রজব থেকেই শুরু হোক রমজানের প্রস্তুতি
রজব যেন বহমান বাতাস; যে বাতাসে স্নিগ্ধ ও সবুজ হয় মুমিন হৃদয়। জান্নাতি খুশবুর ঘ্রাণে মাতোয়ারা মন দুলতে থাকে প্রভুর প্রেমে। শাবান যেন আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘমালা; যা আল্লাহর বান্দার হৃদয় রহমতের সুশীতল ছায়ায় ঢেকে দেয়। এভাবে মুমিন হৃদয়ে বইতে থাকে রাহমানি সুরের পয়গাম।
বৃষ্টির ফোয়ারার মতো আগমন ঘটে রমজান মাসের। খুলে যায় রহমতের সব দরজা। অবারিত ধারায় প্রভুর রহমত নামে বান্দার কলবে। খোদায়ী আলোয় আলোকিত হতে থাকে দিলের জমিন।
হে প্রেমের মাস! ইবাদতের মাস! তুমি আসতে আর কত দেরি! এভাবেই রহমতের মাস রমজানের জন্য অপেক্ষা করেন খোদা প্রেমিকরা। খোদা প্রেমিকদের সর্দার নবিজি মুহাম্মাদ (সা.) এ শিক্ষাই দিয়েছেন তার উম্মতকে।
রজব মাস থেকেই
রাসূল (সা.) রমজানের প্রস্তুতি নিতেন। সব ব্যস্ততা কমিয়ে আনতেন একে একে। রমজানের পুরো সময়টাই ইবাদত-বন্দেগিতে কাটিয়ে দিতেন নির্বিঘ্নে। রাসূল (সা.)-এর প্রিয় খাদেম হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন পশ্চিম আকাশে রজবের বাঁকা চাঁদ দেখা যেত, তখন রাসূল (সা.) দরদমাখা কণ্ঠে মহান প্রভুর কাছে বারবার এ দোয়া করতেন-‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান। ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করে দিন। আর আমাদের হায়াত রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ (সুনানে নাসায়ি ও মুসনামে আহমাদ।) এভাবেই রজবের প্রতিটি দিন রমজানের প্রার্থনায় সিক্ত হতো রাসূল (সা.) ও সাহাবিদের (রা.) নুরানি চোখগুলো। শাবান এলেই প্রতীক্ষার
নদীতে জোয়ার আসত। হৃদয়ের প্রতীক্ষা যেন শেষ হয় না। তাই রমজানের প্রস্তুতির জন্য শাবান থেকেই নফল রোজা শুরু করতেন নবিজি (সা.) ও সাহাবিরা। মোমিন জননী হজরত আয়শা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসূল (সা.)-কে শাবান মাস ছাড়া আর কোনো মাসেই এত বেশি নফল রোজা রাখতে দেখিনি।’ (বুখারি ও মুসলিম।) অন্য বর্ণনায় আয়শা (রা.) বলেন-‘রমজান ছাড়া কোনো মাসে রাসূল (সা.) পুরো মাস রোজা রাখতেন না। শাবান ছাড়া কোনো মাসে রাসূল (সা.) এত বেশি রোজা রাখতেন না।’ (মুসলিম।) আয়শা (রা.) আরও বলেন, ‘কখনো কখনো রাসূলে আকরাম (সা.) পুরো শাবান মাসই নফল রোজায় কাটিয়ে দিতেন।’ (ইবনে মাজাহ।) মুসলিম শরিফের বর্ণনায় এসেছে, ‘রাসূল (সা.) পুরো সাবান মাসই
রোজা রাখতেন, অল্প কদিন রোজা ছাড়তেন।’ (মুসলিম।) শাবানের এ রমজান প্রস্তুতির চর্চা ছিল সাহাবিদের মাঝেও। তাই নবিপত্নী এবং সাহাবিরাও শাবান মাসে রোজা রাখতেন গুরুত্বের সঙ্গে। যারা শাবানে রোজা রাখতেন না রাসূল (সা.) তাদের খুব দরদি ভাষায় নসিহত করতেন। হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) কোনো একজনকে বলছিলেন, ‘হে অমুকের পিতা! তুমি কি শাবান মাসের শেষ দিকে রোজা রাখনি? তিনি বললেন, না। এ কথা শুনে রাসূল (সা.) বললেন, তাহলে তুমি রমজানের পরে দুটি রোজা রেখে দিও।’ (বুখারি ও মুসলিম।) রমজানের প্রতীক্ষা-অশ্রু আর হৃদয়ের ব্যকুলতা মিলে প্রশান্তির ঝরনা ঝরে মুমিন আত্মায়। মুমিন হৃদয় সিক্ত হয় প্রভুর প্রেমে। রমজান এলে জান্নাতি পরিবেশ ছড়িয়ে
পড়ে ভেতরে বাইরে সবখানে। মাটির গ্রহে জান্নাতি সৌরভ উপলব্ধি করেন খোদাপ্রেমিক বান্দারা। এ যেন এক প্রশান্তিময় ‘মুত্তাকিনি পরিবেশ’। রজব মাসে পা দিয়েছে মুসলিম বিশ্ব। এখনই শ্রেষ্ঠ সময় রমজানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার। যতটা পারা যায় কর্মব্যস্ততা কমিয়ে আনার সময় বয়ে চলে। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত, নবিজি (সা.) এবং তার প্রিয় অনুসারীরা যেভাবে রমজানের জন্য প্রস্তুতি নিতেন, যেভাবে প্রতীক্ষার অশ্রু ঝরিয়ে আত্মাকে সবুজ ও সতেজ করতেন, আমরা কি সেভাবে করতে পেরেছি? আমরা কি সিয়াম পালনের জন্য আমাদের আত্মাকে প্রস্তুত করেছি? লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট
রাসূল (সা.) রমজানের প্রস্তুতি নিতেন। সব ব্যস্ততা কমিয়ে আনতেন একে একে। রমজানের পুরো সময়টাই ইবাদত-বন্দেগিতে কাটিয়ে দিতেন নির্বিঘ্নে। রাসূল (সা.)-এর প্রিয় খাদেম হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন পশ্চিম আকাশে রজবের বাঁকা চাঁদ দেখা যেত, তখন রাসূল (সা.) দরদমাখা কণ্ঠে মহান প্রভুর কাছে বারবার এ দোয়া করতেন-‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান। ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করে দিন। আর আমাদের হায়াত রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ (সুনানে নাসায়ি ও মুসনামে আহমাদ।) এভাবেই রজবের প্রতিটি দিন রমজানের প্রার্থনায় সিক্ত হতো রাসূল (সা.) ও সাহাবিদের (রা.) নুরানি চোখগুলো। শাবান এলেই প্রতীক্ষার
নদীতে জোয়ার আসত। হৃদয়ের প্রতীক্ষা যেন শেষ হয় না। তাই রমজানের প্রস্তুতির জন্য শাবান থেকেই নফল রোজা শুরু করতেন নবিজি (সা.) ও সাহাবিরা। মোমিন জননী হজরত আয়শা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসূল (সা.)-কে শাবান মাস ছাড়া আর কোনো মাসেই এত বেশি নফল রোজা রাখতে দেখিনি।’ (বুখারি ও মুসলিম।) অন্য বর্ণনায় আয়শা (রা.) বলেন-‘রমজান ছাড়া কোনো মাসে রাসূল (সা.) পুরো মাস রোজা রাখতেন না। শাবান ছাড়া কোনো মাসে রাসূল (সা.) এত বেশি রোজা রাখতেন না।’ (মুসলিম।) আয়শা (রা.) আরও বলেন, ‘কখনো কখনো রাসূলে আকরাম (সা.) পুরো শাবান মাসই নফল রোজায় কাটিয়ে দিতেন।’ (ইবনে মাজাহ।) মুসলিম শরিফের বর্ণনায় এসেছে, ‘রাসূল (সা.) পুরো সাবান মাসই
রোজা রাখতেন, অল্প কদিন রোজা ছাড়তেন।’ (মুসলিম।) শাবানের এ রমজান প্রস্তুতির চর্চা ছিল সাহাবিদের মাঝেও। তাই নবিপত্নী এবং সাহাবিরাও শাবান মাসে রোজা রাখতেন গুরুত্বের সঙ্গে। যারা শাবানে রোজা রাখতেন না রাসূল (সা.) তাদের খুব দরদি ভাষায় নসিহত করতেন। হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) কোনো একজনকে বলছিলেন, ‘হে অমুকের পিতা! তুমি কি শাবান মাসের শেষ দিকে রোজা রাখনি? তিনি বললেন, না। এ কথা শুনে রাসূল (সা.) বললেন, তাহলে তুমি রমজানের পরে দুটি রোজা রেখে দিও।’ (বুখারি ও মুসলিম।) রমজানের প্রতীক্ষা-অশ্রু আর হৃদয়ের ব্যকুলতা মিলে প্রশান্তির ঝরনা ঝরে মুমিন আত্মায়। মুমিন হৃদয় সিক্ত হয় প্রভুর প্রেমে। রমজান এলে জান্নাতি পরিবেশ ছড়িয়ে
পড়ে ভেতরে বাইরে সবখানে। মাটির গ্রহে জান্নাতি সৌরভ উপলব্ধি করেন খোদাপ্রেমিক বান্দারা। এ যেন এক প্রশান্তিময় ‘মুত্তাকিনি পরিবেশ’। রজব মাসে পা দিয়েছে মুসলিম বিশ্ব। এখনই শ্রেষ্ঠ সময় রমজানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার। যতটা পারা যায় কর্মব্যস্ততা কমিয়ে আনার সময় বয়ে চলে। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত, নবিজি (সা.) এবং তার প্রিয় অনুসারীরা যেভাবে রমজানের জন্য প্রস্তুতি নিতেন, যেভাবে প্রতীক্ষার অশ্রু ঝরিয়ে আত্মাকে সবুজ ও সতেজ করতেন, আমরা কি সেভাবে করতে পেরেছি? আমরা কি সিয়াম পালনের জন্য আমাদের আত্মাকে প্রস্তুত করেছি? লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট