এক গুলিতে শেষ মিরাজের সব স্বপ্ন – ইউ এস বাংলা নিউজ




এক গুলিতে শেষ মিরাজের সব স্বপ্ন

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ | ৯:৩০ 57 ভিউ
ইচ্ছা ছিল রোজগার করে বাবাকে ভালো ডাক্তার দেখানো। ছোট ভাইদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা। তাই সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট থেকে রাজধানীতে ছুটে এসেছিলেন মিরাজ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে রাস্তায় নামেন মিরাজও। এরপর এক গুলিতে শেষ হয়ে যায় তার সব স্বপ্ন! একুশের তরুণ মিরাজের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামে। ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনের মাছের আড়ত এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। মিছিলে তার সঙ্গে ছিলেন খালাতো ভাই কারখানা শ্রমিক মাজেদুল ইসলামও (২৮)। পুলিশ অতর্কিতভাবে মিছিলে গুলি চালায়। আর সেই গুলিতেই মিরাজ ও তার খালাতো ভাই মাজেদুল গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

সেখানে সুচিকিৎসা ও টাকা-পয়সার অভাব দেখা দিলে তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে মিরাজের খালাতো ভাই মাজেদুল ইসলাম চিকিৎসা নিয়ে অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে অস্ত্রোপচার করে মিরাজের শরীর থেকে গুলি বের করা হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে আর বাঁচানো যায়নি। ৮ আগস্ট রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্বপ্নবাজ এ তরুণ। আব্দুস সালাম ও মহসেনা বেগমের বড় ছেলে মিরাজ। মেজবাউল ইসলাম (১৭) ও সিরাজুল ইসলাম (১৪) নামে তার দুজন আরও ছোট ভাই রয়েছে। মেজবাউল নবম শ্রেণিতে ও সিরাজুল অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। মিরাজের বাবা অসুস্থ। মিরাজ মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে এসএসসি পাস করে

পরিবার নিয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য ঢাকায় আসেন। যাত্রাবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত মিরাজের পরিবার। পরে মিরাজ ঢাকার দনিয়া মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হন। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে পড়াশোনার পাশাপাশি ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার মাতুয়াইল রশিদবাগে স্থানীয় একটি মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশের দোকানে তিনি কাজ নেন। অসুস্থ বাবার চিকিৎসা আর ছোট দুই ভাইয়ের লেখাপড়াসহ পুরো সংসার চলত মিরাজের আয়ে। বাবার চিকিৎসার জন্য ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা ঋণও করেছে মিরাজ ও তার বাবা। সংসারের হাল ধরতে লেখাপড়ার পাশাপাশি দোকানে কাজ করতেন মিরাজ। মিরাজের বাবা আব্দুস সালাম বলেন, ‘ছেলের মৃত্যুর পর আমাদের একেকটা দিন যেন একেকটা বছর।’ তিনি আরও বলেন, আমি সিএনজি

চালাতাম। পরে ঘন ঘন অসুস্থ হওয়ার কারণে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। ডাক্তার প্রাথমিকভাবে ক্যান্সার হয়েছে বলে ধারণা করছেন। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। এজন্য অনেক টাকা লাগবে। অথচ আমাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেটি আর নেই। তার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে আমার পুরো পরিবারের উপার্জনের চাকা। আর্থিকভাবে সাহায্য পেয়েছেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে মিরাজের বাবা বলেন, হ্যাঁ, আর্থিকভাবে সাহায্য পেয়েছি। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আমার পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। জামায়াতে ইসলামের পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকা ও (নেভি) হেডকোয়ার্টার ঢাকা থেকে আরও ১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, যারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত আমি তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় দেখতে চাই। বর্তমান সরকারের প্রতি এ ব্যাপারে

আমার অনুরোধ থাকল। মিরাজের মা মোহসেনা বেগম বলেন, আমার কলিজার টুকরা আর ফিরে আসবে না, এটা ভেবেই দুচোখের পাতা এক হয় না। মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জানান, মিরাজ প্রতিভাবান ছিল। আমরা এ হত্যার বিচার চাই। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতার সব রকম ব্যবস্থা করব। খবর বাসসের।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার ওপর উগ্রবাদী জামায়াত-শিবিরের মব হামলা সকালে সেনাবাহিনীর দরবার: নির্বাচন ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, ট্রাম্পের টুইট আওয়ামী লীগ থাকলে, বাংলাদেশ থাকবে কেমন চলছে বর্তমান বাংলাদেশে সাংবাদিকতা? সেই থেকে ‘কালো’ চঞ্চল প্রবাসীদের মুক্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে মিছিল, সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা বিবিসিকে ইউনূস: শেখ হাসিনার ফিরে আসার ঘোষণা উত্তেজনা ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শেখ হাসিনার বাণী: গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি মুখ খুললেন নিলা ইসরাফিল, ১৬ জনের স্ক্রিনশট ‘ফাঁস’ হামলার আগেই ইরানকে সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্র! ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা কয়েক মাসের ‘গোপন প্রস্তুতির’ ফল বাংলাদেশে ‘রিপাবলিক বাংলা’ বন্ধে হাইকোর্টে রিট আইসিইউ-তে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে রোগী ধর্ষণ! স্যাটেলাইটের চোখে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে ‘রহস্যজনক’ তৎপরতা সংবিধানের ‘মুজিববাদী’ মূলনীতি বাতিল চায় এনসিপি ট্রাকভরে কাগজপত্র নিয়ে ইসিতে এনসিপি ‘আমরা শুধু মজা করতে চেয়েছিলাম’ পুতিনের সঙ্গে বৈঠক: রাশিয়া যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাবেক সিইসি নুরুল হুদা গ্রেপ্তার