় ৯৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। একই সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ হাজার কোটি টাকায়। গত জুন পর্যন্ত ব্যাংকের ঋণ স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় লাখ কোটি টাকায়। এর বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। প্রায় ৪৭ শতাংশ ঋণই খেলাপি। আগামী দিনে এর পরিমাণ আরও বাড়বে। গত সাড়ে ১৫ বছরে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৮৫ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা, যা ৭ গুণ বেশি। খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা, যা ২৭ গুণ বেশি। এটি ব্যাংক খাতে একটি বিরল ঘটনা।
আরও বেড়েছে। ব্যাংকের বড় গ্রাহকদের ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়েছে। ফলে আগামী দিনে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি জনতা ব্যাংকের পর্ষদ সভায় উপস্থাপিত আর্থিক অবস্থার চিত্র এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, সরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতা ব্যাংকের অবস্থান ছিল শীর্ষে। সব সূচকেই ব্যাংকটির অবস্থা ছিল শক্তিশালী। ২০০৮ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির এ অবস্থা বজায় ছিল। ২০০৯ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এরপর থেকেই লুটপাটকারী এবং টাকা পাচারকারীদের নজর পড়ে ব্যাংকটির প্রতি। তারা লুটপাট করতে নানা ফাঁদ পাততে থাকে। কিন্তু তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নিয়মকানুনের প্রতি কঠোর থাকায়
প্রথমদিকে লুটপাটকারীরা সুবিধা করতে পারেনি। রাজনৈতিক প্রভাবে দুর্নীতিবাজদের এমডি নিয়োগ করা হলে তারা বিধিবিধানের কোনোরকম তোয়াক্কা না করেই বেপরোয়াভাবে ঋণ বিতরণ করতে থাকে। আর দুর্বল হতে থাকে ব্যাংকটি। আওয়ামী লীগ সরকার টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ওই সময়ে সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজন জনতা ব্যাংকে ব্যাপকভাবে লুটপাট করেছে। এসব টাকা বিদেশেও পাচার করেছে। পর্ষদ, এমডিসহ শীর্ষ নির্বাহীরা ছিল ‘জালিয়াতদের’ পক্ষে এবং আমানতকারীদের বিপক্ষে। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব জেনেও ছিল একেবারেই নির্বিকার। জনতা ব্যাংকের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো সুপারিশই আমলে নেয়নি সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত হলেও
এমডির মেয়াদ বেড়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে জনতা ব্যাংকও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানেনি। আওয়ামী লীগ সময়ে শুরুর বছর ব্যাংকটি ঠিকভাবেই চলছিল। কিন্তু এর পরের বছর থেকেই লুটপাট শুরু হয়। প্রথম জালিয়াতি শুরু হয় বিসমিল্লাহ গ্রুপের মাধ্যমে। গ্রুপটি জনতা ব্যাংকের তিনটি শাখা থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা সুদসহ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকায়। জনতা ব্যাংকসহ ৫টি ব্যাংক থেকে তারা ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে। এখন পর্যন্ত ব্যাংকটি থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। শুধু একটি শাখা অর্থাৎ দিলকুশা স্থানীয় কার্যালয় থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের নামে ঋণ দেওয়া হয়েছে ২৫
হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী জনতা ব্যাংক কোনো একক গ্রুপকে এত বেশি ঋণ দিতে পারে না। কিন্তু তারা কোনো আইনকানুন মানেনি। বেক্সিমকো গ্রুপ যখন যা চেয়েছে, সেই পরিমাণ ঋণই তারা দিয়েছে। স্থানীয় কার্যালয়ের এত বেশি ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু বেক্সিমকো ঋণ দেওয়ার জন্য ওই শাখার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রুপের নামে বিতরণ করা ঋণের সিংহভাগ ঋণই এখন খেলাপির পথে রয়েছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে কিছু ঋণ খেলাপি করা হয়েছে। ডিসেম্বর ও মার্চ প্রান্তিকের মধ্যে কোনো ছাড় না দিলে আরও খেলাপি হবে। শাখা থেকে রপ্তানির আড়ালে প্রায় ৪৫৫ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। ওইসব রপ্তানি আয় মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও
এখনো দেশে আসেনি। গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকটিতে গ্রুপের ঋণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। এক বছরে তারা আরও ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এদিকে জনতা ব্যাংকের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রণই ছিল না। জনতা ব্যাংকের কাছে বেক্সিমকো গ্রপের মোট ঋণের তথ্য কয়েক দফায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে চাওয়া হলেও তারা সেটি দেয়নি। এমডি পরিবর্তন হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই তথ্য পেয়েছে। ব্যাংকটিতে এস আলম গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। আরও ঋণ খেলাপি হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আমদানির নামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যাংকটিতে বড় ধরনের দুটি ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। একটি হচ্ছে অ্যানন টেক্স গ্রুপ ও অন্যটি ক্রিসেন্ট গ্রুপ। অ্যানন টেক্স গ্রুপ জালিয়াতি করে ঋণ নিয়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা, যা সুদ-আসলে বেড়ে এখন ৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর পুরোটাই এখন খেলাপি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে অ্যানন টেক্স গ্রুপের ঋণে জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনার তথ্য মিলেছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে ওই গ্রাহককে কোনো সুবিধা দেওয়ার নিয়ম নেই। তারপরও অ্যানন টেক্সের ঋণের ৩ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা বাতিল করে দিয়েছে। জনতা ব্যাংকে ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণের স্থিতি ছিল প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। কিছু ঋণ পরিশোধের পর এখন স্থিতি ৪ হাজার কোটি টাকায় নেমেছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। রপ্তানির নামে গ্রুপটি বিদেশে পাচার করেছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। জনতা ব্যাংক থেকে জালিয়াতরা শুধু ঋণ নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, অন্য ব্যাংকের খেলাপি ঋণও জনতা ব্যাংককে কিনতে বাধ্য করা হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে। এর মধ্যে নজরুল ইসলামের মালিকানাধীন নাসা গ্রুপের দুটি ঋণ বাবদ ১২০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছিল। পরে এ দুটি ঋণ জনতা ব্যাংক কিনে নেয় নিয়মিত অবস্থায়। তখন জনতা ব্যাংক থেকে তিনি আরও নতুন ঋণ নেন। এখন স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪১৭ কোটি টাকা। ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় খেলাপি হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া আরও ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ তারা কিনেছিল। পরে সেগুলো নিয়মিত করে নতুন ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলোও এখন খেলাপি। রানাকা গ্রুপের ঋণের স্থিতি প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬০০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। আরও ঋণ খেলাপির পথে রয়েছে। রতনপুর গ্রুপের ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এই ঋণের পুরোটাই খেলাপি হয়ে পড়েছে। সিকদার গ্রুপের ৮৩০ কোটি টাকা ঋণের পুরোটাই খেলাপি হওয়ার যোগ্য। কিন্তু আদালতের নির্দেশের কারণে এটি খেলাপি করা হয়নি। চৌধুরী গ্রুপের ৬৩০ কোটি টাকা ঋণের পুরোটাই খেলাপি। গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের ঋণ ছিল সোনালী ব্যাংকে। সেখানে এটি খেলাপি হলে ২০১২ সালে জনতা ব্যাংক ঋণটি কিনে নেয় নিয়মিত অবস্থায়। তখন থেকে আরও নতুন ঋণ দিতে থাকে। এখন বকেয়া স্থিতি প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেশকিছু ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। বাকিগুলোর কিস্তিও নিয়মিত শোধ করা হচ্ছে না। এগুলোও খেলাপির পথে রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০০৯ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের স্থিতি প্রতিবছর বাড়ছিল গড়ে ২ হাজার কোটি টাকা করে। কিন্তু ২০১০ সাল থেকে এ স্থিতি বাড়ার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। মূলত তখন থেকেই লুটপাট শুরুর কারণে ঋণের স্থিতিও বাড়তে থাকে। ২০০৭ সালে ঋণ স্থিতি ছিল ১২ হাজার ১২০ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা। এর পরের বছর থেকেই ঋণ স্থিতি মাত্রাতিরিক্তভাবে বাড়তে থাকে। ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকায়। আগে যেখানে বছরে ঋণ স্থিতি বাড়ত ২ হাজার কোটি টাকা করে, সেখানে এক বছরের ব্যবধানে ঋণ স্থিতি বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। এর বেশির ভাগ অর্থই লুটপাট হয়েছে। যে কারণে ২০১০ সাল পর্যন্ত খেলাপি ঋণ নিম্নমুখী ছিল। ২০১১ সালে থেকে তা বাড়তে থাকে। ২০০৮ সালে খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। ২০১০ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ১৮২ কোটি টাকায়। ২০১৫ সালে তা বেড়ে ১ হাজার ৫০৪ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১১ সালে ঋণ স্থিতি বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ হাজার ৭৮০ কোটি টাকায়। আগের বছরের চেয়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১২ সালে স্থিতি বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। ওই এক বছরে স্থিতি বেড়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা। আগের বিতরণ করা ঋণ আদায় না হওয়ায় ওই বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে ৫ হাজার ৩২০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে ছিল। ওই সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ঋণ বিতরণ কম হয়েছে। যে কারণে তখন ঋণ স্থিতির হ্রাস বা বৃদ্ধি স্বাভাবিক ছিল। একই সময়ে খেলাপি ঋণও কমছিল। কিন্তু ২০১৫ সালে ঋণ স্থিতি বাড়ার পাশাপাশি খেলাপি ঋণও বেড়ে যায়। ওই বছরে ঋণ স্থিতি আগের বছরের চেয়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। আগের বছরে ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা এবং খেলাপি ঋণ প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বেড়ে ৪ হাজার ৩১৮ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১৬ সালে ঋণ স্থিতি ৫ হাজার কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ হাজার ৩০৪ কোটি টাকায়। ওই সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা হয়। ২০১৭ সালে ঋণ স্থিতি ৬ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায় এবং খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বেড়ে ৫ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা হয়। ২০১৮ সালেও ঋণ স্থিতি ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩ হাজার ৩৭১ কোটি টাকায় এবং খেলাপি ঋণ এক বছরের ব্যবধানে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ওই বছরে অ্যানন টেক্স, ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ খেলাপি হয়ে যায়। যে কারণে খেলাপি ঋণে বড় ঝাঁপ দিয়েছে। ২০১৯ সালে ঋণ স্থিতি স্বাভাবিক থাকে। পাশাপাশি ২০২১ সাল পর্যন্ত খেলাপি ঋণ কমে ১২ হাজার ৩২০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০২০ সাল থেকে ঋণ বিতরণ অস্বাভাবিক গতিতে বাড়তে থাকে। ওই সময়ে বেক্সিমকো গ্রুপ বেশি ঋণ নিয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ঋণ স্থিতি বেড়ে দাঁড়ায় ৯৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। একই সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ হাজার কোটি টাকায়। গত জুন পর্যন্ত ব্যাংকের ঋণ স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় লাখ কোটি টাকায়। এর বিপরীতে খেলাপি ঋণ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। প্রায় ৪৭ শতাংশ ঋণই খেলাপি। আগামী দিনে এর পরিমাণ আরও বাড়বে। গত সাড়ে ১৫ বছরে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৮৫ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা, যা ৭ গুণ বেশি। খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা, যা ২৭ গুণ বেশি। এটি ব্যাংক খাতে একটি বিরল ঘটনা।