সুব্রত বাইনের উত্থান কীভাবে – ইউ এস বাংলা নিউজ




সুব্রত বাইনের উত্থান কীভাবে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৮ মে, ২০২৫ | ৫:৪৮ 41 ভিউ
ঢাকার অপরাধজগতে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলি আলোচনায় আসেন সর্বপ্রথম ১৯৯১ সালে। সেসময় জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মুরাদ হত্যার মধ্য দিয়ে তার কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। এক পর্যায়ে ‘সেভেন স্টার’ নামে সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান হয় সে। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যে পুরস্কার ঘোষণা করে, সেই তালিকাতে শীর্ষে নাম ওঠে তার। এরপর আর তার নাগাল পাওয়া না গেলেও আগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন দুবার। মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোর ৫টার দিকে কুষ্টিয়ার কালিশংকরপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রায় দেড় মাস ধরে ওই বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন।

এরপরই নতুন করে আলোচনায় এই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। এদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলন করেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআরের পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সামি-উদ-দৌলা বলেন, এই অভিযানটি ছিল দীর্ঘদিনের গোয়েন্দা তৎপরতা এবং পরিকল্পনার ফসল। অপারেশনটি অত্যন্ত সুনিপুণভাবে ক্ষয়ক্ষতি বা সংঘর্ষ ছাড়াই পরিচালিত হয় যা আমাদের বাহিনীর পেশাদারিত্ব এবং রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয়ে ও সহায়তা প্রদান করেছে সেনা সদরের সামরিক অপারেশন পরিদপ্তর, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন, ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার বিগ্রেড, ৭১ মেকানাইজ বিগ্রেড ও এনএসআই। তিনি বলেন, শীর্ষ এই সন্ত্রাসীদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন নাশকতামূলক

কার্যক্রমের মামলা রয়েছে। সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ সেভেন স্টার সন্ত্রাসী দলের নেতা এবং তালিকাভুক্ত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অন্যতম। ব্যবসার কথা বলে বাসা ভাড়া নেন সুব্রত বাইন, খাবার আসত বাইরে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় নাম ওঠার পরও অন্তত দুই বছর দেশেই আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এরপর ২০০৩ সালের দিকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর তৎপরতা বেড়ে গেলে ভারতে পালিয়ে যান। কলকাতার স্পেশাল টাস্কফোর্স কারাইয়া এলাকা থেকে ২০০৮ সালের ১৩ অক্টোবর সুব্রতকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করার তথ্যও মেলে। তার বিরুদ্ধে কলকাতায় অস্ত্র ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলাও হয়। ওই মামলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার গা

ঢাকা দেন সুব্রত। তার পুরো নাম ত্রিমাতি সুব্রত বাইন। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের কর্মকর্তাদের ধাওয়া খেয়ে সুব্রত বাইন নেপাল সীমান্তের কাকরভিটা শহরে ঢুকে পড়েন। পরে নেপালের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের প্রায় তিন বছরের মাথায় ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সুড়ঙ্গ খুড়ে নেপালের কারাগার থেকে পালিয়ে ফের ভারতে অনুপ্রবেশ করে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী। একই বছরের ২৭ নভেম্বর কলকাতার বৌবাজারের একটি বাসা থেকে সুব্রতকে গ্রেপ্তার করে ভারতীয় পুলিশ। সেখানে ফতেহ আলি নাম নিয়ে ছদ্মবেশে বসবাস করছিলেন তিনি। তবে বিদেশে দীর্ঘ কারাবাস করলেও সেখান থেকেই ঢাকার আন্ডারওয়াল্ডের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে। বড় বড় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও

নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নামে আসে তার বাহিনীর সন্ত্রাসীদের। কথিত আছে, ঢাকা থেকে করা চাঁদাবাজির টাকায় কলকাতায় তিনি বাড়ি আর জমির মালিক হয়েছেন। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম নিলেও সুব্রত বাইনের শিশুকাল কাটে গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তার আদি নিবাস বরিশালের আগৈলঝাড়া থানার জোবারপাড় গ্রামে। তার বাবা বিপুল বাইন ছিলেন একটি এনজিওর গাড়িচালক। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্য সে সবার বড়। বরিশালেই একটি মিশনারি স্কুলে পড়ালেখা চলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর ঢাকার একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাসের পর সিদ্ধেশ্বরী কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে সেখানকার এক নেতার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর প্রবেশ করেন আন্ডারওয়াল্ডের অন্ধকার গলিতে। অল্প দিনেই মগবাজার এলাকায় একটি সন্ত্রাসী

চক্র গড়ে ওঠে তার নেতৃত্বে। ৯৩ সালেই মগবাজার এলাকায় সবজি বিক্রেতা খুনে তার নাম সামনে আসে। ওই খুনের পর মগবাজারের বিশাল সেন্টার নির্মাণের সময় চাঁদাবাজির জেরে গোলাগুলিতে গণমাধ্যমের শিরোনাম হন এই সুব্রত বাইন। ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ট্রিপল মার্ডারেও নাম আসে সুব্রত বাইনের। এ ছাড়া মগবাজারের রফিক, সিদ্ধেশ্বরীর খোকনসহ বেশ কয়েকজন তার হাতে খুন হন। জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে নয়াপল্টন এলাকার একটি হাসপাতাল থেকে তৎকালীন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সুব্রত বাইনকে গ্রেপ্তার করেছিল। এর দেড় বছর পর জেল থেকে বেরিয়ে চলতে থাকে তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম। উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার যে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করেছিল, তার মধ্যে অন্যতম

ছিলেন সুব্রত বাইন। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ এখনো সক্রিয় রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
দুই ‘মাস্টারের’ জুয়ার ফাঁদে নিঃস্ব হচ্ছেন তরুণরা ফাঁসছেন অর্ধশত ক্যাডার কর্মকর্তা ধরাছোঁয়ার বাইরে তাসকিন দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে ঝড় ওষুধের জেনেরিক নাম ব্যবহারে প্রতারিত হবে রোগী, বাড়বে স্বাস্থ্যঝুঁকি চীন গেল, জাপান এলো রেলপথের ব্যয় বাড়ল তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কা আসতে পারে দুই বছর প্রতিদিন ইসরায়েলে হামলার সক্ষমতা আছে ইরানের : আইআরজিসি ইসরায়েলে যাওয়ায় বরখাস্ত হলেন নেদারল্যান্ডসের মসজিদের ইমাম কক্ষপথে রাশিয়ার ‘অস্ত্রবাহী’ স্যাটেলাইট, বিশ্বের জন্য ভয়ানক বার্তা ইসরায়েলের ৫ সামরিক স্থাপনায় সরাসরি আঘাত হানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র : রয়টার্স ইরানি সিনেমা ভালোবাসার ছবি আঁকে হৃদয়ে জুলাইযোদ্ধাদের জন্য ২৫ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল এসএসসির ফল প্রকাশে নতুন পদ্ধতি, জানবেন যেভাবে ভারতীয় পাহাড়ী ঢল, ফেনী ও কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা মেট্রোতে গড়ে প্রতিদিন যাত্রী ওঠে ৪ লাখ, কোন স্টেশনে বেশি ৯৯ রানে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার সিরিজ জয় ট্রাম্পের ‘শুল্কের বিপদ’ এড়াতে আরও বোয়িং কেনার ভাবনা সরকারের নির্বাচনের তারিখ আমি নিজেও জানি না: সিইসি ইসরায়েলি হামলায় ১৮ সহস্রাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিহত