অপশক্তির ইন্ধনে শ্রমিক অসন্তোষ কারখানা ভাঙচুর – ইউ এস বাংলা নিউজ




অপশক্তির ইন্ধনে শ্রমিক অসন্তোষ কারখানা ভাঙচুর

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১১:৩২ 15 ভিউ
শ্রমিক অসন্তোষ ও কারখানা ভাঙচুরের পেছনে অপশক্তির ইন্ধন আছে। তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পকে ধ্বংস করতেই বহিরাগতরা তাণ্ডব চালাচ্ছে। ক্রমশ বিদেশি ক্রেতাদের কাছে ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। এটা পুনরুদ্ধার করা না গেলে অর্ডার ছুটে যাবে। শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে শিগগিরই ব্যাংকিং জটিলতা নিরসন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ, স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করা দরকার। বুধবার রাজধানীর কাওরান বাজারে ইউটিসি ভবনে বিটিএমএ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে নবগঠিত কমিটি মতবিনিময় করে। সেখানে উপস্থিত টেক্সটাইল মিল মালিকরা এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও নবনির্বাচিত সহসভাপতি শামীম ইসলাম এবং নবনির্বাচিত সহসভাপতি আবুল কালাম। ২২ আগস্টের বোর্ড

সভায় শামীম ইসলাম ও আবুল কালামকে সহসভাপতি নির্বাচিত করা হয়। বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, টেক্সটাইল শিল্প এখন পরিত্যক্ত খাতে পরিণত হয়েছে। এ খাত নিয়ে কেউই চিন্তা-ভাবনা করে না, মনোযোগ নেই। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রধানতম খাত হলেও সরকারের সব প্রণোদনা, ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে জ্বালানি খাতে। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বসিয়ে বসিয়ে টাকা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের যৎসামান্য প্রণোদনা টেক্সটাইল খাতে দেওয়া হলে এ খাতটি সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করতে পারে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ, ব্যাংক ঋণ ও এলসি খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ডলার দরকার। পাশাপাশি শ্রম অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিদেশে অলরেডি ভাবমূর্তি খারাপ অবস্থায়। সহসা

এটা পুনরুদ্ধার করা না গেলে আমাদের হাত থেকে অর্ডার ছুটে যাবে। এখন পর্যন্ত বায়ারদের কনফিডেন্সে রাখতে পেরেছি। কিন্তু আজও ৬০টি কারখানা বন্ধ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ব্যবসা পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যাবে। সেই রকম একটা প্রক্রিয়া চলছে, যাতে বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাত ধ্বংস হয়ে যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ স্থানীয় শিল্পকে প্রণোদনা দেয় উল্লে­খ করে রাসেল বলেন, প্রণোদনা শব্দটা শুনতে খারাপ লাগে, মনে হয় খয়রাত চাচ্ছি। পৃথিবীর অনেক দেশ বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দেয়। এটা কিন্তু তারা শখ করে দেয় না। টেক্সটাইল খাতে প্রণোদনা দিলে কর্মসংস্থান হয়, বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। আওয়ামী সরকারের আমলে যে পরিমাণ লুটপাট হয়েছে তার ১০ শতাংশ টেক্সটাইল খাতে প্রণোদনা

হিসাবে দিলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। তাই এটাকে খারাপভাবে দেখার কিছু নেই। তিনি আরও বলেন, গ্যাস সংকট মোকাবিলায় সঠিক পরিকল্পনা করা হয়নি। পুরো শিল্প খাত নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। এলএনজির কথা বলে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। সেই গ্যাস পেয়েছি ১৮ মাস পরে। এই ১৮ মাস বাড়তি দাম দিয়ে আসছি। এই টাকাগুলো কোথায় গেল। শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে শওকত আজিজ রাসেল বলেন, আমাদের শ্রমিকরা শান্তিপ্রিয়। মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক অতুলনীয়। এখন বহিরাগত একটি চক্র গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার পাঁয়তারা শুরু করেছে। প্রশাসন সরকার ঠেকানোর জন্য যেই ভ‚মিকা নিয়েছিল, সেই ভূমিকা এখন নেওয়া উচিত দেশ গড়ার জন্য। তাহলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। প্রশাসন কেন চুপ আছে?

তখন তো প্রশাসন রাস্তায় নেমে গুলি ছুড়েছে, আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে লাঠিপেটা করেছে। সেই ভূমিকা নিয়ে দেশ গড়তে আবার তাদের মাঠে নামা উচিত। এখন ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়ে গেছি। ৫০-৬০টা লোক এসে ভাঙচুর চালিয়ে যাচ্ছে। মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রণোদনা বাতিল করা হয়েছে মন্তব্য করে রাসেল বলেন, উৎপাদন সক্ষমতার ৩০ শতাংশের নিচে কারখানাগুলো চালানো হচ্ছে। অথচ ১২-১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এগুলো একেবারেই মিথ্যা কথা। রাজনৈতিক বাহবা পেতে এসব মিথ্যা পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে। আমরা নেতিবাচক ধারায় আছি। এলডিসি উত্তরণে রপ্তানির পুরো তথ্যটাই মিথ্যা। ৪৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি দেখানো হয়েছে। সরাসরি রপ্তানিকেও রপ্তানি দেখানো হয়েছে, আবার প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকে রপ্তানি হিসাবে সঙ্গে যুক্ত করে

ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছে। একই সংখ্যাকে দ্বিগুণ করে দেখানো হয়েছে। দেশকে নিয়ে এতবড় মিথ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন, সরকারের ছত্রছায়ায় লুটপাট হয়েছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে আগামী দিনে কেউ বাংলাদেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিটিএমএর নবনির্বাচিত সহসভাপতি শামীম ইসলাম বলেন, জিডিপিতে টেক্সটাইল খাতের অবদান ১৩ শতাংশ, টাকার অঙ্কে যা ৬ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। রেমিট্যান্সের পরই এ খাতের অবদান। কিন্তু টেক্সটাইল খাত এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এটি উত্তরণে সরকারের সহায়তা দরকার। এই শিল্পকে বাঁচাতে হলে কিছু নীতি পরিবর্তন করতে হবে। চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা

পরিচালক ও বিটিএমএর নবনির্বাচিত সহসভাপতি আবুল কালাম বলেন, সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে সফট ঋণ হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক শ্রমিকদের এক মাসের বেতন দিতে সম্মত হয়েছে। ৯০ শতাংশ কারখানা মালিকই সেই ঋণ পাননি। কিন্তু শ্রমিকদের মধ্যে এই তথ্য পৌঁছে গেছে যে, সরকার এই টাকা তাদের দিয়েছে অনুদান হিসাবে। এটাও শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে প্রপাগান্ডা হিসাবে কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ দেওয়া হলে এ খাত শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র বিভিন্নভাবে সওয়ার হয়েছে। গত ২ বছর বিপুল লস দিয়ে যাচ্ছি। ঋণের কিস্তি দিতে না পারলে খেলাপি বানানো হচ্ছে। এ খাতকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের সুতা সড়ক পথের পরিবর্তে শুধু সমুদ্রপথে আনার বিধান করতে হবে। বিটিএমএ পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ভারতে টেক্সটাইল শিল্পের প্রধান কাঁচামাল তুলা আছে, মেশিন আছে, অ্যাকসেসরিজ আছে ও টেকনোলজি আছে। আমাদের কিছু নেই, পুরোটাই পরনির্ভরশীল। কারখানার একটি ঝুড়িও আমদানি করতে হয়। গ্যাস, জনবল আর উদ্যোক্তাদের সাহস- এ তিনের ওপর ভিত্তি করে দেশে টেক্সটাইল শিল্প গড়ে উঠেছিল। গ্যাসের দাম ৪ গুণ বাড়ানো হয়েছে। শ্রমিকদের বেতন বেড়েছে। তার ওপর ব্যাংকিং জটিলতা তো আছেই। এ অবস্থায় শিল্প কীভাবে টিকে থাকবে। সামনে টিকে থাকা সম্ভব হবে না। খোরশেদ আলম, বৈষম্যের কারণে বাংলাদেশ আজ নতুন বাংলাদেশ। টেক্সটাইল খাতও দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার। রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা টেক্সটাইল খাতে গ্যাস বিল ইউনিট প্রতি ৩১ টাকা, আর পাওয়ার প্ল্যান্টে ১৪ টাকা। তিনি আরও বলেন, মোটা দাগে ৩ কারণে কারখানায় অসন্তোষ। প্রথমত, শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসহ অন্য দাবি-দাওয়া নিয়ে। এ ধরনের কারখানার সংখ্যা ৫ শতাংশের নিচে। দ্বিতীয়ত, ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে। তৃতীয়ত, বিদেশি অপশক্তির ইন্ধন। পরিচালক সালেহুজ্জামান জিকু বলেন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জে গত এক মাস ধরে গ্যাস নেই। ডিজেল, সিএনজি, এলপিজি দিয়ে কারখানা চালাতে হচ্ছে। শ্রমিকরা প্রতিদিন কাজে এসে সারা দিন বসে থাকছেন, রাতে চলে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় মালিকরা শ্রমিকদের বেতন দেবেন কীভাবে? নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ দিলে এবং আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক হলে দিন-রাত খেটে মালিক-শ্রমিকরা কাজ করবেন। পরিচালক রাজিব হায়দার মুন্না বলেন, ভ্রান্ত মিথের কারণে গ্যাসের এই অবস্থা। আমার মিলের সুতা বিক্রি হয় না। সেখানে বিদেশি মুদ্রা খরচ করে সুতা আমদানি করা হচ্ছে। ডলারের কারণে এলএনজি আমদানি করতে পারছি না। নিজেরা গ্যাসকূপ সন্ধান না করে, কয়লা উত্তোলন না করে পুরো জ্বালানি খাতকে আমদানি নির্ভর করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
টানা বৃষ্টিতে তিন জেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি দেশের ক্রান্তিলগ্নে সেনাবাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষের মিছিল পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা: সিপিডি ‘ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ব্যবহার করেনি র‍্যাব’ ডিসি নিয়োগে দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে দুদকে আবেদন জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইরানে হামলার ঘোষণা দিলেন নেতানিয়াহু স্থগিত হবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা? শেখ হাসিনার সাবেক মুখ্য সচিব ৭ দিনের রিমান্ডে রায় দিয়ে ‘বাবার ট্রাস্টে’ টাকা নেন বিচারপতি মধ্যপ্রাচ্যে কত সেনা মোতায়েন রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র? জুয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব, যুবককে কুপিয়ে হত্যা লেবাননে স্থল অভিযানে ত্রিশ কমান্ডারসহ ৪৪০ হিজবুল্লাহ সদস্য নিহত: ইসরায়েল রাশিয়ার ঋণ পরিশোধে নতুন অনিশ্চয়তা সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় জামায়াত সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও এগিয়ে নেবে সরকার কেরানীগঞ্জে হোটেলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নিহত ৩ নতুন ভারতের সঙ্গে পুরোনো বাংলাদেশ অন্যায় করে পার পাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে শেরপুর, পানিতে ডুবে দু’দিনে ৫ মৃত্যু