সেবাপ্রত্যাশীর মনোভাব বুঝতে গোপনে তথ্য সংগ্রহ পুলিশের – ইউ এস বাংলা নিউজ




সেবাপ্রত্যাশীর মনোভাব বুঝতে গোপনে তথ্য সংগ্রহ পুলিশের

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৫৭ 131 ভিউ
৫ আগস্টের পর নানা চড়াই-উতরাই আর চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। গঠন করা হয়েছে সংস্কার কমিশন। ভঙ্গুর অবস্থা থেকে চলছে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা। বিধ্বস্ত থানা-ফাঁড়ির পরিবেশ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে সদস্যদের মনোভাব বুঝতে থানায় সেবাপ্রত্যাশী নাগরিকদের কাছে ‘গোপন’ মতামত নিচ্ছে এ বাহিনী। বিশেষ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যারা থানায় যাচ্ছেন, তারা কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন তা যাচাই করছে পুলিশ সদরদপ্তর। জিডির বাদীর কাছ থেকে সদরদপ্তর থেকে যাচ্ছে ফোন। কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেলে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তা অবহিত করা হচ্ছে। এর পর নেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। পুলিশ সদরদপ্তরের এক কর্মকর্তা পুরো এ বিষয়টির তদারক করছেন। তবে আলোচিত

বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না হলে পুলিশ জিডির বিষয়ে খুব একটা মনোযোগী হয় না– এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। চুরি-ছিনতাইয়ের পর তা ‘হারিয়ে গেছে’ বলে জিডি করা হয়। কোনো কিছু হারিয়ে যাওয়ার মতো বিষয়ের জিডি বছরের পর বছর ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে থাকে। এমন বাস্তবতায় নতুনভাবে জিডির বাদীর কাছে দেশব্যাপী পুলিশ যে মতামত নিচ্ছে এটাকে অনেকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। সম্প্রতি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার থানায় জিডি করছেন এমন ১০ জন বাদীর সঙ্গে কথা হয় । এতে বেরিয়ে আসে তাদের অভিজ্ঞতা। তারা বলছেন, জিডি করতে কোনো টাকা খরচ হয়নি। তবে জিডির পর তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জানা নেই কারও

কারও। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর রয়েছে মো. রায়হানের। গত ৭ নভেম্বর শাহবাগ থানায় জিডি করেন তিনি। এ ব্যবসায়ী জানান, ৬ নভেম্বর ফেনী থেকে বাসে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে ঢাকায় আসছিলেন। শাহবাগে পৌঁছার পর দেখেন মোবাইল নেই। কয়েক মিনিট আগেও তাঁর স্ত্রীর হাতে ছিল। লোকেশন ট্র্যাক করে দেখা যায়, শাহবাগ এলাকায় সেটি রয়েছে। এক দিন পর শ্যামলী শিশু হাসপাতালে লোকেশন পাওয়া যায়। শাহবাগ ও শ্যামলীতে ঘোরাঘুরি করে মোবাইলটি আসলে কার কাছে তা চিহ্নিত করতে পারেননি। থানায় গিয়ে জিডির পর বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান। তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে বলেছেন– ‘আইনের প্রক্রিয়া আছে। চাইলেই ফোনসেট কার কাছে রয়েছে তা

ধরা যায় না।’ রায়হান বলেন, জিডি করতে বিন্দুমাত্র সমস্যা না হলেও ফোন উদ্ধারে পুলিশ তেমন তৎপর ছিল না। তদন্ত কর্মকর্তাকে ফোন দেওয়ার পর শুনলাম তিনি বদলি হয়ে গেছেন। নতুন কে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন তাও জানি না। কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকায় প্রতিবন্ধী শাহেদ উদ্দিনের গল্পটা ভিন্ন। প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড হারিয়ে ফেলার ঘটনায় চকরিয়া থানায় মাসখানেক আগে জিডি করেন তিনি। তবে হতদরিদ্র এই ব্যক্তির কোনো মোবাইল না থাকায় প্রতিবেশী শাহাবুদ্দিনের মোবাইল নম্বর জিডিতে লিপিবদ্ধ করা হয়। শাহাবুদ্দিন বলেন, প্রতিবন্ধী কার্ড হারানোর পর আমিই তাঁকে থানায় নিয়ে জিডি করিয়েছি। তাঁকে দেখভালের কেউ নেই। প্রতিবেশী হিসেবে মানবিক দায়িত্ব থেকে তাঁর পাশে দাঁড়াই। কার্ড না থাকায়

তিনি ভাতা তুলতে পারছেন না। জিডির পর এখনও জানি না বিষয়টি কী অবস্থায় আছে। কেউ যোগাযোগও করেনি। পুলিশের সেবাপ্রত্যাশী আরেক নাগরিক হলেন নড়াইল সদরের রফিকুল ইসলাম। মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সদর থানায় জিডি করেন তিনি। তরুণ এই আইনজীবী বলেন, অনলাইনে জিডি করতে কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। জিডির পর তদন্তসংশ্লিষ্ট কেউ ফোন করেননি। তদন্তের বিষয়টি কোন পর্যায়ে রয়েছে তাও জানি না। বরগুনার আমতলীর বাসিন্দা শিরিন আক্তার ৭ নভেম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র হারানোর পর জিডি করেন। তাঁর বাবা শাহ আলম তালুকদার বলেন, আমার মেয়ে পোশাককর্মী। এনআইডি না থাকলে নতুনভাবে কোনো কারখানায় কাজে যোগ দেওয়া যাবে না। এখন মেয়ে বাসায় আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা

বলছেন, আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রাথমিক এবং সাধারণ একটি বিষয় হচ্ছে জিডি। বিশেষ করে কোনো কিছু হারিয়ে গেলে, আইনগত রেকর্ড সংরক্ষণ বা পুলিশে প্রাথমিক তথ্য জানানোর জন্য এটি করা হয়ে থাকে। অনেক সময় কারও বিরুদ্ধে অভিযোগও মামলা না করে জিডি আকারে করা হয়ে থাকে। পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, আইনগত দিক দিয়ে জিডির গুরুত্ব কম নয়। অনেক সময় তা বড় ধরনের অপরাধের আগাম আলামত দেয়। জিডির তদন্ত সূচারুভাবে হলে অনেক অপরাধ সম্পর্কে আগেভাগে তথ্য বেরিয়ে আসে। ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার ও উন্নয়নে মাঠপর্যায়ের মতামত ২০২০’ শিরোনামে পুলিশ সদরদপ্তরেই করা এক জরিপে জিডি নিয়ে পুলিশের অবহেলার চিত্র উঠে এসেছিল। পুলিশ সদরদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে

গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৪০-৪৫ হাজার জিডি হয়ে থাকে। পুলিশ সদরদপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, পুলিশ সদরদপ্তর থেকে জিডি বাদীর কাছে গোপনে সেবার বিষয়ে জানতে চাওয়া হচ্ছে। জিডির তদন্ত তদারক চলছে। সেবার মান বাড়াতে এই উদ্যোগ। বাদীর মধ্যে কারও অসন্তুষ্টি থাকলে তদন্ত কর্মকর্তাকে সেটি জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, সেবাপ্রত্যাশীদের মধ্যে পুলিশ যে সমীক্ষা চালাচ্ছে তা ইতিবাচক। তবে সেবার প্রশ্নের মামলার বাদী-বিবাদীসহ সব অংশীজনের মতামত নিলে একটি পরিপূর্ণ চিত্র উঠে আসবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
কাতারের আকাশসীমা ১২ ঘন্টা পর উন্মুক্ত চ্যাম্পিয়ন ভারত, শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানের হার অমর একুশে বইমেলা স্থগিত পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ৭১ হাজার পুলিশ মোতায়েন খাগড়াছড়িতে গুলিতে ৩ জন নিহত সিভিল সার্জন অফিসে দু’জন সার্জন, বিব্রতকর পরিস্থিতিতে জেলার চিকিৎসকরা ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৪ জনের, হাসপাতালে ভর্তি ৮৪৫ শ্রীলঙ্কায় ক্যাবল কার দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮ ছাড়িয়েছে চালু হলো বিশ্বের উচ্চতম সেতু হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখল জাতিসংঘ তিন নারীকে হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল আর্জেন্টিনা হজের তিন প্যাকেজ ঘোষণা, কমছে খরচ বাগরাম দখলে পাঁয়তারা ট্রাম্পের, বাগড়া দিচ্ছে রাশিয়া-চীন-ইরান-পাকিস্তান হাজি সেলিমের বাড়ি থেকে ৬টি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৮৪৫ ফাইনাল পরিত্যক্ত হলে কোন দলের হাতে উঠবে ট্রফি, কী আছে নিয়মে ১ অক্টোবর খুলছে না কেওক্রাডং পর্যটন কেন্দ্র গাজা যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলে রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ আসছে নিষেধাজ্ঞা, উপকূলজুড়ে বিষাদের ছায়া চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে দুদকের অভিযান