পৌরসভার বর্জ্যে হুমকিতে পায়রা নদী

বরগুনার আমতলী দিয়ে বয়ে গেছে পায়রা বা বুড়িশ্বর নদী। আমতলী পৌর শহরের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এ নদীতে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি দূষিত হচ্ছে নদী। ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রজনন ও উৎপাদন। ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত তিন দশকে পৌরসভার উন্নয়নে শতকোটি টাকা ব্যয় হলেও দায়িত্বহীনতার কারণে বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধের পাশাপাশি বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণের আশ্বাস পৌর কর্তৃপক্ষের।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ২৩ আগস্ট আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। সাত দশমিক ৭৫ বর্গকিলোমিটারের এ পৌরসভায় ৩৩ হাজারের অধিক মানুষের বসবাস। পৌরসভার ভেতর থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৬ টন বর্জ্য
তৈরি হয়। সরেজমিন দেখা গেছে, আমতলীর পায়রা নদীর তীরে বর্জ্যের স্তূপ। পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন নদী তীর ঘেঁষে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ময়লা ফেলছেন। কাক, মুরগি, কুকুর সেগুলো ঘাটাঘাটি করছে। বর্জ্য নদীর স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। খোলা স্থানে এমনভাবে বর্জ্য ফেলায় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। এ নদীর পানি ব্যবহার করায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকাবাসী। একইভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে পায়রা নদী থেকে উৎপন্ন বাসুগী খালেও। পলিথিন, চিপস, বিস্কুটের খোসা ভাসছে খালের পানিতে। হাসপাতালে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, কাচের বোতলসহ নানা ধরনের ক্লিনিক্যাল বর্জ্য দেখা গেছে সেখানে। শুধু পায়রা বা বাসুগী খাল নয়, ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের কৃষি রোডের পূর্ব পাশের ডোবা, সাত ধারা, খোন্তাকাটা, সবুজবাগ, একে স্কুলসহ
বিভিন্ন স্থানে সড়ক ঘেঁষে ময়লার স্তূপ করে রেখেছে পৌর কতৃপক্ষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০১৫ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে ঘোষিত হলেও বর্জ্য অপসারণে নির্ধারিত জায়গার ব্যবস্থাপনা করতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার উন্নয়নে শত কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হলেও ময়লা ফেলানোর নির্ধারিত জায়গা না করার জন্য সাবেক মেয়রকেই দায়ী করছেন বাসিন্দারা। আমতলী পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন লাইলী নামে এক নারীর চায়ের দোকান। তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের এখানে অনেক লোক ঘুরতে আসতো। তাই দোকানটি দিয়েছিলাম। কিছুদিন ধরে পৌরসভার সব ময়লা এই নদীর পাশে এনে ফেলেছে। দুর্গন্ধে এখানে বাস করাই কষ্টকর। আমাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নাই। তাই বাধ্য হয়ে এখানে থাকছি। এ নদীর পানি
আমাদের ব্যবহার করতে হয়। সেটাও এখন দূষিত হয়ে গেছে। পরিবারের সবাই বিভিন্ন রোগে ভুগছি।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন ব্লকে কাজ করেন দিনমজুর মেহেদী হাসান সোহেল। তিনি বলেন, ‘নদীতে ময়লা ফেলানোর ফলে আমাদের খুব ক্ষতি হচ্ছে। নদীর পাশে সরকারি বিভিন্ন প্রজেক্টের ব্লক বানানোর কাজসহ নৌযানের মালামাল এখানে খালাস করা হয়। এখানে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশো দিনমজুর কাজ করে। আমাদের সব শ্রমিকদেরই পেটে সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যায় রয়েছে।’ পায়রা নদী রক্ষায় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমতলীর স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভায় বর্জ্য শোধনাগার না থাকার কারণে সবই নদীতে ফেলানো হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি পায়রা নদীও দূষিত হচ্ছে। নদীতে মাছের আধিক্য কমে গেছে।
উপকূলের লোকজন নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছে না।’ পায়রার দূষণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মী এইচ এম রাসেল বলেন, ‘পৌরসভার বয়স ২৬ বছর। এর মধ্যেও পৌর কর্তৃপক্ষ একটি বর্জ্য শোধনাগার করতে পারেনি। আমতলীতে ঘোরার কোনো জায়গা না থাকায় প্রতিদিন বিকেলে নদীর পাড়ে অনেক মানুষ ঘুরতে আসতো। ময়লার জন্য সেটাও এখন বন্ধ হয়ে গেছে।’ এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রত্যেক পৌরসভায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র থাকতে হয়। এক্ষেত্রে বরগুনা সদর ছাড়া অন্য পৌরসভাগুলোতে নেই। আমরা দ্রুতই সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি ক্রয় বা অধিগ্রহণ করব।’
তৈরি হয়। সরেজমিন দেখা গেছে, আমতলীর পায়রা নদীর তীরে বর্জ্যের স্তূপ। পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন নদী তীর ঘেঁষে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ময়লা ফেলছেন। কাক, মুরগি, কুকুর সেগুলো ঘাটাঘাটি করছে। বর্জ্য নদীর স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। খোলা স্থানে এমনভাবে বর্জ্য ফেলায় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। এ নদীর পানি ব্যবহার করায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকাবাসী। একইভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে পায়রা নদী থেকে উৎপন্ন বাসুগী খালেও। পলিথিন, চিপস, বিস্কুটের খোসা ভাসছে খালের পানিতে। হাসপাতালে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, কাচের বোতলসহ নানা ধরনের ক্লিনিক্যাল বর্জ্য দেখা গেছে সেখানে। শুধু পায়রা বা বাসুগী খাল নয়, ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের কৃষি রোডের পূর্ব পাশের ডোবা, সাত ধারা, খোন্তাকাটা, সবুজবাগ, একে স্কুলসহ
বিভিন্ন স্থানে সড়ক ঘেঁষে ময়লার স্তূপ করে রেখেছে পৌর কতৃপক্ষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০১৫ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে ঘোষিত হলেও বর্জ্য অপসারণে নির্ধারিত জায়গার ব্যবস্থাপনা করতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার উন্নয়নে শত কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হলেও ময়লা ফেলানোর নির্ধারিত জায়গা না করার জন্য সাবেক মেয়রকেই দায়ী করছেন বাসিন্দারা। আমতলী পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন লাইলী নামে এক নারীর চায়ের দোকান। তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের এখানে অনেক লোক ঘুরতে আসতো। তাই দোকানটি দিয়েছিলাম। কিছুদিন ধরে পৌরসভার সব ময়লা এই নদীর পাশে এনে ফেলেছে। দুর্গন্ধে এখানে বাস করাই কষ্টকর। আমাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নাই। তাই বাধ্য হয়ে এখানে থাকছি। এ নদীর পানি
আমাদের ব্যবহার করতে হয়। সেটাও এখন দূষিত হয়ে গেছে। পরিবারের সবাই বিভিন্ন রোগে ভুগছি।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন ব্লকে কাজ করেন দিনমজুর মেহেদী হাসান সোহেল। তিনি বলেন, ‘নদীতে ময়লা ফেলানোর ফলে আমাদের খুব ক্ষতি হচ্ছে। নদীর পাশে সরকারি বিভিন্ন প্রজেক্টের ব্লক বানানোর কাজসহ নৌযানের মালামাল এখানে খালাস করা হয়। এখানে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশো দিনমজুর কাজ করে। আমাদের সব শ্রমিকদেরই পেটে সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যায় রয়েছে।’ পায়রা নদী রক্ষায় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমতলীর স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভায় বর্জ্য শোধনাগার না থাকার কারণে সবই নদীতে ফেলানো হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি পায়রা নদীও দূষিত হচ্ছে। নদীতে মাছের আধিক্য কমে গেছে।
উপকূলের লোকজন নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছে না।’ পায়রার দূষণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মী এইচ এম রাসেল বলেন, ‘পৌরসভার বয়স ২৬ বছর। এর মধ্যেও পৌর কর্তৃপক্ষ একটি বর্জ্য শোধনাগার করতে পারেনি। আমতলীতে ঘোরার কোনো জায়গা না থাকায় প্রতিদিন বিকেলে নদীর পাড়ে অনেক মানুষ ঘুরতে আসতো। ময়লার জন্য সেটাও এখন বন্ধ হয়ে গেছে।’ এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রত্যেক পৌরসভায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র থাকতে হয়। এক্ষেত্রে বরগুনা সদর ছাড়া অন্য পৌরসভাগুলোতে নেই। আমরা দ্রুতই সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি ক্রয় বা অধিগ্রহণ করব।’