বদলে গেছে ঈদ উদযাপনের ধারা – ইউ এস বাংলা নিউজ




বদলে গেছে ঈদ উদযাপনের ধারা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৩০ মার্চ, ২০২৫ | ১০:১৩ 49 ভিউ
‘আমাদের সময়ে ঈদের দিন নামাজ শেষে ঘরে ঘরে সেমাই ও মিষ্টি খাওয়ার হিড়িক পড়ত। পাড়ায় পাড়ায় চেনা-অচেনা সবাই কেমন একাত্ম হয়ে যেত। ছোট ছেলেমেয়েরা সালামি নিতে আসত। সন্ধ্যায় থাকত পারিবারিক বিভিন্ন আয়োজন। একে-অন্যের বাড়িতে গিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করত। সে সময় এক অন্যরকম আমেজ ছিল। কিন্তু এখন ঈদে তরুণ-তরুণীদের দিকে তাকালে কেমন জানি ছন্নছাড়া একটা অনুভূতি কাজ করে।’ ঈদের দিনের অনুভূতি জানাতে কথাগুলো বলছিলেন সত্তরোর্ধ্ব রামিজা আক্তার। তাঁর মতো অনেকেরই ভাষ্য, সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে ঈদ উদযাপনের ধারা। আগে ঈদের আনন্দ পারিবারিক পরিমণ্ডলে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন এর গণ্ডি ছাড়িয়েছে। এখনকার ঈদ মানে কে কী পরল, কোথায় ঘুরতে গেল– এসব দেখানোতেই ব্যস্ত। মূলত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহজলভ্যতার ফলে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে উৎসবের দিনগুলোতে পারিবারিক সম্পর্ক থেকে বেশ দূরে সরে গেছে বর্তমান প্রজন্ম। ঈদের তিন থেকে চার দিন সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা ও রাতে কোন কোন পোশাক পরে, কোন ক্যাপশন দিয়ে কী পোস্ট করা হবে– এসব নিয়ে আড্ডা দিতে ব্যস্ত থাকেন তরুণ-তরুণীরা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাইয়ুম বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে জয়ফুল মোমেন্ট (আনন্দের মুহূর্ত) শেয়ার না করতে পারলে নিজেকে খালি খালি লাগে।’ তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিনা জামান বলেন, ‘স্রোতের বিপরীতে বা স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়েও চলে অনেকে। আমিও সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহার করি। কিন্তু তার পরিমিতও বোঝার চেষ্টা করি। কারণ আনন্দঘন মুহূর্তগুলো হয়তো ক্ষণিকের

জন্য ক্যামেরাবন্দি হবে, বাস্তবে তো আর আমি পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সেই সময়টা উপভোগ করতে পারব না। তাই চেষ্টা করি দুটো জায়গা ব্যালান্স করার।’ ২০০০ সাল পরবর্তী কয়েক বছরের ঈদ নিয়ে স্মৃতিচারণ করে বেসরকারি চাকরিজীবী আনিসা চৌধুরী বলেন, ‘সেই সময়ে দিনের দিন টেলিভিশন থেকে চোখ সরাতাম না। রোজার ঈদের ইত্যাদি তো কখনই মিস করতাম না। আর সঙ্গে আনন্দ মেলা। বিটিভিতে সিনেমা দেখাত। সেগুলো ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করতে না।’ উৎসবের ক্ষেত্রে প্রজন্মের ছন্দপতনের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফাতেমা রেজিনা ইকবাল বলেন, ‘এই পরিবর্তনটা মোটেও ভালো নয়।’ ছোটবেলার কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন আমাদের দুটো ঈদেই

স্কুল ছুটি হবে, আর আমরা জাদুঘরে যাব। অথবা হয়তো একটা ঈদ নানুবাড়ি ও অন্যটা দাদুবাড়ি এবং সব ভাইবোন নিয়ে আনন্দের সঙ্গে সময় কাটাব, নতুন একটা পোশাক পরব। বর্তমান সময়ের মতো এত দামি ও বিশেষ কোনো ব্র্যান্ডের না। একেবারে সাধারণ জামা হতো। ঈদের দিন বিভিন্ন বাড়ি গিয়ে ফিরনি খেতাম। সে এক অন্যরকম আনন্দঘন পরিবেশ ছিল।’ ড. ফাতেমা বলেন, ‘এখন ঈদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুধু ঈদের শুভেচ্ছা দিতে দেখা যায়। অনেকে ঈদে এখন দেশের বাইরে যান। আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রয়োজন অবশ্যই আছে। কিন্তু এটি পড়াশোনাসহ প্রয়োজনীয় কাজের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার হওয়া প্রয়োজন। গ্রামের বাড়িতে রাস্তার জ্যাম ঠেলে অনেকে যেতে চান না। গেলেও

সেখানেও ফোনে ডুবে থাকেন। অথচ গ্রামের ঈদের যে একটা আলাদা আবহ রয়েছে, তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। ঈদের পোশাক ও খাবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার ফলে সমাজের অন্যস্তরের মানুষের মাঝে ঈদের আনন্দের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে। তারা নানাভাবে হীনম্মন্যতায় ভোগে। এসব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে।’

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
মিসরে দানখয়রাতে চলছে গাজা শরণার্থীদের দিন নতুন বিশ্বব্যবস্থায় মুসলিম দেশগুলোকেই নেতৃত্ব দিতে হবে ট্রাম্পের সঙ্গে চুক্তি করুন, নইলে ইসরাইলি হামলার ঝুঁকি নিন ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে যে ‘গুরুতর’ অভিযোগ তুলল ইসরাইল রাকিবের বিষয় নিয়ে এবার বিবৃতি দিল ছাত্রদল এপ্রিলেই আমিনুলকে বিসিবিতে কাজ করার প্রস্তাব দেন ক্রীড়া উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে ফাইনাল মিউনিখে, প্যারিসে কেন বাড়তি নিরাপত্তা কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী স্টুডেন্ট ভিসার স্থগিতাদেশ বেশি দিন নয়, আবার চালু হবে : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সব দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় : ১২ দলীয় জোট উত্তাল সাগর, উপকূলে আটকে গেল জাহাজ সেন্টমার্টিনে তলিয়ে গেছে শতাধিক বাড়ি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট বাংলাদেশকে ১৩ হাজার কোটি টাকা বাজেট সহায়তা দিচ্ছে জাপান এক ব্যক্তি ডিসেম্বরে নির্বাচন চান না : মির্জা আব্বাস দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের দাদাগিরি মানব না : পাকিস্তান ভারতের আধিপত্য কখনোই মেনে নেবে না পাকিস্তান : সেনাপ্রধান আসিম মুনির স্থানীয় প্রকল্পের পাওনা পরিশোধ ডলারে কর্মসূচি স্থগিত, খুলছে সোনার দোকান যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ ‘যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব’, হামাস ও গাজার সার্বিক পরিস্থিতি