ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা পাচ্ছে বাংলাদেশ
এক সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
মুরগি-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, আলু এখনো চড়া
জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১০-১৫ টাকা কমানো সম্ভব
কেন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছে জানালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
সালমান এফ রহমানের কোম্পানিকে ৬০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে সরকার
কমেছে পেঁয়াজের দাম
রাশিয়ার ঋণ পরিশোধে নতুন অনিশ্চয়তা
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়নায় হিসাব খোলায় সম্মতি পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে চীন চাইছে বাণিজ্যিক হিসাবের পরিবর্তে বিনিয়োগ হিসাব খোলা হোক। বিনিয়োগ হিসাব ব্যবহার করে আদৌ রাশিয়ার অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এর আগেও রাশিয়ার পাওনা পরিশোধে বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে আলোচনা উঠলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। যে কারণে রাশিয়ার পাওনা আলাদা করে রাখছে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় পাওনা আলাদা করে না রেখে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সার্বিক বিষয়ে গত সপ্তাহে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে চীনের
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। জানানো হয়, বাংলাদেশ চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একটি বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইলেও দেশটি জানিয়েছে, বিনিয়োগ অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এ ধরনের অ্যাকাউন্ট সাধারণত চীনের বন্ড কেনাবেচার কাজে ব্যবহৃত হয়। এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, দ্রুততম সময়ে তাদের পাওনা না দিলে দণ্ডসুদ বা বিলম্ব পরিশোধজনিত মাশুল দাবি করবে। তবে বাংলাদেশ তাতে সম্মত নয়। কেননা, অর্থ পরিশোধে বাংলাদেশের দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। দেশটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা অর্থ নিতে পারছে না। আবার আইএমএফের পরামর্শে রাশিয়াকে পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংকের ‘স্ক্রো’ হিসাবে ডলার জমা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এই হিসাবে ৮০৯ মিলিয়ন ডলার জমা হয়েছে। আরও ১৩০
মিলিয়ন ডলার শিগগিরই জমা হবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। গতকাল তিনি বলেন, এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ বলতে পারবে। বক্তব্যের জন্য ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীকে টেলিফোন করলেও তিনি ধরেননি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাবদ রাশিয়ার প্রাপ্য অর্থ আলাদা একটি হিসাবে স্থানান্তর করে রেখেছে। রাশিয়াকে পরিশোধ করার জন্য বিভিন্ন উপায় খোঁজা হয়েছে। তবে নিরাপদ কোনো লেনদেন মাধ্যম পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ পিপলস ব্যাংক অব চায়নার মাধ্যমে হিসাব খুলে অর্থ দেওয়া যায় কিনা,
সে চেষ্টা করা হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৬ সালের জুলাইতে রাশিয়ার ‘এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট’র সঙ্গে বাংলাদেশের ঋণ চুক্তি হয়। চুক্তি মূল্যের ৯০ শতাংশ তথা ১ হাজার ১৩৮ কোটি ডলার অর্থায়ন করতে সম্মত হয় রাশিয়া। প্রকল্পের মূল ঋণের আসল পরিশোধ শুরু হবে ২০২৭ সালের মার্চ থেকে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ঋণ পরিশোধ শুরুর জন্য বাড়তি দুই বছর তথা ২০২৯ সাল পর্যন্ত গ্রেসপিরিয়ড চেয়েছে। এ বিষয়ে গত আগস্টে রাশিয়াকে চিঠি দেওয়া হলেও এখনও কোনো জবাব আসেনি। তবে প্রকল্পের মূল ঋণের সুদ পরিশোধ ও প্রকল্প ঋণের বাইরে প্রাথমিক কাজের জন্য নেওয়া ৫০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের সময় শুরু হয় গত বছর। বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য একজন ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ২০২২ সালের শুরুর দিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকেই সব ধরনের পরিশোধ স্থগিত রাখতে বলা হয়। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় দেশটির চাওয়া অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিকল্প খোঁজা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনোটিই সফল হয়নি। তিনি বলেন, এমন কোনো উপায়ে পরিশোধ করা হবে না, যেখানে বাংলাদেশ ঝুঁকিতে পড়ে। আবার রাশিয়া বললেই দণ্ডসুদ দেবে না বাংলাদেশ। কেননা বাংলাদেশ আর্থিক সক্ষমতার অভাবে পরিশোধ করছে না, তেমন নয়। বরং রাশিয়া তার পাওনা নিতে পারছে না। এখন পিপলস ব্যাংক অব চায়নায় অ্যাকাউন্ট খুললেই রাশিয়াকে পরিশোধ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা
তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় দেশটির পাওনা এভাবে ফেলে না রেখে বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে তারা সুদ পাবে। আবার বাংলাদেশ ডলার সংকটের এ সময়ে কিছুটা স্তস্তি পাবে। পরে যখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে, তখন পরিশোধ করা হবে। জানতে চাইলে ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন এবিবির সাবেক সভাপতি ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, রাশিয়ার পরিশোধ নিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের দিক থেকে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও রাশিয়ার পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, কোনো দেশের কাছে বাংলাদেশ খেলাপি হতে চায় না। যে কারণে তাদের পাওনা আলাদা হিসাবে জমা রাখা হচ্ছে। তবে এ অর্থ পড়ে আছে। এখন ওই অর্থ
বাংলাদেশে বিনিয়োগের যে আলোচনা, তা নিয়ে ভাবা যেতে পারে। তাতে করে তাদের অর্থ একেবারে পড়ে না থেকে সুদ পাবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছরের এপ্রিলে রূপপুরসহ দেশটির বিভিন্ন পাওনা পিপলস ব্যাংক অব চায়নার মাধ্যমে পরিশোধের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে একটি প্রটোকল চুক্তি সই করে বাংলাদেশ। তবে সুইফট চ্যানেলে অর্থ পরিশোধ করা যাবে না । এতে করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত আর ওই পরিশোধ হয়নি। এর পর চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হিসাব খোলার বিষয়ে চলতি বছরের ৫ থেকে ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চীনে যায়। সেখান অ্যাকাউন্ট খোলার পাশাপাশি চীনের আন্তর্জাতিক লেনদেনের বার্তা প্রেরণের মাধ্যম দ্য ক্রসবর্ডার ইন্টারব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেমে (সিআইপিএস) যুক্ত হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোতে। বাংলাদেশের মোট আমদানির বড় অংশ হয় চীন ও ভারত থেকে। তবে এই দুই দেশে রপ্তানি হয় খুব কম। এর বিপরীতে মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশের বেশি আসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ থেকে। ফলে এমন কোনো ব্যবস্থায় বাংলাদেশ যাবে না, যাতে যুক্তরাষ্ট্র নাখোশ হয়। যে কারণে সিআইপিএসে যুক্ত হবে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ১১টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাংলাদেশের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। চীন থেকে সবচেয়ে বেশি আমদানি হলেও দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাংলাদেশের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। চীনের সঙ্গে লেনদেন নিষ্পত্তি হয় এইচএসবিসি হংকংয়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমানে অ্যাকাউন্ট রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, যুক্তরাজ্যের ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইতালি, ফ্রান্সসহ ১১টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, এইচএসবিসিসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে ‘নস্ট্রো’ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বড় অংশই জমা আছে যুক্তরাষ্ট্রে। আবার বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশনকে (সুইফট) অর্থ লেনদেনের বার্তা পাঠানোর একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। জানানো হয়, বাংলাদেশ চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একটি বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইলেও দেশটি জানিয়েছে, বিনিয়োগ অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এ ধরনের অ্যাকাউন্ট সাধারণত চীনের বন্ড কেনাবেচার কাজে ব্যবহৃত হয়। এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, দ্রুততম সময়ে তাদের পাওনা না দিলে দণ্ডসুদ বা বিলম্ব পরিশোধজনিত মাশুল দাবি করবে। তবে বাংলাদেশ তাতে সম্মত নয়। কেননা, অর্থ পরিশোধে বাংলাদেশের দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। দেশটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা অর্থ নিতে পারছে না। আবার আইএমএফের পরামর্শে রাশিয়াকে পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংকের ‘স্ক্রো’ হিসাবে ডলার জমা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এই হিসাবে ৮০৯ মিলিয়ন ডলার জমা হয়েছে। আরও ১৩০
মিলিয়ন ডলার শিগগিরই জমা হবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। গতকাল তিনি বলেন, এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ বলতে পারবে। বক্তব্যের জন্য ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীকে টেলিফোন করলেও তিনি ধরেননি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাবদ রাশিয়ার প্রাপ্য অর্থ আলাদা একটি হিসাবে স্থানান্তর করে রেখেছে। রাশিয়াকে পরিশোধ করার জন্য বিভিন্ন উপায় খোঁজা হয়েছে। তবে নিরাপদ কোনো লেনদেন মাধ্যম পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ পিপলস ব্যাংক অব চায়নার মাধ্যমে হিসাব খুলে অর্থ দেওয়া যায় কিনা,
সে চেষ্টা করা হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৬ সালের জুলাইতে রাশিয়ার ‘এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট’র সঙ্গে বাংলাদেশের ঋণ চুক্তি হয়। চুক্তি মূল্যের ৯০ শতাংশ তথা ১ হাজার ১৩৮ কোটি ডলার অর্থায়ন করতে সম্মত হয় রাশিয়া। প্রকল্পের মূল ঋণের আসল পরিশোধ শুরু হবে ২০২৭ সালের মার্চ থেকে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ঋণ পরিশোধ শুরুর জন্য বাড়তি দুই বছর তথা ২০২৯ সাল পর্যন্ত গ্রেসপিরিয়ড চেয়েছে। এ বিষয়ে গত আগস্টে রাশিয়াকে চিঠি দেওয়া হলেও এখনও কোনো জবাব আসেনি। তবে প্রকল্পের মূল ঋণের সুদ পরিশোধ ও প্রকল্প ঋণের বাইরে প্রাথমিক কাজের জন্য নেওয়া ৫০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের সময় শুরু হয় গত বছর। বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য একজন ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ২০২২ সালের শুরুর দিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকেই সব ধরনের পরিশোধ স্থগিত রাখতে বলা হয়। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় দেশটির চাওয়া অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিকল্প খোঁজা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনোটিই সফল হয়নি। তিনি বলেন, এমন কোনো উপায়ে পরিশোধ করা হবে না, যেখানে বাংলাদেশ ঝুঁকিতে পড়ে। আবার রাশিয়া বললেই দণ্ডসুদ দেবে না বাংলাদেশ। কেননা বাংলাদেশ আর্থিক সক্ষমতার অভাবে পরিশোধ করছে না, তেমন নয়। বরং রাশিয়া তার পাওনা নিতে পারছে না। এখন পিপলস ব্যাংক অব চায়নায় অ্যাকাউন্ট খুললেই রাশিয়াকে পরিশোধ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা
তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় দেশটির পাওনা এভাবে ফেলে না রেখে বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে তারা সুদ পাবে। আবার বাংলাদেশ ডলার সংকটের এ সময়ে কিছুটা স্তস্তি পাবে। পরে যখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে, তখন পরিশোধ করা হবে। জানতে চাইলে ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন এবিবির সাবেক সভাপতি ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, রাশিয়ার পরিশোধ নিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের দিক থেকে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও রাশিয়ার পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, কোনো দেশের কাছে বাংলাদেশ খেলাপি হতে চায় না। যে কারণে তাদের পাওনা আলাদা হিসাবে জমা রাখা হচ্ছে। তবে এ অর্থ পড়ে আছে। এখন ওই অর্থ
বাংলাদেশে বিনিয়োগের যে আলোচনা, তা নিয়ে ভাবা যেতে পারে। তাতে করে তাদের অর্থ একেবারে পড়ে না থেকে সুদ পাবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছরের এপ্রিলে রূপপুরসহ দেশটির বিভিন্ন পাওনা পিপলস ব্যাংক অব চায়নার মাধ্যমে পরিশোধের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে একটি প্রটোকল চুক্তি সই করে বাংলাদেশ। তবে সুইফট চ্যানেলে অর্থ পরিশোধ করা যাবে না । এতে করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত আর ওই পরিশোধ হয়নি। এর পর চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হিসাব খোলার বিষয়ে চলতি বছরের ৫ থেকে ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চীনে যায়। সেখান অ্যাকাউন্ট খোলার পাশাপাশি চীনের আন্তর্জাতিক লেনদেনের বার্তা প্রেরণের মাধ্যম দ্য ক্রসবর্ডার ইন্টারব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেমে (সিআইপিএস) যুক্ত হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোতে। বাংলাদেশের মোট আমদানির বড় অংশ হয় চীন ও ভারত থেকে। তবে এই দুই দেশে রপ্তানি হয় খুব কম। এর বিপরীতে মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশের বেশি আসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ থেকে। ফলে এমন কোনো ব্যবস্থায় বাংলাদেশ যাবে না, যাতে যুক্তরাষ্ট্র নাখোশ হয়। যে কারণে সিআইপিএসে যুক্ত হবে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ১১টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাংলাদেশের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। চীন থেকে সবচেয়ে বেশি আমদানি হলেও দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাংলাদেশের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। চীনের সঙ্গে লেনদেন নিষ্পত্তি হয় এইচএসবিসি হংকংয়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমানে অ্যাকাউন্ট রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, যুক্তরাজ্যের ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইতালি, ফ্রান্সসহ ১১টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, এইচএসবিসিসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে ‘নস্ট্রো’ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বড় অংশই জমা আছে যুক্তরাষ্ট্রে। আবার বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশনকে (সুইফট) অর্থ লেনদেনের বার্তা পাঠানোর একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে।