পেঁয়াজের ঝাঁজ ১৬০ টাকায়: কৃত্রিম সংকটে দিশেহারা ক্রেতা – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
     ৮:১৬ অপরাহ্ণ

পেঁয়াজের ঝাঁজ ১৬০ টাকায়: কৃত্রিম সংকটে দিশেহারা ক্রেতা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ৮:১৬ 24 ভিউ
দেশে এখন পেঁয়াজের মৌসুম চলছে। মাঠ থেকে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ। কিছুদিন পরই নতুন পেঁয়াজে ভরপুর থাকবে বাজার। পাশাপাশি এখনো দেশে এক লাখ টনের বেশি পুরোনো পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। এরপরও নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। সরবরাহ কমিয়ে সরকারকে আমদানির অনুমতি দিতে চাপ প্রয়োগ করছে। তবে তাদের নজর আমদানিতে নয়। বাস্তবতা হচ্ছে ভোক্তার পকেট কেটে বাড়তি মুনাফা করা। আর অসাধুরা সেই ছক তৈরি করে অক্টোবর থেকে। সর্বশেষ দুই দিনে কেজিপ্রতি ৩০-৫০ টাকা বাড়িয়ে খুচরা বাজারে পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে বাজারে পণ্যটি কিনতে এসে বিড়ম্বনায় পড়ছেন ক্রেতা। আর এই খেলার নীরব দর্শকের ভূমিকায়

প্রশাসন। বাজারসংশ্লিষ্টের মতে, প্রতিবছর এই সময় মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এবারও তারা দাম বাড়াচ্ছে। গত মৌসুমে কৃষকরা ন্যায্য দাম না পেয়ে সব পেঁয়াজ বিক্রি করে ফেলেছেন। ফলে এখন তাদের কাছে পেঁয়াজ নেই। তা অসাধু মজুতদারদের দখলে। এই সুযোগে মজুতদাররা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজ আটকে রেখে দাম বাড়াচ্ছে। একই সঙ্গে দাম বাড়ার অজুহাত তুলে ভারত থেকে আমদানির জন্য সরকারকে চাপ দিচ্ছে। তারা জানে সরকার মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেবে না। আর এই অজুহাত কাজে লাগিয়ে পেঁয়াজের দাম হুহু করে বাড়ানো হচ্ছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। এদিন নয়াবাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে

১৪০ টাকা। রামপুরা কাঁচাবাজারে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা ও জিনজিরা কাঁচাবাজারে এই পেঁয়াজ ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে দুই দিন আগে প্রতিকেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছিল। আর অক্টোবরের শেষদিকে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের খুচরা দাম ছিল ৭০ টাকা। সেপ্টেম্বরে কেজিপ্রতি ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. ইমদাদুল হক বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। বাজারে পেঁয়াজ থাকার পরও বিক্রেতারা এক মাস ধরে বাড়তি দামে বিক্রি করছে। তবে বাজারে এসে দেখি এক লাফে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা দেখার কেউ নেই। একই দিন রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি আড়ত শ্যামবাজার ঘুরে ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিপাল্লা

(৫ কেজি) পুরোনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। যা কেজিপ্রতি দাঁড়ায় ১২০ টাকা। চার দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকা। আর এই পেঁয়াজ শ্যামবাজারে এক মাস আগেও ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শ্যামবাজারের আড়তদার হেদায়াত উল্লাহ বলেন, দেশে পেঁয়াজের সংকট রয়েছে। কারণ পুরোনো পেঁয়াজে গাছ হয়ে গেছে। নতুন পেঁয়াজ কৃষক ধরে রাখছে। যার কারণে সরবরাহ কম, দাম বেশি। তাই সরকারকে আমদানির অনুমতি দিতে হবে। আমদানি হলে দাম কমে আসবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং ও বাস্তবায়ন) ড. জামাল উদ্দীন বলেন, প্রকৃতপক্ষে বাজারে সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। আমদানির অনুমতি দিতে সরকারকে বাধ্য করতেই সিন্ডিকেটচক্র কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে। অথচ

এখনো এক লাখ টনেরও বেশি পুরোনো পেঁয়াজ আছে। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে আড়তদার, কমিশন এজেন্ট ও দাদন ব্যবসায়ীদের কারসাজি আছে। তারা পেঁয়াজ কিনে মজুত করছে, বাজারে ছাড়ছে না। দেশে ভালো উৎপাদন হলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আমদানির পাঁয়তারা করছেন। মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি হলে কৃষক ঠকবেন। আর এখন বাজারে নজরদারি না বাড়ালে ভোক্তার পকেট কাটা যাবে। এদিকে কারসাজির মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। এরপরও সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির সুপারিশ করেছে বিটিটিসি। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় কমিশন এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সরকারের

বিবেচনার জন্য বাণিজ্য সচিব ও কৃষি সচিবকে পাঠানো হয়েছে। কমিশন জানায়, কিছু মধ্যস্বত্বভোগী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থির করার পাঁয়তারা করছে। এ সময় প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৯০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। অথচ বাজারে তা ১১৫ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। বিপরীতে পার্শ্ববর্তী দেশে একই পেঁয়াজের দাম বর্তমানে ৩০ টাকার মধ্যে। এদিকে গত অর্থবছরে দেশে ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। সংরক্ষণ সমস্যাসহ নানা কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গত অর্থবছরে ৩৩ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ বাজারে এসেছে। বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানির প্রধান উৎস দেশ ভারত। মোট আমদানির ৯৯ শতাংশই করা হয় ভারত থেকে। এছাড়া তুরস্ক, পাকিস্তান, মিয়ানমার, চীন ও মিসর

থেকেও পেঁয়াজ আমদানি হয়। গত অর্থবছরে মোট ৪ লাখ ৮৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজের ওপর মোট ১০ শতাংশ শুল্ককর প্রযোজ্য আছে। গত চার বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে। সে হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ ৫৬ হাজার টন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে উৎপাদন হয় ৩৯ লাখ ১১ হাজার টন। আর ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে উৎপাদন হয় ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ত্বকের কোলাজেন বাড়াবে ৬ খাবার বরিশালে তোপের মুখে ব্যারিস্টার ফুয়াদ যুক্তরাষ্ট্রের ফেলে যাওয়া অস্ত্রই তালেবানের নিরাপত্তার মূল ভিত্তি খেলাপি ঋণ আদায়ে তিন মাসে ১৫ হাজার মামলা আবারও বেড়েছে মূল্যস্ফীতি মাদুরো যেভাবে ব্যর্থ করছেন ভবিষ্যদ্বাণী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের শাহজালালে যাত্রীর লাগেজে মিলল ৯৩ হাজার ইউরো শিক্ষার্থীদের শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ ক্যারিয়ারে প্রথমবার ‘রিটায়ার্ড আউট’ সাকিব মৌলভীবাজার থেকে পিছু হটেছিল পাকিস্তানিরা প্রীতি সম্মিলনে এলেন তাঁরা এনসিপি নেতা আশরাফ মাহদীর বিরুদ্ধে বলাৎকারের অভিযোগ সেই জহুরুল হক হলের প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে পাকিস্তানের পতাকা। বছর শেষে জোড়া ধামাকা নিয়ে পর্দায় ফিরছেন তানজিকা মধ্যরাতে শিক্ষা ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তসহ আরও যা আছে নতুন এমপিও নীতিমালায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ব্যর্থ অন্তর্বর্তী সরকার : টিআইবি ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষককে দুঃসংবাদ দিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এক সপ্তাহে ১১ হাজারের বেশি প্রবাসীকে ফেরত পাঠাল সৌদি