বাড়ির পাহারাদার থেকে আতা হয়ে ওঠে ডন – ইউ এস বাংলা নিউজ




বাড়ির পাহারাদার থেকে আতা হয়ে ওঠে ডন

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২২ অক্টোবর, ২০২৪ | ৬:০৮ 15 ভিউ
কুষ্টিয়ার আলোচিত নাম আতাউর রহমান আতা। গত ১৫ বছর আগেও যে আতাকে ভেড়ামারার মানুষ ঠিকমত চিনতো না সেই আতার উত্থান কল্পকাহিনীকেও হার মানাবে। বাড়ির পাহারদার থেকে বিনা ভোটে উপজেলার চেয়ারম্যান বনে যান। তার ইশারায় পরিচালিত হতো দলের কার্যক্রম। হানিফের বাড়ি পাহারা দিতে এসে সদর উপজেলার নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন। আতার কথায় ওঠবস করতেন সরকারি কর্মকর্তা থেকে দলের নেতারা। যেন আতাকে খুশি করতে পারলেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলতেন কিছু নেতা-কর্মি। এই আতা রাজনীতি যেমন নষ্ট করেছে তেমনি সামাজিক সম্প্রতি নষ্টের মূল হোতা হিসেবে মনে করেন এ জেলার মানুষ। বিএনপি-জামায়াতকে দমনের নামে মিথ্যা গায়েবি মামলা ছাড়াও বিরোধী নেতা-কর্মিদের ওপর চালায় নানা নির্যাতন। এক

সময় বাইসাইকেলে চড়া আতা ৫ আগষ্টের আগেও চড়তেন কোটি টাকা দামের গাড়ীতে। সম্পদ গড়েছিলেন শত শত কোটি টাকার। আতার জন্ম কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায়। ভেড়ামারার বাহিরচর ইউনিয়নের ষোলদাগ গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার প্রামানিকের ২ স্ত্রীর ঘরে জন্ম নেয় ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে। তাদেরই একজন হলেন আতাউর রহমান আতা। লেখাপড়া করেছেন গ্রামের স্কুলে। গন্ডি পেরিয়েছেন টেনেটুনে এসএসসি পর্যন্ত। অপ্রতিরোধ্য রাজনীতিক ও বিত্ত বৈভবের মালিক বনে যান তার চাচাতো ভাই আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের ছত্রছায়ায় আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে। আত্মীয়তার সূত্রে কুষ্টিয়া শহরে প্রবেশ। আতার বাবা আব্দুস সাত্তার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের বাবা আফসার আলীর চাচাতো

ভাই। সেই সূত্রে হানিফ আর আতা চাচাতো ভাই। হানিফের পর আতা ছিলেন কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দ্বিতীয় ব্যক্তি। দুই ভাই মিলে জেলার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন। সব সরকারি কাজ ছিল তাদের নিয়ন্ত্রনে। এভাবে আতা জিরো থেকে হিরো বনে গেছে। এ সময় একটি মটর সাইকেলে চড়লেও এখন তার কোটি টাকার দামি একাধিক গাড়ী আছে। স্ত্রী প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হলেও স্বামীর টাকায় সেও কোটিপতি। ঢাকায় একাধিক ফ্লাছে ও বাড়ি আছে আতার। হানিফ দলের যুগ্ম সম্পাদক হওয়ায় আতা ছিল সবার কাছে আতঙ্কের। দলমত নির্বিশেষে সবাই আতাকে সামাল দিয়ে চলতেন। বিচার ও শালিস থেকে সবখানে আতার কথায় ছিল শেষ কথা। এমনকি সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনের আগে হানিফের

ভোটের কথা বলেও কোটি কোটি টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। দলের নেতারা বলেন, কুরবানীর আগে গরু ও ছাগলও আসত উপহার হিসেবে। দেশ ছাড়াও দেশের বাইরে আতার সম্পদ ও অর্থ আছে বলে শোনা যায়। এর মধ্যে মালয়েশিয়ায় আতার সেকেন্ড হোম আছে বলে মনে করেন দলের অনেকে। আতার ঘনিষ্ট পৌর কাউনিন্সর মীর রেজাউল ইসলাম বাবুসহ বেশ কয়েকজনও টাকার মালিক বনে গেছেন। তারাও আতার দাপট দেখিয়ে কাউকে মানুষ মনে করতেন না। যাকে-তাকে মারধর করতেন যখন তখন। আতা যখন বাড়িতে থাকতো দলীয় ক্যাডারর সব সময় পাহারা থাকতো। বাইরে বেরুলে গাড়ী আগে-পিছে বহর নিয়ে বেড়াতো গ্যাং স্টারেরমত। দলের পদ-পদবি ও টেন্ডারে কাজ পেতে আতার কাছে ধরনা

দিতে হতো সবাইকে। তার অত্যাচার ও নির্যাতনে দল ছেড়েছেন অনেকে। এমনকি ঠিকাদারি কাজও ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। অবৈধ বালু ঘাট, হাট-বাজার, বিল ও বাউড় নিয়ন্ত্রণ করতো আতা। সে এভাবে গত ১৬ বছরে শতশত কোটি টাকার মালিক হয়েছে। হাসিনা পালিয়ে যাবার পর আতা গা ঢাকা দিয়েছে। তার বাড়ি লুটপাট হয়ে গেছে। একই অবস্থা হানিফের বাড়িরও। আতার স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুনীতি দমন কমিশন মামলা করেছে। আতার অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে। যে কোন সময় মামলা হতে পারে বলে জানা গেছে। জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আতা ২০১২ সালের আগ পর্যন্ত ভেড়ামারায়ই

ছিলেন। সেখানে ঠিকাদারীর পাশাপাশি রাজনীতি করতেন। তবে কোনও পদে ছিলেন না। হানিফ ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার আগে শহরের পিটিআই রোডে জমি কিনে বাড়ির কাজ শুরু করেন। আতাকে এ সময় মূলতঃ ওই বাড়ির কাজ-কর্ম দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, হানিফ সদর আসন থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর আতাকে তার স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আতা শহরের রাজনীতি শুরু করে। শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ নারী ঘটিত ঘটনায় বহিষ্কার হওয়ার পর আতাকে হুট করেই ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর সর্বশেষ ২০১৯

সালের কাউন্সিলে ভারমুক্ত হয় সে। সেই কাউন্সিলের পর আর কাউন্সিল হয়নি। ২০১৯ সালের সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় টিকিটও বাগিয়ে নেয় আতা। এরপর তার বিরুদ্ধে কেউ নির্বাচন করতে আর সাহস করেনি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হয়। শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সদর আসনের সংসদ সদস্য হানিফের চাচাতো ভাই ও স্থানীয় প্রতিনিধি-এসব পরিচয় আতার জন্য স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকে সহজ করে দেয়। দিন দিন বাড়তে থাকে তার প্রভাব, দলীয় নেতাকর্মীরাও আসতে থাকে তার কাছে। অল্প দিনেই শহর ও সদরের রাজনীতিতে তৈরি করে নিজস্ব বলয়। অভিযোগ আছে, পুরো জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিই হানিফ নিয়ন্ত্রণ করতেন আতার মাধ্যমে। এরপর অর্থ-বিত্তে-সম্পদে ফুলে ফেঁপে ওঠে আতাউর রহমান আতা। ২০২২ সালে আতার বিপুল অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি তুলে ধরে দুদকে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। এতে বলা হয়, ১০ বছরের ব্যবধানে ভাই হানিফের প্রভাব আর আওয়ামী লীগের পদ-পদবি ব্যবহার করে বাড়ি-গাড়িসহ ১১০০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যান আতা। এই অভিযোগ উঠার পর ২০২২ সালে দুদক আতার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে। সেময় আতার চাচাতো ভাই আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের কালো হাতের থাবায় অনুসন্ধান আর বেশীদুর এগুতে দেয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ২৩ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার গৃহযুদ্ধের মুখে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলায় ৩৫ জন আহত ইসির ব্রিফিংয়ের আগে নামানো হলো শেখ মুজিবের ছবি ইউক্রেনকে শ্মশানে পরিণত করতে চায় পুতিন মোহাম্মদপুরে সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজটে ভোগান্তি চরমে চার বিসিএস থেকে ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ বান্দরবানে ৩ কেএনএ সদস্য নিহত, অস্ত্র উদ্ধার পবিপ্রবিতে রাতভর র‍্যাগিংয়ে হাসপাতালে ৩ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার ৭ অটোরিকশা বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবারো সড়ক অবরোধ মিরপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৭, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি ঐক্যকে রাখতে হবে ইস্পাত কঠিন অটুট : জামায়াত আমির রাশিয়ার ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র কতটা বিধ্বংসী? হলিউডের দুই ছবি বাংলাদেশের পর্দায় বাংলাদেশ সফরে আসার পরিকল্পনা ব্রিটিশ রাজার গ্যাসের জন্য ২০ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছি