অনিশ্চয়তায় ২০ হাজার ওমরাহযাত্রী
আসন্ন ডিসেম্বর মাসে প্রায় ২০ হাজার ওমরাহযাত্রী সউদী গমনে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই হঠাৎ প্রত্যেক ওমরাহ টিকিটের দাম ১৭ হাজার টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওমরাহ যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। দেশি বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিটের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে যখন তখন ওমরাহ টিকিটের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো ওমরাহ টিকিটের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করে কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা হাতিয়ে নিচ্ছে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার। আটাবের সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ একাধিকবার দেশি বিদেশি এয়ারলাইন্সের হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের টিকিটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণের লক্ষ্যে বিমান পরিবহন
ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া পায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ ওমরাহ যাত্রীর টিকিট প্রতি ১৭ হাজার টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওমরাহ এজেন্সি ও যাত্রীদের মাঝে অহরহ বাকবিত-া হচ্ছে। সাউদিয়া এয়ারলাইন্স গত ১০ নভেম্বর থেকে ওমরাহ যাত্রীর টিকিটে ১১৫ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি করেছে। এতে ৭৫ হাজার টাকার ওমরাহ টিকিট এখন ৯২ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সালালম এয়ার অ্যারাবিয়া জাজিরা এয়ারলাইন্স, বিমানসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্সও ওমরাহ টিকিটের দাম বাড়িয়েছে। ওমরাহ যাত্রীরা চড়া দামে টিকিট কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সহনীয় পর্যায়ের ওমরাহ টিকিট পাচ্ছে না। একাধিক ভুক্তভোগী ওমরাহযাত্রী
এ তথ্য জানিয়েছেন। ওমরাহ টিকিটের ওপর আবারো শকুনের থাবা পড়েছে। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর নাম ছাড়া বুকিং দেখিয়ে ওমরাহ টিকিট বিক্রির (সেলস পলিসি) সুবাদে টিকিট সি-িকেটগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে ওমরাহ টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। শতবার চেষ্টা করেও বিমানের সিস্টেমে কোনো ওমরাহ যাত্রীর টিকিট মিলছে না। বিমানের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিন্ডিকট চক্র ওমরাহ টিকিট ব্লক করে রাখার গুরুতর অভিযোগ উঠছে। ওমরাহ টিকিটের জন্য হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। এক মাস ধরণা দিয়ে বিমানের মতিঝিল অফিস থেকে একটি ওমরাহ টিকিট কিনতে সক্ষম হননি একাধিক হজ এজেন্সির মালিক। আবার বেশি টাকা দিলে চিহ্নিত এজেন্সি থেকে বিমানের টিকিট মিলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আটাব সভাপতি আবদুস সালাম
আরেফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিমানের সিস্টেমে গিয়ে কোনো ওমরাহ টিকিট মিলছে না। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের প্রায় ১৮ হাজার সিট, এয়ার অ্যারাবিয়ার ১৪ হাজার সিট, কাতার এয়ার, গালফ এয়ার, জাজিরা এয়ারলাইন্সও ৪ হাজার ৫ হাজার ও ৬ হাজার সিট কতিপয় টিকিট কালোবাজারীর কাছে নাম পাসপোর্ট নাম্বার ছাড়া ব্লক করে রেখে ওমরাহ টিকিটের দাম বাড়াচ্ছে। আটাব সভাপতি বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো ওমরাহযাত্রীদের রক্ত চুষে খাওয়ার জন্য ওঁৎ পেতে বসে আছে। এসব দেখার কেউ নেই। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, বিমান ন্যাশনাল ক্যারিয়ার। প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে বিমানের
টিকিট ক্রয় করে হজ ও ওমরাহ যাওয়ার। কিন্তু অবস্থার দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এই সংস্থাটি সিন্ডিকেটের দখলে চলে গেছে। তিনি বলেন, ওমরাহ টিকিটের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ১৭ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দিয়ে টিকিট কিনতে হচ্ছে। এতে ওমরাহযাত্রী এবং ওমরাহ এজেন্সির মালিকদের মাঝে প্রতিনিয়ত বাকবিতা- হচ্ছে। ওমরাহ টিকিটের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় খারাপ আকার ধারণ করায় অনেক ওমরাহযাত্রী ওয়ানওয়ে টিকিট কিনে সউদী চলে যাচ্ছে। এসব যাত্রীদের সউদী থেকে ফিরতি টিকিট কিনে দেশে ফিরতে হবে। বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজীকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ আল নাসের ওমরাহ যাত্রীদের বিমান ভাড়া হঠাৎ বৃদ্ধির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পূর্বের ভাড়া বহাল
রাখার জোর দাবি জানান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ড.আব্দুল্লাহ আল নাসের বলেন, ওমরাহ যাত্রীরা দেশের স্বার্থে বিমানেই চলাফেরা করে থাকেন। কিন্তু বিমান বাংলাদেশ যদি অন্য বিমানের মতো ভাড়া বাড়িয়ে দেয়, সি-িকেটের খপ্পরে পড়ে তাহলে কীভাবে হবে? এটা খুবই দুঃখজনক। আশা রাখি অন্তত ওমরাহ যাত্রীদের যেন কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয়, আর্থিক ক্ষতি না হয় সে বিষয়টি নজর দিবেন তারা। তিনি আসন্ন ডিসেম্বর মাসে এবং আগামী রমজানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে ওমরাহ যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালু করার জন্য সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ড.আব্দুল্লাহ আল নাসের গতকাল জানান, ওমরাহ টিকিট নিয়ে তুঘলকি কারবার শুরু হয়েছে।
অতিরিক্ত টাকা দিয়েও ওমরাহ টিকিট মিলছে না। তিনি বলেন, ওমরাহ টিকিট সঙ্কটের দরুন যাত্রীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হলেও হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের বিমান ভাড়া নিয়ে এখনো বৈষম্য চলছে। এসব বিষয় দেখার কী কেউ নেই। তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানকে দ্রুত ওমরাহ ও হজ টিকিটের ভাড়া নির্ধারণে কার্যকরী নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। হজ ও ওমরাহ টিকিটের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সি-িকেট চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার জন্যও তিনি জোর দাবি জানান। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর নাম ছাড়া বুকিং দিয়ে ওমরাহ টিকিট বিক্রির সেলস পলিসির দরুন সি-িকেট চক্র ওমরাহ টিকিটের দাম দফায় দফায় বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। আটাব কর্তৃপক্ষ ওমরাহ টিকিট নিয়ে সি-িকেটের অপতৎপরতা বন্ধ এবং টিকিটের দাম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর নাম ছাড়া বুকিং দিয়ে টিকিট বিক্রির সেলস পলিসি বন্ধ রাখার জন্য কার্যকরি উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। চট্টগ্রাম হাব জোনের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম গতকাল বৃহস্পতিবার ওমরাহ টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ওমরাহ যাত্রীদের টিকিটেও অশুভ নজর পড়েছে এয়ারলাইন্সগুলোর। আসন্ন ডিসেম্বর মাসে স্কুল কলেজ মাদরাসা বন্ধ থাকায় বাংলাদেশ থেকে চাকরিজীবী পরিবারগুলো ওই সময়ে ওমরাহ পালন করতে সউদীতে যান বেশি সংখ্যক যাত্রী। এ সুবাদে এয়ারলাইন্সগুলো সি-িকেট করে গত ১০ নভেম্বর থেকে প্রতি ওমরাহ টিকিটের মূল্য হঠাৎ ১৭ হাজার টাকা বৃদ্ধি করেছে। এতে সাধারণ ওমরাহ যাত্রীরা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ওমরাহ টিকিট কিনতে গলদঘর্ম। অনেক ওমরাহযাত্রী ডিসেম্বর মাসে ছুটি নিয়ে সউদী আরবে যাওয়ার নিয়ত করে বিপাকে পড়েছেন। হজ এজেন্সির মালিক শাহ আলম বলেন, ওমরাহ টিকিট সি-িকেট চক্র আগামী ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসের সাউদিয়া, বিমানের প্রায় সব টিকিট কিনে ব্লক করে রেখেছে। সি-িকেট চক্র বিমানের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে আঁতাত করে অধিকাংশ ওমরাহ টিকিট কিনে ব্লক করে রেখেছে। বিমানের ওমরাহ টিকিট কিনতে গেলে টিকিট নেই বলা হচ্ছে। আবার অনেক সময়ে বিমানের সিট খালি নিয়েই জেদ্দা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ওমরাহ টিকিটের দাম সীমাহীন বাড়ছে এবং টিকিট বিক্রিতে কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণ নেই। তিনি বলেন, ৭৫ হাজার টাকার ওমরাহ টিকিট এখন ৯২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চড়া দামে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ওমরাহ টিকিট কিনতে যাত্রীরা হিমশিম খাচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার ‘অসাধু কর্মকর্তাদের’ যোগসাজশে সউদী রুটের ওমরাহর টিকিট অগ্রিম বুকিংয়ের নামে ব্লক করে ফেলা হয়েছে। তবে চাহিদামাফিক অতিরিক্ত টাকা দিলে ঠিকই মিলছে বিমান টিকিট। তিনি বলেন, ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্ত ফ্লাইট সংখ্যা কম। তিনি ওমরাহ যাত্রীদের সুবিধার্থে সকল এয়ারলাইন্সগুলোকে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালুর জোর দাবি জানিয়েছেন। এদিকে, গত ১০ সেপ্টেম্বর ওমরাহ যাত্রীদের জন্য টিকিটের মূল্য হ্রাস ও সকল বুকিং ক্লাস উন্মুক্ত করেছিল বিমান কর্তৃপক্ষ। বিমানের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওমরাহ যাত্রীদের জন্য বাংলাদেশ থেকে জেদ্দা ও মদিনা রুটে টিকেটের মূল্য হ্রাস করেছে। কিন্তু ডিসেম্বর মাসকে সামনে রেখে বর্তমানে বিমানের উল্লেখিত সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না বলে একাধিক ওমরাহ এজেন্সির মালিক জানিয়েছেন।
ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া পায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ ওমরাহ যাত্রীর টিকিট প্রতি ১৭ হাজার টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওমরাহ এজেন্সি ও যাত্রীদের মাঝে অহরহ বাকবিত-া হচ্ছে। সাউদিয়া এয়ারলাইন্স গত ১০ নভেম্বর থেকে ওমরাহ যাত্রীর টিকিটে ১১৫ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি করেছে। এতে ৭৫ হাজার টাকার ওমরাহ টিকিট এখন ৯২ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সালালম এয়ার অ্যারাবিয়া জাজিরা এয়ারলাইন্স, বিমানসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্সও ওমরাহ টিকিটের দাম বাড়িয়েছে। ওমরাহ যাত্রীরা চড়া দামে টিকিট কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সহনীয় পর্যায়ের ওমরাহ টিকিট পাচ্ছে না। একাধিক ভুক্তভোগী ওমরাহযাত্রী
এ তথ্য জানিয়েছেন। ওমরাহ টিকিটের ওপর আবারো শকুনের থাবা পড়েছে। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর নাম ছাড়া বুকিং দেখিয়ে ওমরাহ টিকিট বিক্রির (সেলস পলিসি) সুবাদে টিকিট সি-িকেটগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে ওমরাহ টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। শতবার চেষ্টা করেও বিমানের সিস্টেমে কোনো ওমরাহ যাত্রীর টিকিট মিলছে না। বিমানের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিন্ডিকট চক্র ওমরাহ টিকিট ব্লক করে রাখার গুরুতর অভিযোগ উঠছে। ওমরাহ টিকিটের জন্য হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। এক মাস ধরণা দিয়ে বিমানের মতিঝিল অফিস থেকে একটি ওমরাহ টিকিট কিনতে সক্ষম হননি একাধিক হজ এজেন্সির মালিক। আবার বেশি টাকা দিলে চিহ্নিত এজেন্সি থেকে বিমানের টিকিট মিলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আটাব সভাপতি আবদুস সালাম
আরেফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিমানের সিস্টেমে গিয়ে কোনো ওমরাহ টিকিট মিলছে না। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের প্রায় ১৮ হাজার সিট, এয়ার অ্যারাবিয়ার ১৪ হাজার সিট, কাতার এয়ার, গালফ এয়ার, জাজিরা এয়ারলাইন্সও ৪ হাজার ৫ হাজার ও ৬ হাজার সিট কতিপয় টিকিট কালোবাজারীর কাছে নাম পাসপোর্ট নাম্বার ছাড়া ব্লক করে রেখে ওমরাহ টিকিটের দাম বাড়াচ্ছে। আটাব সভাপতি বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো ওমরাহযাত্রীদের রক্ত চুষে খাওয়ার জন্য ওঁৎ পেতে বসে আছে। এসব দেখার কেউ নেই। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, বিমান ন্যাশনাল ক্যারিয়ার। প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে বিমানের
টিকিট ক্রয় করে হজ ও ওমরাহ যাওয়ার। কিন্তু অবস্থার দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এই সংস্থাটি সিন্ডিকেটের দখলে চলে গেছে। তিনি বলেন, ওমরাহ টিকিটের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ১৭ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দিয়ে টিকিট কিনতে হচ্ছে। এতে ওমরাহযাত্রী এবং ওমরাহ এজেন্সির মালিকদের মাঝে প্রতিনিয়ত বাকবিতা- হচ্ছে। ওমরাহ টিকিটের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় খারাপ আকার ধারণ করায় অনেক ওমরাহযাত্রী ওয়ানওয়ে টিকিট কিনে সউদী চলে যাচ্ছে। এসব যাত্রীদের সউদী থেকে ফিরতি টিকিট কিনে দেশে ফিরতে হবে। বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজীকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ আল নাসের ওমরাহ যাত্রীদের বিমান ভাড়া হঠাৎ বৃদ্ধির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পূর্বের ভাড়া বহাল
রাখার জোর দাবি জানান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ড.আব্দুল্লাহ আল নাসের বলেন, ওমরাহ যাত্রীরা দেশের স্বার্থে বিমানেই চলাফেরা করে থাকেন। কিন্তু বিমান বাংলাদেশ যদি অন্য বিমানের মতো ভাড়া বাড়িয়ে দেয়, সি-িকেটের খপ্পরে পড়ে তাহলে কীভাবে হবে? এটা খুবই দুঃখজনক। আশা রাখি অন্তত ওমরাহ যাত্রীদের যেন কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয়, আর্থিক ক্ষতি না হয় সে বিষয়টি নজর দিবেন তারা। তিনি আসন্ন ডিসেম্বর মাসে এবং আগামী রমজানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে ওমরাহ যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালু করার জন্য সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ড.আব্দুল্লাহ আল নাসের গতকাল জানান, ওমরাহ টিকিট নিয়ে তুঘলকি কারবার শুরু হয়েছে।
অতিরিক্ত টাকা দিয়েও ওমরাহ টিকিট মিলছে না। তিনি বলেন, ওমরাহ টিকিট সঙ্কটের দরুন যাত্রীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হলেও হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের বিমান ভাড়া নিয়ে এখনো বৈষম্য চলছে। এসব বিষয় দেখার কী কেউ নেই। তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানকে দ্রুত ওমরাহ ও হজ টিকিটের ভাড়া নির্ধারণে কার্যকরী নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। হজ ও ওমরাহ টিকিটের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সি-িকেট চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার জন্যও তিনি জোর দাবি জানান। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর নাম ছাড়া বুকিং দিয়ে ওমরাহ টিকিট বিক্রির সেলস পলিসির দরুন সি-িকেট চক্র ওমরাহ টিকিটের দাম দফায় দফায় বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। আটাব কর্তৃপক্ষ ওমরাহ টিকিট নিয়ে সি-িকেটের অপতৎপরতা বন্ধ এবং টিকিটের দাম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর নাম ছাড়া বুকিং দিয়ে টিকিট বিক্রির সেলস পলিসি বন্ধ রাখার জন্য কার্যকরি উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। চট্টগ্রাম হাব জোনের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম গতকাল বৃহস্পতিবার ওমরাহ টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ওমরাহ যাত্রীদের টিকিটেও অশুভ নজর পড়েছে এয়ারলাইন্সগুলোর। আসন্ন ডিসেম্বর মাসে স্কুল কলেজ মাদরাসা বন্ধ থাকায় বাংলাদেশ থেকে চাকরিজীবী পরিবারগুলো ওই সময়ে ওমরাহ পালন করতে সউদীতে যান বেশি সংখ্যক যাত্রী। এ সুবাদে এয়ারলাইন্সগুলো সি-িকেট করে গত ১০ নভেম্বর থেকে প্রতি ওমরাহ টিকিটের মূল্য হঠাৎ ১৭ হাজার টাকা বৃদ্ধি করেছে। এতে সাধারণ ওমরাহ যাত্রীরা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ওমরাহ টিকিট কিনতে গলদঘর্ম। অনেক ওমরাহযাত্রী ডিসেম্বর মাসে ছুটি নিয়ে সউদী আরবে যাওয়ার নিয়ত করে বিপাকে পড়েছেন। হজ এজেন্সির মালিক শাহ আলম বলেন, ওমরাহ টিকিট সি-িকেট চক্র আগামী ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসের সাউদিয়া, বিমানের প্রায় সব টিকিট কিনে ব্লক করে রেখেছে। সি-িকেট চক্র বিমানের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে আঁতাত করে অধিকাংশ ওমরাহ টিকিট কিনে ব্লক করে রেখেছে। বিমানের ওমরাহ টিকিট কিনতে গেলে টিকিট নেই বলা হচ্ছে। আবার অনেক সময়ে বিমানের সিট খালি নিয়েই জেদ্দা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ওমরাহ টিকিটের দাম সীমাহীন বাড়ছে এবং টিকিট বিক্রিতে কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণ নেই। তিনি বলেন, ৭৫ হাজার টাকার ওমরাহ টিকিট এখন ৯২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চড়া দামে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ওমরাহ টিকিট কিনতে যাত্রীরা হিমশিম খাচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার ‘অসাধু কর্মকর্তাদের’ যোগসাজশে সউদী রুটের ওমরাহর টিকিট অগ্রিম বুকিংয়ের নামে ব্লক করে ফেলা হয়েছে। তবে চাহিদামাফিক অতিরিক্ত টাকা দিলে ঠিকই মিলছে বিমান টিকিট। তিনি বলেন, ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্ত ফ্লাইট সংখ্যা কম। তিনি ওমরাহ যাত্রীদের সুবিধার্থে সকল এয়ারলাইন্সগুলোকে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালুর জোর দাবি জানিয়েছেন। এদিকে, গত ১০ সেপ্টেম্বর ওমরাহ যাত্রীদের জন্য টিকিটের মূল্য হ্রাস ও সকল বুকিং ক্লাস উন্মুক্ত করেছিল বিমান কর্তৃপক্ষ। বিমানের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওমরাহ যাত্রীদের জন্য বাংলাদেশ থেকে জেদ্দা ও মদিনা রুটে টিকেটের মূল্য হ্রাস করেছে। কিন্তু ডিসেম্বর মাসকে সামনে রেখে বর্তমানে বিমানের উল্লেখিত সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না বলে একাধিক ওমরাহ এজেন্সির মালিক জানিয়েছেন।