বিটিসিএলের ফাইভজি প্রকল্পের কাজ নস্যাতে কথিত সিন্ডিকেট – ইউ এস বাংলা নিউজ




বিটিসিএলের ফাইভজি প্রকল্পের কাজ নস্যাতে কথিত সিন্ডিকেট

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৩:৫৮ 94 ভিউ
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের (পিটিডি) বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) বিগত বেশ কিছু প্রকল্প ও কার্যাদেশ ঘিরে শক্তিশালী অবৈধ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। অবৈধ সুবিধা পাওয়ার জন্য এখনও পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করে যাচ্ছে কথিত ও চিহ্নিত সিন্ডিকেট। কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের আশীর্বাদপুষ্ট কথিত সিন্ডিকেট বিটিসিএলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিশেষ কৌশলে কারসাজি করতে শুরু করে। সেই থেকে এই সিন্ডিকেট টেন্ডারবাজি করে ও প্রকল্পের তহবিল চুরি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। গত কয়েক বছরে এই সিন্ডিকেটকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ না দিয়ে অনেকে প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল থেকে কার্যাদেশ বা টেন্ডার পেতে সক্ষম হয়নি বলে অভিযোগ করেন। পিটিডির সাবেক সচিব

আবু হেনা মোরশেদ জামান কথিত সিন্ডিকেট ও কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তার উদ্যোগের কারণে ‘ফাইভজি প্রযুক্তির জন্য বিটিসিএল অপটিক্যাল ফাইবার কেবল ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের উন্নয়ন’ প্রকল্পটি কোনো ধরনের ঘুষ ছাড়া বাস্তবায়নের পথে প্রক্রিয়াধীন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রকল্পের দরপত্র বিজ্ঞপ্তিটি ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর পিপিআর-২০০৮-এর নিয়ম (৭) অনুযায়ী তিন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত টেন্ডার ওপেনিং কমিটি টেন্ডারটি উন্মুক্ত করে। পিপিআর-২০০৮-এর নিয়ম (৮) অনুসরণে বিটিসিএলের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে বিশেষ মূল্যায়ন কমিটি গঠিত হয়। বুয়েট, পুলিশ টেলিকম ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রকল্প প্যাকেজ জিডি-১-এর জন্য সাত সদস্যের সমন্বয়ে বিশেষ মূল্যায়ন কমিটি গঠিত

হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কারিগরি মূল্যায়নে অংশগ্রহণকারী তিনজন দরদাতাকে প্রযুক্তিগতভাবে যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে। আর্থিক দরপত্র উন্মোচনের পরে দেখা যায়, হুয়াওয়ে ৩২৬ কোটি টাকার দর জমা দেয়, যা ছিল সর্বনিম্ন। ফলে বিটিসিএলের আনুমানিক খরচ থেকে প্রায় ১৩৭ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা জেডটিই ৪১৫ কোটি ও তৃতীয় দরদাতা নকিয়া ৫৭৯ কোটি টাকা প্রস্তাব করে। প্রকল্পের বাণিজ্যিক মূল্য উন্মুক্ত করার আগেই তিন দরদাতা যোগ্য বিবেচিত হওয়ায় এই সিন্ডিকেট অনুমান করেছিল, তাদের সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রকল্পটি হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই দরপত্র বাতিল করতে সব ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেডটিইর একজন কর্মকর্তা বলেন, কথিত সিন্ডিকেটকে টাকা না দিতে হলে আমাদের

দর কমানোর সুযোগ থাকত। কিন্তু কোটি কোটি টাকা এই সিন্ডিকেটকে দেওয়ার কারণে আমাদের দরমূল্য কমানো সম্ভব হয়নি। তৎকালীন অভিযুক্ত কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন যে স্পেসিফিকেশন এই প্রকল্পের প্রত্যাশিত ফলাফলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় ও পুনর্মূল্যায়নের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। ফাইভজি প্রকল্পের স্পেসিফিকেশনে যে প্রযুক্তির কথা উল্লেখ, তা বর্তমান বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি বলে জানান প্রকল্প পরিচালক মনজির আহমেদ। কথিত সিন্ডিকেট যে দরপত্রে টেন্ডার বাতিলের চেষ্টা করেছিল, তা সম্পূর্ণভাবে পিপিএ-২০০৬ ও পিপিআর-২০০৮ এবং আর্থিক বিধির পরিপন্থি। এটি ভুলভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল যে সিপ্লাসপ্লাস (সি++) ও সুপার সি ব্যান্ড প্রযুক্তি এই প্রকল্পে এবং স্পেসিফিকেশন ও প্রযুক্তিগত মূল্যায়নের প্রস্তুতির সময় বিবেচনা করা হয়নি। প্রকল্প পরিচালক

বলেন, প্রযুক্তিগত সামঞ্জস্যের বিষয়টি বোর্ড সভায় বক্তারা উপস্থাপন করেন। সভায় বুয়েটের তৎকালীন উপাচার্য, যিনি বিটিসিএলের একজন বোর্ড সদস্যও ছিলেন; তিনি বলেন, ওই প্রকল্পের স্পেসিফিকেশনে উল্লিখিত প্রযুক্তি আইটিইউর মাপকাঠিতে সর্বাধুনিক ও যে কোনো প্রযুক্তির সমতুল্য। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও ভৌগোলিক বিচারে এ প্রকল্পের প্রযুক্তি যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। তাই পুরোনো প্রযুক্তির কারণে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের আর সুযোগ ছিল না। সবশেষ বিটিসিএল নিয়মানুযায়ী এগিয়ে যায় এবং সর্বনিম্ন দরদাতা হুয়াওয়ের সঙ্গে গত বছরের নভেম্বরে চুক্তি সই করে। এখন পর্যন্ত সব (১৭১টি) সাইটের জরিপ সুসম্পন্ন হয়েছে। সাইটগুলো অনেকটাই প্রস্তুত এখন। আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাকি কাজ শেষ করার পূর্বাভাস দিয়েছে কারিগরি প্রতিষ্ঠান। ফাইভজি প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে ফোরজি এবং আসন্ন

ফাইভজি প্রযুক্তির সব ধরনের পরিষেবা নিশ্চিতে বৃহত্তম ট্রান্সমিশন ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক প্রস্তুত হবে; যার সুবিধা নিতে পারবে দেশের টেলিকম অপারেটর, যেমন– টেলিটক, জিপি, রবি, বাংলালিংক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাও। এটি আসন্ন যে কোনো সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইথ বহন করতেও সক্ষম হবে। ফলে বিটিসিএলের নিজস্ব রাজস্বও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেন। কিন্তু ফাইভজি প্রকল্প বাতিল করে প্রবৃদ্ধি নষ্ট করতে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রভাবশালী পুরোনো সিন্ডিকেট। এটি বিটিসিএলের অগ্রগতির পথে বড় বাধা এবং দেশের আর্থসামাজিক প্রবৃদ্ধির জন্য অশনি সংকেত বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
পুড়ে ছাই ৮ বসতঘর গণমাধ্যমগুলোর ১৫ বছরের কার্যকলাপ নিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দরকার কুরবানি ঈদে আফতাবনগরে বসবে না গরুর হাট: হাইকোর্ট বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বহু হতাহত-বিমান চলাচল বন্ধ পাকিস্তানিরা ‘ব্যর্থ জাতি’, ‘ইসলাম জানে না’: আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এশিয়া কাপ থেকে পাকিস্তানকে বের করে দেওয়া হতে পারে: সুনীল গাভাস্কার অফিস যাওয়ার আগে অল্প সময়ে চুলের সাজে পরিবর্তন আনবেন যেভাবে ২০০ বারের বেশি সাপের ছোবল খাওয়া ব্যক্তির রক্ত থেকে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিভেনম ক্যাপকাটের রেকর্ড ভাঙল ‘ইনস্টাগ্রাম এডিটস’, কী আছে এই অ্যাপে? চুল ও ত্বকের জন্য বেল কতটা উপকারী গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি ইসরাইলের অবরোধের কারণে গাজায় ৫৭ ফিলিস্তিনির অনাহারে মৃত্যু দুপুরের মধ্যে যেসব অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পুতিনের ‘নাটক’: জেলেনস্কি তিন ইস্যু ঘিরেই সংকট ভারতের বিরুদ্ধে পালটা পদক্ষেপ নিল পাকিস্তান সবার ন্যূনতম আয়কর ৫ হাজার টাকা বজ্রপাতে নিরাপদ নয় ছাতা-রাবারের জুতা বিএনপি ও জোটের অর্ধডজন প্রার্থী, জামায়াতের রমজান সুদানে হাসপাতালে হামলায় নিহত ৭, গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা