কৃত্রিম সংকটে বাজারে মিলছে না সয়াবিন তেল, ক্ষুব্ধ ভোক্তা – ইউ এস বাংলা নিউজ




কৃত্রিম সংকটে বাজারে মিলছে না সয়াবিন তেল, ক্ষুব্ধ ভোক্তা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৫০ 94 ভিউ
বাজারে প্রতি সপ্তাহে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফলে ছুটির দিন শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজার ও পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে তেল না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভোক্তা। অনেকেই সয়াবিনের বিপরীতে সরিষার তেল নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ ছাড়া বিক্রির জন্য তেল না পেয়ে বিক্রেতারাও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। গত দুই মাস ধরে চাহিদার তুলনায় কম পেলেও সপ্তাহ ধরে কোম্পানিগুলোর ৮-১০টি পণ্য নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। তা না হলে তেল দেওয়া হচ্ছে না। এতে এক প্রকার সয়াবিন তেলশূন্য হয়ে পড়ছে খুচরা বাজার। এতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন ভোক্তা। এদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে দুই-এক দোকানে তেল পাওয়া গেলেও সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না। এমনকি বোতলজাত

তেলের গায়ের মূল্য মুছে বিক্রি করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন- লিটারপ্রতি সয়াবিন তেলের মূল্য গিয়ে ঠেকেছে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে শীতের সবজির দামে সন্তুষ্ট ক্রেতা। তবে মাছ-মাংস উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজার ও পাড়া-মহল্লার মুদি দোকান ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে এসেছেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. শামীম হাওলাদার। প্রথম একটি দোকানে এক লিটার সয়াবিন তেল দিতে বললে দোকানি বলেন এক লিটারের তেল নাই, ৫ লিটারের বোতল নিতে হবে। পরে তিনি আরেক দোকানে গিয়ে তেল চাইতেই দোকানি বলেন- কিছুক্ষণ আগেই শেষ। বাজারে আরেক মুদি দোকানে

গেলেও বিক্রেতা একই কথা বলেন। আরেক দোকানে এক লিটারের বোতলজাত তেল মিললেও বিক্রেতা মূল্য জানান ১৯০ টাকা। পরে শামীম হাওলাদার তেলের বোতল হাতে নিয়ে দেখেন বোতলের গায়ের মূল্য মুছে দেওয়া হয়েছে। তিনি বিক্রেতাকে সরকারি মূল্যে ১৭৫ টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিক্রেতা জানান- এই দামে তেল পাওয়া যাবে না। নিতে হলে ১৯০ টাকায় নিতে হবে। বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে রায় সাহেব বাজার ঘুরে দেখা যায়, সেখানে কোনো মুদি দোকানেই এক ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। তাও আবার লিটার ২০০ টাকা। বাজারে আসা ক্রেতাদের বোতলজাত না পেয়ে ২০০ টাকা লিটারে খোলা সয়াবিন তেল কিনতে দেখা গেছে।

তবে এই তেলের সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৫৭ টাকা। দুপুর ১টার দিকে বনশ্রী ৪নং ব্লকের ভুঁইয়াপাড়া রোডের বাসিন্দা হিরনা আহসান প্রথমে তেল কিনতে মহল্লার ঐশী গ্রোসারি এজেন্সিতে যান। সেখানে এক লিটারের বোতল তেল চাইলে দোকানি কোনো সয়াবিন তেল নাই বলে জানান। পরে যান সিকান্দার জেনারেল স্টোরে। সেখানেও তেল নাই। এরপর জিসান এন্টারপ্রাইজে গেলেও তেল না পেয়ে আরেক দোকানে যান। সেখানেও সয়াবিন তেল না পেয়ে বাধ্য হয়ে সরিষার তেল নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এমন অবস্থা রাজধানীর জিনজিরা কাঁচাবাজারেও। সেখানে ৬টি খুচরা দোকান ঘুরে দুইটি দোকানে বোতলজাত তেল পাওয়া গেছে। তবে বোতলের গায়ের মূল্য মুছে লিটারপ্রতি ১৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১৯০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এ ছাড়া

খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৯৫-২০০ টাকা। কাঁচাবাজারের মুদি বিক্রেতা নাজমুল বলেন, রোজার আগে সরকারিভাবে ফের দাম বাড়াতে কোম্পানিগুলো জোটবদ্ধ হয়েছে। কোম্পানিগুলো নানাভাবে বিক্রেতাদেরও চাপে ফেলে তেল বিক্রি করছে। তেল পেতে হলে কোম্পানিগুলো তাদের ৮-১০টি পণ্য নিতে বাধ্য করছে। সেক্ষেত্রে রূপচাঁদা তেল পেতে চাইলে ব্র্যান্ডটির ছোট-বড় সব সাইজের সরিষার তেল নিতে হচ্ছে। তীর সয়াবিনের সঙ্গে লবণ ও সব ধরনের গুঁড়া মসলা নিতে হচ্ছে। পুষ্টি কোম্পানির তেল নিতে চাইলে ওই ব্র্যান্ডের আটা-ময়দা নিতে হচ্ছে। ডিলারদের কাছ থেকে সান ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল পেতে হলে ওই ব্র্যান্ডের লবণ নিতে হচ্ছে। এ ছাড়া চা-পাতা ও অন্যান্য পণ্য নিতে হচ্ছে। এতে অনেক দোকানি তেল

নেওয়া বন্ধ রেখেছেন। ফলে সংকট আরও বাড়ছে। এদিকে খুচরা বাজারে শীতের সবজির দামে সন্তুষ্ট ক্রেতা, তবে মাছ-মাংস উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। প্রতি কেজি শিম বিচিসহ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, আর বিচি ছাড়া ৩০ টাকা। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকা, লম্বা বেগুনের কেজি ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা ও শালগম ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খুচরা বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০-৩০ টাকা, শসা কেজি ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা, লেবুর হালি ৩০ টাকা

এবং লাউ প্রতি পিস ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা, সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩৩০-৩৫০ টাকা। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা। আর বাজারে ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পাঙাস বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা, প্রতি কেজি চাষের কই ৩০০ টাকা, বড় পুঁটি ২৫০ টাকা, টাকি ৩৫০ টাকা ও তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি চিংড়ি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়, শোল মাছ ৬৫০ টাকা, রুই মাছের কেজি ৩৫০ টাকা, কাতল ৩২০-৩৫০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ টাকা, ট্যাংরা প্রতি কেজি ৪০০-৫০০ টাকা ও বোয়াল প্রতি কেজি ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
জন্মদিনে ‘ধুরন্ধর’ রূপে দেখা দিলেন রণবীর গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৮২ ফিলিস্তিনির টেক্সাসে বন্যায় মৃত বেড়ে ৭৮, নিখোঁজ ৪১ আজ ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না ঢাকার যেসব এলাকায় লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা ইলন মাস্ককে রাজনীতির বিষয়ে যে পরামর্শ দিলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী হামাস ক্ষমতায় থাকলে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হবেন না ইসরাইল: নেতানিয়াহু ইসরাইলকে গণহত্যাকারী আখ্যা দিয়ে ব্রিকস সম্মেলন শুরু করলেন লুলা গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত ৫ বিভাগে ভারি বৃষ্টির আভাস রিটার্ন জমা দিলে পাবেন যেসব ছাড় নেতানিয়াহুর ওপর খেপলেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী ৩২ নম্বর ভাঙার ঘটনাকে বীভৎস মববাজি বললেন রুমিন ফারহানা খোঁজ মিলল সেই ডিজিএমের, কোথায় ছিলেন তিনি সুখবর পাচ্ছেন প্রাথমিকের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক সাইফ পাওয়ার টেকের অধ্যায় শেষ, চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে নৌবাহিনী গাজীপুর মহানগর বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার ‘পাগল তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প রকেট চালিত গ্রেনেড দিয়ে লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ইনিংসেই ডাবল সেঞ্চুরি? এমন কীর্তি ক্রিকেট ইতিহাসে হয়েছে মাত্র তিনবার। আর এখন সে তালিকার শীর্ষে উইয়ান মুল্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকার এই অলরাউন্ডার বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়কত্বের অভিষেকে অপরাজিত ২৬৪ রানে দিন শেষ করেছেন—যা এ ধরনের ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে ১৯৬৮ সালে ভারতের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে ২৩৯ রান করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্রাহাম ডাউলিং। সেটাই এতদিন ছিল অধিনায়কত্বে অভিষেক টেস্টে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড। আরও আগে ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দরপল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেছিলেন ২০৩*। ২৭ বছর বয়সী মুল্ডারের এই অধিনায়কত্ব আসলে অনেকটাই আকস্মিক। নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা হ্যামস্ট্রিং চোটে জিম্বাবুয়ে সফরে যাননি। সহ-অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ও অভিজ্ঞ পেসার কাগিসো রাবাদাকেও বিশ্রামে রাখা হয়। এর ফলে প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব পান স্পিনার কেশব মহারাজ। কিন্তু ব্যাটিংয়ের সময় কুঁচকিতে চোট পেয়ে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে যান তিনিও। তখনই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় মুল্ডারের কাঁধে। আর সেই সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহারই করেছেন তিনি। ৩৪টি চার ও ৩টি ছক্কার মাধ্যমে দুর্দান্ত ইনিংস গড়ে প্রথম দিন শেষ করেছেন ২৬৪* রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর দাঁড়ায় ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৬৫। এটাই প্রথম নয়। সিরিজের প্রথম টেস্টেও দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন মুল্ডার, করেছিলেন ১৪৭ রান। ফলে তার ফর্ম বলছে, তিনি শুধু স্ট্যান্ড-ইন অধিনায়ক নন, দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ভবিষ্যতের অন্যতম বড় ভরসাও বটে। রেকর্ড বইয়ে নাম উঠলো যাদের অধিনায়কত্বের অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি: উইয়ান মুল্ডার (দ.আফ্রিকা) – ২৬৪* বনাম জিম্বাবুয়ে, বুলাওয়ে ২০২৫ গ্রাহাম ডাউলিং (নিউজিল্যান্ড) – ২৩৯ বনাম ভারত, ১৯৬৮ শিবনারায়ণ চন্দরপল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) – ২০৩* বনাম দ.আফ্রিকা, ২০০৫ এছাড়া, মুল্ডার হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে অধিনায়কত্বের অভিষেকে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় ক্রিকেটার—১৯৫৫ সালে জ্যাকি ম্যাকগ্লু প্রথম এই কীর্তি করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বিভিন্ন নিয়মিত তারকার অনুপস্থিতিতে হঠাৎ নেতৃত্ব পাওয়া মুল্ডার ব্যাট হাতে যা করে দেখিয়েছেন, তা শুধু রেকর্ড নয়—একটি বার্তাও। হয়তো ভবিষ্যতের নিয়মিত অধিনায়ক হওয়ার দিকেও তাকিয়ে আছেন তিনি। আর এমন অভিষেকের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বিশ্বও নিশ্চয় তার নামটি একটু আলাদা করে মনে রাখবে।