শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়ছে চাপ – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
     ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়ছে চাপ

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৯:১৮ 188 ভিউ
স্বাধীনতার পর থেকে দেশের শিক্ষাক্রম সাতবার পরিবর্তন হয়েছে। এ সময়ে মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তন হয় একাধিকবার। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয়েছে আওয়ামী সরকারের গত প্রায় ১৬ বছরের শাসনকালে। চার মন্ত্রীর সময়ে দুই রকমের শিক্ষা পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া হয়। অথচ এখন পর্যন্ত কোনো পদ্ধতিই পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন হয়নি। সর্বশেষ ২০২৩ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের তিন শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়। এতে মুখস্থ বিদ্যার পরিবর্তে বাস্তবমুখী শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। পালটে যায় পাঠ্যবই, শ্রেণিকক্ষের পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা পতিত সরকারের বিতর্কিত শিক্ষাব্যবস্থায় আর ফিরতে চায় না। তারা মনে করেন, বিগত

সরকারের খামখেয়ালির কারণে তাদের সন্তানরা পড়ালেখায় বারবার ধাক্কা খেয়েছে। যথাযথ পাইলটিং ও গবেষণা ছাড়াই এই কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হয়। শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না রাখায় ব্যাপক ঘাটতিতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা মৌলিক শিক্ষার স্থলে অগোছালো শিক্ষা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা পুরোনো চাপ আর নিতে চাইছে না। এদিকে চলতি বছর আরও নতুন চারটি শ্রেণিতে এই কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে শিখনকালীন মূল্যায়নের নামে গুরুত্বহীন করা হয় পরীক্ষা ও মুখস্থ করা বিষয়গুলো। ফলে পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এসব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিমুখ হয়ে ডিভাইস ও গল্প-আড্ডার প্রতি আসক্তি বেড়ে যায়। এনটিসিবির কিছু সদস্য ও কর্মকর্তার দুর্নীতির কারণে শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে

দেওয়া হয়নি পাঠ্যবইও। এতে তাদের বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। এসব ভুলত্রুটি নিয়ে কথা বললে শিক্ষক ও অভিভাকদের বিরুদ্ধে করা হয় মামলা ও গ্রেফতার। এমন পরিস্থিতিতে আগের শিক্ষাব্যবস্থায় (সৃজনশীল পদ্ধতি) ফিরে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ঘন ঘন শিক্ষাক্রম পরিবর্তনে শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়ছে নানা ধরনের চাপ। শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়াই ঘন ঘন শিক্ষাক্রম পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের ওপর। একটি নতুন শিক্ষাক্রমে অভ্যস্ত হতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেক সময় চলে যায়। কারিকুলাম শিক্ষকরাও সুস্পষ্টভাবে বুঝে উঠতে না পারলে শিক্ষার্থীদের বড় ক্ষতি হয়ে যায়। নতুনভাবে সৃজনশীল পদ্ধতি বাস্তবায়ন করলে বাধ্য হয়েই শিক্ষকদের কাছে কোচিংয়ে

পড়তে হবে শিক্ষার্থীদের। এভাবে একের পর এক নতুন শিক্ষাক্রমের সঙ্গে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়ে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এদিকে উচ্চ মাধ্যমিকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির কিছু পাঠ্যবইয়ের সংশোধন ও পরিমার্জন করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের একাদশ শ্রেণির ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে গত মাসে। এখনো তারা বই পাইনি। নতুন সংস্করণের এই বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে আরও এক মাস সময় লাগতে পারে। একইসঙ্গে তাদের নতুন সিলেবাসও দেওয়া হবে। ফলে শিক্ষাবর্ষ শুরুর দুই মাস পরে পাচ্ছে পাঠ্যবই ও সিলেবাস। এতে তাদের পড়ার চাপ বাড়তে পারে। এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৭ সালে প্রথম শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে

প্রথম শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবইয়ে পরিমার্জন করা হয়। এছাড়া ১৯৯২ সালে প্রাথমিক স্তরে যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমে রূপান্তর করা হয় আর ১৯৯৫ সালে মাধ্যমিক স্তরে উদ্দেশ্যভিত্তিক শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন করা হয়। এর মধ্যে ২০০২ সালে প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের কিছু পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন করা হয়। এরপর ২০১২ সালে উদ্দেশ্যভিত্তিক (সৃজনশীল) শিক্ষাক্রমকে বিশ্বের সবচেয়ে যুগোপযোগী লেখাপড়া বলে এ দেশে চালু করা হয়েছিল। এক দশকের বেশি সময় পর সে পদ্ধতি আবার মূল্যহীন হয়ে গেছে। ২০২২ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সর্বশেষ তদারকি প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ৪৫ শতাংশ শিক্ষক ঠিকভাবে সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্ন করতে পারেন না। পরে ২০২২ সালে এই শিক্ষাক্রমের আবারও ব্যবচ্ছেদ করা হয় এবং বর্তমানে ২০২৩ সালে (শিখনকালীন) নতুন শিক্ষাক্রম

চালু করা হয়। এখন পুনরায় ২০১২ সালের শিক্ষাব্যবস্থায় ফিরে যাচ্ছে সরকার। অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, নতুন শিক্ষাপদ্ধতি বাস্তবায়নে কার্যকর সুফল মেলেনি। বারবার শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তনে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের মাঝে আস্থাহীনতা তৈরি হয়। তারা পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সহজে শিক্ষায় মনোনিবেশ করতে পারে না। এতে শিক্ষার বড় ক্ষতি হয়ে যায়। সরকার পরিবর্তনের পর ২০১২ সালের সৃজনশীল পদ্ধতিতে ফিরছে শিক্ষাব্যবস্থা। চলতি শিক্ষাবর্ষে আর ৩ মাস সময় আছে। এতে তাদের ওপর ব্যাপক চাপ যাবে। জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, অভিজ্ঞতা নির্ভর ও শিখনকালীন মূল্যায়নের আদলে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু। তবে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগের

শিক্ষাক্রমের আদলের শিক্ষায় ফিরে গিয়ে ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অভিজ্ঞতা নির্ভর শিক্ষার বইয়ের কোন কোন অংশ থেকে প্রচলিত লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে তা খুঁজে বের করে আমরা ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস প্রস্তুত করছি। আর বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নকাঠামো প্রস্তুত করছি। শিক্ষক ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে সেমিনার করে সিলেবাস ও প্রশ্নকাঠামোর খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে। এতে প্রশ্ন ও পরীক্ষা পদ্ধতি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যাতে শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এমাম হোসাইন বলেন, নতুন কারিকুলাম পাঠ্যবই থেকে শিক্ষার্থীদের নলেজ বেজড পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছি। এখন পাঠ্যবইয়ের মৌলিক বিষয়গুলো পড়ানো হচ্ছে। যাতে বার্ষিক পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
*জনগণের প্রত্যাশা থেকে বিচ্ছিন্ন জুলাই সনদ, প্রতিশ্রুতির স্থলে প্রতারণা* আইসিটি বন্ধ ও রাজবন্দীদের মুক্তির দাবি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তীব্র নিন্দা প্রধানমন্ত্রীর, ভারতের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস শেখ হাসিনার বিচার: গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জাতিসংঘে অভিযোগ ‘অবৈধ সরকারকে’ হটাতে চূড়ান্ত আল্টিমেটাম: ১৩ তারিখ ঢাকা অচল করে দেওয়ার ডাক সজীব ওয়াজেদ জয়ের রাজধানীতে সারাদিনে অন্তত সাত স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, তিনটি বাসে আগুন ঘুমানোর সময় ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখলে শরীরে কী হয়, জানলে অবাক হবেন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ দুই মেডিকেল কলেজে সরকারি মেডিকেল কলেজের আসন কমাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভারতে একের পর এক বিস্ফোরণ, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি  মধ্যরাতে জারাকে নিয়ে সারজিসের ফেসবুক পোস্টে চমক মোহাম্মদপুরে চাপাতিসহ ২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ দেশে আবারও বাড়ল সোনার দাম, ভরি কত? অনুমোদন পেল নতুন আরেকটি মেডিকেল কলেজ ‘সালমান শাহকে শেষ করার পেছনে আমরা সিনেমার মানুষেরাই দায়ী’ ইউটিউবে ‘রঙ্গনা’, শাবনূর ফিরলেই নতুনভাবে শুরু গভীর রাতে রাজধানীতে বাস ও প্রাইভেটকারে আগুন দেওয়ার হিড়িক অভদ্ররা ভাবে জবাব দেওয়ার ক্ষমতা নেই : প্রভা পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সাইদ মামুন গুলিতে নিহত